ঠান্ডা লড়াই

ঠান্ডা লড়াই প্রসঙ্গে ঠান্ডা লড়াই কি, ঠান্ডা লড়াই এর বৈশিষ্ট্য, ঠান্ডা লড়াইয়ে তাত্ত্বিক ভিত্তি, ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রেক্ষাপট ও ঠান্ডা লড়াই এর প্রভাব সম্পর্কে জানবো।

কোল্ড ওয়ার বা ঠান্ডা লড়াই প্রসঙ্গে ঠান্ডা যুদ্ধের সূচনা রূপে চিহ্নিত মার্শাল পরিকল্পনা, ঠান্ডা লড়াই ছিল এক অপরিণামদর্শী ছায়া যুদ্ধ, ঠান্ডা লড়াই বা স্নায়ুযুদ্ধ কি, ঠান্ডা লড়াইয়ের বৈশিষ্ট্য, ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রেক্ষাপট, ঠান্ডা লড়াইয়ে তাত্ত্বিক ভিত্তি ও ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রভাব বা ফলাফল সম্পর্কে জানব।

ঠান্ডা লড়াই

ঐতিহাসিক ঘটনাঠান্ডা লড়াই
অপর নামকোল্ড ওয়ার
প্রথম ব্যবহারওয়াল্টার লিপম্যান
সূচনাকালদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ -এর পর
পশ্চিমি রাষ্ট্রজোটআমেরিকা
সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোটরাশিয়া
ঠান্ডা লড়াই

ভূমিকা :- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর পৃথিবীর বেশিরভাগ রাষ্ট্র আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি রাষ্ট্রজোট এবং সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোটের অন্তর্ভুক্ত বা সমর্থকে পরিণত হয়। যুদ্ধের পর বিশ্বরাজনীতি এই দুই শক্তিজোটের দ্বারা দারুণভাবে প্রভাবিত হয়। দুই মহাশক্তিজোটের যুদ্ধ-পরবর্তী এই রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে দ্বি-পাক্ষিক রাজনীতি’ বা ‘দ্বিমেরুকরণ’ বলা হয়। যুদ্ধের পরবর্তীকালে উক্ত দুই শক্তিজোটের মধ্যে দীর্ঘকাল ঠান্ডা লড়াই চলতে থাকে।

ঠাণ্ডা লড়াই কী?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পরবর্তীকালে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট এবং সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোটের মধ্যে কোনো প্রত্যক্ষ যুদ্ধ না হলেও দীর্ঘকাল ধরে পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, যুদ্ধের আবহ বা ছায়াযুদ্ধ চলতে থাকে। প্রকৃত যুদ্ধের সূচনা না হলেও উভয়ের মধ্যে চলতে থাকা এই ছায়াযুদ্ধ বা যুদ্ধের পরিবেশকে ‘ঠান্ডা লড়াই’ নামে অভিহিত করা হয়।

সর্বপ্রথম ঠাণ্ডা লড়াই কথার ব্যবহার

মার্কিন সাংবাদিক ওয়াল্টার লিপম্যান ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর ‘The Cold War’ গ্রন্থে সর্বপ্রথম ‘ঠান্ডা লড়াই’ কথাটি ব্যবহার করেন।

ঠাণ্ডা লড়াই-এর বৈশিষ্ট্য

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে সংঘটিত ঠান্ডা লড়াই-এর যে সব বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ্য করা যায় সেগুলি হল –

(১) পরস্পর-বিরোধী জোট

ঠান্ডা লড়াই ছিল আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট এবং রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক শক্তিজোটের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

(২) সহযোগিতা

আমেরিকা ও রাশিয়া নিজেদের জোটের অন্তর্ভুক্ত সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে আর্থিক, সামরিক ও অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা করতে যথেষ্ট তৎপরতা দেখায়।

(৩) রাজনৈতিক মতাদর্শের লড়াই

প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি পক্ষই ঠান্ডা লড়াইকে নিজ নিজ রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হিসেবে ব্যবহার করে। আমেরিকা গণতন্ত্র ও ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে এবং রাশিয়া সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধিতা ও সাম্যবাদের নামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করে।

(৪) সামরিক শক্তিবৃদ্ধি

প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি পক্ষই অস্ত্র তৈরি সহ সার্বিক সামরিক শক্তিবৃদ্ধির দিকে যথেষ্ট মনোযোগ দেয়।

(৫) ছায়া যুদ্ধ

আমেরিকা ও রাশিয়া উভয় পক্ষের সামরিক শক্তি যথেষ্ট বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও কোনো পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে অংশ নেয় নি। কেবল যুদ্ধের আবহ জিইয়ে রেখেছিল।

ঠান্ডা লড়াইয়ের তাত্ত্বিক ভিত্তি

আমেরিকা ও সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রজোটের মধ্যে সংঘটিত ঠান্ডা লড়াইয়ের দায়বদ্ধতা, প্রকৃতি প্রভৃতি বিষয় নিয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল –

(ক) আদর্শগত সংঘাতের ব্যাখ্যা

কেউ কেউ মনে করেন যে, ঠান্ডা লড়াই ছিল প্রকৃতপক্ষে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি দেশগুলির সঙ্গে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন পূর্ব ইউরোপের ভাবাদর্শের লড়াই। ঠান্ডা লড়াইয়ের এই ব্যাখ্যা ‘আদর্শগত সংঘাতের ব্যাখ্যা’ নামে পরিচিত। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দিক গুলি হল –

(১) পশ্চিমি দেশগুলির অভিমত

মার্কিন রাষ্ট্রপতি হ্যারি ট্রুম্যান সোভিয়েত রাশিয়ার কমিউনিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থাকে নাৎসি বা ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার সঙ্গে একই পর্যায়ভুক্ত বলে মনে করতেন মার্কিন নৌ সচিব জেমস ফরেস্টাল মনে করতেন যে, সাম্যবাদী রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি মুক্তপন্থী গণতান্ত্রিক দেশগুলির পররাষ্ট্রনীতি থেকে পৃথক। কারণ একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি নির্ধারণে বলপ্রয়োগের নীতিতে বিশ্বাসী। উইনস্টন চার্চিল, জর্জ কেন্নান প্রমুখ ঠান্ডা লড়াইয়ের উদ্ভবের জন্য রুশ আগ্রাসনকেই দায়ী করেছেন।

(২) রাশিয়ার অভিমত

প্রাক্তন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাক্সিম লিটভিনভ ঠান্ডা লড়াইকে পরস্পরবিরোধী দুটি জোটের মধ্যে আদর্শবাদী লড়াই হিসেবেই উল্লেখ করেছেন। রুশ রাষ্ট্রপ্রধান স্ট্যালিন এক বক্তৃতায় (৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৬ খ্রি.) উল্লেখ করেন যে, সাম্যবাদ জয়ী না হওয়া পর্যন্ত কমিউনিস্ট ও পুঁজিবাদী দেশগুলির মধ্যে অবিরাম লড়াই চলবে।

(৩) বিশেষজ্ঞদের অভিমত

বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, ঠান্ডা লড়াই হল পশ্চিমের ধনতান্ত্রিক গণতন্ত্র এবং রুশ সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে আদর্শগত সংঘাত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বরাজনীতিতে ‘দ্বিমেরুকরণ’ ঘটে যায়, যার এক মেরুতে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ধনতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট এবং অন্য মেরুতে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট অবস্থান করত। পরস্পরবিরোধী আদর্শের সমর্থক দুটি জোট একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। অধ্যাপক এফ. এইচ. হার্টম্যান মনে করেন যে, দুটি বৃহৎ শক্তির মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গি এবং তত্ত্বগত পার্থক্য থেকেই ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়। জন স্পেনিয়ার মনে করেন যে, রাশিয়া তার নতুন সমাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা এবং সম্প্রসারণবাদী মানসিকতাকে বৈধতা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আমেরিকার নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে আদর্শগত সংঘাতের প্রয়োজন অনুভব করে।

(খ) সংশোধনবাদী ব্যাখ্যা

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত ‘The Cold War’ গ্রন্থে ওয়াল্টার লিপম্যান উল্লেখ করেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার বিশেষ স্বার্থকে বাধা দিলে রাশিয়া অনমনীয় হয়ে উঠতে বাধ্য হয়। পরবর্তীকালে ডি. এফ. ফ্লেমিং, ডেভিড হরোউইজ, উইলিয়াম এ. উইলিয়াম, লয়েড গার্ডনার, গার অ্যালপারোভিজ প্রমুখ ঐতিহাসিক লিপম্যানের দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে ঠান্ডা লড়াইয়ের জন্য অনেকাংশে আমেরিকাকে দায়ী করেন। তাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি ‘সংশোধনবাদী ব্যাখ্যা’ নামে পরিচিত। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দিক গুলি হল –

(১) ফ্লেমিং এর অভিমত

ডি. এফ. ফ্লেমিং তাঁর The Cold War and its Origins 1917-1960′ গ্রন্থে বলেছেন যে, রুজভেন্টের পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট টুম্যান পূর্বতন পররাষ্ট্রনীতি ত্যাগ করে রাশিয়ার সঙ্গে বিরোধের পথ গ্রহণ করেন। রাশিয়া পোল্যান্ড-এ তার নীতি না পালটালে টুম্যান রাশিয়াকে আর্থিক সহযোগিতা বন্ধের হুমকি দেন।

(২) হরোউইজের অভিমত

ডেভিড হরোউইজ দেখিয়েছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়া এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে, রাশিয়ার পক্ষে ব্যাপক সম্প্রসারণ নীতি বা বিশ্বব্যাপী সাম্যবাদ প্রসারের উদ্যোগ গ্রহণ করা মোটেই সম্ভব ছিল না। রুশ রাষ্ট্রপ্রধান স্ট্যালিন শুধু আত্মরক্ষামূলক নীতি গ্রহণ করার উদ্দেশ্যে পূর্ব ইউরোপ-এর অর্থনীতি ও কূটনীতির ক্ষেত্রে রুশ প্রভাব বাড়াতে চেয়েছিলেন।

(৩) উইলিয়াম ও গার্ডনারের অভিমত

উইলিয়াম এ. উইলিয়াম এবং লয়েড গার্ডনার দেখিয়েছেন যে, প্রথম পর্বে ঠান্ডা লড়াই অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠলেও ইচ্ছে করলে তা দূর করা যেত। কিন্তু আমেরিকা সাম্যবাদের বিরুদ্ধে একপ্রকার ক্রুসেড ঘোষণা করায় তা সম্ভব হয় নি।

(৪) অ্যালপারোভিজ এর অভিমত

গার অ্যালপারোভিজ দেখিয়েছেন যে, বিশ্বযুদ্ধের শেষপর্বে আণবিক বোমা তৈরিতে সাফল্য পেয়ে আমেরিকা তার পূর্বেকার সহাবস্থানের নীতি থেকে সরে এসে ঔদ্ধত্যপূর্ণ মানসিকতার নীতি গ্রহণ করে। অবশ্য তিনি একই সঙ্গে সোভিয়েত রাশিয়ার অনমনীয়তারও উল্লেখ করেন।

(গ) অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ব্যাখ্যা

  • (১) কেউ কেউ মনে করেন যে, ঠাণ্ডা লড়াই ছিল প্রকৃতপক্ষে আমেরিকার অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের অন্যতম দিক। গ্যাব্রিয়েল কলকো, কর্ডেল হাল প্রমুখ এই অভিমতের সমর্থক। গ্যাব্রিয়েল কলকো দেখিয়েছেন যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আমেরিকা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়।
  • (২) আমেরিকা তার এই আর্থিক শক্তিকে ব্যবহার করে বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান চালকের আসন লাভের চেষ্টা করেছিল। এই লক্ষ্যে আমেরিকা তার বিদেশনীতিতে পরিবর্তন ঘটায়। মার্শাল পরিকল্পনার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশকে বিপুল পরিমাণ অর্থসাহায্য দিয়ে আমেরিকা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরোপে নিজেকে পরিত্রাতা হিসেবে তুলে ধরার উদ্যোগ নেয়।
  • (৩) কিন্তু বৈদেশিক ক্ষেত্রে আমেরিকার অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়নের প্রধান বাধা ছিল সোভিয়েত রাশিয়া। এজন্য রাশিয়া ও তার অনুগত রাষ্ট্রগুলির বিরুদ্ধে আমেরিকা একপ্রকার ক্রুসেড ঘোষণা করে। এর ফলেই ঠান্ডা লড়াইয়ের সূত্রপাত ঘটে।

(ঘ) বাস্তববাদী ব্যাখ্যা

একদল ঐতিহাসিক আদর্শগত এবং সংশোধনবাদী তত্ত্বের মধ্যবর্তী অবস্থান গ্রহণ করে ঠান্ডা লড়াইয়ের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁরা ঠান্ডা লড়াইয়ের জন্য একতরফাভাবে আমেরিকা বা রাশিয়ার পক্ষকে দায়ী করেন নি। তাঁরা মনে করেন যে, ঠান্ডা লড়াইয়ের জন্য দুই পক্ষই দায়ী ছিল অথবা কোনো পক্ষই দায়ী ছিল না। তাঁদের ব্যাখ্যা বাস্তববাদী ব্যাখ্যা নামে পরিচিত। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দিক গুলি হল –

(১) সমর্থক

এই মতের সমর্থকদের মধ্যে অন্যতম হলেন হ্যানস জে মরগ্যানথো এবং লুই জে. হ্যালে

(২) মরগ্যানথো এর অভিমত

হ্যানস জে মরগ্যানথো দেখিয়েছেন যে, রুশ সম্প্রসারণ নীতি ও সাম্যবাদী আদর্শকে একই দৃষ্টিতে দেখে আমেরিকা অদূরদর্শিতার পরিচয় দেয়। অন্যদিকে রাশিয়ারও আমেরিকাকে ধনতান্ত্রিক গোষ্ঠীর প্রতিভূ বলে মনে করার কোনো যৌক্তিকতা ছিল না।

(৩) হ্যালে এর অভিমত

লুই জে. হ্যালে ঠান্ডা লড়াই পরিস্থিতিকে আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যেকার আদর্শগত সংঘাত ছিল বলে মনে করেন না। তাঁর মতে, ক্ষমতার রাজনীতি ও শক্তিসাম্য থেকে এই লড়াইয়ের সূত্রপাত ঘটেছিল। তিনি মনে করেন যে, একটি রাষ্ট্রের আগ্রাসনের ফলেই যেমন নেপোলিয়ন-এর আমলে বিভিন্ন যুদ্ধ বা দুটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, তেমনি নতুন এক শক্তিশালী রাষ্ট্রের সম্প্রসারণশীল পদক্ষেপের ফলে ঠান্ডা লড়াইও শুরু হয়েছিল। তিনি ঠান্ডা লড়াইয়ের জন্য মূলত রাশিয়ার অনমনীয় মনোভাবকেই দায়ী করেছেন।

ঠান্ডা লড়াইয়ের তাত্ত্বিক ভিত্তির মূল্যায়ণ

সাধারণভাবে দেখা যায় যে, বিভিন্ন ঐতিহাসিক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ঠান্ডা লড়াইয়ের উদ্ভবের জন্য হয় সোভিয়েত রাশিয়া নয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করে থাকেন। ফলে এবিষয়ে অন্যান্য শক্তিগুলির ভূমিকা তুলনামূলকভাবে অনালোচিত রয়েছে। বাস্তব এই, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যে ঠান্ডা লড়াইয়ের উদ্ভবে অনুঘটকের কাজ করেছিল তা দ্বিধাহীনভাবে বলা যায়।

ঠাণ্ডা লড়াইয়ের প্রেক্ষাপট

ঠান্ডা লড়াই-এর পিছনে শুধুমাত্র আদর্শগত বা অর্থনৈতিক ভিত্তি দায়ী ছিল, এরকম মনে করা অতি সরলীকরণ হবে। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ঘটনাও ঠান্ডা যুদ্ধের বাতাবরণ তৈরি করেছিল। এই ঠান্ডা লড়াইয়ের কারণগুলি হল –

(ক) বলশেভিক বিপ্লবের বিরোধিতা

রাশিয়ার স্বৈরাচারী জারতন্ত্রের বিরুদ্ধে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে বলশেভিক বিপ্লব বা রুশ বিপ্লব শুরু হলে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপান প্রভৃতি ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি রাশিয়ার বিপ্লবকে সুনজরে দেখে নি। তারা বিপ্লবের সময় জারতন্ত্রের সমর্থনে রাশিয়ায় সেনাবাহিনী পাঠায়। তা সত্ত্বেও বলশেভিক বিপ্লব সফল হয় এবং রাশিয়ায় সাম্যবাদী বা সমাজতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপরও পশ্চিমি ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি রাশিয়ার সাম্যবাদী সরকারকে উপেক্ষা করে চলতে থাকে। ফলে পশ্চিমি দেশগুলির প্রতি রাশিয়ার মনে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হয়।

(খ) হিটলারের প্রতি তোষণ নীতি

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-এর পরবর্তীকালে একনায়কতান্ত্রিক শাসক হিটলার জার্মানির রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেন। এই সময় ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স হিটলারের চেয়ে সাম্যবাদী রাশিয়াকে নিজেদের বড়ো শত্রু বলে মনে করত। এদিকে হিটলারও ছিলেন রাশিয়ার কমিউনিস্ট বা সাম্যবাদী শাসনের তীব্র বিরোধী। তাই ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স হিটলারের প্রতি তোষণ নীতি গ্রহণ করে রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে হিটলারকে আরও প্ররোচিত করে।

(গ) দ্বিতীয় রণাঙ্গনের প্রশ্ন

  • (১) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় জার্মানির হিটলার ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া আক্রমণ করেন। হিটলারের আক্রমণের চাপে রাশিয়া নাস্তানাবুদ হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় জার্মানির আক্রমণের চাপ কমানোর উদ্দেশ্যে। রাশিয়া মিত্রশক্তির কাছে জার্মানির বিরুদ্ধে পশ্চিম ইউরোপে একটি দ্বিতীয় রণাঙ্গন খোলার প্রস্তাব দেয়।
  • (২) কিন্তু মিত্রশক্তির সদস্য আমেরিকা ও ইংল্যান্ড দ্বিতীয় রণাঙ্গন খোলার বিষয়ে অযথা টালবাহানা করে সময় কাটায়। কিছুদিন পর রাশিয়া তার নিজের শক্তিতে জার্মানির আক্রমণ প্রতিহত করার পর মিত্রপক্ষ পশ্চিম ইউরোপে জার্মানির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় রণাঙ্গন খোলে। আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের এরূপ আচরণে মিত্রশক্তির প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে রাশিয়ার মনে সন্দেহ তৈরি হয়।

(ঘ) নেতৃত্বের পরিবর্তন

  • (১) ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন রাষ্ট্রপতি রুজভেল্টের মৃত্যু হলে হ্যারি এস ট্রুম্যান পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। এদিকে ইংল্যান্ড-এর সাধারণ নির্বাচনে উইনস্টন চার্চিল পরাজিত হন এবং শ্রমিক দলের নেতা ক্লেমেন্ট এটলি পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
  • (২) আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের পূর্বতন রাষ্ট্রপ্রধানদের আমলে রাশিয়ার সঙ্গে ওই দুটি দেশের যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও বোঝাপড়া ছিল তা পশ্চিমি দেশ দুটির নেতৃত্বের পরিবর্তনের ফলে নষ্ট হয়ে যায়।
  • (৩) প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, একসময় রাশিয়ায় কর্মরত সহকারী মার্কিন রাষ্ট্রদূত জর্জ এফ কেন্নান এক টেলিগ্রাম বার্তায় জানান যে, সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃবৰ্গকে কোনোভাবেই বিশ্বাস করা যায় না, কেননা, তারা কট্টর মার্কসলেনিনপন্থী। এই অবস্থায় মার্কিন সামরিক দপ্তর পেন্টাগন রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যানকে রাশিয়া সম্পর্কে কঠোর নীতি গ্রহণে উৎসাহী করে তোলে।

(ঙ) রুশ সম্প্রসারণ

  • (১) বলশেভিক বিপ্লবের আগে থেকেই রাশিয়া নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে পূর্ব ইউরোপ ও বলকান অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে সম্প্রসারণ নীতি গ্রহণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির আধিপত্য হঠিয়ে রুশ সেনা এই সব দেশে প্রবেশ করে। যুদ্ধের পর রাশিয়া এই সব অঞ্চলে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হয়।
  • (২) ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ইয়াল্টা সম্মেলন-এ রুশ রাষ্ট্রপতি স্ট্যালিন আমেরিকা ও ইংল্যান্ডকে বুঝিয়ে দেন যে, রাশিয়া নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে পোল্যান্ড, রুমানিয়া প্রভৃতি প্রতিবেশী রাষ্ট্রে রাশিয়ার মিত্র সরকারের প্রতিষ্ঠা চায়। কিন্তু নতুন মার্কিন রাষ্ট্রপতি টুম্যান পূর্ব ইউরোপে রুশ সম্প্রসারণ মানতে রাজি ছিলেন না।

(চ) পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে মতভেদ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর অক্ষশক্তিভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে কীভাবে শান্তিচুক্তি সম্পাদন করা হবে তা নিয়ে আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও চীন – এই পাঁচটি রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের নিয়ে একটি কাউন্সিল গঠন করা হয়। কাউন্সিলের প্রতিটি অধিবেশনেই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মলোটভ-এর সঙ্গে অন্য চারটি রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের তীব্র মতভেদ দেখা দেয়। যেমন  –

(১) ট্রিয়েস্ট নিয়ে বিরোধ

ট্রিয়েস্ট শহর-সহ সমগ্র অঞ্চলটি মলোটভ যুগোশ্লাভিয়ার অন্তর্ভুক্ত করতে চান। কিন্তু কাউন্সিলের পশ্চিমি মন্ত্রীরা ট্রিয়েস্টকে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণে একটি মুক্ত বন্দরে পরিণত করতে চান।

(২) ইতালির উপনিবেশ নিয়ে বিরোধ

রাশিয়া আফ্রিকায় অবস্থিত ইতালির উপনিবেশগুলি জাতিপুঞ্জ-এর অছি পরিষদের তত্ত্বাবধানে শাসন করার দাবি জানায়। কিন্তু ইংল্যান্ড নিজ স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হওয়ার ভয়ে রাশিয়ার দাবির বিরোধিতা করে।

(ছ) জার্মানির ক্ষতিপূরণ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করার জন্য জার্মানিকে অভিযুক্ত করে ইয়াল্টা সম্মেলনে (১৯৪৫ খ্রি.) জার্মানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যেমন –

(১) ক্ষতিপূরণ আদায়ে আমেরিকার অনীহা

কিছুদিন পর জার্মানির কাছ থেকে আমেরিকা ও ইংল্যান্ড ক্ষতিপূরণ আদায়ে আপত্তি জানায়। তাই রাশিয়া অভিযোগ করে যে, জার্মান সামরিক শক্তিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যেই ইঙ্গ-মার্কিন পক্ষ জার্মানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে চাইছে না।

(২) রাশিয়ার উদ্যোগ

এরপর রাশিয়া ইয়াল্টা সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুসারে জার্মানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের ২০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলার দাবি করে। ক্ষতিপূরণের অর্থ না পেয়ে রাশিয়া পূর্ব জার্মানি থেকে কলকারখানার যন্ত্রাংশ তুলে নিয়ে যায়। রাশিয়া পশ্চিমি শক্তিগুলির অধীনে থাকা জার্মানি থেকে ১/৪ অংশ ক্ষতিপূরণ দাবি করে। এর ফলে পশ্চিমি শক্তিগুলির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক যথেষ্ট তিক্ত হয়।

(জ) আণবিক বোমার গবেষণা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন রাশিয়াকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে আমেরিকা বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে আণবিক বোমা তৈরির এক পরিকল্পনা হাতে নেয়। আমেরিকা গোপনে এই বোমা তৈরি করায় আমেরিকার প্রতি রাশিয়ার সন্দেহ বৃদ্ধি পায়। এরপর জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে আমেরিকা আণবিক বোমা বর্ষণ করলে রাশিয়া ক্ষুদ্ধ হয়।

ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রভাব

ঠাণ্ডা লড়াই সমগ্ৰ বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিককে ভীষণভাবে প্রভাবিত করেছিল, বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির ওপর এর প্রভাব বেশি পড়েছিল। যেমন –

(১) সামরিক জোট গঠন

ঠান্ডা লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি সামরিক জোট প্রতিষ্ঠিত হয়।

(২) অস্ত্র প্রতিযোগিতা

ঠান্ডা লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ‘ন্যাটো’ শিবির এবং সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন ‘ওয়ারশ চুক্তি’ শিবির পরস্পরের বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নামে। উভয় পক্ষই প্রচুর পরিমাণ পরমাণু অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য মজুবত করে রাখে।

(৩) আন্তর্জাতিক বিরোধ

পশ্চিমি জোট ও সমাজতান্ত্রিক জোটের মধ্যে উদ্ভূত ঠান্ডা লড়াইয়ের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কয়েকটি সংকট ঘনীভূত হয়। এগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কোরিয়া যুদ্ধ (১৯৫০ খ্রি.), ভিয়েতনাম যুদ্ধ (১৯৫৬-৭২ খ্রি.), সুয়েজ সংকট (১৯৫৬ খ্রি.), কিউবা সংকট (১৯৬২ খ্রি.) প্রভৃতি।

(৪) বার্লিন প্রাচীর ধূলিসাৎ

ঠান্ডা লড়াইয়ের ফলে বার্লিন প্রাচীর তৈরি হয়েছিল। আবার ঠান্ডা লড়াই-ই ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে এই প্রাচীর ধ্বংসে উদ্যোগ নিয়েছিল।

(৫) সোভিয়েত রাশিয়ার ভাঙন

ঠান্ডা লড়াইয়ে অংশ নিয়ে রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে ক্রমাগত অস্ত্রনির্মাণে এবং বিভিন্ন দেশকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে আর্থিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে সমাজতান্ত্রিক রাশিয়া ভেঙে যায়।

(৬) স্বাধীনতা লাভ

ঠান্ডা লড়াই এবং এর ফলে সোভিয়েত রাশিয়ার পতনে কয়েকটি বালটিক রাজ্য এবং পূর্বতন সোভিয়েত রাশিয়ার লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া-সহ বেশ কয়েকটি প্রজাতন্ত্র স্বাধীনতা লাভ করে।

(৭) একমেরুকরণ

ঠাণ্ডা লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে সোভিয়েত রাশিয়ার পতন ঘটলে আমেরিকা পৃথিবীর একমাত্র শ্রেষ্ঠ শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ফলে দ্বিমেরু বিশ্বের অবসান ঘটে ও একমেরু বিশ্বব্যবস্থা অর্থাৎ একমেরুকরণ গড়ে ওঠে।

(৮) কমিউনিজমের পতন

রাশিয়ার নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক জোট পশ্চিমি জোটের বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছিল তাতে কমিউনিস্ট জোটের পরাজয় ঘটে। ফলে বহু দেশে ক্রমে কমিউনিস্ট প্রভাবের অবসান ঘটতে থাকে।

উপসংহার :- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব রাজনীতিতে পরস্পর বিরোধী দুটি রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। এর একদিকে ছিল আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি রাষ্ট্রজোট অর্থাৎ প্রথম বিশ্ব এবং অন্যদিকে ছিল সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্ব। এই দুই রাষ্ট্রজোটের বিরোধের পরিণতিই হল ঠান্ডা লড়াই।

(FAQ) ঠান্ডা লড়াই সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. ঠাণ্ডা লড়াই কি?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি রাষ্ট্রজোট এবং সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোটের বিরোধের পরিণতি হল ঠান্ডা লড়াই।

২. ঠান্ডা লড়াই কথাটি প্রথম কে ব্যবহার করেন?

মার্কিন সাংবাদিক ওয়াল্টার লিপম্যান।

৩. ঠান্ডা লড়াইয়ে যুক্ত প্রধান দুটি জোটের নেতৃত্বে কারা ছিলেন?

আমেরিকা ও রাশিয়া।

৪. পশ্চিমী ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোটের নেতৃত্ব কে দিয়েছিল?

আমেরিকা।

৫. সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোটের নেতৃত্ব কে দিয়েছিল?

রাশিয়া।

Leave a Comment