কার্ল মার্কস (Karl Marx)

আজ আমরা কার্ল মার্কস (Karl Marx) -এর জন্ম পরিচয়, বংশ পরিচয়, ইহুদি ধর্ম ত্যাগ, লুথারীয় ধর্ম গ্ৰহণের কারণ, কার্ল মার্কসের বিবাহ, পারিবারিক জীবন, শিক্ষা জীবন প্রভৃতি সম্পর্কে জানবো।

জার্মান দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী কার্ল মার্কস প্রসঙ্গে তার জন্ম পরিচয়, বংশ পরিচয়, ইহুদি ধর্ম ত্যাগ ও লুথারীয় ধর্ম গ্ৰহণের কারণ, কার্ল মার্কসের বিবাহ, পারিবারিক জীবন , কার্ল মার্কসের শিক্ষাজীবন, তরুণ হেগেলিয়ান কার্ল মার্কস, প্যারিসে কার্ল মার্কস, প্যারিস থেকে বহিস্কার, ব্রাসেলসে কার্ল মার্কস, জার্মানিতে কার্ল মার্কস, লণ্ডনে কার্ল মার্কস, কার্ল মার্কস রচিত তিন খণ্ড, কার্ল মার্কসের দাস ক্যাপিটাল গ্ৰন্থের প্রকাশ, ইন্টার ন্যাশনালে কার্ল মার্কসের কীর্তি, কার্ল মার্কসের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ, কার্ল মার্কসের চিন্তা ও দর্শন, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের জনক কার্ল মার্কস, কার্ল মার্কসের শেষ জীবন ও তাঁর মৃত্যু।

দার্শনিক কার্ল মার্কসের জীবনী

ঐতিহাসিক চিন্তাবিদকার্ল মার্কস
জন্ম৫ ই মে, ১৮১৮   
ধারামার্কসবাদ
ভাবগুরুকান্ট, হেগেল, ফয়েরবাক, রিকার্ডো, রুশো, কোঁত
ভাবশিষ্যমিখাইল বাকুনিন, লেনিন, স্টালিন, ট্রট্‌স্কি, গুয়েভারা প্রমুখ
মৃত্যু১৪ই মার্চ, ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ
কার্ল মার্কস

ভূমিকা :- কার্ল হাইনরিশ মার্কস একজন জার্মান দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, ইতিহাসবেত্তা, সমাজ বিজ্ঞানী, রাজনৈতিক তাত্ত্বিক, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী। সমগ্র মানব ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের একজন কার্ল মার্কস।

কার্ল মার্কসের জন্ম পরিচয় (Birth of Karl Marx)

১৮১৮ সনের ৫ ই মে প্রাশিয়া (বর্তমানে জার্মানি) সাম্রাজ্যের নিম্ন রাইন প্রদেশের অন্তর্গত ট্রয়ার শহরে কার্ল মার্কস জন্মগ্রহণ করেন ।

কার্ল মার্কসের বংশ পরিচয় (Genealogy of Karl Marx)

তার বাবা হাইনরিশ মার্কস বংশের পূর্বপুরুষেরা রাব্বি ছিলেন। তারা ইহুদি পরিবারের অন্তর্গত ছিল।

কার্ল মার্কসের ইহুদি ধর্ম ত্যাগ (Karl Marx’s Abandonment of Judaism)

ধর্মের কারণে আইন অনুশীলনে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় কার্ল মার্কস ইহুদি ধর্ম ত্যাগ করে লুথারীয় মতবাদে দীক্ষা নেন।

কার্ল মার্কসের লুথারীয় ধর্ম গ্ৰহণের কারণ (Reasons for Karl Marx’s conversion to Lutheranism)

লুথারীয় ধর্ম তখন প্রুশীয় সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রীয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্ম ছিল। তাই সেই রোমান ক্যাথলিক সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে লুথারীয় সংখ্যালঘু হিসেবে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা লাভের আশায়ই কার্ল মার্কস ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন।

কার্ল মার্কসের বিবাহ (Marriage of Karl Marx)

এক প্রুশীয় ব্যারনের শিক্ষিত কন্যা জেনি ফন ভেস্টফালেন-কে বিয়ে করেন। এই বিয়েতে মার্কসের পরিবারের সম্মতি ছিল না। ১৮৪৩ সালের ১৯ শে জুন তাদের বিয়ে হয়।

কার্ল মার্কসের পারিবারিক জীবন (Karl Marx’s Family Life)

  • (১) ১৮৫০-এর দশকের প্রথমার্ধে কার্ল মার্কসের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। তখন তারা লন্ডনের সোহো’র ডিন স্ট্রিটে একটা ছোটো বাড়িতে থাকতেন।
  • (২) এরই মধ্যে তাদের চার সন্তানের জন্ম হয়। লন্ডনে বসবাস শুরু করার পর আরও তিন সন্তান হয়। এই সাত জনের মধ্যে কেবল তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বেঁচে ছিল।
  • (৩) মার্কসের আয়ের উৎস ছিল কেবল এঙ্গেল্‌সের দেওয়া ভর্তুকি ও নিউ ইয়র্ক ডেইলি ট্রিবিউন-এর বিদেশি সংবাদদাতা হিসেবে পাওয়া বেতন।
  • (৪) কার্ল মার্কসের স্ত্রী জেনির এক কাকা ও মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে কিছু অর্থ পান। এই অর্থই মার্কসের পরিবারকে কেন্টিশ টাউনের ৯ গ্র্যাফ্টন টেরেস এ অপেক্ষাকৃত ভালো ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাসা নিতে সাহায্য করে।
  • (৫) আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো না হলেও কার্ল মার্কস তার স্ত্রী ও সন্তানদের বুর্জোয়া সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আবশ্যক সব উপকরণ সরবরাহ করতেন।

কার্ল মার্কসের শিক্ষা জীবন (The Educational Life of Karl Marx)

  • (১) কার্ল মার্কস ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত বাড়িতেই পড়াশোনা করেন। বাল্যপাঠ শেষে Trier Gymnasium এ ভর্তি হন এবং ১৭ বছর বয়সে সেখান থেকে স্নাতক হন।
  • (২) এরপর কার্ল মার্কস ইউনিভার্সিটি অফ বন-এ আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। তার ইচ্ছা ছিল সাহিত্য ও দর্শন নিয়ে পড়া।
  • (৩) বাবা মনে করতেন কার্ল মার্কস স্কলার হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবে না। কিছুদিনের মধ্যেই তার বাবা তাকে বার্লিনের Humboldt University তে বদলি করে দেন।
  • (৪) এই সময় মার্কস জীবন নিয়ে কবিতা ও প্রবন্ধ লিখতেন। তার লেখার ভাষা ছিল বাবার কাছ থেকে পাওয়া ধর্মতাত্ত্বিক তথা অতিবর্তী ঈশ্বরবাদের ভাষা। এ সময়ই তিনি তরুণ হেগেলিয়ানদের নাস্তিকতাবাদ গ্রহণ করেন।
  • (৫) ১৮৪১ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তার পিএইচডি অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিল “The Difference Between the Democritean and Epicurean Philosophy of Nature” (প্রকৃতি সম্বন্ধে দেমোক্রিতোসীয় ও এপিকুরোসীয় দর্শনের মধ্যে পার্থক্য)।
  • (৬) পিএইচডি অভিসন্দর্ভ তিনি বার্লিনের বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা না দিয়ে জেনা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দেন। কারণ তরুণ হেগেলিয়ান র‌্যাডিকেল হওয়ার কারণে বার্লিনে তার ভাবমূর্তি ভাল ছিল না।

মার্কসের সময়ে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ (Department at the University of Berlin in Marx’s time)

বার্লিনের বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি ভাগ ছিল। তরুণ হেগেলিয়ান, দার্শনিক ছাত্র এবং লুডউইগ ফয়েরবাক ও ব্রুনো বাউয়ার-কে কেন্দ্র করে গঠিত সাংবাদিক সমাজ ছিল বামপন্থী। আর শিক্ষক সমাজ ছিল জি ডব্লিউ এফ হেগেল। এই দুটি ভাগ ছিল পরস্পরবিরোধী।

কার্ল মার্কস কর্তৃক হেগেলের দ্বান্দ্বিক পদ্ধতির অনুসরণ (Hegel’s dialectical approach was followed by Karl Marx)

হেগেলের অধিবিদ্যাগত অনুমিতিগুলোর সমালোচনা করলেও বামপন্থীরা প্রতিষ্ঠিত ধর্ম ও রাজনীতির কঠোর সমালোচনার জন্য হেগেলের দ্বান্দ্বিক পদ্ধতিই অনুসরণ করতো।

তরুণ হেগেলিয়ান কার্ল মার্কস (The Young Hegelian Karl Marx)

কিছু তরুণ হেগেলিয়ান এরিস্টটল-উত্তর দর্শনের সাথে হেগেল-উত্তর দর্শনের সাদৃশ্য তুলে ধরেন।

  • (১) মার্কস স্টির্নার তার Der Einzige und sein Eigenthum (১৮৪৪) বইয়ে ফয়েরবাখ ও বাউয়ারের সমালোচনা করেন এবং বিমূর্ত ধারণাগুলোর দ্ব্যর্থতাবোধক হেত্বাভাস চর্চার জন্য তাদেরকে ধার্মিক ব্যক্তি বলে আখ্যায়িত করেন।
  • (২) কার্ল মার্কস এই বই পড়ে মুগ্ধ হয়ে ফয়ারবাখের বস্তুবাদ ত্যাগ করেন। এই রূপতাত্ত্বিক বিরতি ঐতিহাসিক বস্তুবাদ বিষয়ে তার ধারণার ভিত্তি রচনায় যথেষ্ট সাহায্য করে।
  • (৩) এই নতুন ধারণার মাধ্যমে তিনি স্টির্নারেরও বিরোধিতা করেন। এ বিষয়ে একটি বইও লিখেন যার নাম Die Deutsche Ideologie (১৮৪৫)। অবশ্য ১৯৩২ সালের আগে এই বই প্রকাশের মুখ দেখেনি।

প্যারিসে কার্ল মার্কস (Karl Marx in Paris)

১৮৪৩ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে কার্ল মার্কস প্যারিসে আসেন।

  • (১) ফ্রান্স -এর প্যারিস শহর তখন জার্মান, ব্রিটিশ, পোল্যান্ডইতালির বিপ্লবীদের সদর দফতর হয়ে উঠেছিল। তিনি প্যারিসে গিয়েছিলেন মূলত জার্মান বিপ্লবী Arnold Ruge এর সাথে Deutsch-Französische Jahrbücher-এর উপর কাজ করতে।
  • (২) এই সময় ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস প্যারিসে গিয়েছিলেন মার্কসকে ১৮৪৪ সালের বাস্তবতায় ইংল্যান্ড -এ কর্মজীবী মানুষের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করতে।
  • (৩) ১৮৪২ সালে মার্কসের সাথে এঙ্গেল্‌সের আগে কথা হয়েছিল। সে পরিচয়ের ভিত্তিতেই এঙ্গেল্‌স এ ধরনের উদ্যোগ নেন।
  • (৪) ১৮৪৪ সালের ২৮শে অক্টোবর কার্ল মার্কস ও এঙ্গেল্‌স প্যারিসের Cafe de la Régence-তে তাদের বন্ধুত্ব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা ঘটান। এটাই ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বুদ্ধিবৃত্তিক বন্ধুত্বের একটি।
  • (৫) জার্মান-ফরাসি বার্ষিকী বা Deutsch-Französische Jahrbücher-এর পতন হওয়ার পর মার্কস প্যারিসের সবচেয়ে প্রগতিশীল জার্মান পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ লিখেন। এই প্রবন্ধের বিষয় ছিল “ইহুদি প্রশ্ন” এবং হেগেল।
  • (৬) লেখালেখির বাইরে মার্ক্সের সময় কাটতো ফরাসি বিপ্লব -এর ইতিহাস, Pierre-Joseph Proudhon এর রচনা এবং গ্রাম্য প্রোলেতারিয়াদের কথা পড়ে।
  • (৭) কার্ল মার্কস তরুণ হেগেলিয়ানদের সাথে তার সম্পর্কের পূনর্মূল্যায়ন করেন। ১৮৪৩ সালে বাউয়ারের নাস্তিকতার জবাবে রচিত “অন দ্য জিউইশ কোয়েশ্চ্‌ন” এই পুনর্মূল্যায়নেরই অংশ।
  • (৮) এই সময়ই কার্ল মার্কস আরেকটি প্রবন্ধ লিখেন যার বিষয় ছিল রাজনৈতিক মুক্তি, ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্ম কিভাবে মানুষের মুক্তির বিরোধিতা করে এবং বেসামরিক ও মানবাধিকার বিষয়ে সমকালীন দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা।
  • (৯) প্রত্যয়ী সাম্যবাদী এঙ্গেল্‌স মার্কসের অর্থনৈতিক গবেষণাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যান এবং কর্মজীবী শ্রেণীর অবস্থার প্রতি তার উৎসাহ সৃষ্টি করেন। এভাবেই মার্ক্স সাম্যবাদী হয়ে উঠেন।
  • (১০) ইকোনমিক অ্যান্ড ফিলোসফিক্যাল মেনুস্ক্রিপ্ট‌স অফ ১৮৪৪ রচনার মাধ্যমে কার্ল মার্কস সমাজতন্ত্র বাদ বিষয়ে তার মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন।
  • (১১) পুঁজিবাদী সমাজে বিচ্ছিন্ন কর্মজীবী শ্রেণীর বিপরীতে সাম্যবাদী সমাজে সম্পৃক্ত কর্মজীবী শ্রেণীর কথা বলেন। তার মতে, এই ধরনের সাম্যবাদী সমাজে সবাই নিজেদের স্বাধীনভাবে গড়ে তুলতে পারে এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে পারে।

প্যারিস থেকে কার্ল মার্কসকে বহিষ্কার (Expulsion of Karl Marx from Paris)

১৮৪৫ সালের জানুয়ারিতে যখন Vorwärts প্রুশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রেডরিক উইলিয়ামকে হত্যার প্রচেষ্টাকে অনুমোদন দেয় তখন প্যারিস থেকে কার্ল মার্কস সহ সব বিপ্লবীকে বহিষ্কার করা হয়।

কার্ল মার্কস সম্পর্কে উইলিয়াম এইচ হিউয়েন -এর অভিমত (William H. Heuen’s Opinion on Karl Marx)

প্রোলেতারিয়াদের অবস্থা নিয়ে মার্কসের বিশেষ আগ্রহ সম্পর্কে উইলিয়াম এইচ সিউয়েল জুনিয়র তার ওয়ার্ক অ্যান্ড রিভলিউশন ইন ফ্রান্স গ্রন্থে বলেন,

“… মার্ক্সের হঠাৎ করে প্রোলেতারীয় কারণ সম্বন্ধীয় মতবাদের প্রতি সমর্থনের সাথে এর আগে ফ্রান্সের সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সমাজের সাথে তার নিবিঢ় যোগাযোগের সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করা যায়।”

ব্রাসেলসে কার্ল মার্কস (Karl Marx in Brussels)

এঙ্গেল্‌সের সাথে কার্ল মার্কস ব্রাসেল‌স চলে আসেন।

  • (১) ব্রাসেলসেই ঐতিহাসিক বস্তুবাদকে সম্পূর্ণ করার জন্য কার্ল মার্কস ইতিহাস অধ্যয়ন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তার দ্য জার্মান আইডিওলজি-তে (১৮৪৫) বলেন, প্রতিটি ব্যক্তির স্বভাব-প্রকৃতি তাদের উৎপাদন নির্ধারণকারী বস্তুর শর্তের উপর নির্ভর করে।
  • (২) এর মাধ্যমেই কার্ল মার্কস উৎপাদনের নকশা প্রণয়ন করেন এবং শিল্পকেন্দ্রিক পুঁজিবাদের পতন ও তার বদলে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার ভবিষ্যদ্বাণী করেন।
  • (৩) এর পরই ফরাসি সমাজতন্ত্রের সমালোচনা প্রকাশ করেন যার নাম ছিল দ্য পোভার্টি অফ ফিলোসফি (১৮৪৭)। এটা ছিল Pierre-Joseph Proudhon রচিত “দ্য ফিলোসফি অফ পোভার্টি”-র (১৮৪৭) প্রত্যুত্তর।
  • (৪) বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে চিন্তা করলে মার্কসের দ্য জার্মান আইডিওলজি এবং দ্য পোভার্টি অফ ফিলোসফি-ই পরবর্তীকালে প্রকাশিত দ্য কমিউনিস্ট মেনিফেস্টোর মূল ভিত্তি। এই ইশতেহার ছিল কমিউনিস্ট লিগ-এর মূলনীতি।

কার্ল মার্কসের প্যারিসে প্রত্যাবর্তন (Karl Marx returns to Paris)

১৮৪৮ সালে ইউরোপ জুড়ে প্রচুর বিপ্লব সংঘটিত হয়। অনেক কিছুই বদলে যায়।

  • (১) এই মার্কসকে বন্দী করা হয় এবং পরবর্তীতে বেলজিয়াম থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরই মধ্যে বিপ্লবীরা ফ্রান্সের রাজা লুই-ফিলিপ কে রাজি করিয়ে মার্কসকে প্যারিসে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে।
  • (২) রাজার আমন্ত্রণেই কার্ল মার্কস প্যারিসে প্রত্যাবর্তন করেন। এই সময় প্যারিসে জুন ডেইস আপরাইজিং নামে পরিচিত বিপ্লবটি সংঘটিত হয়, যা মার্কস প্রত্যক্ষ করেন।

কার্ল মার্কসের জার্মানিতে প্রত্যাবর্তন (Karl Marx’s return to Germany)

প্যারিসে জুন ডেইস আপরাইজিং শেষ হওয়ার পর ১৮৪৯ সালে মার্কস জার্মানির Cologne শহরে ফিরে যান এবং Neue Rheinische Zeitung পত্রিকাটি প্রকাশ করতে শুরু করেন।

  • (১) এই পত্রিকা প্রকাশকালীন সময়েই তাকে দুই বার অভিযুক্ত করা হয়। প্রথম বার ১৮৪৯ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি press mis-demeanour crime প্রকাশের জন্য এবং পরের বার একই বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারি incitement to armed rebellion প্রকাশের জন্য।
  • (২) দুবারই কার্ল মার্কস অব্যাহতি পেয়ে গেলেও একসময় পত্রিকাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় এবং তাকে প্যারিসে ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়।
  • (৩) কিন্তু প্যারিস তাকে শরণার্থী হিসেবে গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়, অগত্যা লন্ডনে চলে যান। লন্ডন তাকে ইউরোপ মহাদেশের একজন শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করে।

লন্ডনে কার্ল মার্কস (Karl Marx in London)

১৮৪৯ সালের মে মাসে কার্ল মার্কস লন্ডনে যান এবং ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন।

  • (১) ১৮৫১ সালে নিউ ইয়র্ক ট্রিবিউন-এর স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে কাজ শুরু করেন, এতে তার জীবিকা অর্জনেও সুবিধা হয়।
  • (২) ১৮৫৫ সালে কার্ল মার্কসের সন্তান এডগার যক্ষ্ণায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এসব কারণে কয়েক বছর রাজনৈতিক অর্থনীতির কাজ বেশ ধীরগতিতে চলে।
  • (৩) ১৮৫৭ সালে ৮০০ পৃষ্ঠার একটি পাণ্ডুলিপির কাজ শেষ করেন। এই ৮০০পৃষ্ঠায় মূলধন, ল্যান্ডেড প্রোপার্টি, মজুরি শ্রম, রাষ্ট্র, বৈদেশিক বাণিজ্য এবং বিশ্ব বাজার বিষয়গুলো স্থান পায়। এই পাণ্ডুলিপিটি ১৯৪১ সালে Grundrisse der Kritik der Politischen Ökonomie (রাজনৈতিক অর্থনীতির সমালোচনার সাধারণ পরিচিতি) নামে প্রকাশিত হয়। বইটির সংক্ষিপ্ত নাম ছিল Grundrisse।
  • (৪) ১৮৫৯ সালে প্রকাশ করেন কন্ট্রিবিউশন টু দ্য ক্রিটিক অফ পলিটিক্যাল ইকোনমি যা তার অর্থনীতি বিষয়ক পরিপক্ব প্রকাশনাগুলোর মধ্যে প্রথম হিসেবে বিবেচিত হয়।
  • (৫) একইসাথে সংবাদ প্রতিবেদক হিসেবে কার্ল মার্কস আমেরিকার গৃহযুদ্ধের (১৮৬১-১৯৬৫) ইউনিয়ন কারণ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেন।

কার্ল মার্কস রচিত তিন খণ্ড (Three volumes by Karl Marx)

১৮৬০-এর দশকের প্রথম দিকে কার্ল মার্কস তিনটি খণ্ড রচনা শেষ করেন।

  • (১) প্রথম খণ্ডের নাম ‘থিওরিস অফ সারপ্লাস ভ্যালু’। এর প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল কয়েকজন রাজনৈতিক অর্থনীতি তাত্ত্বিকদের (বিশেষত অ্যাডাম স্মিথ ও ডেভিড রিকার্ডো) মতবাদ।
  • (২) সম্পাদক Karl Kautsky মার্কসের মৃত্যুর পর এটি প্রকাশ করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত না হলেও এই খণ্ডকে দাস কাপিটাল-এর “চতুর্থ পুস্তক” হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। অর্থনৈতিক চিন্তাধারার ইতিহাস নিয়ে জ্ঞানগর্ভ রচনাগুলোর এটাই ছিল প্রথম।

কার্ল মার্কস রচিত দাস ক্যাপিটাল গ্ৰন্থের প্রকাশ (Publication of Das Capital by Karl Marx)

কার্ল মার্কসের বিখ্যাত কীর্তি দাস কাপিটাল ১৮৬৭ সালে তিন খণ্ডে প্রকাশিত হয়।

  • (১) প্রথম খণ্ড ডেভিড রিকার্ডো প্রণীত মূল্যের শ্রম নীতি-কে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে এবং সে দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বৃত্ত মূল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শ্রমিকদের শোষণকারী পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার বিশ্লেষণ করে।
  • (২) কার্ল মার্কস এতে বলেন, এই উদ্বৃত্ত মূল্য ও শোষণের কারণে একসময় পুঁজিবাদীদের লাভের হার একেবারে কমে যাবে এবং যথারীতি শিল্পকেন্দ্রিক পুঁজিবাদের পতন ঘটবে।
  • (৩) দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ড মার্ক্সের জীবদ্দশায় পাণ্ডুলিপি পর্যায়েই থেকে যায়, তিনি এ দুটোর আরও উন্নয়ন ঘটান। তার মৃত্যুর পর এঙ্গেলস এগুলো সমাপ্ত করেন এবং প্রকাশ করেন।

ইন্টারন্যাশনাল -এ কার্ল মার্কসের কীর্তি (Karl Marx’s achievements in the International)

কার্ল মার্কস প্রথম ইন্টারন্যাশনাল – এর কাজেও বিশেষ ভাবে যুক্ত ছিলেন।

  • (১) ১৮৬৪ সালে মূল জেনারেল কাউন্সিলে নির্বাচিত হন। কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রথম বার্ষিক সভার প্রস্তুতি গ্রহণের দায়িত্ব নেন।
  • (২) মিখাইল বাকুনিন (১৮১৪-১৮৬৭) এর অ্যানার্কিস্ট দলের সাথে অন্তর্ঘাতী বিরোধে নেতৃত্ব দানের দায়িত্ব তার উপরই পড়ে। এই বিরোধে তিনি জয়ী হন।
  • (৩) ১৮৭২ সালে তারই সমর্থনে জেনারেল কাউন্সিলের সভাস্থল লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্কে সরিয়ে নেওয়ার কারণে ইন্টারন্যাশনালের পতন ত্বরান্বিত হয়।
  • (৪) ইন্টারন্যাশনালের সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল ১৮৭১ সালের প্যারিস কমিউন। এই কমিউনের মাধ্যমে প্যারিসের বিপ্লবীরা ফরাসি সরকারের বিরোধিতা করে দুই মাস শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে।
  • (৫) শেষ পর্যন্ত রক্তাক্ত সংঘর্ষের মাধ্যমে সরকার পুনরায় নেতৃত্ব নিয়ে নেয়। মার্কস তার দ্য সিভিল ওয়ার ইন ফ্রান্স রচনায় কমিউনকে সমর্থন করেছিলেন।

জীবনের শেষ পর্যায়ে কার্ল মার্কসের কৃতিত্ব (Achievements of Karl Marx at the end of life)

জীবনের শেষ দশকে তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে, আগের মত প্রত্যয়ী বুদ্ধবৃত্তিক আন্দোলন পরিচালনায় অক্ষম হয়ে পড়েন।

  • (১) অবশ্য সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে বক্তব্য প্রদান থেকে কখনই তিনি বিরত ছিলেন না, বিশেষত জার্মানি ও রাশিয়ার রাজনীতি নিয়ে কথা বলতেন।
  • (২) Critique of the Gotha Programme-এ তিনি Wilhelm Liebknecht এবং August Bebel নামক দু’জন জার্মান অনুসারীর প্রবণতার বিরোধিতা করেন। এই দুজন ফের্দিনান্দ লাসালের রাষ্ট্রীয় সমাজতন্ত্রের সাথে সমঝোতা করার মাধ্যমে একটি ঐক্যবদ্ধ সমাজতান্ত্রিক দলের স্বার্থের পক্ষাবলম্বন করেছিল।
  • (৩) এই সময় রাশিয়ার মির গ্রামে জমির উপর সাধারণ মালিকানা প্রবর্তন করা হয়েছিল। এইসব দেখে কার্ল মার্কস গভীরভাবে প্রত্যাশা করেছিলেন যে, অচিরেই রাশিয়ায় পুঁজিবাদী ব্যবস্থার পতনের মাধ্যমে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।

কার্ল মার্কসের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ (Important works of the life of Karl Marx)

মার্কসের  জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে তিন খণ্ডে রচিত পুঁথি এবং ফ্রেডরিখ এঙ্গেলসের সাথে যৌথভাবে রচিত কমিউনিস্ট ইশতেহার (১৮৪৮)।

কার্ল মার্কসের চিন্তাধারার বিশেষ দিক দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ (Dialectical materialism is a special aspect of Karl Marx’s thought)

দার্শনিক কার্ল মার্কসের চিন্তাধারার অন্যতম দিক ছিল দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ।

  • (১) দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ অনুসরণ করে কার্ল মার্কস দাবি করেন যে পূর্বতন সমাজব্যবস্থাগুলোর মতো পুঁজিবাদও তার অন্তঃস্থ বিভেদ ও শ্রেণী সংগ্রামের দরুন ভেঙে পড়বে এবং সমাজতন্ত্রের জন্ম হবে।
  • (২) কার্ল মার্কস মনে করেন যে, অস্থিতিশীল ও সংকটপ্রবণ পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ক্রমাগত শ্রেণী সংগ্রামের ভিতর দিয়ে মজদুর শ্রমজীবী শ্রেণীর মধ্যে শ্রেণীচেতনার জন্ম হবে।
  • (৩) এই শ্রেণীচেতনার ফলে তাদের মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠবে এবং এই ঐক্যবদ্ধ শ্রমজীবী শ্রেণী নিষ্ঠুর শাসক শ্রেণীকে ক্ষমতাচ্যুত করে শ্রেণীহীন কাম্য সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলবে।
  • (৪) কার্ল মার্কস মনে করেন বিদ্যমান নিষ্ঠুর পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অবসান করতে এবং নিজেদের মুক্তির খাতিরে মজদুর শ্রমজীবী শ্রেণীগুলোর ঐক্যবদ্ধ হয়ে সশস্ত্র বিপ্লবের বিকল্প নেই।

কার্ল মার্কসের চিন্তা ও দর্শন (Thoughts and Philosophy of Karl Marx)

সমাজ, অর্থনীতি, ও রাজনীতি সংক্রান্ত মার্কসের তত্ত্বসমূহ মার্কসবাদ নামে পরিচিত। মার্কসের ইতিহাস দর্শন ঐতিহাসিক বস্তুবাদ নামে পরিচিত।

  • (১) কার্ল মার্কসের মতে মানুষের প্রকৃতিগত স্বভাবের মতো নমনীয় আর কিছু নেই। ‘থিসিস অন ফয়েরবাক’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভে তিনি লিখেছেন, ‘সামাজিক সম্পর্কগুলোর যূথবদ্ধতাই মনুষ্যচরিত্রের সার।’
  • (২) তিনি বলেন, ধরা যাক, সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামো বদলে ফেলার মাধ্যমে আপনি সামাজিক সম্পর্কগুলো পাল্টে দিলেন এবং পুঁজিবাদী ও শ্রমিকদের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক বিলুপ্ত করে দিলেন; তাহলে দেখা যাবে পুঁজিবাদী সমাজে বেড়ে ওঠা মানুষের চেয়ে এই নতুন সমাজের মানুষ একেবারে আলাদা ধরনের হয়ে উঠেছে।
  • (৩) কার্ল মার্কস হেগেলের ‘আদর্শিক’ ব্যাখ্যাটিকে এমন একটি ‘বস্তুগত’ আদর্শে রূপান্তরিত করেছেন, যে আদর্শে আমাদের জাগতিক বস্তুগত অভাব মেটানোর সন্তুষ্টিই ইতিহাসের চালিকাশক্তি হিসেবে গণ্য করা হয় এবং যে আদর্শে একমাত্র শ্রেণিসংগ্রামকেই মুক্তি অর্জনের পথ মনে করা হয়।
  • (৪) কার্ল মার্কসের বাণী হল – “শ্রমিক শ্রেণিই হবে বিশ্বজনীন মুক্তির হাতিয়ার।” কারণ এই আদর্শ ব্যক্তিগত সম্পদের ধারণাকে অস্বীকার করে এবং যৌথ মালিকানাভিত্তিক উৎপাদনের পথ দেখিয়ে দেয়।
  • (৫) কার্ল মার্কস মনে করতেন, যখন কর্মীরা যৌথ মালিকানাভিত্তিক উৎপাদনে আত্মনিয়োগ করবে তখন কার্ল মার্কসের ভাষায় ‘সহযোগিতামূলক সম্পদের ঝরনাধারা’ ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পদ যে গতিতে ছড়ায়, তার চেয়ে অনেক বেশি পর্যাপ্ত আকারে সমাজে প্রবাহিত হবে

কার্ল মার্কসের শেষ জীবন (The Last Life of Karl Marx)

১৮৮১ সালের ডিসেম্বরে জেনি মারা যাওয়ার পর কার্ল মার্কস এক ধরনের catarrh-য় আক্রান্ত হন। এই রোগ তাকে জীবনের শেষ ১৫ মাস অসুস্থ করে রাখে। এই রোগ পরবর্তীতে ব্রঙ্কাইটিস ও সব শেষে pleurisy তে পরিণত হয়।

কার্ল মার্কসের মৃত্যু (Death of Karl Marx)

pleurisy-র কারণেই ১৮৮৩ সালের ১৪ই মার্চ তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় কার্ল মার্কসের কোন জাতীয়তা তথা দেশ ছিল না, তাকে ১৭ই মার্চ লন্ডনের হাইগেট সেমিটারি-তে সমাহিত করা হয়।

কার্ল মার্কসের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান (Funeral of Karl Marx)

কার্ল মার্কসের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে মাত্র ১১ জন ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। এ সম্পর্কে এঙ্গেল্‌স লিখেন,

১৪ই মার্চ বিকেল পৌনে তিনটায় জীবিতদের মাঝে সেরা চিন্তাবিদ তার চিন্তার পরিসমাপ্তি ঘটান। মাত্র দুই মিনিটের জন্য আমরা তাকে রেখে বাইরে গিয়েছিলাম, ফিরে এসে তাকে তার আর্মচেয়ারে বসা অবস্থায় পেলাম, তিনি ততক্ষণে শান্তিতে নিদ্রায় গিয়েছেন- চিরদিনের জন্য।

কার্ল মার্কসের সমাধি ফলক (Tombstone of Karl Marx)

দুটি বাক্য লেখা আছে কার্ল মার্কসের সমাধি ফলকে।

  • (১) প্রথমে লেখা আছে কমিউনিস্ট মেনিফেস্টোর শেষ লাইন “দুনিয়ার মজদুর এক হও” (Workers of all land unite)।
  • (২) এরপর লেখা আছে ১১তম থিসিস অন ফয়ারবাক-এর এঙ্গেলীয় সংস্করণের বিখ্যাত উক্তি, “এতদিন দার্শনিকেরা কেবল বিশ্বকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যাই করে গেছেন, কিন্তু আসল কাজ হল তা পরিবর্তন করা।” (The Philowophers have only interpreted the world in various ways – The point however is to change it)

কার্ল মার্কসের সমাধি সৌধ (Karl Marx Mausoleum)

১৯৫৪ সালে গ্রেট ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টি কার্ল মার্কসের সমাধিতে একটি সৌধ স্থাপন করে যার শীর্ষে আছে মার্ক্সের মুখমণ্ডলের ভাস্কর্য। লরেন্স ব্র্যাডশ এই মুখাবয়বটির স্থপতি। প্রকৃত সমাধিটি সমতল।

উপসংহার :- সর্বহারার হয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে কার্ল মার্কস নিজেই একজন সর্বহারা ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন। দীন দরদি, দীপ্ত উজ্জ্বল সমাজতান্ত্রিক এই ব্যক্তি হিসেবে কার্ল মার্কস আজও অমর হয়ে আছেন।

(FAQ) কার্ল মার্কস সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. কার্ল মার্কসের বিখ্যাত গ্রন্থ কোনটি ?

দাস ক্যাপিটাল (১৮৬৭) ।

২. কার্ল মার্কস কোন দেশে জন্মগ্রহণ করেন ?

জার্মানি ।

৩. কার্ল মার্কসের মতবাদ কি নামে পরিচিত?

মার্কসবাদ।

Leave a Comment