প্রাশিয়া

জার্মান রাষ্ট্র প্রাশিয়া প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক রাষ্ট্র, রাজধানী, বৃহৎ রাজ্য, রাজা দ্বিতীয় ফ্রেডেরিক, ভিয়েনা কংগ্রেস, বিসমার্ক, মূল শক্তি প্রাশিয়া, জার্মান সাম্রাজ্যের কেন্দ্র, প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত, আধুনিক জার্মানির অন্তর্ভুক্ত, সাম্প্রতিক অবস্থা ও বিলুপ্তি সম্পর্কে জানবো।

প্রাশিয়া

বিষয়প্রাশিয়া
বৈশিষ্ট্যজার্মান রাষ্ট্র
বিশিষ্ট রাজাদ্বিতীয় ফ্রেডারিক
বিশিষ্ট মন্ত্রীবিসমার্ক
রাজধানীবার্লিন
বর্তমান অবস্থাবিলুপ্ত
বিলুপ্তির সময়১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ
প্রাশিয়া

ভূমিকা :- বাল্টিক সাগরের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে একটি জার্মান রাষ্ট্র ছিল প্রাশিয়া। ১৮৭১ সালে প্রাশিয়ান শাসনের অধীনে জার্মান রাজ্যগুলিকে একত্রিত করে জার্মান সাম্রাজ্য গঠিত হয়।

ঐতিহাসিক রাষ্ট্র

সাম্প্রতিককালের একটি ঐতিহাসিক রাষ্ট্র প্রাশিয়া, যা ব্রান্ডেনবার্গ অঞ্চলে গড়ে উঠছিল। জার্মান এবং ইউরোপীয় ইতিহাসে প্রাশিয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করেছিল। প্রাশিয়ার শেষ রাজধানী ছিল বার্লিন।

রাজধানী

কয়েক শতাব্দী ধরে হাউস অফ হোহেনজোলার্ন প্রাশিয়া শাসন করেছিল। প্রাশিয়ার প্রথম রাজধানী ছিল কোনিৎসবার্গ। ১৭০১ সালে প্রাশিয়া রাজ্যে পরিণত হলে রাজধানী হয় বার্লিন।

বৃহৎ রাজ্য

প্রাশিয়া একটি রাজ্য হওয়ার পরপরই মহান শক্তির সারিতে প্রবেশ করে। এটি অষ্টাদশ এবং উনিশ শতকে ক্রমশ বড় এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

রাজা দ্বিতীয় ফ্রেডেরিক

অষ্টাদশ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীতে প্রাশিয়া ইউরোপ -এর একটি বৃহৎ শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। তখন এই সাম্রাজ্যের রাজা ছিলেন দ্বিতীয় ফ্রেডেরিক (১৭৪০-১৭৮৬)।

ভিয়েনা কংগ্রেস

নেপোলিয়ন -এর পরাজয়ের পরে ভিয়েনার কংগ্রেসে (১৮১৪-১৮১৫) ইউরোপের মানচিত্রকে নতুন করে তুলেছিল। এই সময় প্রাশিয়া কয়লা সমৃদ্ধ রুঢ় সহ সমৃদ্ধ নতুন অঞ্চলগুলি অর্জন করে।

বিসমার্ক

ঊনবিংশ শতাব্দীতে চ্যান্সেলর অটো ফন বিসমার্ক সমগ্র জার্মান জাতি অধ্যুষিত অঞ্চলকে এক্যবদ্ধ করার কথা বলেন এবং এর মাধ্যমে সংকুচিত জার্মানি গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এই সংকুচিত জার্মানি থেকে অস্ট্রিয় সম্রাজ্যকে বাদ দেয়া হয়।

মূল শক্তি প্রাশিয়া

১৮৬৭ সালে যখন উত্তর জার্মান কনফেডারেশন গঠিত হয় তখন প্রাশিয়াই ছিল এর মূল শক্তি। এই কনফেডারেশনটিই ১৮৭১ সালে জার্মান সম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।

জার্মান সাম্রাজ্যের কেন্দ্র

ভিয়েনা সম্মেলন -এর পর দেশটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে দ্রুত শক্তিশালী হলে ১৮৬৭ সালে উত্তর জার্মান কনফেডারেশন এবং তারপর ১৮৭১ সালে জার্মান সাম্রাজ্যের কেন্দ্রে পরিণত হয়।

প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ -এর পর জার্মানিতে হোহেনজোলেন রাজত্বের অবসান হলে ১৯১৯ সালে প্রাশিয়া ওয়েমার প্রজাতন্ত্র -এর অন্তর্ভুক্ত হয়।

আধুনিক জার্মানির অন্তর্ভুক্ত

‘প্রাশিয়া’ শব্দটি পুরাতন প্রাশিয় ভাষা থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে, যার সাথে লিথুয়ানিয়া এবং লাটভিয়া সহ অন্যান্য বাল্টিক রাষ্ট্রের জনগোষ্ঠীর মেলবন্ধন ছিল। পরবর্তীতে প্রুশিয়া টিউটোনিক নাইটদের দ্বারা অধিকৃত হয় এবং আরও পরে একসময় জার্মানীকরণের মাধ্যমে আধুনিক জার্মানির অন্তর্ভুক্ত হয়।

সংস্কৃতি রূপে স্থায়িত্ব

১৯৩৪ সালে নাৎসি দল -এর মাধ্যমে প্রাশিয়া দেশটি বিলুপ্ত হয় এবং ১৯৪৫ সালে মিত্রশক্তি দ্বারা আবারও দেশ হিসেবে এর স্বকীয়তা কেড়ে নেওয়া হয়। তখন থেকেই প্রাশিয়া একটি সংস্কৃতি হিসেবে টিকে আছে।

সাম্প্রতিক অবস্থা

বর্তমানকালেও প্রাশিয়ান গুণ নামে একটি নৈতিক শব্দ প্রচলিত আছে, যার অর্থ সঠিক সংগঠন, আত্মত্যাগ, আইনের শাসন, আনুগত্য, নির্ভরশীলতা, সংযম, বিনয় এবং অধ্যবসায়।

বিলুপ্তি

১৯৩২ সালে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রাঞ্জ ফন প্যাপেনের কাছে প্রাশিয়ান সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর করার একটি জরুরি ডিক্রির মাধ্যমে এবং ১৯৪৭ সালে মিত্রদের ডিক্রির মাধ্যমে ডি জুর দ্বারা প্রাশিয়া বিলুপ্ত হয়ে যায়।

উপসংহার :- পেশাদারিত্ব, আগ্রাসীতা, সামরিকবাদ এবং রক্ষণশীলতাকে জোর দেওয়ার জন্য প্রাশিয়ান শব্দটি প্রায়শই ব্যবহার করা হয়েছে, বিশেষ করে জার্মানির বাইরে।

(FAQ) প্রাশিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. কার নেতৃত্বে জার্মানি ঐক্যবদ্ধ হয়?

প্রাশিয়া।

২. বিসমার্ক কে ছিলেন?

প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।

৩. প্রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য রাজা কে ছিলেন?

দ্বিতীয় ফ্রেডারিক।

৪. বর্তমানে প্রাশিয়া কার অন্তর্ভুক্ত হয়?

জার্মানি।

Leave a Comment