ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার প্রসঙ্গে দেশের প্রচলিত শিক্ষা, সরকারের মনোভাব, পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রচলন, খ্রিস্টান মিশনারিদের অবদান, ডেভিড হেয়ার ও রামমোহন রায়ের ভূমিকা, ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন, গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের শাসনকাল, লর্ড মেকলের প্রস্তাব, ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ঘোষণা, লর্ড হার্ডিঞ্জের ঘোষণা, উডের ডেসপ্যাচ, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, নারী শিক্ষা, পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি ও ফলাফল সম্পর্কে জানবো।
ঔপনিবেশিক ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার
ঐতিহাসিক ঘটনা | ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার |
কলকাতা মাদ্রাসা | ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দ |
এশিয়াটিক সোসাইটি | ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দ |
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ | ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ |
হিন্দু কলেজ | ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দ |
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ | ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দ |
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় | ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ |
ভূমিকা :- বাণিজ্যিক স্বার্থে ভারত -এ এসে একটি ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা স্থাপন করলেও ইংরেজদের সংস্পর্শে আসার ফলে ভারত ইতিহাসে এক নবযুগের সূত্রপাত হয়। পাশ্চাত্য সভ্যতা জরাজীর্ণ ভারতীয় সভ্যতা ও সমাজ জীবনের ওপর এক চরম আঘাত হানে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সভ্যতার সংঘর্ষে যে নব-ভারত গড়ে ওঠে তার মূলে ছিল পাশ্চাত্য শিক্ষা।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের পূর্বে দেশের প্রচলিত শিক্ষা
- (১) ইংরেজ শাসনের সূচনা-পর্বে হিন্দু-মুসলিম ভারতবাসী পাঠশালা, টোল, মক্তব ও মাদ্রাসায় আরবি, ফারসি ও সংস্কৃত -এর মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করত। পাঠশালা ও মক্তবের শিক্ষা সাধারণ কিছু প্রাথমিক জ্ঞান ও ধর্মীয় উপাখ্যান পাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
- (২) ওয়ার্ড-এর বিবরণ থেকে জানা যায় যে, ১৮০৩খ্রিস্টাব্দে বাংলায় প্রায় প্রতি গ্রামে পাঠশালা ছিল। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম অ্যাডামের প্রতিবেদনে বাংলা প্রদেশে প্রায় এক লক্ষ পাঠশালার অস্তিত্বের কথা জানা যায়। তিনি আরও বলেন যে, আঞ্চলিক প্রভেদ থাকা সত্ত্বেও সমগ্র ভারতে মোটামুটি একই ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলিত ছিল।
- (৩) টোল ও মাদ্রাসা ছিল উচ্চ শিক্ষাকেন্দ্র এবং সেখানে সংস্কৃত ও আরবি-ফারসির মাধ্যমে শাস্ত্র গ্রন্থের চর্চা হত। নবদ্বীপ, মিথিলা, বারাণসী, বিক্রমপুর প্রভৃতি স্থানের টোলগুলি ছিল সংস্কৃত-চর্চার উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র। পাটনা, মুর্শিদাবাদ, দিল্লি, লাহোর প্রভৃতি স্থানের মাদ্রাসাগুলি আরবি-ফারসি চর্চার কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখযোগ্য ছিল।
- (৪) উইলিয়াম অ্যাডামের প্রতিবেদন থেকে বাংলা প্রদেশে এই ধরনের প্রায় ১৮০০ টোলের কথা জানা যায়। বলা বাহুল্য, শিক্ষার অবস্থা সেদিন এমনই শোচনীয় ছিল যে, আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল, গণিত, প্রকৃতি-বিজ্ঞান প্রভৃতি সম্পর্কে মানুষের কোনও ধারণাই ছিল না।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ক্ষেত্রে সরকারি মনোভাব
- (১) ইংরেজ শাসনের সূচনা-পর্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে ইংরেজি শিক্ষা বিস্তারের বিরোধী ছিল। কোম্পানি মনে করত যে, ইংরেজি শিক্ষা পেলে ভারতবাসীর মনে স্বাধীনতা স্পৃহা বৃদ্ধি পাবে এবং হয়তো ভারত কোম্পানির হস্তচ্যুত হয়ে যাবে।
- (২) এই কারণে কোম্পানি ভারতে সংস্কৃত ও আরবি-ফারসি শিক্ষাতেই উৎসাহ দিত। প্রাচ্যবিদ্যার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক বড়লাট ওয়ারেন হেস্টিংস আরবি-ফারসি ও মুসলিম আইন চর্চার উদ্দেশ্যে ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে ‘কলকাতা মাদ্রাসা’ প্রতিষ্ঠা করেন।
- (৩) কলকাতা সুপ্রিম কোর্ট-এর অন্যতম বিচারপতি স্যার উইলিয়ম জোন্স-এর উদ্যোগে প্রাচ্যবিদ্যা চর্চার উদ্দেশ্যে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’ স্থাপিত হয়। বারাণসীর ইংরেজ রেসিডেন্ট জোনাথন ডানকান সংস্কৃত শিক্ষার উন্নতির জন্য ‘বারাণসী সংস্কৃত কলেজ’ (১৭৯২ খ্রিঃ) প্রতিষ্ঠা করেন।
- (৪) এই সময় ভারতে কর্মরত উচ্চপদস্থ ইংরেজ কর্মচারীদের ভারতীয় ভাষা, আইন, সংস্কৃতি ও রীতিনীতি শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে বড়লাট লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’ স্থাপন করেন। বাংলা সাহিত্যের বিকাশে এই কলেজের কৃতী অধ্যাপকদের ভূমিকা খুবই উল্লেখযোগ্য ছিল। এই সব প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষানীতি সম্পর্কে শাসকদের মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়।
ঔপনিবেশিক ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রচলন
- (১) চার্লস গ্রান্ট নামে কোম্পানির এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী এ দেশে সর্বপ্রথম একটি সুসংবদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি জানান। ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে লিখিত এক পুস্তিকায় তিনি ভারতীয় সমাজ, ধর্ম ও চরিত্রের তীব্র নিন্দা করে বলেন যে, ইংরেজি শিক্ষা বিস্তৃত হলেই ভারতীয়দের পচনশীল সমাজ ও অধঃপতিত নৈতিকতা উন্নত হবে।
- (২) বলা বাহুল্য, কোম্পানি সেদিন তাঁর কথায় কর্ণপাত করে নি।কিন্তু ইংরেজি শিক্ষার দাবিকে আর বেশি দিন উপেক্ষা করা সম্ভব হল না। ইংরেজ রাজত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ দেশে ইংরেজদের আইন-আদালত প্রতিষ্ঠিত হতে লাগল।
- (৩) ইংরেজ বণিকরাও নানা স্থানে তাদের বাণিজ্যাগার স্থাপন করতে লাগল। তাদের অধীনে কর্মরত ভারতীয়দের ইংরেজি জ্ঞানের প্রয়োজন ছিল। মধ্যবিত্ত বাঙালি চাকরি লাভের আশায় ইংরেজি শিক্ষার প্রতি আকর্ষণ বোধ করতে লাগল।
- (৪) এই সুযোগে কয়েকজন বিদেশি কলকাতায় ইংরেজি শিক্ষার বিদ্যালয় খুলে বসল। এগুলির মধ্যে শোরবোর্ন, মার্টিন, বাউল, আরটুন পিট্রাস, ডেভিড ড্রামন্ড পরিচালিত বিদ্যালয়গুলি উল্লেখযোগ্য।
- (৫) এখানে উল্লেখ্য যে, প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর, রামগোপাল ঘোষ প্রমুখ নেতৃমণ্ডলী শোরবোর্ন-পরিচালিত বিদ্যালয় এবং ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলন -এর প্রবর্তক হেনরি ডিরোজিও ডেভিড ড্রামন্ড-পরিচালিত বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ক্ষেত্রে খ্রিস্টান মিশনারিদের অবদান
- (১) ভারতে ইংরেজি শিক্ষাবিস্তারের ইতিহাসে খ্রিস্টান মিশনারিদের ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ। খ্রিস্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে তাঁরা ভারতের নানা অঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে থাকেন।
- (২) ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে মার্শম্যান, ওয়ার্ড ও উইলিয়ম কেরি শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। শ্রীরামপুরের মিশনারিদের উদ্যোগেই সর্বপ্রথম বাংলা ও অপরাপর ২৬টি ভারতীয় ভাষায় বাইবেলের অনুবাদ প্রকাশিত হয়।
- (৩) ভারতে মুদ্রাযন্ত্রের প্রবর্তন, প্রথম বাংলা সংবাদপত্র ‘সমাচার দর্পণ‘ প্রকাশ (১৮১৮ খ্রিঃ) এবং বাংলা ও তামিল ভাষায় ব্যাকরণ রচনার গৌরবের অধিকারী শ্রীরামপুররের মিশনারীরা।
- (৪) কেরি ও তাঁর সহযোগীরা বাংলা গদ্য সাহিত্যের অন্যতম পথপ্রদর্শক রূপে চিহ্নিত। তাঁদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত মোট ১২৬টি বিদ্যালয়ে প্রায় দশ হাজার ভারতীয় ছাত্র পাশ্চাত্য শিক্ষার সুযোগ পায়। লন্ডন মিশনারি সোসাইটি-র রবার্ট মে চুঁচড়ায় একটি ইংরেজি শিক্ষার বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরে তাঁর উদ্যোগে ৩৬টি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
- (৫) শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশন (১৮০০ খ্রি:), লন্ডন মিশনারিসোসাইটি (১৭৯৫ খ্রিঃ) ও চার্চ মিশনারি সোসাইটি-র (১৭৯৯ খ্রিঃ) উদ্যোগে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল – এমন কী চুঁচুড়া, বর্ধমান, বহরমপুর, কালনা, মালদহ ও দক্ষিণ ভারতে বহু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
- (৬) প্রধানত খ্রিস্টধর্ম-সংক্রান্ত শিক্ষা দেওয়া হলেও এই সব বিদ্যালয়গুলিতে ইতিহাস, ভূগোল, ব্যাকরণ প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হত। ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ব্যাপটিস্ট মিশন শ্রীরামপুরে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করে।
- (৭) বাংলায় স্কটিশ মিশনের প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার ডাফ বেশ কয়েকটি ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য হল ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ‘জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন’ (বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজ)।
- (৮) মিশনারিদের উদ্যোগে শিবপুরে বিশপ কলেজ(১৮২০ খ্রিঃ), মাদ্রাজে ‘খ্রিস্টান কলেজ’ (১৮৩৭ খ্রিঃ), বোম্বাই-এ উইলসন কলেজ’ (১৮৩২ খ্রিঃ) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়। বেলজিয়াম থেকে আগত জেসুইট মিশনারিরা ‘সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ’ (১৮৩৫ খ্রিঃ) ও ‘লরেটো হাউস কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ক্ষেত্রে ডেভিড হেয়ার এবং রামমোহন রায়ের অবদান
- (১) এই সময় কয়েকজন মুক্তমনা ভারতীয় ও বিদেশির উদ্যোগে বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সব ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন রামমোহন রায়, রাজা রাধাকান্ত দেব, দ্বারকানাথ ঠাকুর, বর্ধমান-এর রায়বাহাদুর তেজচন্দ্র রায়, জয়নারায়ণ ঘোষাল, ডেভিড হেয়ার প্রমুখ।
- (২) বাংলায় ইংরেজি শিক্ষাবিস্তারের ইতিহাসে স্কটল্যাণ্ডের ঘড়ি নির্মাতা ডেভিড হেয়ার এবং রামমোহন রায়ের নাম চিরস্মরণীয়। ১৮১৬ খ্রিস্টাব্দে রামমোহন রায় নিজ উদ্যোগে কলকাতায় ‘অ্যাংলো-হিন্দু স্কুল’ নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
- (৩) ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দের২০শে জানুয়ারি ডেভিড হেয়ার, রাধাকান্ত দেব, বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায় এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি স্যার এডওয়ার্ড হাইড ইস্ট-এর উদ্যোগে ‘হিন্দু কলেজ’ (পরবর্তীকালে প্রেসিডেন্সি কলেজ, ১৮৫৫ খ্রিঃ) স্থাপিত হয়।
- (৪) কথিত আছে যে, হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রামমোহন রায় তাঁদের যথেষ্ট সহায়তা করেন।যদিও ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার এই ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করেন।
- (৫)১৮১৭ খ্রিস্টাব্দেই হেয়ার কলকাতায় পটলডাঙ্গা একাডেমি (হেয়ারস্কুল) নামে একটি ইংরেজি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এছাড়া, তাঁর উদ্যোগেই ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনা ও বিভিন্ন স্থানে ইংরেজি বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্দেশ্যে যথাক্রমে ‘ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি’ (১৮১৭ খ্রিঃ) এবং ‘ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি’ (১৮১৮ খ্রিঃ) প্রতিষ্ঠিত হয়।
- (৬) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে স্কটল্যাণ্ডের ধর্মপ্রচারক আলেকজান্ডার ডাফ কলকাতায় জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন স্থাপনে উদ্যোগী হলে রামমোহন তাঁর প্রধান সহায়ক ছিলেন।
১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন
- (১) ১৮১০ খ্রিস্টাব্দে গভর্নর জেনারেল মিন্টো এক রিপোর্টে ভারতে শিক্ষার শোচনীয় অবস্থার কথা তুলে ধরেন এবং ভারতীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে কোম্পানির কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানান।
- (২) খ্রিস্টান মিশনারিরাও ইংল্যাণ্ড ও ভারতে কোম্পানির শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। এই সময় ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন পাশ হয় এবং কোম্পানি আগামী বিশ বছরের জন্য ভারতে শাসনাধিকার পায়।
- (৩) এই আইনের একটি ধারায়বলা হয় যে, ভারতীয় জনশিক্ষার জন্য কোম্পানি ‘প্রতি বছর অন্তত এক লক্ষ টাকা ব্যয় করবে’। এই উদ্দেশ্যে ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে ‘জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন’ বা ‘জনশিক্ষা কমিটি’ গঠিত হয়।
- (৪) জনশিক্ষা কমিটির সদস্যরা কলকাতায় একটি কলেজ’ (১৮২৩ খ্রিঃ) প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কমিটির সদস্যগণের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রামমোহন রায় তদানীন্তন গভর্নর জেনারেল লর্ড আমহার্স্টকে একটি পত্র লেখেন (১১ই ডিসেম্বর, ১৮২৩ খ্রিঃ)।
- (৫) এই পত্রে রামমোহন সংস্কৃত শিক্ষার অসারতা প্রমাণ করে ভারতে আধুনিক বৈজ্ঞানিক ও ইংরেজি শিক্ষা প্রবর্তনের দাবি জানান। রামমোহনের এই পত্রটি ভারতীয় নবজাগরণ -এর ইতিহাসে এক মূল্যবান দলিল।
গভর্নর জেনারেল বেন্টিঙ্কের শাসনকাল
- (১) উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের শাসনকালে (১৮২৮-৩৫ খ্রিঃ) সরকারি শিক্ষানীতিতে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে। এই সময় টমাস ব্যাবিংটন মেকলে নামে এক খ্যাতনামা পণ্ডিত তাঁর আইন সচিব হয়ে ভারতে আসেন এবং তিনি ‘কমিটি অব পাবলিক ইনষ্ট্রাকশনের সভাপতি নিযুক্ত হন।
- (২) এই সময় কমিটি প্রাচ্য রীতি ও প্রতীচ্য রীতিতে শিক্ষাদান সম্পর্কে দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এক দলকে বলা হত প্রাচ্যবাদী বা ওরিয়েন্টালিস্ট (Orientalist) এবং অপর দলটি ছিল পাশ্চাত্যবাদী বা অ্যাংলিসিস্ট (Anglicist)।
- (৩) উগ্র পাশ্চাত্যবাদী মেকলে প্রতীচ্য রীতিতে শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন। তার সমর্থকদের মধ্যে ছিলেন আলেকজান্ডার ডাফ, সন্ডার্স, কলভিন প্রমুখ পাশ্চাত্যবাদিগণ। অপরপক্ষে, প্রাচ্যবিদ্যার সমর্থকদের মধ্যে ছিলেন বিশিষ্ট প্রাচ্যবিদ্ এইচ. টি. প্রিন্সেপ, কোলব্রুক ও উইলসন। তাঁরা প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য ও দর্শন সম্পর্কে শিক্ষাদানে আগ্রহী ছিলেন।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ক্ষেত্রে লর্ড মেকলের প্রস্তাব
১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২রা ফেব্রুয়ারি মেকলে তাঁর বিখ্যাত প্রস্তাব (Minutes) বড়লাটের কাছে পেশ করেন। এই প্রস্তাবের বিভিন্ন দিকগুলি হল –
- (১) তিনি প্রাচ্যের সভ্যতাকে ‘দুর্নীতি, অপবিত্র ও নির্বুদ্ধিতা’ বলে অভিহিত করে সরাসরি পাশ্চাত্য শিক্ষার পক্ষে মত প্রকাশ করেন।
- (২) তাঁর মতে প্রাচ্যের শিক্ষায় কোনও বৈজ্ঞানিক চেতনা নেই এবং তা পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যবস্থা অপেক্ষা সম্পূর্ণভাবে নিকৃষ্ট (Oriental learning was completely inferior to European learning”)।
- (৩) তাঁর মতে, “ভালো ইউরোপীয় গ্রন্থাগারের একটি তাক আরব ও ভারতের সমগ্র সাহিত্যের সমকক্ষ। বলা বাহুল্য, মেকলের এই মত ছিল সম্পূর্ণভাবে অহমিকা-প্রসূত ও অজ্ঞানতাপূর্ণ।
- (৪) তিনি বলেন যে, উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষা বিস্তৃত হলে তা ‘ক্রমনিম্ন পরিস্রুত নীতি’ (Downward Filtration Theory) অনুযায়ী ধীরে ধীরে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
- (৫) মেকলের লক্ষ্য ছিল সাংস্কৃতিক বিজয়। তিনি বলেন যে, পাশ্চাত্য শিক্ষার ফলে এমন এক ভারতীয় গোষ্ঠী তৈরি হবে যারা “রক্তে ও বর্ণে হবে ভারতীয়, কিন্তু রুচি, মত, নৈতিকতা এবং বুদ্ধিমত্তায় হবে ইংরেজ। তারাই পরে জনগণের মধ্যে নতুন জ্ঞান প্রচার করবে এবং ইংরেজি শিক্ষার ফলে ভারতেনবজাগৃতি আসবে।”
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ক্ষেত্রে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ঘোষণা
- (১) মেকলের বাগ্মিতা ও যুক্তির ফলে ইংরেজি শিক্ষার সমর্থনকারীরা জয়যুক্ত হন এবং ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ই মার্চ লর্ড বেন্টিঙ্ক ইংরেজি শিক্ষাকে সরকারি নীতিরূপে ঘোষণা করেন।
- (২) এই সময় কলকাতা মেডিকেল কলেজ (১৮৩৫ খ্রিঃ), রুরকি-তে থমাসোন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মাদ্রাজে মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি হাই স্কুল ও বোম্বাই-এ এলফিনস্টোনইনস্টিটিউশন স্থাপিত হয়।
- (৩) এই প্রসঙ্গে স্মরণ রাখা দরকার যে, ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের পর ইংরেজি শিক্ষা প্রসারে সরকার যে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে তার মধ্যে কোনও শৃঙ্খলা ছিল না, অর্থ বরাদ্দও ছিল অপ্রতুল এবং ভারতের সর্বত্র শিক্ষাবিস্তারে সরকারি উদ্যম একই রকমের ছিল না।
ঔপনিবেশিক ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ক্ষেত্রে হার্ডিং-এর ঘোষণা
- (১) ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে ‘কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন’ পুনর্গঠন করে ‘কাউন্সিল অব এডুকেশন’ গঠিত হয়। এই সংস্থার উদ্যোগে ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ১৫১টি ইংরেজি বিদ্যালয়ে ১৩ হাজারেরও বেশি ছাত্রের জন্য ইংরেজি শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।
- (২) ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে বড়লাট হার্ডিং ঘোষণা করেন যে, সরকারি চাকরিতে ইংরেজি ভাষাজ্ঞানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এই ঘোষণার ফলে মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজে ইংরেজি শিক্ষার প্রবল আগ্রহ দেখা দেয় এবং দেশীয় শিক্ষাব্যবস্থার সমাধি রচিত হয়।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ক্ষেত্রে উডের ডেসপ্যাচ বা নির্দেশ নামা
- (১) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বহু স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পাঠ্যক্রম ও পঠনরীতির মধ্যে কোনও সামঞ্জস্য ছিল না।
- (২) ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে জুলাই বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড শিক্ষা-সংক্রান্ত এক নির্দেশনামা (উডের ডেসপ্যাচ) প্রকাশ করেন। এই নির্দেশ নামাকে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ‘ম্যাগনা কার্টা’ বলা হয়।
- (৩) এই নির্দেশ নামার ওপর ভিত্তি করেই মূলত আধুনিক ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থাকে তিনি পাঁচটি শ্রেণীতে ভাগ করার নির্দেশ দেন।
- (৪) এই নির্দেশনামায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল এবং কলেজ প্রতিষ্ঠা, একটি শিক্ষা বিভাগ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়।
- (৫) এই নির্দেশনামায় প্রেসিডেন্সি শহরগুলিতে (কলকাতা, বোম্বাই, মাদ্রাজ) তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ডিরেক্টর অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন’ পদ সৃষ্টি, নারীশিক্ষার প্রসার, সাধারণ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষার ব্যবহার এবং শিক্ষক-শিক্ষণ ও মেধাবৃত্তি দান প্রভৃতির কথা বলা হয়।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন
এই সিদ্ধান্তের ফলে লর্ড ডালহৌসি প্রত্যেক প্রদেশে জনশিক্ষা দপ্তর স্থাপন করেন। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে লাহোর এবং এলাহাবাদে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। স্যার জেমস্ উইলিয়াম কোলভিল (Sir James William Colvile) ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে নারীশিক্ষা
- (১) উনিশ শতকের সূচনায় ভারতে নারীশিক্ষার বিশেষ কোনও প্রসার হয় নি। এ দেশে নারীশিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারিরাই সর্বপ্রথম উদ্যোগী হন এবং এই ব্যাপারে শ্রীমতী কুক ও লন্ডনের ‘চার্চ মিশনারি সোসাইটি’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাপালন করে।
- (২) নারীশিক্ষা বিস্তারে ‘কলকাতা স্কুল সোসাইটি’ (১৮১৭ খ্রি:), ‘ফিমেল জুভেনাইল সোসাইটি’ (১৮১৯ খ্রিঃ) ও ‘লেডিজ সোসাইটি ফর নেটিভ ফিমেল এডুকেশন’ (১৮২৪ খ্রিঃ) বিশেষ সচেষ্ট হয়। এই সব উদ্যোগ বিশেষ ফলপ্রসু হয় নি, কারণ কুসংস্কারাচ্ছন্ন ভারতীয় মন এই ব্যাপারে বিশেষ সাড়া দেয় নি।
- (৩) নারী শিক্ষা প্রবর্তনের ব্যাপারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ডেভিড হেয়ার, রাধাকান্ত দেব, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেন।
- (৪) ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের আইন সদস্য ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন এর উদ্যোগ ও বিদ্যাসাগরের চেষ্টায় ‘হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। পরে এখানে একটি মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এগুলি বর্তমানে যথাক্রমে বেথুন স্কুল ও কলেজ নামে পরিচিত।
- (৫) বিদ্যাসাগরের ব্যক্তিগত উদ্যোগে নদিয়া, হুগলি, বর্ধমান ও মেদিনীপুরে ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার ত্রুটি
এই শিক্ষাব্যবস্থা ত্রুটিমুক্তি ছিল না।
- (১) শিক্ষার মাধ্যম ছিল ইংরেজি ভাষা। এর ফলে সাধারণ মানুষের কাছে শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত হয় নি।
- (২) কিছু কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলেও প্রাধমিক শিক্ষা অবহেলিত হওয়ায় দেশে নিরক্ষরতা বৃদ্ধি পায়।
- (৩) মুসলিম সমাজকে এই শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট করা যায় নি।
- (৪) কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার দিকে কোনও নজর দেওয়া হয় নি।
- (৫) স্ত্রীশিক্ষার বিশেষ কোনও বিকাশ ঘটে নি।
- (৬) শিক্ষার আলো গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র জনসাধারণের মধ্যে সম্প্রসারিত হয় নি। কেবল মুষ্টিমেয় কিছু শহুরে লোক এই শিক্ষা গ্রহণ করে।
- (৭) সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, ফিলটারের জল যেমন ওপর থেকে নীচে নেমে আসে, তেমনি উচ্চ-শিক্ষিত লোকেরা জনসাধারণের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার ঘটাবে।
- (৮) বলা বাহুল্য, লর্ড মেকলের এই ‘downward filtration’ বা ‘নিম্নগামী পরিস্রাবণ’ তত্ত্ব বাস্তবায়িত হয় নি, কারণ ইংরেজি-শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী সাধারণের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারে আগ্রহী হয় নি।।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ফলাফল
- (১) ইংরেজি শিক্ষার সংস্পর্শে এসে ভারতবাসী পাশ্চাত্য সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান,জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, মানবতাবাদ প্রভৃতি আদর্শের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং নিজসমাজ, ধর্ম, দেশ ও জাতির দুর্বলতাগুলি সহজেই অনুধাবন করতে পারে।
- (২) ইংরেজি ভাষা শিক্ষিত ভারতবাসীকে ঐক্যসূত্রে আবদ্ধ করে। বাংলা ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয় যুক্তিবাদী সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলন।
- (৩) সাহিত্যে দেখা দেয় জাতীয়তার প্লাবন এবং তারপর আসে রাজনৈতিক আন্দোলনের জোয়ার। সাহিত্য, ধর্ম, সমাজ, রাজনীতি— জীবনের সর্বক্ষেত্রেই এক নবচেতনার সঞ্চারহয়।
উপসংহার :- ব্রিটিশ সরকার ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে হান্টার কমিশনের সুপারিশ অনুসারে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারি অনুদান কমিয়ে দেয়। কিন্তু মধ্যবিত্তদের মধ্যে উচ্চশিক্ষার বিপুল চাহিদা থাকায় বেসরকারি উদ্যোগে সারা ভারতে একাধিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে।
(FAQ) ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে।
১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে।
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে।
ডেভিড হেয়ার।
খ্রিস্টান মিশনারি উইলিয়াম কেরি, উইলিয়াম ওয়ার্ড ও মার্শম্যান।
১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে ড্রিংক ওয়াটার বেথুন ও বিদ্যাসাগর।
অন্যান্য ঐতিহাসিক ঘটনাগুলি
- জাস্টিনিয়ানপূর্ব রোমান সাম্রাজ্য তথ্য বাইজানটাইন সাম্রাজ্যের সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ান প্রসঙ্গে …
- প্রজাতন্ত্র থেকে সাম্রাজ্যে রোমের উত্তরণখ্রিস্টপূর্ব যুগে প্রজাতন্ত্র থেকে সাম্রাজ্যে রোমের উত্তরণ প্রসঙ্গে টিবেরিয়াস গ্র্যাচ্চাসের …
- পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতনএক সময়ের বিখ্যাত পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতন প্রসঙ্গে রোমান সাম্রাজ্যের …
- তৃতীয় শতকের সংকটপ্রাচীন রোমে তৃতীয় শতকের সংকট প্রসঙ্গে তৃতীয় শতকের সংকটের সময়কাল, …
- প্রজাতন্ত্রের যুগে রোম৫০৯-৩১ খ্রিস্টপূর্বে প্রজাতন্ত্রের যুগে রোম প্রসঙ্গে রোমে প্যাট্রিসিয়ান-প্লেবিয়ান দ্বন্দ্ব, রোমে …
- ভিক্টর হুগোর প্রেমপত্রফরাসি কবি ভিক্টর হুগোর প্রেমপত্র প্রসঙ্গে ভিক্টর হুগোর পরিচিতি, ভিক্টর …
- মানবতাবাদমানবতাবাদ প্রসঙ্গে মানবতাবাদী চিন্তানায়কদের মাতৃভাষায় শিক্ষা দান, লেখার উপর মানবতাবাদীদের …
- মঠজীবনবাদমঠজীবনবাদ প্রসঙ্গে সমাজ ও সংস্কৃতির উন্নতিতে মঠজীবনবাদের ভূমিকা, উদ্ভব ও …
- ক্লুনির মঠক্লুনির মঠ প্রসঙ্গে ক্লুনি মঠ কর্তৃক মঠজীবনবাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠা, ক্লুনির …
অন্তর স্পর্শ করার মতন ছাত্রছাত্রীদের একখানা নোট লিখিয়াছ।