হাঙ্গেরি

হাঙ্গেরি দেশটি প্রসঙ্গে সীমা, রাজধানী, জনগণ, প্রথম রাজা, বিদেশি শাসন, হ্যাপসবার্গের দখলে, অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য, স্বাধীন হাঙ্গেরি, বিস্তার ও আয়তন, কৃষি, শিল্প ও পর্যটন সম্পর্কে জানবো।

ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত হাঙ্গেরি দেশটি প্রসঙ্গে হাঙ্গেরির অবস্থান, হাঙ্গেরির সীমা, হাঙ্গেরির রাজধানী, হাঙ্গেরির জনগণ, হাঙ্গেরির প্রথম রাজা, স্বাধীন হাঙ্গেরি, হাঙ্গেরির বিস্তার ও আয়তন, হাঙ্গেরির কৃষি, হাঙ্গেরির শিল্প, হাঙ্গেরির বাণিজ্য, হাঙ্গেরির জাতীয়তাবাদী নেতা, হাঙ্গেরির পর্যটন।

ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত হাঙ্গেরি

দেশহাঙ্গেরি
রাজধানীবুদাপেস্ট
ভাষাহাঙ্গেরিয়
রাষ্ট্রপতিক্যাটালিন নোভাক
প্রধানমন্ত্রীভিক্টর অরবান
হাঙ্গেরি

ভূমিকা :- মধ্য ইউরোপ -এর একটি স্থলবেষ্টিত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হাঙ্গেরি বা হাঙ্গেরীয় প্রজাতন্ত্র। হাঙ্গেরির অধিকাংশ এলাকা দানিউব উপত্যকা তথা হাঙ্গেরীয় সমভূমিতে অবস্থিত। এই সমতলভূমির ভেতর দিয়ে দানিউব নদী প্রবাহিত হয়েছে।

হাঙ্গেরির রাজধানী

ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত হাঙ্গেরির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর বুদাপেস্ট দানিউব নদীর উভয় তীরে অবস্থিত। শহরটি পূর্ব মধ্য ইউরোপের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র।

হাঙ্গেরির বর্তমান সীমা নির্ধারণ

ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত হাঙ্গেরির বর্তমান সীমানা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ -এর পর ট্রিয়াননের চুক্তিতে ১৯২০ সালে নির্ধারিত হয়।

হাঙ্গেরির সীমা

ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত হাঙ্গেরির উত্তরে স্লোভাকিয়া, উত্তর-পূর্বে ইউক্রেন, পূর্বে রোমানিয়া, দক্ষিণে সার্বিয়া, মন্টেনিগ্রো, ক্রোয়েশিয়া ও স্লোভেনিয়া, এবং পশ্চিমে অস্ট্রিয়া

হাঙ্গেরির জনগণ

ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত হাঙ্গেরির জনগণ নিজেদেরকে ‘মজর’ (Magyar) নামে ডাকে। তারা ছিল এশিয়া থেকে আগত যাযাবর গোষ্ঠী। নবম শতাব্দীর শেষভাগে আরপাদের নেতৃত্বে মজরেরা দানিউব ও তিসা নদীর মধ্যবর্তী সমভূমি জয় করে, যা বর্তমান হাঙ্গেরীয় সমভূমির মধ্যভাগ। একাদশ শতকের শুরুর দিকেই মজরেরা রাজনৈতিকভাবে সংঘবদ্ধ হয় এবং খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হয়।

হাঙ্গেরির প্রথম রাজা

হাঙ্গেরির প্রথম রাজা ছিলেন প্রথম স্টিফেন (১০০০ খ্রিষ্টাব্দ)। ১০৮৩ সালে তাকে সাধু ঘোষণা করা হয়।

হাঙ্গেরিতে বিদেশি শাসন

চতুর্দশ শতকে বিদেশী শাসকেরা হাঙ্গেরি জয় করে। চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতক ধরে বিভিন্ন ইউরোপীয় রাজবংশ হাঙ্গেরি শাসন করে। এরপর ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে দেশটির অধিকাংশ ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্য -এর দখলে।

হ্যাপসবার্গদের দখলে হাঙ্গেরি

এই সময় দেশটির পশ্চিমের কিয়দংশ অস্ট্রিয়ার হ্যাপসবার্গ রাজবংশ নিয়ন্ত্রণ করত। সপ্তদশ শতকের শেষভাগে এসে হ্যাপসবার্গরা প্রায় সমস্ত হাঙ্গেরি দখলে নিতে সক্ষম হয়।

অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য

হাঙ্গেরীয়রা ১৮৪৮ সালে হ্যাপসবার্গদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে, কিন্তু তা দমন করা হয়। ১৮৬৭ সালে দুই পক্ষ সন্ধিচুক্তির মাধ্যমে একটি দ্বৈত সাম্রাজ্য গঠন করে। এর নাম দেওয়া হয় অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য।

স্বাধীন হাঙ্গেরি

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য বিলীন হয়ে যায় এবং হাঙ্গেরি পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ -এর পর হাঙ্গেরিতে সাম্যবাদী সরকার ক্ষমতা দখল করে এবং দেশটি সোভিয়েত-অনুগত দেশগুলির কাতারে যোগ দেয়। ১৯৯০ সালের নির্বাচনের পর একটি অ-সাম্যবাদী সরকার ক্ষমতায় আসে।

হাঙ্গেরির বিস্তার ও আয়তন

দেশটি পূর্ব-পশ্চিমে সর্বাধিক প্রায় ৫০০ কিমি এবং উত্তর দক্ষিণে সর্বাধিক প্রায় ৩১৫ কিমি বিস্তৃত। হাঙ্গেরির ভূমির মোট আয়তন ৯৩,০৩০ বর্গকিলোমিটার।

হাঙ্গেরির কৃষিকাজ

দেশটিতে ৬৫ লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়। কৃষিপণ্যের মধ্যে আছে, গম, রাই, যব, ভুট্টা, আলু, মিষ্টি বিট, লাল মরিচ, সূর্যমুখি বীজ প্রভৃতি।

হাঙ্গেরির তৃণভূমি

এখানকার তৃণভূমিতে ভেড়া চরানো হয়। চারণভূমিগুলি puszta নামে পরিচিত। এই puszta গুলিতে উনিশ শতকের রাখাল ও তাদের গবাদি পশুর পাল নিয়ে হাঙ্গেরীয় লোকগীতি, নৃত্য ও সাহিত্যে অনেক বর্ণনা আছে।

হাঙ্গেরির শিল্প

হাঙ্গেরি সমৃদ্ধ দেশ। শিল্পসমূহের মধ্যে আছে লৌহ ও ইস্পাত শিল্প, সিমেন্ট কারখানা, সার কারখানা, চিনি শিল্প, রাসানিক শিল্প, চামড়া শিল্প প্রভৃতি।

হাঙ্গেরির বাণিজ্য

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বৈদেশিক বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল। হাঙ্গেরিতে তেল ও গ্যাস ছাড়া অন্যান্য খনিজ দব্যের মধ্য আছে কয়লা, লিগনাইট, বক্সাইট প্রভৃতি।

হাঙ্গেরির পর্যটন

সাম্যবাদের পতনের পর হাঙ্গেরির পর্যটন শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটে। পর্যটন খাত হাঙ্গেরির বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম উৎস। বুদাপেষ্ট শহর ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর শহরগুলির মধ্যে অন্যতম। অস্ট্রিয়া, জার্মানি ও স্লোভাকিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি লোক বেড়াতে আসে। এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস হল পর্যটন মৌসুম। জুলাই ও আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি লোকসমাগম হয়।

উপসংহার :- হাঙ্গেরির আকৃতি ডিম্বাকৃতি। দেশটির ভূমি প্রায় সমতল। বুদাপেস্ট হাঙ্গেরির বৃহত্তম শহর এবং সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র। বুদাপেস্ট শহরকে দানিউবের রানীও বলা হয়।


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “হাঙ্গেরি” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) হাঙ্গেরি সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. হাঙ্গেরির রাজধানীর নাম কি?

বুদাপেস্ট।

২. হাঙ্গেরির ম্যাৎসিনী নামে কে পরিচিত?

লুই কসুথ।

৩. হাঙ্গেরির বর্তমান রাষ্ট্রপতি কে?

ক্যাটালিন নোভাক।

৪. হাঙ্গেরির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কে?

ভিক্টর অরবান।

অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থানগুলি

Leave a Comment