আমেরিকা

আমেরিকা দেশ প্রসঙ্গে অবস্থান, সীমা, আয়তন ও জনসংখ্যা, নামকরণ, ইতিহাস, ভৌগোলিক দিক, সরকার ব্যবস্থা, অর্থনীতি, সামরিক প্রতিষ্ঠা ও ঠাণ্ডা লড়াই সম্পর্কে জানবো।

USA আমেরিকা মহাদেশ প্রসঙ্গে আমেরিকার অবস্থান ও সীমা, আমেরিকার আয়তন ও জনসংখ্যা, আমেরিকার নামকরণ, আমেরিকার রাজধানী, বিশ্বের মহাশক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকা, আমেরিকার ইতিহাস, আমেরিকার ভৌগোলিক দিক, আমেরিকার সরকার ব্যবস্থা, আমেরিকার অর্থনীতি, আমেরিকার সামরিক প্রতিষ্ঠা ও ঠাণ্ডা লড়াইয়ে আমেরিকার অবদান।

USA আমেরিকা

ঐতিহাসিক স্থানআমেরিকা
রাজধানীওয়াশিংটন ডি সি
বৃহত্তম নগরীনিউ ইয়র্ক
জাতীয় ভাষাইংরেজি
রাষ্ট্রপতিজো বাইডেন
আমেরিকা

ভূমিকা :- উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি টেরিটোরি এবং কিছু দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি ‘আমেরিকা’ নামেও পরিচিত।

আমেরিকার অবস্থান ও সীমা

উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি অঙ্গরাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যস্থলে অবস্থিত। এর উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো।

আমেরিকার অঙ্গরাজ্য আলাস্কার অবস্থান

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত। আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত।

আমেরিকার আয়তন ও জনসংখ্যা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আয়তন প্রায় ৯৮.৩ লক্ষ বর্গকিমি (৩৭.৯ লক্ষ বর্গমাইল)। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৩২ কোটি ৮২ লক্ষ। সামগ্রিক আয়তনের হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের তৃতীয় বা চতুর্থ বৃহত্তম রাষ্ট্র। আবার স্থলভূমির আয়তন ও জনসংখ্যার বিচারে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ।

আমেরিকার নামকরণ

  • (১) ১৫০৭ সালে জার্মান মানচিত্রকর মার্টিন ওয়াল্ডসিম্যুলার বিশ্বের একটি মানচিত্র প্রকাশ করেন। এই মানচিত্রে তিনি ইতালির নাবিক আমেরিগো ভেসপুচির নাম অনুসারে পশ্চিম গোলার্ধের নামকরণ করেন আমেরিকা।
  • (২) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে পূর্বতন ব্রিটিশ উপনিবেশগুলি প্রথম দেশের আধুনিক নামটি ব্যবহার করে। ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই “unanimous Declaration of the thirteen united States of America” নামে এই ঘোষণাপত্রটি “Representatives of the united States of America” কর্তৃক গৃহীত হয়।
  • (৩) ১৭৭৭ সালের ১৫ নভেম্বর দ্বিতীয় মহাদেশীয় কংগ্রেসে আর্টিকলস অফ কনফেডারেশন বিধিবদ্ধ করণের মাধ্যমে বর্তমান নামটি চূড়ান্ত হয়।
  • (৪) মার্কিন নাগরিকেরা বাংলা ভাষায় ‘মার্কিনী’ নামে পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সংক্রান্ত বিশেষণ হিসেবে ‘মার্কিন’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

USA আমেরিকার ইতিহাস

  • (১) আমেরিকার মূল ভূমি এবং আলাস্কাতে বর্তমানে যে আদিবাসীরা বাস করে তারা এশিয়া থেকে অভিবাসী হয়ে আজ থেকে প্রায় ৪০,০০০ বছর আগে থেকে আসা শুরু করেছিল বলে ধারণা করা হয়।
  • (২) ইউরোপীয় অভিযাত্রী ক্রিস্টোফার কলম্বাস ১৪৯২ সালের ১৯ নভেম্বর আমেরিকার পুয়ের্তো রিকোতে এসেছিলেন। এর মাধ্যমে আদিবাসী আমেরিকানদের সাথে ইউরোপীয়দের প্রথম পরিচয় হয়।
  • (৩) পরবর্তীতে ফ্রান্স, স্পেন, ইংল্যান্ড, নেদারল্যাণ্ডস, সুইডেন প্রভৃতি দেশ আমেরিকায় উপনিবেশ স্থাপন করে। এরপর ১৩টি পৃথক ব্রিটিশ উপনিবেশ সৃষ্টি হয়। এই ১৩টি উপনিবেশ মিলেই পরবর্তীকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করেছিল।
  • (৪) ১৭৭৫-১৭৮৩ সালের মধ্যে মার্কিন স্বাধীনতা যুদ্ধ বা মার্কিন বিপ্লবী যুদ্ধের মাধ্যমে গ্রেট ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আমেরিকার তের উপনিবেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হয়।

আমেরিকার ভৌগোলিক দিক

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে সবুজ ভূমি ও কৃষি ফসল আবাদের উর্বর অঞ্চল, পাথুরে পাহাড়, তৃণাচ্ছাদিত সামান্য ঢেউ খেলানো বিস্তীর্ণ ভূমি, উত্তর বায়ুর সাথে সামঞ্জস্যশীল বনভূমি দ্বারা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত পশ্চিমাঞ্চল, আর দক্ষিণ-পশ্চিমে কেবল বিরান মরুভূমি। উত্তর-পশ্চিমে আটলান্টিকের কোল ঘেঁষে অবস্থিত বৃহৎ হ্রদ এলাকায়ই দেশটির অধিকাংশ মানুষের বসতি।

আমেরিকার সরকার ব্যবস্থা

  • (১) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসিত যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট – নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর সদস্যসংখ্যা ৪৩৫। উচ্চকক্ষের নাম সিনেট এবং এর সদস্যসংখ্যা ১০০।
  • (২) যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি মূলনীতি হল প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থা চারটি উপাদান নিয়ে গঠিত – জনগণের সার্বভৌমত্ব, প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার, ক্ষমতার পরীক্ষা ও ভারসাম্য এবং ফেডারেলবাদ।

আমেরিকার অর্থনীতি

১৮৭০-এর দশকেই মার্কিন অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির শিরোপা পায়। আমেরিকার অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম জাতীয় অর্থনীতি। ২০০৮ সালে দেশের আনুমানিক জিডিপি হার ছিল ১৪.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সামরিক শক্তি হিসাবে আমেরিকার প্রতিষ্ঠা

স্পেন-মার্কিন যুদ্ধ ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সামরিক শক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিষ্ঠা দান করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ -এর সময় এই দেশ প্রথম পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বা রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করে।

ঠাণ্ডা লড়াইয়ে আমেরিকার ভূমিকা

ঠাণ্ডা লড়াইয়ের শেষভাগে এবং সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের একমাত্র মহাশক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়। বিশ্বের মোট সামরিক ব্যয়ের দুই-পঞ্চমাংশ খরচ করে এই দেশ।

উপসংহার :- ১৯৩০ এর দশকে ও একবিংশ শতকের প্রথম দশকের শেষে আমেরিকার অর্থনীতি ‘অর্থনেতিক মহামন্দা’র শিকার হয়। অবশ্য বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শক্তিধর রাষ্ট্র


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “আমেরিকা” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) আমেরিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. আমেরিকা কত সালে স্বাধীনতা লাভ করে?

১৮৮৩ সালে।

২. আমেরিকার রাজধানীর নাম কি?

ওয়াশিংটন ডি সি।

৩. আমেরিকার বৃহত্তম নগরী কোনটি?

নিউ ইয়র্ক।

৪. আমেরিকার বর্তমান রাষ্ট্রপতি কে?

জো বাইডেন।

অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থানগুলি

Leave a Comment