অশোক

মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট অশোক -এর জন্ম, পিতা-মাতা, পত্নী ও পুত্রের নাম, সিংহাসন লাভ, রাজত্ব কাল, সাম্রাজ্য বিস্তার, রাজধানী, কলিঙ্গ যুদ্ধ, বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা, শিলালিপিতে প্রিয়দর্শী নাম, অশোক স্তম্ভের অবস্থান ও তাঁর কৃতিত্ব সম্পর্কে জানবো।

সম্রাট অশোক

ঐতিহাসিক চরিত্রঅশোক
পিতাবিন্দুসার
মাতাসুভদ্রাঙ্গী
রাজত্ব২৬৯ খ্রিস্টপূর্ব – ২৩২ খ্রিস্টপূর্ব
রাজ্যাভিষেকখ্রিস্টপূর্ব ২৬৯
পূর্বসূরিবিন্দুসার (পিতা)
উত্তরসূরিদশরথ (পুত্র)
পত্নীঅসন্ধিমিত্রা, দেবী, করুবকী, পদ্মাবতী, তিষ্যরক্ষা
বংশধরমহেন্দ্র, সংঘমিত্রা, তিবল, কুণাল, চারুমতী
রাজবংশমৌর্য সাম্রাজ্য
ধর্মবৌদ্ধ ধর্ম
সম্রাট অশোক

ভূমিকা :- ভারতীয় উপমহাদেশের তৃতীয় মৌর্য সম্রাট অশোক বা মহান অশোক। যিনি পিতা বিন্দুসারের পর সিংহাসন লাভ করেন।

সর্বভারতীয় সম্রাট অশোক

ভারতবর্ষ -এর ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্রাট অশোক দাক্ষিণাত্যের কিছু অংশ ব্যতীত ভারতবর্ষের অধিকাংশ অঞ্চল শাসন করেন। তাই তাঁকে একজন “সর্বভারতীয় সম্রাট” বলা যায়।

ভারতীয় সংস্কৃতিতে সম্রাট অশোকের প্রভাব

সম্রাট অশোক শুধু বর্তমান ভারত ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলো শাসনই করেন নি বরং এই সব অঞ্চলের সংস্কৃতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন। সাম্রাজ্য-এর বাইরেও তিনি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অশোকের উদ্যোগ

আধুনিক যুগে জীববৈচিত্র্য রক্ষার যে মনোভাব দেখা যায় খ্রিস্টপূর্ব যুগে বিশাল সাম্রাজ্যের শাসক রূপে সেই ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন মৌর্য সম্রাট অশোক।

সম্রাট অশোকের নাম ও উপাধিসমূহ

  • (১) সংস্কৃত শব্দ “অশোক” -এর অর্থ শোকবিহীন বা দুঃখহীন। সমাসগত দিক থেকে শব্দটি বহুব্রীহি। অশোকাবদান গ্রন্থ অনুসারে, তিনি জন্ম নিয়ে মাতার দুঃখ দূর করেছিলেন বলে তাঁর মা তাঁকে এই নাম দিয়েছিলেন।
  • (২) সম্রাট অশোকের তাম্রশাসনে তাঁর “দেবনামপ্রিয়” নামটি পাওয়া যায়। মাস্কি ( ভারতের কর্ণাটকে অবস্থিত) ও গুর্জারা ( মধ্যপ্রদেশ) অঞ্চলে প্রাপ্ত শিলালিপিতে অশোক ও দেবনামপ্রিয়কে একই ব্যক্তি বলে অভিহিত করা হয়েছে। দেবনামপ্রিয় সংস্কৃত শব্দটির অর্থ দেবতাদের নাম যাঁর প্রিয় অথবা যিনি দেবতাদের প্রিয়।
  • (৩) তৃতীয়-চতুর্থ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের পালি গ্রন্থ দীপবংশে সম্রাট অশোককে “পিয়দসি”( সংস্কৃত : প্রিয়দর্শী) নামে অভিহিত করেছে।
  • (৪) ক্রূর স্বভাবের জন্য তিনি “চণ্ডাশোক” নামে পরিচিত। চণ্ড অর্থ প্রচণ্ড বা ভয়ানক। অর্থাৎ এই নাম দ্বারা তাঁর ভয়ানক স্বভাব প্রকাশিত হয়।

মৌর্য সম্রাট অশোকের জন্ম

অশোকাবদান গ্রন্থ অনুসারে, অশোক দ্বিতীয় মৌর্য সম্রাট বিন্দুসার ও তার এক দাসী, ব্রাহ্মণ বংশের নারী সুভদ্রাঙ্গীর গর্ভে জন্ম নেন। দিব্যাবদান গ্রন্থে অশোকের মাতাকে জনপদকল্যাণী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সম্রাট অশোকের সিংহাসনলাভ

  • (১) দীপবংশ ও মহাবংশ গ্রন্থ দুটিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, গৌতম বুদ্ধ -এর মৃত্যুর ২১৪ বছর পর অশোক সিংহাসনে আরোহণ করেন। সাধারণ ভাবে বুদ্ধের মৃত্যু ৪৮৭ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ ধরা হয়। অর্থাৎ অশোক (৪৮৭-২১৪ = ২৭৩) ২৭৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে সিংহাসনলাভ করেছিলেন।
  • (২) পুরাণে বর্ণিত আছে, বিন্দুসার ২৫ বছর এবং অশোক ২৪ বছর রাজত্ব করেন। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য -এর সিংহাসনে আরোহণ কাল ধরা হয় ৩২৪ খ্রিস্টপূর্ব। তাহলে অশোক (৩২৪-৪৯) = ২৭৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন।
  • (৩) উত্তর ভারতীয় বিবরণীগুলিতে অশোকের রাজ্যাভিষেক বুদ্ধের মৃত্যুর শতবর্ষ পর হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা উপরের কোনো বিবরণের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়।

মৌর্য সম্রাট অশোকের রাজ্যাভিষেক

সম্রাট অশোকের রাজপদে অভিষেক নিয়ে বিভিন্ন মতামত প্রচলিত আছে।

  • (১) ঐতিহাসিক সূত্রগুলোতে কখনোই অশোককে তাঁর পিতার রাজত্বকালে যুবরাজ রূপে উল্লেখ করেনি। তবুও তিনি সিংহাসনে আরোহণ করতে সমর্থ হন।
  • (২) বিন্দুসার তার পুত্র সুসীমকে উত্তরাধিকারী রূপে মনস্থির করেন। কিন্তু তাকে উগ্র ও অহঙ্কারী চরিত্রের মানুষ রূপে বিবেচনা করে বিন্দুসারের মন্ত্রীরা অশোককে সমর্থন করেন।
  • (৩) এরপর তক্ষশীলায় সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ আরম্ভ হলে বিন্দুসার পুত্র সুসীমকে তা দমনের জন্য প্রেরণ করলে তিনি ব্যর্থ হন। তখন বিন্দুসার অশোককে তক্ষশীলার বিদ্রোহ দমন করার নির্দেশ দেন।
  • (৪) বিন্দুসার অসুস্থ ও মুমূর্ষু হয়ে পড়লে মন্ত্রীরা সাময়িকভাবে অশোককে সিংহাসনে অভিষিক্ত করার জন্য পরামর্শ দেন। তখন সুসীম তক্ষশীলা থেকে না আসা পর্যন্ত তিনি কাউকেই সিংহাসনে অভিষিক্ত করতে অসম্মতি জানান। কিন্তু শীঘ্রই বিন্দুসারের মৃত্যু হয় এবং অশোকের রাজ্যাভিষেক হয়।
  • (৫) রাধাগুপ্ত নামক এক মন্ত্রী অশোকের সিংহাসনলাভের পক্ষে প্রধান সহায়ক হয়ে ওঠেন এবং পরবর্তীকালে তাঁর প্রধানমন্ত্রী রূপে দায়িত্ব পালন করেন। যখন সুসীম ফিরে আসে রাধাগুপ্ত শঠতা করে সুসীমকে একটি জ্বলন্ত কয়লা ভর্তি গর্তে ফেলে দিয়ে হত্যা করেন।
  • (৬) মহাবংশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, অশোক মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রাদেশিক রাজধানী উজ্জয়িনী থেকে এসে সিংহাসনে আরোহণ করেন।
  • (৭) পুরাণমতে, অশোককে দেবতারা সহায়তা করেন। ফলে বিন্দুসারের মৃত্যু হয় এবং অশোকের রাজত্ব যক্ষপুরী থেকে নাগলোক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।

অশোকের রাজত্বকালে মৌর্য সাম্রাজ্যের বিস্তার

পিতা বিন্দুসার ও পিতামহ চন্দ্রগুপ্তের রেখে যাওয়া সাম্রাজ্যের আয়তন, সামরিক শক্তি ও সমৃদ্ধি অশোক বহুগুণে বৃদ্ধি করেছিলেন। সিংহাসনে আরোহণ করে অশোক পরবর্তী আট বছর তার সাম্রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন।

  • (১) উত্তরে হিন্দুকুশ পর্বতমালা থেকে শুরু করে দাক্ষিণাত্যের কিছু অংশ বাদ দিয়ে সমগ্র ভারতবর্ষ তার করায়ত্ত হয়। অর্থাৎ তাঁর রাজত্ব বর্তমান ভারত, পাকিস্তানআফগানিস্তান -এর অধিকাংশ, বাংলাদেশ এবং আনুমানিক নেপাল -এর কিছু অংশেও সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।
  • (২) তাঁর রাজত্বকালের অষ্টম বর্ষে তিনি কলিঙ্গ আক্রমণ করেন। এই ভয়াবহ কলিঙ্গ যুদ্ধ -এ প্রায় এক লক্ষ মানুষ নিহত এবং দেড় লক্ষ মানুষ নির্বাসিত হয়েছিল।

মৌর্য সম্রাট অশোকের প্রাথমিক শাসনকাল

অধিকাংশ গ্রন্থই তাঁর রাজত্বের প্রথম দিকে সম্রাট অশোককে অত্যাচারী ও ক্রূর রূপে উল্লেখ করেছে।

  • (১) সিংহলী ও উত্তর ভারতীয় বিবরণী সমূহে অশোককে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের পূর্বে নৃশংস শাসক রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। কখনো কখনো অশোককে কামুক স্বভাবের জন্য কামাশোকও বলা হত।
  • (২) সিংহলী বর্ণনা অনুযায়ী তিনি তাঁর ভাই বীতশোককে ছেড়ে ৯৯ জন ভাইকে হত্যা করেছিলেন। এই ঘটনাটিকে বাড়াবাড়ি গণ্য করা হয়। কারো কারো মতে,তাঁর ভাইদের অনেকেই তাঁর রাজত্বকালে জীবিত ছিল।

সম্রাট অশোকের বৌদ্ধধর্ম গ্রহণোত্তর জীবন

  • (১) অশোকের ত্রয়োদশ শিলালিপিতে বর্ণিত আছে যে, কলিঙ্গ যুদ্ধে প্রচুর মানুষের মৃত্যু ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের অপরিসীম কষ্ট লক্ষ্য করে অশোক দুঃখে ও অনুশোচনায় দগ্ধ হন এবং যুদ্ধপ্রিয় অশোক একজন শান্তিকামী ও প্রজাহিতৈষী সম্রাটে পরিণত হন।
  • (২) এরপর সম্রাট অশোক বৌদ্ধ ধর্মের একজন পৃষ্ঠপোষকে পরিণত হন। অশোকের পৃষ্ঠপোষকতায় শুধুমাত্র মৌর্য সাম্রাজ্য নয়, এশিয়ার বিভিন্ন রাজ্যে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারিত হয়। তার পুত্র মহেন্দ্র ও কন্যা সংঘমিত্রা সিংহলে (শ্রীলঙ্কা) বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেন। অশোকের ধার্মিকতার দৃষ্টান্ত তাঁর প্রস্তরে উৎকীর্ণ লিপিতে পাওয়া যায়।
  • (৩) কলিঙ্গ যুদ্ধের পর সম্রাট অশোক ঘোষণা করেন যে, এখন থেকে দেবনামপ্রিয়, রাজা প্রিয়দর্শীর ধর্মানুশীলনের কারণে ঢোলের শব্দ ধর্মের শব্দে স্থানান্তরিত হবে।

বৌদ্ধধর্ম গ্ৰহণের পরও হিংসাত্মক অশোক

অশোকাবদান গ্রন্থ অনুসারে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করার পরও সম্রাট অশোক হিংসা ত্যাগ করেননি।

  • (১) তিনি পুণ্ড্রবর্ধন অঞ্চলে বসবাসকারী সমস্ত আজীবিক সম্প্রদায়ের মানুষদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর ফলে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ নিহত হন।
  • (২) জৈন ধর্ম অবলম্বীদের তিনি হত্যা করেন বলেও কথিত আছে। যদিও ঐতিহাসিকদের মতে, এই ঘটনাগুলির সত্যতা সম্বন্ধে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

সম্রাট অশোকের আমলে বৈদেশিক সম্পর্ক

অশোকের বিভিন্ন শিলালিপিতে তার বৈদেশিক সম্পর্কের অনেক তথ্য উদ্ধৃত হয়েছে। 

মৌর্য সম্রাট অশোকের সময়ে বৌদ্ধধর্মের প্রসার

তিনি বৌদ্ধধর্ম প্রসারের জন্য প্রতিবেশী শাসকদের নিকট দূত প্রেরণ করতেন।

  • (১) বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের জন্য তিনি নিজ পুত্র মহেন্দ্র ও কন্যা সংঘমিত্রাকে শ্রীলঙ্কায় প্রেরণ করেছিলেন।
  • (২) অশোক দক্ষিণ এশিয়ায় বৌদ্ধধর্ম প্রসারের পথ প্রশস্ত করেন।
  • (৩) তৎকালীন শ্রীলঙ্কার অনুরাধাপুরের শাসক দেবনামপ্রিয় তিষ্য সম্রাট অশোকের পুত্র মহেন্দ্রের মাধ্যমে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হন। অনুরাধাপুর রাজ্যের সঙ্গে তার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।
  • (৪) অশোকের শিলালিপি বিশেষত আফগানিস্তানে প্রাপ্ত মুখ্য ত্রয়োদশ শিলালিপিতে বর্ণিত হয়েছে যে, এখানে যবন, কম্বোজ (সম্ভবত তাজিকিস্তানের অধিবাসী), নভক, নভপঙ্কিত, ভোজ, অন্ধ্র ,পারদ রাজাদের রাজত্বে সর্বত্র দেবনামপ্রিয়ের ধর্মের নির্দেশনা পালিত হচ্ছে।’

বৌদ্ধ সংগীতির আয়োজন

সম্রাট অশোকের আমলে পাটলিপুত্র শহরে তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতির আয়োজন করা হয়েছিল ।

মৌর্য সম্রাট অশোকের চিকিৎসা ব্যবস্থা

তিনি তার শিলালিপিতে প্রতিবেশী রাজাদের নাম ও তাদের সঙ্গে চিকিৎসা সেবাজনিত সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন।

  • (১) রাজা দেবনামপ্রিয় প্রিয়দর্শীর রাজত্বে সর্বত্র এবং যারা তার সীমান্তবর্তী যেমন চোল, পাণ্ড্য, সত্যপুত, তাম্রপর্ণী এবং যবনরাজ (গ্রিক রাজা), আন্তিয়োগ (আন্তিওখোস) এবং অন্য রাজারা যারা আন্তিয়োগের প্রতিবেশী – সর্বত্র রাজা দেবনামপ্রিয় প্রিয়দর্শী কর্তৃক দ্বিবিধ ভিষক প্রতিষ্ঠিত হলো।
  • (২) তিনি মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবা এবং গবাদি পশুর জন্য চিকিৎসা সেবার প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন।
  • (৩) সম্রাট অশোক বলেছেন, তার প্রতিবেশী শাসকদের প্রজা ও তাদের গবাদি পশু উভয়ের জন্যই চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে।

সম্রাট অশোকের রাজসভায় বিদেশী দূত

মৌর্য রাজসভায় যবন (গ্রিক) রাজদূতদের উপস্থিতি ছিল। অশোকের পিতা আর পিতামহের মতো অশোকের রাজসভায়ও তা ছিল বলে জানা যায়।

  • (১) দিওনিসিস হলেন মিশরের গ্রিক শাসক দ্বিতীয় টলেমি প্রেরিত রাজদূত, যিনি অশোকের রাজত্বকালে মৌর্য রাজসভায় দূত ছিলেন।
  • (২) বর্তমান লিবিয়ার সিরেনাইকার দার্শনিক ইগিসিয়াস সম্ভবত অশোকের প্রচেষ্টায় বৌদ্ধধর্মের শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন যিনি সম্ভবত অশোকের শিলালিপিতে উক্ত মাগোসের (মাগাস) শাসনকালে বর্তমান ছিলেন।
  • (৩) শক রাজা রুদ্রদামন -এর জুনাগড় (গুজরাট) শিলালিপিতে অশোকের নাম উল্লেখিত হয়েছে। জুনাগড় শিলালিপিতে অশোকের প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানের কার্যে গ্রিকদের নিয়োগ করার উল্লেখ আছে, যিনি গুজরাটের গির্নারের নিকট জলনালী নির্মাণ তত্ত্বাবধান করছিলেন।

ভারতে মৌর্য সম্রাট অশোকের স্মৃতিচিহ্ন

সম্রাট অশোকের কীর্তি বিভিন্ন প্রতীক, উৎকীর্ণলিপি, শিল্প, মুদ্রা ইত্যাদিতে প্রকাশিত হয়। অশোকের স্মৃতিচিহ্ন তাঁর সমসাময়িক ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপালের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

পবিত্র দেশ ভারতের জাতীয় পতাকায় সম্রাট অশোকের অবদান

ভারতের জাতীয় পতাকার কেন্দ্রে স্থান পেয়েছে অশোক স্তম্ভ -এর নিম্নস্থিত ধর্মচক্র। ভারতের পতাকা স্মরণ করিয়ে দেয় মৌর্য সাম্রাজ্যের গৌরবময় ইতিহাস।

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে সম্রাট অশোক

  • (১) মৌর্য সম্রাট অশোকের উপর নির্মিত ভারতের অশোক দ্য গ্রেট ছবিটিতে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান, করিনা কাপুর, অজিত কুমার (তাঁর প্রথম এবং একমাত্র হিন্দি চলচ্চিত্রের ভূমিকায়), হৃষিতা ভট্ট, এবং ড্যানি ডেনজংপা।
  • (২) অশোক দ্য গ্রেট ছবিটি প্রযোজনা করেছেন শাহরুখ খান, জুহি চাওলা ও রাধিকা সাঙ্গোই। ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন সন্তোষ সিভান ও সাকেত চৌধুরী এবং সংলাপে ছিলেন আব্বাস টাইরেওয়ালা।  
  • (৩) চলচ্চিত্রটি ইউনাইটেড কিংডম এবং উত্তর আমেরিকা জুড়ে ব্যাপকভাবে প্রদর্শিত হয়েছিল। ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভাল এবং টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এ প্রদর্শিত হলে ছবিটি ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিল।

উপসংহার :- সম্রাট অশোকই ছিলেন প্রথম শাসনকর্তা যিনি সমগ্র ভারত উপমহাদেশকে এক রাজ্যের ছায়াতলে নিয়ে এসেছিলেন। একই সাথে তিনি ছিলেন ইতিহাসের প্রথম বৌদ্ধ শাসনকর্তা।

(FAQ) সম্রাট অশোক সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

সম্রাট অশোকের পিতার নাম কি?

সম্রাট অশোক এর রাজত্ব কাল কত?

২৬৯ খ্রিস্টপূর্ব – ২৩২ খ্রিস্টপূর্ব।

অশোক কার কাছে বৌদ্ধ ধর্মের দীক্ষা নেন?

অশোক কোন বংশের রাজা ছিলেন?

অশোককে কেন শ্রেষ্ঠ সম্রাট বলা হয়?

অশোকের পত্নীর নাম কি?

দেবী ও করুবকী।

সম্রাট অশোকের পুত্রের নাম কি?

সম্রাট অশোক কে ছিলেন?

মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট কে?

সম্রাট অশোক প্রায় কত বছর রাজত্ব করেছিলেন?

সম্রাট অশোক কোন বংশের শাসক ছিলেন

সম্রাট অশোকের রাজধানী কোথায় ছিল

১. সম্রাট অশোক কার কাছে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা নেন ?

উপগুপ্ত ।

২. মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট কে ?

অশোক ।

৩. সম্রাট অশোকের স্ত্রীর নাম কী ?

দেবী ।

৪. সম্রাট অশোক কোন বংশের শাসক ছিলেন?

মৌর্য বংশের।

৫. সম্রাট অশোকের পিতার নাম কি?

বিন্দুসার।

Leave a Comment