জনপদ

প্রাচীন জনপদ প্রসঙ্গে গোষ্ঠীর আধিপত্য, রাষ্ট্রের উদ্ভব, জনপদ, মহাজনপদ, জনপদের অর্থ, প্রাচীন ব্যাখ্যা, কৌটিল্যের মন্তব্য, জনপদের উৎপত্তি, বিভিন্ন জনপদ, জনপদের সংগঠন, জনপদ গুলির অবলুপ্তি সম্পর্কে জানবো।

ভারতে প্রাচীন যুগে জনপদ প্রসঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশে বৈদিক যুগের রাজ্য, প্রজাতন্ত্র ও সাম্রাজ্য হল জনপদ, প্রাচীন ভারতে জনপদের উৎপত্তি, জনপদ কী, জনপদের অর্থ, বাংলার প্রাচীন জনপদ, জনপদের উৎপত্তি, বিভিন্ন জনপদ ও জনপদগুলির অবক্ষয় সম্পর্কে জানব।

প্রাচীন জনপদ

ঐতিহাসিক বিষয়জনপদ
প্রধানজনপদিন
সময়কাল১৫০০-৬০০ খ্রিঃ পূঃ
রামায়ণ২৭ টি
মহাভারত২৫ টি
অষ্টাধ্যায়ী১৫ টি
প্রাচীন জনপদ

ভূমিকা :- প্রাচীন ভারত-এ বৈদিক যুগের প্রথম দিকে (১৫০০-৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্র গড়ে উঠতে শুরু করে। এগুলিকে বলা হত জনপদ।

গোষ্ঠীর আধিপত্য

এই সময় কোনো একটি উপজাতি গোষ্ঠী অন্য কোনো গোষ্ঠীর আক্রমণ প্রতিহত করা বা অন্য কোনো গোষ্ঠীর উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। ক্রমে তারা একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে নিজেদের গোষ্ঠীর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে।

রাষ্ট্রের উত্থান

গোষ্ঠীর বিভিন্ন কাজে বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে নেতৃত্ব দিয়ে একজন বা কয়েকজন ব্যক্তি তাদের গোষ্ঠীর অন্যদের ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। সেই নেতা ক্রমে রাজায় পরিণত হন এবং সেই গোষ্ঠীর অধীনস্থ নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে তার ক্ষমতা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবেই প্রাচীন ভারতে রাষ্ট্র ও রাজতন্ত্রের উত্থান ঘটে।

জনপদ

বৈদিক যুগ (১৫০০ থেকে ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)-এর প্রথমদিকে এরূপভাবে গড়ে ওঠা রাষ্ট্রগুলির আয়তন ছিল খুবই ক্ষুদ্র। এগুলি ‘জনপদ’ নামে পরিচিত ছিল।

মহাজনপদ

পরবর্তীকালে বিভিন্ন জনপদ ঐক্যবদ্ধ হলে রাষ্ট্রের আয়তন বৃদ্ধি পায় যা ‘মহাজনপদ‘ নামে পরিচিতি লাভ করে। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে উত্তর ভারতে এরূপ ষোলোটি গুরুত্বপূর্ণ মহাজনপদের অস্তিত্ব ছিল বলে বিভিন্ন বৌদ্ধ ও জৈন গ্রন্থ থেকে জানা যায়।

জনপদের অর্থ

‘জন’ ও ‘পদ’ – এই দুটি শব্দ সংযুক্ত হয়ে ‘জনপদ’ শব্দটি গঠিত হয়েছে।

জনপদ সম্পর্কে ল্যানম্যান-এর মত

চার্লস রকওয়েল ল্যানম্যান-এর মতে, সংস্কৃত ‘জন’ শব্দের অর্থ হল ‘উপজাতি’ এবং ‘পদ’ শব্দের অর্থ হল ‘পা’। এই অর্থ অনুসারে, ‘জনপদ’ বলতে সেই স্থানকে বোঝায় যেখানে কোনো নির্দিষ্ট উপজাতি বা জনগোষ্ঠী বা ‘জন’ তার ‘পদ’ বা পা রেখেছে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট কোনো উপজাতিগোষ্ঠীর নির্দিষ্ট কোনো বসতিই হল ‘জনপদ’।

জনপদ সম্পর্কে প্রাচীন ব্যাখ্যা

প্রাচীন অন্য একটি ব্যাখ্যা অনুসারে ‘জনপদ’ শব্দের দুটি অর্থ করা হয় – ভূখণ্ড বা অঞ্চল এবং ভূমির জনসমষ্টি। সাধারণ অর্থে, ‘জনপদ’ বলতে বৈদিক যুগে বা লৌহ যুগের সূচনায় ভারতে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপজাতিগোষ্ঠীর বসতিকে বোঝায়।

জনপদ সম্পর্কে কৌটিল্যের বক্তব্য

প্রাচীন বিভিন্ন গ্রন্থে ‘জনপদ’ সম্পর্কে আলোচনা পাওয়া যায়। মনুস্মৃতিতে ‘জনপদ’ বলতে রাষ্ট্রকে বোঝানো হয়েছে। কৌটিল্য-এর অর্থশাস্ত্র-এ ‘জনপদ’ বলতে নির্দিষ্ট ভূখণ্ড ও জনসমষ্টিকে বোঝানো হয়েছে। –

(১) ভূখণ্ড

এই ভূখণ্ড সম্পর্কে কৌটিল্য বলেছেন যে, রাষ্ট্রের ভূখণ্ডের জলবায়ু হবে আরামদায়ক, রাষ্ট্রে পর্যাপ্ত উর্বর কৃষিজমি ও বিস্তৃত পশুচারণ ভূমি থাকবে। উর্বর ভূমিতে অনায়াসে প্রচুর ফসল উৎপাদন করা যাবে এবং নিজেদের চাহিদা মেটানোর পর অতিরিক্ত শস্য নিয়ে অন্য রাষ্ট্রের দুর্ভিক্ষ ও দুঃসময়ে সহায়তা করা যাবে।

(২) জনসমষ্টি

কৌটিল্য বলেছেন যে, জনপদে যেমন বিচক্ষণ প্রভুরা থাকবে তেমনি থাকবে প্রচুর সংখ্যক নিম্নবর্গের মানুষ। তা ছাড়া জনপদে প্রচুর পরিশ্রমী কৃষক থাকবে এবং তাদের কর প্রদানের চাপ ও শাস্তি সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে।

জনপদের উৎপত্তি

প্রাচীন ভারতে জনপদ উৎপত্তির বিভিন্ন দিক গুলি হল –

(ক) আর্যদের আগমন ও বসতি বিস্তার

  • (১) আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে বহিরাগত আর্যরা ভারতে প্রবেশ করে। প্রথম পর্বে তারা উত্তর-পশ্চিম ভারতের ‘সপ্তসিন্ধু’ অঞ্চলে বসতি গড়ে তোলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আর্যসমাজে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে তাদের সামাজিক কাঠামোতে পরিবর্তন আসে।
  • (২) আর্যসমাজে কয়েকটি পরিবার নিয়ে একটি গোত্র, কয়েকটি গোত্র নিয়ে একটি গ্রাম, কয়েকটি গ্রাম নিয়ে একটি বিশ এবং কয়েকটি বিশ নিয়ে একটি ‘জন’ গড়ে ওঠে। এই সময় ‘জন’ নামে ভূখণ্ডকে ঘিরে আর্যদের জীবনধারা আবর্তিত হত। সমকালীন বিভিন্ন বৈদিক সাহিত্যে ‘জন’ নামে আর্যদের বসতির উল্লেখ পাওয়া যায়। এই সময় আর্যরা অর্ধযাযাবর জীবন অতিবাহিত করত।

(খ) গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে সংঘর্ষ

ক্রমে গোরু, ভেড়া, তৃণভূমি প্রভৃতি দখলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আর্য উপজাতিগোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে অথবা অন্যান্য অনার্য উপজাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ত।

(গ) জনপদ প্রতিষ্ঠা

পরবর্তীকালে আর্যরা কৃষিকাজ শিখে নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করে। তারা লোহার হাতিয়ারের সহায়তায় তাদের বসতি অঞ্চলের বনজঙ্গল কেটে কৃষিজমি উদ্ধার করে। লাঙলে লোহার ফলা ব্যবহারের ফলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এর ফলে সেই অঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং বসতির প্রসার ঘটে। এভাবে বিভিন্ন জন গুলির আয়তন বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন ‘জনপদ’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

(ঘ) জনপদের চূড়ান্ত বিকাশ

মহাকাব্যের যুগ-এ (১০০০ থেকে ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) ভারতের জনপদগুলির চূড়ান্ত বিকাশ লক্ষ করা যায়। অর্থাৎ বৈদিক সভ্যতার সূচনালগ্নের ‘জন ‘গুলিই মহাকাব্যের যুগে ‘জনপদ’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

(ঙ)  জনপদিন বা রাজার উদ্ভব

জনপদের বাসিন্দাদের নিয়ন্ত্রণ ও ঐক্য বজায় রাখতে আর্যসমাজে নেতার উদ্ভব ঘটে। এই নেতা ক্রমে উপজাতিগোষ্ঠীর সামরিক নেতায় পরিণত হন। অস্ত্রশক্তির জোরে তিনি গোষ্ঠীর সকলের ওপর একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। এভাবে জনপদের শাসক হিসেবে ‘জনপদিন’ পদের উদ্ভব হয়। ‘জনপদিন’ ছিলেন জনপদের রাজার সমতুল। তিনি ক্ষত্রিয়দের মধ্য থেকে নির্বাচিত হতেন। কোনো বিজয়ী ক্ষত্রিয় সমরনায়ক এবং সম্মুখসমরে সুযোগ্য নেতৃত্বদানে সক্ষম ব্যক্তিই এই পদের যোগ্য বলে বিবেচিত হতেন।

বিভিন্ন জনপদ

প্রাচীন বিভিন্ন সাহিত্য থেকে বৈদিক যুগে ভারতে অস্তিত্বশীল বিভিন্ন জনপদের নাম জানা যায়। অবশ্য বিভিন্ন উপাদানে উল্লিখিত জনপদগুলির নামের তালিকায় পার্থক্যও রয়েছে। যেমন –

(১) রামায়ণে উল্লিখিত জনপদ

ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণে গুরুত্বপূর্ণ ২৭টি প্রাচীন জনপদের নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। এগুলি হল অন্ধ্র, পুণ্ড্র, চোল, পাণ্ড্য, কেরল, মেখালা, উৎকল, দশান, অভ্রবন্তী, অবন্তি, বিদরভাস, ম্লেচ্ছ, পুলিন্দ, শূরসেন, প্রস্থল, ভারত, কুরু, মদ্রক, কম্বোজ, দরদাস, কিরাত, তঙ্গন, যবন, শক, চিন, মহাচিন এবং নীহার।

(২) মহাভারতে উল্লিখিত জনপদ

ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারতে ২৫টি জনপদের নামের উল্লেখ রয়েছে। এগুলি হল অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, মগধ, কাশী, কোশল, বৎস, গর্গ, কারুশ, পুণ্ড্র, অবন্তি, দাক্ষিণাত্য, পারবরটক, দশের্ক, কাশ্মীর, উরস, পিশাচ, মুদগলা, কম্বোজ, বতধন, চোল, পাণ্ড্য, ত্রিগর্ভ, মালব এবং দরদ। এ ছাড়া এই মহাকাব্যে কুরু এবং পাঞ্চাল নামে দুটি জনপদেরও উল্লেখ আছে।

(৩) অষ্টাধ্যায়ী গ্রন্থে উল্লিখিত জনপদ

অষ্টাধ্যায়ী নামে গ্রন্থটিতে ১৫টি ক্ষত্রিয় জনপদের উল্লেখ রয়েছে। এই ১৫টি জনপদ হল সালভিয়া, গান্ধারী, মগধ, কলিঙ্গ, শূরসেন, কোশল, অজদা, কুরু, সালভা, প্রত্যাগ্রথ, কালকূট, অস্মক, কম্বোজ, অবন্তি এবং কুন্তী। এর মধ্যে কয়েকটি জনপদ ছিল প্রজাতান্ত্রিক।

(৪) পুরাণে উল্লিখিত জনপদ

প্রাচীন কালের বিভিন্ন পুরাণ-এর ‘ভুবনকোশ’ অংশে প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশকে ৭টি অংশে বিভক্ত করে এই অংশগুলিতে অবস্থিত অসংখ্য জনপদের উল্লেখ করা হয়েছে।

জনপদের সংগঠন

প্রাচীন ভারতে বিভিন্ন জনপদের বিকাশের পরবর্তীকালে আর্যদের অর্ধযাযাবর জীবনের সমাপ্তি ঘটে। নির্দিষ্ট জনপদে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলে তাদের পরিবারিক জীবনে সুস্থিতি আসে। এই সময় জনপদে আর্যদের সুশৃঙ্খল জীবনযাত্রার প্রয়োজনে এগুলিতে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্ভব হয়। এগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল পরিবার, বণিকশ্রেণি এবং শাসকগোষ্ঠী।

(ক) পরিবার

  • (১) জনপদে বসবাসকারী বিভিন্ন আর্য পরিবারের প্রধান ‘গহপতি’ নামে পরিচিত হতেন। পরিবারের যাবতীয় সম্পত্তির মালিক ছিলেন গহপতি। আর্যরা যুদ্ধের সময় শত্রুপক্ষের লোকেদের বন্দি করে ক্রীতদাসে পরিণত করত। গহপতিরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের কৃষিজমি এই ক্রীতদাস ও শূদ্রদের দিয়ে চাষ করাত।
  • (২) উৎপাদিত ফসলে শ্রমদানকারী ক্রীতদাস বা শূদ্রদের কোনো অধিকার থাকত না। ফসলের যাবতীয় মালিক হতেন গহপতি নিজে। এভাবে শ্রমিকদের বঞ্চিত করে কোনো কোনো গহপতি বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে উঠেছিলেন। এমন ধনী গহপতিও এই সময় ছিলেন যার কৃষিজমি চাষ করতে অন্তত পাঁচশো লাঙলের প্রয়োজন হত।

(খ) বণিকশ্রেণি

  • (১) জনপদে কৃষির অগ্রগতির ফলে উদ্‌বৃত্ত উৎপাদনের উপর ভিত্তি করে বাণিজ্যের বিকাশ ঘটে। এর ফলে বণিকশ্রেণির উদ্ভব হয়। পণ্য ক্রয়বিক্রয়ের মাধ্যমে তারা বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হয়ে ওঠে। এসব ধনী বণিকরা সমাজে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হয়ে ওঠে।
  • (২) জনপদের এই ধনী বণিকদের পেশাকে বৈদিক শাস্ত্রে নিন্দার চোখে দেখা হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থে শেঠঠি নামে এরূপ ধনী বণিকদের উল্লেখ আছে। বাণিজ্যের ফলে জনপদে নগরজীবনের উদ্ভব হয় এবং বণিকরা এইসব নগরে বসবাস শুরু করে।

(গ) শাসকগোষ্ঠী

  • (১) জনপদের যুগের শেষদিকে বৈদিক সমাজে রাজার শাসনের ধারণা গড়ে উঠতে থাকে। আর্যদের কোনো একটি উপজাতিগোষ্ঠীর গোষ্ঠী-প্রধানকে সেই গোষ্ঠীর প্রধান শাসক বা রাজা বলে মনে করা হত।
  • (২) উদাহরণ হিসেবে কিংবদন্তির রাজা রামচন্দ্রের কথা বলা যায়। রামচন্দ্র নিজেকে ‘রঘুকুলরাজ’ বলে পরিচয় দিতেন। এর অর্থ হল ‘যিনি রঘু গোষ্ঠীর শাসক’।
  • (৩) গোষ্ঠীর প্রধান তখন কোনো বাধ্যতামূলক কর পেতেন না, তবে কিছু স্বেচ্ছা কর তিনি লাভ করতেন। তখন তার কোনো স্থায়ী সেনাদলও ছিল না। তিনি সেই গোষ্ঠীর পিতৃতুল্য এবং গোষ্ঠীর সম্পদের রক্ষক বলে বিবেচিত হতেন।

জনপদগুলির অবলুপ্তি

বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এই জনপদগুলি সর্বদা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত থেকে নিজেদের শক্তি ক্ষয় করত। এই সংঘর্ষের ফলে আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক নাগাদ কয়েকটি জনপদ অন্য জনপদগুলিকে দখল করে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এভাবে একাধিক জনপদ সংযুক্ত হয়ে অপেক্ষাকৃত বড়ো রাষ্ট্র গড়ে উঠলে বহু জনপদের অবলুপ্তি ঘটে।

উপসংহার :- একাধিক জনপদ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গড়ে ওঠা বড়ো ভূখণ্ড গুলিকে বৌদ্ধশাস্ত্রে ‘মহাজনপদ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতে এরূপ ষোলোটি মহাজনপদের অস্তিত্ব ছিল বলে বৌদ্ধগ্রন্থ অঙ্গুত্তরনিকায়, জৈনগ্রন্থ ভগবতীসূত্র, হিন্দু পুরাণ প্রভৃতি থেকে জানা যায়। এগুলি একত্রে ষোড়শ মহাজনপদ নামে পরিচিত। এর মধ্যে অন্যতম ছিল অবন্তী, বৎস, কোশল, মগধ, কাশী, অঙ্গ প্রভৃতি।

(FAQ) প্রাচীন জনপদ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. মনুস্মৃতিতে জনপদ বলতে কি বোঝানো হয়েছে?

রাষ্ট্রকে।

২. রামায়ণে কতগুলি জনপদের কথা উল্লেখ আছে?

২৭ টি।

৩. মহাভারতে কতগুলি জনপদের কথা উল্লেখ আছে?

২৫ টি।

৪. অষ্টাধ্যায়ী গ্রন্থে কতগুলি জনপদের কথা উল্লেখ আছে?

১৫ টি।

৫. জনপদের প্রধান কে কি বলা হয়?

জনপদিন বা রাজা।

Leave a Comment