আকবরের রাজপুতানা অভিযান

মুঘল সম্রাট আকবরের রাজপুতানা অভিযান প্রসঙ্গে রাজপুতানার দরজা উন্মুক্ত, সমগ্ৰ রাজপুতনার স্বাধীনতা অক্ষুন্ন, আকবরের বিচক্ষণতা, রাজপুতদের সাথে মিত্রতা, রাজপুতদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক, মেবারের সাথে যুদ্ধের কারণ, আকবরের মেবার আক্রমণ, রানা প্রতাপ সিংহ, মেবারের বিরুদ্ধে অভিযান ও হলদিঘাটের যুদ্ধ সম্পর্কে জানবো।

মুঘল সম্রাট আকবরের রাজপুতানা অভিযান

বিষয়আকবরের রাজপুতানা অভিযান
মুঘল বাদশাআকবর
মের্তা দুর্গ১৫৬২ খ্রি
মেবার আক্রমণ১৫৬৭ খ্রি
রণথম্ভোর দুর্গ১৫৬৯ খ্রি
হলদিঘাটের যুদ্ধ১৫৭৬ খ্রি
মুঘল সম্রাট আকবরের রাজপুতানা অভিযান

ভূমিকা :- উজবেক বিদ্রোহ দমন করে এবার আকবর রাজপুতনার দিকে দৃষ্টিনিক্ষেপ করেন। আকবরের পূর্ব পর্যন্ত সমগ্র রাজপুতানার স্বাধীনতা অক্ষুন্ন ছিল।

পূর্বের উল্লেখ

  • (১) পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, আকবর ১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে নিজের মানসিক শান্তি ও পুত্র কামনায় পায়ে হেঁটে আজমিরে খাজা মইনউদ্দিন চিস্তির সমাধি পরিদর্শন করতে যান। তখনই পথিমধ্যে অম্বরের রাজা বিহারিমল তাঁর বশ্যতা স্বীকার করেন এবং নিজ কন্যার সঙ্গে আকবরের বিবাহ দেন।
  • (২) এই রাজপুত কন্যাই জাহাঙ্গির -এর মাতা। বিহারিমলের পুত্র ভগবানদাস ও ভগবানদাসের পুত্র মানসিংহ অম্বর থেকেই আকবরের অধীন পুরস্কার স্বরূপ উচ্চপদ লাভ করেন এবং মুঘল সাম্রাজ্য-এর এক পরম সুহৃদে পরিণত হন। এই ঘটনা আকবরের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মপন্থায় গভীর প্রভাব বিস্তার করে।

আকবরের কাছে রাজপুতনার দরজা উন্মুক্ত

১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে মারোয়াড়ের পথে মের্তা দুর্গ অধিকার করে রাজপুতনার দরজা মুঘলদের কাছে উন্মুক্ত করে দেন। এইরূপে আকবর বিনাযুদ্ধে রাজপুতনার একটি প্রধান রাজ্য তাঁর অধিকারে আনতে সমর্থ হন।

সমগ্ৰ রাজপুতনার স্বাধীনতা অক্ষুন্ন

  • (১) রাজপুতরা সুদীর্ঘকাল নিজেদের স্বাধীন সত্তা বজায় রেখেছিলেন। তুর্কি সুলতানদের মধ্যে আলাউদ্দিন খলজি, শের শাহ অনেকে রণথম্বোর, চিতোর প্রভৃতি রাজপুতনার কোনো কোনো দুর্গ অধিকার করেছিলেন।
  • (২) মেবার ও মারোয়াড়ের রাজপুত নরপতিরা শের শাহ ও বাবর -এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, কিন্তু সমগ্র রাজপুতনার স্বাধীনতা এতকাল প্রায় অক্ষুণ্ণ ছিল।

আকবরের বিচক্ষণতা

  • (১) বিচক্ষণ ও দূরদর্শী রাষ্ট্রনীতিক আকবর উপলব্ধি করেন যে, রাজপুতনার মুঘল আধিপত্য বিস্তার করতে না পারলে তাঁর পক্ষে পশ্চিম অঞ্চলে গুজরাট শাসন করা অথবা দাক্ষিণাত্যে সৈন্য প্রেরণ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ হবে।
  • (২) অথচ প্রত্যক্ষভাবে রাজপুতনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে তিনি রাজপুতদের অমূল্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হয়ে তাদের জীবনমরণ সংগ্রামের বিরোধিতার সম্মুখীন হবেন। তিনি উপলব্ধি করেন যে, ভারতে তখনও আফগানদের ‘ভারতীয়’ এবং মুঘলদের ‘বিদেশি’ বলে মনে করা হত।
  • (৩) তিনি বুঝতে পারেন যে, ভারতে মুঘল শক্তিকে আফগানদের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে রাজপুতদের অমূল্য সহযোগিতাকে কাজে লাগাতে হবে এবং তাতেই ভারতবর্ষ -এ মুঘল শক্তি স্থায়িত্ব লাভ করবে।
  • (৪) এটাও আকবর তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতার বলে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, রাজপুতদের শত্রুতা যেমন তাঁর সাম্রাজ্যের গঠন ও স্থায়িত্বের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে, ঠিক তেমনি রাজপুতদের মৈত্রী ও সহযোগিতা সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পক্ষে অমূল্য সম্পদ হবে।

রাজপুতদের সাথে আকবরের মিত্রতা

সুতরাং রাজপুতদের সঙ্গে তিনি প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে না গিয়ে তাদের মিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ করে মুঘল রাজবংশের ভবিষ্যৎ স্থায়িত্বকে নিরাপদ করার পথে অগ্রসর হন।

রাজপুতদের সাথে আকবরের বৈবাহিক সম্পর্ক

  • (১) রাজপুত জাতির হৃদয় জয় করার জন্য আকবর রাজপুত জাতির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের নীতি গ্রহণ করেন। রাজপুতদের সঙ্গে আকবরের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন প্রাচীন ভারতবর্ষে গুপ্তরাজাদের সঙ্গে লিচ্ছবীদের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়।
  • (২) গুপ্ত সাম্রাজ্য -এর মতো রাজপুতদের সঙ্গে আকবরের বৈবাহিক নীতি ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। এই উদ্দেশ্যে তিনি ১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে অম্বরের রাজা বিহারিমলের কন্যাকে বিবাহ করেছিলেন। ১৫৭০ খ্রিস্টাব্দে বিকানির ও জয়সলমির রাজকুমারীকে বিবাহ করেন।
  • (৩) ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে আকবর ভগবানদাসের কন্যার সঙ্গে রাজপুত্র সেলিমের বিবাহ দেন। কিন্তু মেবারের রানা আকবরের বশ্যতা অস্বীকার করেন নি। ১৫৬৭ খ্রিস্টাব্দে আকবর মেবার রাজ্যের দুর্ভেদ্য দুর্গ চিতোর আক্রমণ করতে মনস্থ করেন।

মেবারের সাথে আকবরের যুদ্ধের কারণ

  • (১) আকবরের সঙ্গে মেবারের যুদ্ধের কারণ সম্পর্কে ঐতিহাসিকরা একমত হতে পারেন নি। আবুল ফজল -এর মতে, মেবারের রানার অধীনে দুর্ভেদ্য দুর্গ থাকায় তাঁর ঔদ্ধত্য ও স্পর্ধার সমুচিত শাস্তি দেওয়ার জন্য আকবর চিতোর আক্রমণ করেন।
  • (২) কিন্তু নিজামউদ্দিনবদায়ুনীর মতে, মেবারের রানা ১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে মালবের শাসক বাজবাহাদুরকে আশ্রয় প্রদান করায় আকবর মেবারের ওপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন এবং সেজন্য আকবর রানাকে শাস্তি দিতে মেবার আক্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
  • (৩) ভিনসেন্ট স্মিথের মতে, আকবর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রয়োজনে মেবার আক্রমণ করেছিলেন। উলসি হেগের মতে, সব রাজপুত প্রধান আকবরের বশ্যতা স্বীকার করেন, কিন্তু সমগ্র রাজস্থানে একমাত্র মেবার তাঁর বশ্যতা স্বীকার করেনি এবং মুঘল সম্রাটের সঙ্গে কোনো মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হতে রাজি হয় নি।
  • (৪) স্বভাবতই সমগ্র রাজস্থানে মেবারের মতো একটিমাত্র রাজ্যের এরকম আচরণ আকবরের মতো সার্বভৌম শাসক মেনে নিতে পারেন নি। তাই আকবর জোর করে মেবারকে মুঘলদের বশ্যতা স্বীকার করাতে বাধ্য করার জন্য যুদ্ধে অবতীর্ণ হন।

আকবরের মেবার আক্রমণ

  • (১) আকবরের সময় মেবারের রানা ছিলেন উদয়সিংহ। রানা সঙ্গের মৃত্যুর পর তাঁর অপদার্থ পুত্র উদয়সিংহ মেবারের রানা হন। ১৫৬৭ খ্রিস্টাব্দে আকবর মেবার আক্রমণ করেন এবং মেবারের রানা উদয়সিংহ আরাবল্লির দুর্গম স্থানে আত্মগোপন করেন।
  • (২) প্রায় চার মাস চিতোর দুর্গ দখলের চেষ্টার পর একদিন আকস্মিকভাবে আকবরের গুলিতে রাজপুত্র বীর জয়মলের মৃত্যু ঘটে। এর ফলে চিতোরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে এবং তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মুঘল বাহিনী চিতোরে প্রবেশ করে দুর্গবাসীদের হত্যা করে।

আকবরের আগ্ৰা প্রত্যাবর্তন

ঐতিহাসিক স্মিথ আকবরের এই নিষ্ঠুরতাকে সমর্থন করতে পারেন নি। মেবারের শাসনভার আসরফ খানের ওপর ন্যাস্ত করে আকবর চিতোর পরিত্যাগ করেন এবং আজমির হয়ে আগ্ৰা ফিরে আসেন। চিতোর বিজয় আকবরের সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে।

আকবরের অপরাপর রাজ্যের বশ্যতা স্বীকার

মেবার রাজ্যের গৌরব ও মর্যাদার প্রতীক দুর্ভেদ্য চিতোর দুর্গের পতনের পর, সমগ্র রাজপুতনার অপরাপর রাজ্যগুলি মুঘলদের বাধাদান নিরর্থক ভেবে একে একে আকবরের বশ্যতা স্বীকার করে।

আকবরের রণথম্ভোর দুর্গ দখল

  • (১) ১৫৬৮ খ্রিস্টাব্দে আকবর রাজস্থানের অন্যতম আর একটি দুর্ভেদ্য দুর্গ রণথম্ভোর অধিকারের জন্য অভিযান করেছিলেন, কিন্তু বৈরাম খাঁ -এর সঙ্গে তাঁর ভুল বোঝাবুঝির জন্য এই অভিযান পরিত্যক্ত হয়েছিল।
  • (২) পরে ১৫৬৯ খ্রিস্টাব্দের ৮ ফেব্রুয়ারি রণথম্ভোর দুর্গ অধিকারের জন্য সেখানে সৈনা সমাবেশ করা হয়। এক মাস অবরুদ্ধ থাকার পর দুর্গের অধিপতি সুর্জন আকবরের বশ্যতা স্বীকার করেন। তাঁকে দু’হাজারি মনসবদারের পদ দেওয়া হয় এবং প্রথমে গন্ডোয়ানা ও পরে বারাণসীর শাসক নিযুক্ত করা হয়।

আকবরের কালিঞ্জর দুর্গ দখল

প্রত্যাবর্তনের পথে আকবর তাঁর সেনাপতি মজনুন খানকে কালিঞ্জর দুর্গ অধিকার করার জন্য পাঠান। কালিঞ্জর দুর্গের অধিপতি রাজা রামচাঁদ বাঘেলা প্রায় বিনা যুদ্ধেই বশ্যতা স্বীকার করেন। তাঁকে এলাহাবাদে একটি জায়গির দেওয়া হয়। কালিঞ্জরের ভারপ্রাপ্ত হন মজনুন খান স্বয়ং।

আকবরের বশ্যতা স্বীকার

  • (১) ১৫৭০ খ্রিস্টাব্দে আকবর যখন নগৌরে অবস্থান করছিলেন তখন যোধপুরের রাজা মালদেবের পুত্র চন্দ্র সেন, বিকানিরের রাজা কল্যাণমল ও তাঁর পুত্র রাই সিং এবং জয়সলমিরের রাজা রাওয়াল হর রাই স্বেচ্ছায় তাঁর বশ্যতা স্বীকার করেন।
  • (২) মালবের পলাতক প্রাক্তন শাসক রাজবাহাদুরও তাঁর আনুগত্য স্বীকার করেন। ১৫৭১ খ্রিস্টাব্দে আকবর ফতেপুর সিক্রিতে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন।

আকবরের সময় মেবারের রাণা প্রতাপসিংহ

  • (১) সমগ্র রাজপুতনা প্রায় বিনা যুদ্ধে আকবরের আনুগত্য স্বীকার করলেও, মেবারের গৌরব-কবি চিতোরের পতন ঘটা সত্ত্বেও মেবার কিন্তু আকবরের আনুগত্য স্বীকার করে নি। মেবারের রানা উদয়সিংহের মৃত্যু হলে তাঁর পুত্র প্রতাপসিংহ মেবারের রানা হন।
  • (২) তিনি উদয়পুর, কুন্তলগড় ও গোগুণ্ডায় শক্তি সঞ্চয় করে চিতোর পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা করেন। তিনি মেবারে স্বাধীনতার পতাকা উড়িয়ে দেন। রাণা প্রতাপসিংহকে আকবর অত্যন্ত উদার শর্তে তাঁর বশ্যতা স্বীকারের আহ্বান জানালে প্রতাপসিংহ তা প্রত্যাখ্যান করেন।

মেবারের বিরুদ্ধে আকবরের অভিযান

প্রতাপসিংহকে নতজানু করার উদ্দেশ্যে আকবর ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে রাজা মানসিংহ ও আসরফ খানকে তাঁর বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। মুঘল বাহিনী মণ্ডলগড়ের মধ্য দিয়ে গোগুল্ডা পর্যন্ত অগ্রসর হবার মুখে হলদিঘাট নামক গিরিপথে প্রতাপসিংহ কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়।

আকবর ও রাণা প্রতাপসিংহের হলদিঘাটের যুদ্ধ

২১ জুন তারিখে উভয় বাহিনীর মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর প্রতাপসিংহ পরাজিত হয়ে পলায়ন করেন। এই সংগ্ৰাম বা যুদ্ধ হলদিঘাটের যুদ্ধ নামে পরিচিত। এই যুদ্ধের পর গোগুণ্ডা মুঘল অধিকারে আসে।

আকবরের সময়কালে ক্ষুদ্র রাজপুত রাজ্য সমূহ

সিরোহি, ইনার, বন ওয়ারা, দুগরপুর, ওর্চা প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজপুত রাজ্যগুলি মুঘলদের বশ্যতা স্বীকার করে।

আকবরের নির্দেশে শাহবাজ খানের অভিযান

  • (১) ১৫৭৮ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে আকবর শাহবাজ খানকে প্রতাপসিংহের বিরুদ্ধে পুনরায় প্রেরণ করেন। মুঘলবাহিনী বেলওয়ারা, কুম্ভলগড় ও গোগুণ্ডায় প্রবেশ করলে, প্রতাপসিংহ চবন্দ নামক স্থানে আত্মগোপন করেন।
  • (২) অতঃপর সুযোগ বুঝে তিনি কুম্ভলগড় পুনরুদ্ধার করেন এবং বনওয়ারা ও দুঙ্গরপুরের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। শাহবাজ খান তাঁকে দমন করতে ব্যর্থ হন।

আকবরের নির্দেশে জাফর বেগের অভিযান

১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে আকবর রানার বিরুদ্ধে জাফর বেগ ও জগন্নাথকে প্রেরণ করেন কিন্তু তাঁরাও ব্যর্থ হন। তবে হলদিঘাটের যুদ্ধ আকবরকে সমগ্র রাজপুতনায় এক অভাবনীয় মর্যাদা দান করে।

রানা প্রতাপের হৃত রাজ্য পুনরুদ্ধার

১৫৯৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পূর্বে রানা প্রতাপ আজমির, চিতোর ও মণ্ডলগড় ছাড়া তাঁর হৃতরাজ্যের অনেকটাই পুনরুদ্ধার করেছিলেন। আকবর রানা প্রতাপের স্বাধীনতাপ্রিয়তা ও আত্মমর্যাদাবোধকে সম্মান জানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আর বড়ো কোনো অভিযান প্রেরণ করেন নি।

অমরসিংহের বিরুদ্ধে আকবরের অভিযান

১৬০০ খ্রিস্টাব্দে আকবর রাজকুমার সেলিম ও রাজা মানসিংহকে প্রতাপের উত্তরাধিকারী অমরসিংহের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। কিন্তু আকবর বাংলা অভিযান-এ ব্যস্ত থাকায় রাজা মানসিংহ মেবার ত্যাগ করে বাংলাদেশ-এ চলে যান এবং তার ফলে এই অভিযান মাঝপথে পরিত্যক্ত হয়।

উপসংহার :- আবুল ফজল প্রতাপসিংহ সম্পর্কে ভালো ধারণা পোষণ করেন নি। কিন্তু ঐতিহাসিক স্মিথের মতে, প্রতাপের দেশপ্রেমই ছিল তাঁর অপরাধ। কিন্তু তখন দেশপ্রেম ছিল এক সন্দেহাতীত বস্তু।

(FAQ) মুঘল সম্রাট আকবরের রাজপুতানা অভিযান সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. আকবর কখন মেবার আক্রমণ করেন?

১৫৬৭ খ্রিস্টাব্দে।

২. আকবরের প্রথম মেবার আক্রমণের সময় মেবারের রাণা কে ছিলেন?

উদয়সিংহ।

৩. হলদিঘাটের যুদ্ধ কখন হয়?

১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে।

৪. হলদিঘাটের যুদ্ধের সময় মেবারের রাণা কে ছিলেন?

রানাপ্রতাপ সিংহ।

Leave a Comment