প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল

প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল প্রসঙ্গে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে সোসাইটি অফ জেসাসের উত্থান, জেসুইটদের উত্থান, প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে পোপের উত্থান, ক্যাথলিক প্রোটেস্ট্যান্ট দাঙ্গা, প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থা, প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে ক্যাথলিক প্রতিক্রিয়া, প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে খ্রিস্টধর্মের নতুন নাম ও প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের পরোক্ষ ফল সম্পর্কে জানব।

ইউরোপে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল প্রসঙ্গে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে পোপের উত্থান, প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থা, প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ফলাফল ও প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের পরোক্ষ ফলাফল সম্পর্কে জানব।

প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল

ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল
আন্দোলনের নেতাইগনেসিয়াস লয়োলা
সূচনাকারীক্যাথলিক সম্প্রদায়
প্রতিক্রিয়াশীল কর্মইনকুইজিশান প্রতিষ্ঠা
ফ্রান্স-এ দাঙ্গা১৫৬২ খ্রি
উত্থানজেসুইট
প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল

ভূমিকা :- প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া ইউরোপ-এ শুরু হয়েছিল ষোড়শ শতকের শেষের দিকে। মোটামুটি ভাবে বলা যায় ষোড়শ শতকের প্রথমে চালু হওয়া এই প্রতি ধর্মসংস্কার আন্দোলন খ্রিষ্টান জগতে প্রোটেস্টান্টদের অগ্রগতি রোধ করবার প্রয়াস নিয়ে অগ্রসর হয়েছিল। একই সঙ্গে রোম-এ চার্চের সোসাইটি অফ জেসাস মহিমাকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্দেশ্যে এই আন্দোলন চলে।

প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে সোসাইটি অফ জেসাসের উত্থান

  • (১) এই আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া হিসাবে জেসুইটদের উত্থান ঘটে। জেসুইটরা ছিল সোসাইটি অব জেসাস নামে একটি সংগঠনের সদস্য। ১৫৪১ সালের মধ্যে কয়েকটি রোমান ক্যাথলিক পন্থী এবং প্রোটেস্টান্ট সংগঠন গড়ে ওঠে। এঁরা খ্রিষ্টধর্মের পবিত্রতা রক্ষায় উদ্যোগী ছিল।
  • (২) প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে ১৫৩৪ সালে ইগনাসিয়াস লয়লা নামে একজন রোমান ক্যাথলিক সোসাইটি অব জেসাসের প্রতিষ্ঠা করে। এই প্রতিষ্ঠা প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের সব থেকে বড় প্রতিক্রিয়া ছিল। কারণ এই সোসাইটি অব জেসাস ইউরোপের উল্লেখযোগ্য খ্রিষ্টান সংগঠনে পরিণত হয়।
  • (৩) তারা শুধু ধর্মসংস্কার আন্দোলন চালায়নি তারা খ্রীষ্টান ধর্ম পালনে অতীব কঠোরতা দেখিয়েছিল। নিয়মানুবর্তিতা, নৈতিকতা এবং কঠোর জীবনযাপনের প্রতি জেসুইটরা জোর দেয়। প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া হিসাবে জেসুইটদের উত্থান শুধু প্রোটেস্টান্টদের দমন করে নি। এটি রোমান ক্যাথলিকদের মধ্যেও পুনরায় সংস্কার আনতে চেয়েছিল।
  • (৪) এই সময়ের আগে কয়েকটি নতুন খ্রিষ্টান সংগঠন তৈরি হয়। যারা কিছুটা একই উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল যেমন – বারনাবাইটিস, থিওটাইনস সহ বিভিন্ন গোষ্ঠী। ঐতিহাসিক ম্যালেট (malet) বলেছেন এই সবের জন্ম হয়েছিল চার্চের ইতিহাসে সংকট দেখা দিয়েছিল বলে। অর্থাৎ প্রতিধর্মসংস্কারকারীদের মতে ধর্মসংস্কারকারীরা সংকট সৃষ্টি করেছিল। জেসুইটরা সংঘবদ্ধভাবে বেশি সংখ্যায় তার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে।

জেসুইটদের উত্থানে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রভাব

  • (১) প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় জেসুইটদের কথা বিশেষভাবে বলতে হবে। তারা তিনদিকে সংগ্রাম চালায়, একদিকে তারা পুরোনো রোমান ক্যাথলিক ধর্মকে সংস্কার করতে চেষ্টা করেছিল। একই সঙ্গে ইউরোপের রাজাদের প্রোটেস্টান্টদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে পরামর্শ দিয়েছিল।
  • (২) দ্বিতীয়ত, সমাজসেবা এবং কঠোর নিয়মানুবর্তী জীবনের ভেতর দিয়ে তারা জনগণের চিত্ত জয়ে সফল হয়েছিল এর ফলে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলন তীব্র হয়।
  • (৩) তৃতীয়ত, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, হাঙ্গেরী, ভারত, চীন, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার পরে পূর্ব ইউরোপে ছড়িয়ে গিয়ে জেসুইটরা রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচার করেছিল। ফলে এইসব দেশে প্রোটেস্টান্ট ধর্ম সেভাবে প্রবেশ লাভ করে নি।

প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে পোপের উত্থান

  • (১) জেসুইটদের সংস্থা গড়া হয়েছিল সেনাবাহিনীর আদর্শে এবং জেসুইট নির্দেশনামায় বলা হয়েছিল, “All who wished to fight for God under the strander of the cross and serve only God and the Roman pontiff, his vicar upon earth, are called to support the society of Jesus which has been founded for that purpose”।
  • (২) পৃথিবীতে ঈশ্বরের প্রতিনিধি রোমের পোপকে তারা বিশেষ গুরুত্ব দেয় এবং দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। ফলে দেখা গিয়েছিল পোপের মহিমা ইউরোপে আবার বেড়ে গিয়েছিল। অতএব বলা যায় যে, প্রতিধর্মসংস্কারের প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল শপথ গ্রহণের মাধ্যমে জেসুইটদের উত্থান এবং পাশাপাশি পোপের মহিমার উত্থান।

ইউরোপে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে দাঙ্গা

  • (১) এই আন্দোলনের একটি প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া হল ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্টদের মধ্যে দাঙ্গা। ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্টদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিশেষত ফ্রান্সে (১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে) এই দাঙ্গা ক্যাথলিক প্রোটেস্টান্ট সংঘর্ষ। বাড়িয়েছিল।
  • (২) আবার ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্ট দুপক্ষেই নানা ধরনের তত্ত্বের জন্ম দেয়। যেমন – হট্‌ম্যান ও মরনের (গ্রন্থের নাম ভিনডিশিয়া) তত্ত্ব প্রোটেস্টানন্টদের উদ্দীপ্ত করেছিল। হট্‌ম্যানের ‘ফ্রাঙ্কোগ্যালিয়া’ (Francogallia) এবং জুনিয়াস ক্রটাসের লেখা “ভিনডিশিয়া কনন্ট্রাটিরেনাশ’ (Vindiciae Contra Tyrannos) গ্রন্থ দুটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
  • (৩) ১৫৬২, ১৫৭২ খ্রিষ্টাব্দে অর্থাৎ ভাসি, বার্থলোমিউ প্রভৃতি ছোট বড় দাঙ্গায় মারা গিয়েছিল হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষ। কিন্তু এই প্রতিক্রিয়ার ভেতর দিয়ে রচিত হয় নতুন দর্শন এটা দুপক্ষেই হয়েছিল। ফলে খ্ৰিষ্টান জগৎ উল্লেখযোগ্যভাবে গতিশীল হয়েছিল এবং প্রোটেস্টান্টদের পক্ষ থেকে রাজাকে নিয়ন্ত্রণ করার যে কথা বলা হয়েছিল পরবর্তীকালে তা কিন্তু গণতান্ত্রিক চেতনার জন্ম দেয়।
  • (৪) বিপরীতে চাপে পড়ে পোপেরা কিন্তু নিজেকে পাল্টে নেবার চেষ্টা করে। যেমন পোপ তৃতীয় পল চেষ্টা করেছিলেন রক্তপাত থামাতে। পোপ পিউস এবং অন্যান্য পোপেরা সমাধান চেয়েছিলন এইজন্যই পঞ্চম চার্লস উদ্যোগী হন একটি সভা করার যার মাধ্যমে এই দ্বন্দ্ব কমতে পারে।

প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থা

  • (১) এই প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় বেশ কিছু প্রতিক্রিয়াশীল কাজ হয়। ইনকুইজিশান ও ইনডেক্স তার প্রমাণ। এই দুটি সংস্কার মাধ্যমে প্রোটেস্টান্টদের ওপর তীব্র অত্যাচার চালান রোমান ক্যাথলিকরা। পোপের এতে সায় ছিল। অবশ্য এর আগে কাউন্সিল অব ট্রেন্টের মাধ্যমে চেষ্টা করা হয় যাতে সমাধান সূত্র বার করা যায়।
  • (২) ইতালির ট্রেন্টে মার্টিন লুথারের সঙ্গে পঞ্চম চার্লস ও পোপ তৃতীয় পলের চেষ্টায় আলোচনা সভা বসেছিল। ১৫৪৫, ১৫৫১ এবং ১৫৬২ সালে তিনবার কাউন্সিল ও ট্রেন্টের আলোচনা বসে। এতে প্রোটেস্টান্ট নেতা মার্টিন লুথার এসেছিলেন কিন্তু কোন ফল হয় নি।
  • (৩) মূল আলোচনা ভেস্তে গেলেও অন্যদিকে আসল উদ্দেশ্য সফল হয় তাকে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া বলা যেতে পারে। এই সম্মেলনে পোপ ও রোমান ক্যাথলিকরা স্থির করে নেয় রোমান ক্যাথলিক জগৎ কিভাবে চলবে।
  • (৪) আরও লক্ষ্যণীয় এই যে রোমান চার্চের নীতি কিন্তু কঠোর হয়ে ওঠে। এই কঠোরতার প্রতিক্রিয়া পরবর্তীকালে বার্থালমিউ এর হত্যাকাণ্ড হয়। তৈরি হয় ইনডেক্স ও ইনকুইজিশান, ইনডেক্সের মধ্যে রাজবিরোধী ও খ্রিষ্টান বিরোধী সমস্ত বইয়ের তালিকা তৈরি করা হয় এবং ঐ তালিকা ধরে বইগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং লেখকদের হত্যা করা হয়।
  • (৫) এতে সবথেকে সক্রিয় ভূমিকা নেয় ইনকুউজিশান। এটি ছিল একটি বিচারব্যবস্থা একই সঙ্গে স্বীকারোক্তি আদায়ের কেন্দ্র এবং দণ্ডদানকারী সংস্থা ইনডেক্স। শুধু তাই নয়, ইনকুইজিশানের দ্বারা তৈরি করা আরও সংস্থা ছিল। এদের মধ্যে প্রধান ছিল ইনডেক্স, ইনডেক্স বলে যে সংস্থা তৈরি হয়েছিল তাদের ওপর দায়িত্ব ছিল মূলত নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকা প্রস্তুত করা।
  • (৬) এতে রাজবিরোধী ও খ্রিস্টধর্ম বিরোধী বই ছাড়া অশ্লীল বই এবং মন্ত্রতন্ত্র ও ব্ল্যাক ম্যাজিকের বইও তালিকাভুক্ত হত। ১৫৬৭ সালে পোপ চতুর্থ পলের নামে ৬২ জন লেখকের বই তালিকাভুক্ত করা ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ১৫৬০ সালে আবার নতুন তালিকা হয়।
  • (৭) ইতিমধ্যে মুদ্রণযন্ত্র চালু হবার ফলে ইনডেক্স তার কাজ পুরোপুরি করতে পারে নি। সব ছাপা বই পোড়ানো যায় নি। পাশাপাশি ইনকুইজিশানের কাজ চলেছিল পোপবিরোধী মহলে। বহু বিজ্ঞানী ও লেখককে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। এঁদের মধ্যে জিওরদানো ব্রুনো এবং পাস্কেল ছিলেন। বিখ্যাত।

ইউরোপে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে ক্যাথলিক প্রতিক্রিয়া

  • (১) একথা বাল যায় প্রোটেস্টান্টটিজম সমেত বিপুল প্রবাহ থামিয়ে দেয় প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলন। ইউরোপ নানা দাঙ্গা ও অত্যাচারের মধ্য দিয়ে ধাবিত হয়েছিল এক নতুন যুগের দিকে। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে প্রোটেস্টান্টদের প্রতিক্রিয়া যদি ধর্মসংস্কার হয় তাহলে ক্যাথলিকদের প্রতিক্রিয়া হল প্রতিধর্মসংস্কার।
  • (২) প্রতিধর্মসংস্কারের ভেতর দিয়ে ফ্রান্সে ধর্মীয় যুদ্ধ শুরু হয় ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলের মত। এর ফলে একছত্র রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে হিউগেনা (ফরাসী প্রোটেস্টান্ট) অনেকগুলি গ্রন্থ প্রকাশ করে।
  • (৩) ফ্রান্সিস হটম্যানের লেখা ফ্রাঙ্কোগালিয়া (Franco Gallia) এবং স্টিফেননাস জুনিয়াস ব্রুটাস নামে একজন প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের নেতার লেখা ভিনজিশিয়া কনট্রাটিরেনাস (Vindiciae Contra Tyrannos) নামে দুটি গ্রন্থ উল্লেখযোগ্য।
  • (৪) এই দুটি গ্রন্থকে চ্যালেঞ্জ করে ক্যাথলিকদের পাল্টা যুক্তি দানা বাঁধে। ফলে দেখা গিয়েছিল প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলন শুধু যুদ্ধ নয়, তাত্ত্বিক যুদ্ধেও রূপান্তরিত হয়েছিল।

প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে খ্রিস্টধর্মের নতুন নাম

  • (১) সাধারণভাবে দেখা যায় যে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলন ছিল প্রাচীন পন্থী। এটি বিজ্ঞান শিক্ষার বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু কালক্রমে এর গতিবেগ পরিবর্তিত হয়। ক্যাথলিক চার্চের ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়েও আলোচনা শুরু হয়। চার্চের ক্ষমতাশালী যাজকদের দুর্নীতি বন্ধের চেষ্টা চলে।
  • (২) বহু নতুন নতুন জায়গায় খ্ৰিস্টান ধর্ম ছড়িয়ে পড়ে জেসুইটদের জন্য। বিশেষ করে এশিয়া, রাশিয়া ও রাশিয়া সন্নিহিত অঞ্চলে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করতে থাকে জেসুইটরা। স্পেন, ইতালি ও ফ্রান্সে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলন সবচেয়ে বেশি সফল হয়।
  • (৩) ইনকুইজিশনের নৃশংসতা ইউরোপকে স্তম্ভিত করে দেয়। নেদারল্যান্ড ও স্পেনে কিন্তু সাধারণ মানুষ এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। ফলে স্পেনে প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনকারীদের শক্তি কমে। এই পারস্পরিক দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে ইউরোপে খ্রিস্টধর্মের পথ এক নতুন সমন্বয়ের দিকে পরিচালিত হয়।

প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের পরোক্ষ ফল

  • (১) এই প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের পরোক্ষ ফলগুলির ভিতরে উল্লেখযোগ্য ছিল রাজতন্ত্রের ঐশ্বরিক অধিকারের ধারণা ফিরে আসা। জেসুইটরা রাজাকে ঐশ্বরিক অধিকার প্রাপ্ত বলেছিল এবং রাজা পোপের কথা পালন করবেন এরকমও বলা হয়েছিল।
  • (২) অন্যদিকে রাজারাও ধর্মসংস্কার আন্দোলনকে ভয় পেত। কারণ ‘র‍্যাডিক্যাল লুথারিয়ান’ এবং র‍্যালিকাল কেলভিনরা একচ্ছত্রবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছিল। তারা বলেছিল রাজা অত্যাচারী হলে তাকে উচ্ছেদ করতে হবে।
  • (৩) এই মতের বিপক্ষে রাজা পঞ্চম চার্লস জেসুইটদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন অবশ্য শুধু বিরোধীতা নয় পঞ্চম চার্লস একটা মিটমাটেরও চেষ্টা করেছিলেন এইজন্য সভা ডাকা হয়েছিল।

উপসংহার :- প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে জেসুইটদের সংগঠন অত্যন্ত আটোসাঁটো ভাবে গড়ে ওঠে এবং তৈরি হয় ক্যাথলিক কাউন্সিল। এরপর থেকে এই ধরণের সংগঠন তৈরির একটা উদ্যোগ দেখা যায়।

(FAQ) প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলাফল সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. খ্রিস্টান ধর্মের প্রধান দুটি ভাগ কি কি ছিল?

 ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট।

২. প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে কাদের অগ্রগতি রোধ করার চেষ্টা করা হয়?

প্রোটেস্ট্যান্টদের।

৩. প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রধান নেতা কে ছিলেন?

ইগনেসিয়াস লয়োলা।

৪. প্রতিধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় কোন কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল?

ইনকুইজিশান ও ইনডেক্স।

Leave a Comment