গুপ্ত যুগ কি সুবর্ণ যুগ

গুপ্ত যুগ কি সুবর্ণ যুগ প্রসঙ্গে গুপ্ত যুগে ভারতের নিরাপত্তা, সাম্রাজ্যের সংহতি ও ঐক্য, উদারপন্থী শাসন ব্যবস্থা, ধর্মসহিষ্ণুতা, সাহিত্যে অগ্ৰগতি, স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের উন্নতি, গুপ্ত শাসনের দুর্বলতা, জনসাধারণের দারিদ্র্য, নগরগুলির ধ্বংস ও জাতিভেদ প্রথা সম্পর্কে জানবো।

গুপ্ত যুগ কি সুবর্ণ যুগ

ঐতিহাসিক ঘটনাগুপ্ত যুগ কি সুবর্ণ যুগ
সাম্রাজ্যগুপ্ত সাম্রাজ্য
প্রতিষ্ঠাতাশ্রীগুপ্ত
শ্রেষ্ঠ রাজাসমুদ্রগুপ্ত
কবি সার্বভৌমকালিদাস
জ্যোতির্বিজ্ঞানীআর্যভট্ট
গুপ্ত যুগ কি সুবর্ণ যুগ

ভূমিকা :- গুপ্ত যুগের উদারপন্থী শাসনব্যবস্থা, সাহিত্য, শিল্পের অসাধারণ অগ্রগতি, জনসাধারণের স্বচ্ছলতা ও দেশে শান্তি লক্ষ্য করে কোনো কোনো ঐতিহাসিক এই যুগকে স্বর্ণযুগ বলেন। বার্ণেট নামে এক ইউরোপীয় ঐতিহাসিক গুপ্তযুগকে প্রাচীন গ্রিস -এর পেরিক্লীয় যুগের (Periclean Age) সঙ্গে তুলনা করেছেন।

গুপ্তযুগে ভারতের নিরাপত্তা

স্কন্দগুপ্ত -এর শাসনকাল পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের বৈদেশিক আক্রমণ গুপ্ত যুগে ঘটেনি। ভারত -এর নিরাপত্তা ও শান্তি দীর্ঘকাল মোটামুটিভাবে অক্ষুণ্ণ ছিল। স্কন্দগুপ্তের আমলে ভারতে হূণ আক্রমণ ঘটলেও তিনি তা প্রতিহত করে আরও ৫০ বছর ভারতকে নিরাপদ রাখেন। এই কৃতিত্ব বড় কম ছিল না। গুপ্ত শাসনের একেবারে শেষদিকে পুনরায় হূণ আক্রমণ ঘটে। সুতরাং দীর্ঘকাল গুপ্ত সম্রাটরা ভারতকে বৈদেশিক আক্রমণ থেকে সুরক্ষা করেন।

গুপ্ত সাম্রাজ্যে সংহতি ও ঐক্য

  • (১) গুপ্ত সাম্রাজ্যের শাসন ব্যবস্থার আভ্যন্তরীণ শান্তি ও সংহতি রক্ষায় বিশেষ কার্যকরী হয়েছিল। মৌর্যযুগের অতি-কেন্দ্রীকতা ত্যাগ করে গুপ্ত সম্রাটরা কেন্দ্রীকরণ ও বিকেন্দ্রীকরণ নীতির মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপন করেন। সাম্রাজ্যের ঐক্যকে বিনষ্ট না করে, তারা প্রদেশ ও জেলা স্তরে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করেন এবং স্থানীয় প্রতিনিধি সভা গঠনের ব্যবস্থা করেন।
  • (২) গুপ্ত শাসনব্যবস্থার এই দিকটি ছিল নিঃসন্দেহে প্রগতিশীল। এর ফলে সাম্রাজ্যের সংহতি দৃঢ় হয় এবং স্থানীয় ঔপজাতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষিত হলে জনসাধারণ সন্তুষ্ট হয়। ভারতের মত একটা বিশাল দেশের পক্ষে এককেন্দ্রিক শাসনের দুর্বলতা তারা বিশেষভাবে বুঝেছিলেন।

উদারপন্থী শাসন গুপ্ত ব্যবস্থা

গুপ্ত শাসন ব্যবস্থার চরিত্র ছিল উদার। ফা-হিয়েনের বিবরণ থেকে জানা যায় যে, জনসাধারণ স্বাধীন ও অবাধভাবে জীবন-যাপন করত। কোনো গুপ্তচর বা সরকারী কর্মচারী তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও দৈনন্দিন জীবনের শান্তিকে বিঘ্নিত করত না। ফৌজদারী আইন ছিল মৃদু, নিতান্ত বিশেষ অপরাধ ছাড়া অপরাধীর অঙ্গচ্ছেদ করা হত না। প্রাণদণ্ড খুবই সীমাবদ্ধ ছিল। ফা-হিয়েনের নিরপেক্ষ রচনার তথ্য হতে গুপ্ত যুগকে সুবর্ণ যুগ বলার উপাদান পাওয়া যায়।

গুপ্ত সম্রাটদের ধর্মসহিষ্ণুতা

  • (১) গুপ্ত যুগের ধর্ম ব্যবস্থাও প্রশংসনীয় ছিল। যদিও এই যুগে ব্রাহ্মণ্যধর্মের পুনর্জাগরণ ঘটেছিল বলা হয়, যদিও সমুদ্রগুপ্ত অশ্বমেধ যজ্ঞ অনুষ্ঠান করেন, যদিও গুপ্ত যুগে ব্রাহ্মণরা প্রাধান্য পান তথাপি গুপ্ত সম্রাটরা ধর্মসহিষ্ণু ছিলেন। তাঁরা অন্য ধর্মগুলি বিশেষত বৌদ্ধ ধর্ম -এর প্রতি যথোচিত উদারতা ও সাহায্য করতেন।
  • (২) সিংহলের রাজা মেঘবর্ণ সমুদ্রগুপ্তের কাছে দূত পাঠিয়ে বোধগয়ায় বিহার নির্মাণ করতে চাইলে তিনি অনুমতি দেন ও এই বিহারের ব্যয় নির্বাহের জন্যে কয়েকখানি গ্রাম দান করেন। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়-এর পৃষ্ঠপোষকতা গুপ্ত সম্রাটরা করতেন। গুপ্ত সম্রাটরা জৈন ধর্ম -এর বিশেষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা না করলেও সাধারণ লোক ও মধ্যবিত্তশ্রেণীর মধ্যে বিশেষত পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতে জৈনধর্মের জনপ্রিয়তা ছিল।
  • (৩) গুপ্ত যুগে হিন্দুধর্মের প্রাধান্য বাড়লেও তা বৈদিক হিন্দুধর্ম ছিল না। তা ছিল লৌকিক ধর্ম। একদা বৈদিক ধর্মে যাদের অনার্য ও লৌকিক দেবতা বলে ঘৃণা করা হত যথা, শিব, কালী, কার্তিক, লক্ষ্মী, গুপ্ত যুগে তারাই বৈদিক দেবতা ইন্দ্র, মিত্র, বরুণ প্রভৃতিকে স্থানচ্যুত করে জনসাধারণের হৃদয়ে স্থান করে নেন।
  • (৪) গুপ্তযুগে বৈষ্ণব ধর্ম-এর জনপ্রিয়তা বাড়ে। সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বৈষ্ণব ধর্মের অনুরাগী ছিলেন। শৈব ধর্মেরও গুপ্ত যুগে অগ্রগতি হয়। ভারবির কিরাতার্জুনীয়ম কাব্য শিবের জনপ্রিয়তার প্রমাণ। বায়ু ও মৎস্য পুরাণে শিবের প্রতি বিশেষ ভক্তির প্রকাশ দেখা যায়। গুপ্তযুগে বহু শিব মন্দির তৈরি হয়। গুপ্তযুগে মূর্তিপুজোর জনপ্রিয়তা বাড়ে। বৈদিক যজ্ঞের ও বৈদিক দেবতার পুজোর প্রথা জনপ্রিয়তা হারায়।

গুপ্ত যুগে সাহিত্য, দর্শনের অগ্ৰগতি

  • (১) গুপ্ত যুগের সাহিত্যের ও দর্শনের চর্চার অগ্রগতি পরবর্তী প্রজন্মকে বিস্মিত করেছে। এই যুগের সৃজনী প্রতিভা যেন সহস্র শীর্ষ হয়ে সাহিত্য, দর্শন, শিল্পের ক্ষেত্রে বিকশিত হয়েছিল। শুধুমাত্র এই কারণে গুপ্ত যুগ সুবর্ণ যুগের আখ্যা পেতে পারে।
  • (২) প্রাচীন ভারতের কবি সার্বভৌম কলিদাস তাঁর কাব্য ও নাটক রচনা দ্বারা সংস্কৃত সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যের অঙ্গণে প্রথম সারিতে স্থান করে দেন। ভারবি, শূদ্রক, বিশাখদত্ত প্রমুখ সাহিত্যিক ছিলেন গুপ্ত যুগের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি।
  • (৩) দর্শনশাস্ত্রে গুপ্তযুগের চিন্তাবিদদের মধ্যে মৌলিক চিন্তার প্রভাব লক্ষণীয়। গৌড়পাদের বেদান্ত দর্শন, আসঙ্গের নাগাচার শাস্ত্র, ঈশ্বর-কৃষ্ণের সাংখ্যকারিকের কথা এই প্রসঙ্গে বলা যায়।
  • (৪) অমর সিংহের কাব্যের আকারে সংস্কৃত অভিধান, বাগভট্টের চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কিত গ্রন্থ, বরাহ মিহিরের পঞ্চসিদ্ধান্ত, আর্যভট্টের আহ্নিক ও বার্ষিক গতির তত্ত্ব গুপ্ত মনীষার পরিচয় দেয়।

গুপ্ত যুগে স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের উন্নতি

  • (১) শিল্প অর্থাৎ স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও চিত্রকলায় গুপ্ত যুগ ছিল অসাধারণ সৃজনশীল। গুপ্ত যুগেই মন্দির স্থাপত্যের প্রথম বিকাশ হয়, তিন মহলা, তিন প্রস্থে মন্দির নির্মাণের স্থাপত্য রীতির উদ্ভাবন হয়। অজয়গড়ের পার্বতী মন্দির, সাতনার একলিঙ্গ মন্দির, ভিতারগাওয়ের ইটের তৈরি মন্দির এর উদাহরণ।
  • (২) গুপ্ত যুগের ভাস্কর্য গান্ধার শিল্প -এর স্থূলত্ব, অমরাবতীর ইন্দ্রিয়তাবাদ অতিক্রম করে এক অতীন্দ্রিয় স্তরে পৌঁছেছিল। দেবদেবীর ওষ্ঠাধরে স্মিত হাস্য হৃদয়ে দিব্যজ্ঞানের উদ্ভাসের পরিচয় দেয়, অর্ধনিমীলিত চক্ষু প্রথা বা বোধির সাক্ষ্য দেয়।
  • (৩) দেব-দেবী মূর্তির হাতের আঙুলগুলি চাপার পাপড়ির মত বাঁকা, বাহু মনাসের মত, চক্ষু হরিণী বা সফরীর মত, দেবতার স্কন্দ সিংহের কাঁধের মত। এযুগের চিত্রশিল্পের উদাহরণ অজন্তার প্রাচীরের গায়ে আঁকা আছে। গুপ্তযুগের স্বর্ণমুদ্রাগুলির শিল্প সুষমা ছিল চোখ জুড়ানো। এজন্য সকল দিক মিলিয়ে গুপ্ত যুগকে সুবর্ণযুগ বলা হয়।

গুপ্ত শাসন ব্যবস্থার দুর্বলতা

  • (১) গুপ্ত যুগকে সুবর্ণ যুগ বলা সঙ্গত কিনা এ সম্পর্কে দ্বিতীয় চিন্তা আরম্ভ হয়েছে। গুপ্ত শাসন ব্যবস্থার প্রশংসার দিকগুলি থাকলেও দুর্বল দিকগুলির কথা বলা দরকার। গুপ্ত সাম্রাজ্য এই দুর্বলতার জন্য ভেঙে যায়। প্রদেশে ও জেলায় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করার ফলে স্থানীয় শাসনকর্তারা ক্ষমতালোভী হয়ে পড়ে। কেন্দ্রে প্রবল প্রতাপ সম্রাট না থাকায় তারা ক্রমে বিদ্রোহের ধ্বজা তুলে।
  • (২) বংশানুক্রমিক পদে নিয়োগের নীতি বেতনের পরিবর্তে ভূমি দানের নিয়ম চালু হলে সামন্ত প্রথার উদ্ভব হয়। এই সামন্তশ্রেণী শীঘ্রই স্বাধিকার-প্রমত্ত হয়ে সাম্রাজ্যের ঐক্য ও সংহতিকে ভেঙে ফেলে। যশোধর্মণ ছিলেন এইরূপ এক প্রতাপশালী সামন্ত রাজা। বলভীর মৈত্রক বংশ, কনৌজ -এর মৌখরি বংশও এইরূপ সামন্ত ছিল।

গুপ্ত যুগে জনসাধারণের দারিদ্র্য

  • (১) গুপ্ত যুগের স্বর্ণমুদ্রাগুলি এই যুগের অর্থনৈতিক উন্নতির পরিচয় দিলেও এই আপাত স্বচ্ছলতার অন্তরালে ছিল জনসাধারণের অপরিসীম দারিদ্র্য। শাসকশ্রেণী, সামন্ত ও অভিজাত শ্রেণী হয়ত স্বর্ণমুদ্রা ব্যবহার করত। সাধারণ লোকে তার অধিকারী ছিল না। দৈনন্দিন কেনা-বেচার জন্য দরকার ছিল রৌপ্যমুদ্রা। গুপ্ত যুগে রৌপ্য মুদ্রার দুর্লভতা প্রমাণ করে যে, সাধারণ লোকের হাতে বেশী অর্থ ছিল না।
  • (২) ফা-হিয়েন বলেছেন যে, লোকে টাকার অভাবে কড়ি দিয়ে জিনিষপত্র কেনা-বেচা করত। এর ফলে সাধারণ বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সাধারণ লোকেরা ইচ্ছামত দরকারী জিনিষ কিনতে পারত না। সম্ভবত, রৌপ্য মুদ্রার অভাবের জন্যই সরকারী কর্মচারীদের নগদ বেতন না দিয়ে জমি দেওয়া হত।

গুপ্ত আমলে নগরগুলির ধ্বংস

  • (১) যদিও ফা-হিয়েন গুপ্ত যুগের সমৃদ্ধির কথা বলেছেন তবুও তিনি উল্লেখ করেছেন যে, দেশের বড় বড় শহরগুলি ধ্বংস হতে বসেছিল। পাটলিপুত্র নগরী ধ্বংসের মুখে এসেছিল। শ্রাবস্তী, কপিলাবস্তু, রাজগৃহ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। প্রাচীন বাণিজ্য পথগুলির আর কোনো গুরুত্ব ছিল না।
  • (২) সুতরাং গুপ্ত যুগের সমৃদ্ধি উচ্চ অভিজাত ও সামন্ত শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, সাধারণ লোকের মধ্যে তা তেমনভাবে ছিল কিনা সন্দেহ। কালিদাসের নাটকে রাজ দরবারের যে বিলাসিতার চিত্র। দেখা যায় তা দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধির পরিচয় দেয় না।
  • (৩) মূলত গুপ্ত যুগের স্বচ্ছলতা অনেক পরিমাণে সামন্তশ্রেণীর শোষণ ও ধনী বণিকদের অর্থ কৌলিন্যের ওপর নির্ভর করত। জাতির সকল স্তরে এই স্বচ্ছলতা ছড়িয়ে পড়েনি বলে অনেকে মনে করেন।

উচ্চশ্রেণীর জন্য বিনোদন সাহিত্য

  • (১) গুপ্ত যুগের সাহিত্য ও শিল্প ছিল অভিজাত শ্রেণীর বিনোদনের জন্যই সৃষ্ট। সমাজের উচ্চশ্রেণীর ভাষা ছিল সংস্কৃত। এই ভাষাতেই সাহিত্য রচিত হয়। লোকের মুখের ভাষা প্রাকৃত ছিল অবহেলিত। নাটকের বিষয়বস্তু ছিল প্রধানত রাজাদের যুদ্ধযাত্রা, প্রমোদ ও কৈতব।
  • (২) উচ্চশ্রেণীর লোকের বিনোদনের জন্যে নাটক ও নৃত্যের পরিকল্পনা করা হয়। সাধারণ লোকের জীবনযাত্রা নিয়ে কোনো নাটক রচিত হয়নি। এমন কি সংস্কৃত নাটকগুলি ছিল মিলনান্তক। কারণ, উচ্চশ্রেণীর লোকের মনোরঞ্জনের জন্যে তার দরকার ছিল। বিয়োগান্ত নাটক এই যুগে লেখা হয়নি।
  • (৩) এ সম্পর্কে কোশাম্বির মত প্রণিধানযোগ্য। কোশাম্বি বলেন যে, গুপ্ত যুগে সমাজের উচ্চতর শ্রেণী নিম্নশ্রেণী থেকে নিজেদের পার্থক্য রাখার জন্য সাহিত্যে সংস্কৃত ভাষার ব্যবহার করেন। উন্নত উৎপাদন ব্যবস্থার ফলে নতুন যে ধনিক শ্রেণীর সৃষ্টি হয় তারা নিজেদের আভিজাত্য রক্ষার জন্য সংস্কৃত ব্যবহার করে। ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়রা প্রধানত ধর্ম ও প্রেমের বিষয়ে আগ্রহ দেখাত। তাই সাহিত্যে তারই প্রভাব দেখা যায়।

গুপ্ত যুগের ভাস্কর্যে ইন্দ্রিয়পরায়ণতা

এই যুগের সাহিত্যের মতই ভাস্কর্যেও ইন্দ্রিয়-প্রবণতা দেখা যায়। গুপ্ত শিল্প, ভাস্কর্যেও উচ্চশ্রেণীর লোকের রুচির প্রতি আনুগত্য দেখা যায়। সাধারণ লোকের জীবন নিয়ে কোনো মূর্তি তৈরি বা চিত্র আঁকা হয়েছে বলে জানা যায়নি।

গুপ্ত যুগে জাতিভেদ প্রথা

গুপ্ত সমাজে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের প্রভাবে জাতিভেদ প্রথা বেশ দৃঢ় হয়। সমাজে ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় শ্রেণী অধিকাংশ সুবিধার ভাগী হয়।

উপসংহার :- এই সকল ত্রুটি সত্বেও গুপ্ত যুগের সামগ্রিক অগ্রগতি ছিল অসাধারণ। শাসনব্যবস্থা, সাহিত্য, শিল্প সকল ক্ষেত্রে গুপ্ত যুগের মনীষার অসাধারণ ও বহুমুখী বিকাশ ঘটেছিল।

(FAQ) গুপ্ত যুগ কি সুবর্ণ যুগ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. গুপ্ত যুগকে পেরিক্লীয় যুগের সাথে তুলনা করেন কে?

ঐতিহাসিক বার্ণেট।

২. গুপ্ত যুগের শ্রেষ্ঠ সম্রাট কে?

সমুদ্রগুপ্ত।

৩. গুপ্ত যুগের শ্রেষ্ঠ কবি কে ছিলেন?

কালিদাস।

৪. গুপ্ত যুগের শ্রেষ্ঠ জ্যোতির্বিজ্ঞানী কে ছিলেন?

আর্যভট্ট।

Leave a Comment