কর্তার সিং দুগগাল

পাঞ্জাবি সাহিত্যিক কর্তার সিং দুগগালের জন্ম, পরিবার, শিক্ষা, কর্মজীবন, সাহিত্য জীবন, সাহিত্য সাধনা, গ্ৰন্থসম্ভার, পুরস্কার ও সম্মাননা এবং তার মৃত্যু সম্পর্কে জানবো।

ভারতের পাঞ্জাবি সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য জ্যোতিষ্ক কর্তার সিং দুগগাল প্রসঙ্গে কর্তার সিং দুগগালের জন্ম, কর্তার সিং দুগগালের পরিবার, কর্তার সিং দুগগালের শিক্ষা, কর্তার সিং দুগগালের কর্মজীবন, কর্তার সিং দুগগালের সাহিত্য জীবন, কর্তার সিং দুগগালের সাহিত্য সাধনা, কর্তার সিং দুগগালের গ্ৰন্থসমূহ, কর্তার সিং দুগগালের মৃত্যু, কর্তার সিং দুগগালের পুরস্কার ও সম্মাননা।

সাহিত্যিক কর্তার সিং দুগগাল

ঐতিহাসিক চরিত্রকর্তার সিং দুগগাল
জন্ম১ মার্চ, ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দ
পিতামাতাজীবন সিং দুগগাল ও সতবন্ত কৌর
পেশালেখক
পুরস্কারসাহিত্য অ্যাকাদেমি পুরস্কার
মৃত্যু২৬ জানুয়ারি, ২০১২ সাল
কর্তার সিং দুগগাল

ভূমিকা:- ভারত -এর পাঞ্জাবি সাহিত্যের উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক হলেন কর্তার সিং দুগগাল। মাতৃভাষা পাঞ্জাবি ছাড়াও তিনি উর্দু, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন।

কর্তার সিং দুগগালের জন্ম

১ মার্চ, ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশশাসিত ভারতের রাওয়ালপিন্ডি জেলার ধামালে পঞ্জাবি লেখক কর্তার সিং দুগালের জন্ম। দুগগালের জন্মস্থানটি বর্তমানে পাকিস্তান -এ অবস্থিত।

কর্তার সিং দুগগালের পরিবার

তার পিতার নাম জীবন সিং দুগগাল এবং মায়ের নাম সতবন্ত কৌর। ডাক্তার আয়েশা দুগগাল ছিলেন তার স্ত্রী।

কর্তার সিং দুগগালের শিক্ষা

তিনি ইংরেজিতে এম এ পাস করেন লাহোরের ফরমান খ্রিস্টান কলেজ থেকে

কর্তার সিং দুগগালের কর্মজীবন

  • (১) তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় অল ইন্ডিয়া রেডিয়োতে। এখানে নানা বিভাগে কাজ করেছেন তিনি। এমনকি স্টেশন ডিপোরে পদেও আসীন থেকেছেন। ১৯৪২ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে কর্মরত ছিলেন।
  • (২) এখানে কর্মরত অবস্থায় পাঞ্জাবি, হিন্দি, উর্দু ও ইংরেজিতে বহুবিধ বিষয় রচনা করেছেন। তিনি ১৯৭৩-৭৬ খ্রিস্টাব্দ, এই চার বছর ন্যাশনাল বুক ট্রাস্টের সচিব ও ডিরেক্টরের পদ অলংকৃত করেছেন।
  • (৩) ১৯৭৩-১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে (পরিকল্পনা কমিশন) তথ্য উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভারত সরকারের মিনিস্ট্রি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড ব্রডকাস্টিং-এর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।
  • (৪) তিনি জীবনে বহু প্রতিষ্ঠান গড়েছেন। যেমন – রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন, ব্যাঙ্গালোরে ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক চেঞ্জ প্রভৃতি।
  • (৫) তিনি বহু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তও ছিলেন। দিল্লির সভাপতি থাকা সহ অনেক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সদস্য ছিলেন। তিনি পাঞ্জাব সাহিত্যসভার সভাপতি ছিলেন। পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটির মনোনীত ফেলো ছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি রাজ্যসভার সদস্যও ছিলেন।

কর্তার সিং দুগগালের সাহিত্য জীবন

দুগগাল চব্বিশটি ছোটগল্প, দশটি উপন্যাস, সাতটি নাটক, সাতটি সংকলন এবং একটি আত্মজীবনী রচনা করেছেন। তার অনেক বই অধ্যয়নের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করেছে।

কর্তার সিং দুগগালের সাহিত্য সাধনা

তিনি দীর্ঘ সময় ধরে পাঞ্জাবি, হিন্দি, উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় সাহিত্যচর্চা করেছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। ছোটোগল্পকার হিসেবে তাঁর সর্বাধিক খ্যাতি ও সর্বভারতীয় পরিচিতি। তিনি ছোটোগল্প লিখেছেন পাঁচ শতাধিক।

কর্তার সিং দুগগালের গ্ৰন্থসম্ভার

কর্তার সিং দুগগাল রচিত গ্ৰন্থসমূহ হল –

(১) ছোটোগল্প

তাঁর উল্লেখযোগ্য ছোটোগল্প সংকলন গ্ৰন্থ হল ‘দঙ্গর’ (১৯৪৪), নাওয়ান ঘর (১৯৫১), ‘সোনার বাংলা‘ (১৯৭৬), ‘পাইলো তবে দুজো (১৯৯৩), ‘একটি গানের জন্ম’, ‘কাম ব্যাক মাই মাস্টার’, ‘ইক্ক ছিট চানান দি’ (এক ফোঁটা আলো), ‘শপথ করেছিলাম স্যার’, ‘পিপল পাতে’, ‘তর্কালান ভেলে’ (সন্ধ্যায়), ‘জিনাত আপা’ (একজন মুসলিম মেয়ে), ‘একটি রুম 10’x 8’ প্রভৃতি।

(২) উপন্যাস

তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস গুলি হল – ‘হাল মুরিদী দা’ (১৯৫৮) ‘শরদ পুনম দি রাত’ (একটি ঠান্ডা পূর্ণিমার রাত), ‘তেরে বনহে’ (তোমার শুভেচ্ছা), ‘নখ এবং মাংস’ ‘মানুষ পরদেশী’, ‘আব না বসুন ইহ গাঁও’, প্রভৃতি।

(৩) কাব্য

উল্লেখযোগ্য কবিতাগ্রন্থ হল ‘কন্ধে কন্ধে’ (১৯৪১), ‘বনধ দরওয়াজা’ (১৯৫৯) প্রভৃতি।

কর্তার সিং দুগগালের পুরস্কার ও সম্মাননা

  • (১) কর্তার সিং দুগ্গাল তার কর্মজীবন জুড়ে অনেক পুরষ্কার দ্বারা ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে পাঞ্জাবি গল্পসংগ্রহ ‘ইক ছিট চানন দি’ গ্ৰন্থের জন্য কর্তার সিং দুগাল ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার।
  • (২) পদ্মভূষণ, গালিব পুরস্কার, সোভিয়েত ল্যান্ড অ্যাওয়ার্ড, ভারতীয় ভাষা পরিষদ পুরস্কার, ভাই মোহন সিং বৈদ পুরস্কার, ভারতীয় ভাষা পরিষদ পুরস্কার, সহস্রাব্দের পাঞ্জাবি লেখক, পাঞ্জাব সরকারের পুরস্কার লাভ করেন।
  • (৩) অসামান্য সাহিত্য অবদানের জন্য ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত ভাই বীর সিং পুরস্কার, পাঞ্জাবি সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী কর্তৃক উপস্থাপিত প্রমান পাত্র, আদিব ইন্টারন্যাশনাল লুধিয়ানা, ভারত কর্তৃক সাহির পুরস্কার প্রভৃতি।

কর্তার সিং দুগগালের জীবনাবসান

২৬ জানুয়ারি, ২০১২ খ্রিস্টাব্দে ৯৪ বছর বয়সে কর্তার সিং দুগগাল মৃত্যু বরণ করেন।

উপসংহার:- তিনি বুলগেরিয়া, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, তিউনিসিয়া, ইংল্যান্ড এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেছেন। তিনি অবসর গ্রহণের পর নয়াদিল্লিতে বসবাস করতেন এবং পড়ায় সময় কাটাতেন।


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “কর্তার সিং দুগগাল” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) কর্তার সিং দুগগাল সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. ভারতের বিখ্যাত পাঞ্জাবি ভাষার লেখক কে ছিলেন?

কর্তার সিং দুগগাল।

২. কর্তার সিং দুগগাল কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

রাওয়ালপিন্ডির ধামালে।

৩. কর্তার সিং দুগগালের জন্ম কখন হয়?

১ মার্চ, ১৯১৭ সালে।

৪. কর্তার সিং দুগগালের বিখ্যাত রচনা কোনটি?

‘ইক ছিট চানন দি’।

৫. কর্তার সিং দুগগালের মৃত্যু কখন হয়?

২৬ জানুয়ারি, ২০১২ সালে।

অন্যান্য ঐতিহাসিক চরিত্রগুলি

Leave a Comment