বিজয়নগর সাম্রাজ্য প্রসঙ্গে বিজয়নগরের উত্থান সম্পর্কে বিভিন্ন মত, চারটি রাজবংশ, সংগম বংশ ও তার সম্রাটগণ, সালুভ বংশ ও তার সম্রাটগণ, তুলুভ বংশ, রাজা কৃষ্ণদেব রায়, আরবিডু বংশ ও সাম্রাজ্যের ভাঙন সম্পর্কে জানবো।
বিজয়নগর সাম্রাজ্য
বিষয় | বিজয়নগর সাম্রাজ্য |
প্রতিষ্ঠাতা | হরিহর ও বুক্ক |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৩৩৬ খ্রি |
বংশ | সঙ্গম, সালুভ, তুলুভ, আরবিডু |
শ্রেষ্ঠ রাজা | কৃষ্ণদেব রায় |
ভূমিকা :- দিল্লীর সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলক -এর রাজত্বকালে দক্ষিণে সুলতানি সাম্রাজ্য-এ বিদ্রোহ দেখা দেয়। এই সুযোগে হরিহর ও বুক্ক নামে দুই ভাই বিজয়নগর রাজ্যের পত্তন করেন।
বিজয়নগরের উত্থান সম্পর্কে বিভিন্ন মত
- (১) সঙ্গম নামে এক ব্যক্তির ৫ পুত্র ছিলেন। হরিহর ও বুক্ক ছিলেন সঙ্গমের ৫ পুত্রের দুই পুত্র।
- (২) কিংবদন্তি আছে যে, মাধব বিদ্যারণ্য ও তার ভ্রাতা সায়নাচার্য নামে দুই সন্ন্যাসী মুসলিম আক্রমণের বিরুদ্ধে হিন্দু সংস্কৃতি রক্ষার জন্য হরিহর ও বুক্ককে এই হিন্দু রাজ্য স্থাপনে উৎসাহ দেন। এই দুই ভ্রাতা তুঙ্গভদ্রার দক্ষিণতীরে বিজয়নগর রাজ্য স্থাপন করেন।
- (৩) অপর দিকে ফাদার হেরাস প্রমুখ গবেষক এই কিংবদন্তীকে অগ্রাহ্য করেন। তাদের মতে, হোয়শল সাম্রাজ্য-এর তৃতীয় বল্লাল তুঙ্গভদ্রার উত্তর তীরে আনেগুণ্ডি দুর্গের পত্তন করেন। এই দুর্গ ও তার সংলগ্ন অঞ্চল অধিকার করে হরিহর ও বুক্ক বিজয়নগর রাজ্যের পত্তন করেন।
বিজয়নগরের চারটি রাজবংশ
বিজয়নগরে একাদিক্রমে ৪টি রাজবংশ রাজত্ব করে। যথা – সঙ্গম বংশ, সালুভ বংশ, তুলুভ বংশ ও আরবিডু বংশ।
বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সঙ্গম বংশ
সঙ্গমের দুই পুত্র হরিহর ও বুক্ক বিজয়নগর রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন এবং পিতার নাম অনুসারে বংশের নাম হয় সঙ্গম বংশ। এই বংশের রাজাগন হলেন –
(ক) প্রথম হরিহর
- (১) প্রথম হরিহর (১৩৩৬-১৩৫৬ খ্রি) আনেগুণ্ডি দুর্গে রাজধানী স্থাপন করেন। ৭ বছর পরে তিনি বিজয়নগরে রাজধানী স্থানান্তর করেন। তিনি প্রতিবেশী দেবগিরির কতলু খাঁ এবং হোয়শল রাজ তৃতীয় বল্লালের আগ্রাসন থেকে বিজয়নগরের স্বাধীনতা রক্ষা করেন।
- (২) তৃতীয় বীর বল্লালের মৃত্যুর পর তিনি হোয়শল রাজ্যের কিছু অংশ এবং কদম্ব রাজ্য অধিকার করেন। হরিহর বিজয়নগরের শাসনব্যবস্থায় যে ভিত্তি স্থাপন করেন তা বহুকাল প্রচলিত ছিল। তিনি রাজ্যের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্যে কৃষির উন্নতির চেষ্টা করেন।
(খ) প্রথম বুক্ক
- (১) হরিহরের পর প্রথম বুক্ক (১৩৫৬-১৩৭৭ খ্রি) বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন। তিনি শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রীকরণ করেন এবং তামিলনাড়ুর কিছু অংশ জয় করেন। তিনি রায়চুর দোয়াব আক্রমণ করলে, তার আমল থেকেই বাহমনী-বিজয়নগর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
- (২) বুক্ক মাদুরার সুলতান শাহীর পতন ঘটিয়ে তামিল, কেরল অধিকার করেন। তিনি রামেশ্বরম পর্যন্ত বিজয়নগরের সীমানা বাড়ান। হিন্দুধর্মের রক্ষক হিসেবে তিনি “বেদমার্গ-প্রতিষ্ঠাপক” উপাধি নেন। তবে প্রথম বুক্ক কার্যক্ষেত্রে উদার ধর্মনীতি নিয়ে চলতেন। জৈন ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম, মুসলিমদের প্রতি তিনি ন্যায় আচরণ করতেন।
(গ) দ্বিতীয় হরিহর
- (১) প্রথম বুক্কের পর দ্বিতীয় হরিহর (১৩৭৭-১৪০৪ খ্রি) বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন। তিনিই প্রথম মহারাজাধিরাজ উপাধি নেন। কর্ণাটক, মহীশূর, ত্রিচিনোপল্লী ও কাঞ্চী তিনি অধিকার করেন। তিনি লঙ্কার রাজাকে বিজয়নগরে কর পাঠাতে বাধ্য করেন।
- (২) দ্বিতীয় হরিহরের সঙ্গে বাহমনী সুলতান মুজাহিদ শাহের যুদ্ধ বাধে। দ্বিতীয় হরিহর বাহমনী সুলতান দ্বিতীয় মহম্মদ শাহ ও ফিরোজ শাহকে পরাস্ত করেন। তিনি কোঙ্কন সহ গোয়া ও চাভল বন্দর অধিকার করেন।
(ঘ) প্রথম দেবরায়
- (১) দ্বিতীয় হরিহরের মৃত্যুর পর কিছুকাল উত্তরাধিকার ঘটিত গণ্ডগোল চলে। শেষ পর্যন্ত প্রথম দেবরায় (১৪০৬-১৪২২ খ্রি) বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন। তিনি পর্তুগীজদের বাণিজ্যিক সুবিধা দিয়ে আরবদেশ থেকে ভাল যুদ্ধের ঘোড়া আনেন ও সেনাদলে তুর্কী-তীরন্দাজ নিয়োগ করেন।
- (২) তাঁর আমলে তুঙ্গভদ্রা দোয়াবের অধিকার নিয়ে বিজয়নগর-বাহমনী যুদ্ধ চলে। বাহমনী রাজ্য-এর ঐতিহাসিকদের মতে, প্রথম দেবরায় ভুখার সন্ধির দ্বারা ফিরোজ শাহকে দশ লক্ষ মুদ্রা, প্রচুর মণিমুক্তা দেন। তিনি বহু ধুমধামের সঙ্গে নিজ কন্যার সঙ্গে ফিরোজ শাহ বাহমনের বিবাহ দেন।
- (৩) অবশ্য প্রথম দেবরায় তার রাজত্বের শেষদিকে বাহমনী জোট ভেঙে বরঙ্গলের প্রজাকে নিজ পক্ষে আনেন। দেবরায় তুঙ্গভদ্রায় বাঁধ তৈরি করে জলসেচের উন্নতি করেন। তিনি হরিদ্রা নদীতেও একটি বাঁধ তৈরি করেন। দেবরায় বিদ্যোৎসাহী ছিলেন। তার প্রচেষ্টায় বিজয়নগর দক্ষিণ ভারতে সংস্কৃত শিক্ষার প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়।
(ঙ) দ্বিতীয় দেবরায়
- (১) প্রথম দেবরায়ের পর উল্লেখযোগ্য শাসক ছিলেন দ্বিতীয় দেবরায় (১৪২২-১৪৪৬ খ্রি)। দ্বিতীয় দেবরায় বিজয়নগরের সীমানা দক্ষিণে লঙ্কা বা সিংহল পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। পর্তুগীজ পর্যটক নূনিজের মতে শ্রীলঙ্কা, পেগু, তেনাসেরিম, কুইলন ও পুলিকট দ্বিতীয় দেবরায়কে কর দিত।
- (২) নৌ বাহিনী না থাকলে এই সকল দেশের উপর অধিকার স্থাপন করা সম্ভব ছিল না। সুতরাং পণ্ডিতেরা অনুমান করেন যে, এই সকল দেশের রাজারা হয়ত শুভেচ্ছা জানাবার জন্য দ্বিতীয় দেবরায়ের দরবারে উপঢৌকন পাঠান।
- (৩) তিনি উড়িষ্যা ও অন্ধ্রের শাসকদের পরাস্ত করেন। বাহমনী সুলতান আহমদ শাহ রায়চুর দোয়াব অধিকারের জন্য বিজয়নগর আক্রমণ করেন। এই আক্রমণের ফলে বিজয়নগরের খুবই ক্ষয়ক্ষতি হয়। দ্বিতীয় দেবরায় বাহমনী সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধে জয়ের আশায় সেনাদলে বহু তুর্কী তীরন্দাজ নিয়োগ করেন ও সেনাদলকে নতুনভাবে সংগঠন করেন।
- (৪) ফেরিস্তার মতে, দ্বিতীয় দেবরায় ৬০ হাজার হিন্দু তীরন্দাজ, ৮০ হাজার অশ্বারোহী ও ২ লক্ষ পদাতিক সেনা গঠন করেন। এছাড়া তার ১০ হাজার দক্ষ তুর্কী তীরন্দাজ ছিল। ফেরিস্তার এই পরিসংখ্যান অতিরঞ্জিত মনে হয়।
- (৫) যাই হোক, সেনাদলের জন্য ভাল ঘোড়া যোগাড় করতে দ্বিতীয় দেবরায়কে রাজকোষ শূন্য করে ফেলতে হয়। দ্বিতীয় দেবরায়ের রাজত্বকালে ইতালিয় পর্যাটক নিকলো কন্টি ও পারসীক দূত আবদুর রজ্জাক বিজয়নগরে আসেন। তারা বিজয়নগরের সমৃদ্ধি ও শক্তির কথা বলেছেন।
(চ) মল্লিকার্জুন
দ্বিতীয় দেবরায়ের পর মল্লিকার্জুন সিংহাসনে বসেন। তিনি বিশেষ যোগ্য শাসক ছিলেন না। উড়িষ্যার রাজা এই সময় উদয়গিরি ও কোণ্ডবিডু অধিকার করেন। মল্লিকার্জুন অবশ্য বাহমনী আক্রমণকে প্রতিহত করেন।
(ছ) দ্বিতীয় বিরূপাক্ষ
মল্লিকার্জুনের মৃত্যুর পর তাঁর সম্পর্কিত ভ্রাতা দ্বিতীয় বিরূপাক্ষ বিজয়নগরের সিংহাসন অধিকার করেন। কিন্তু বিজয়নগরের সামন্তরা তার আধিপত্য মানতে রাজী ছিল না।
বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সঙ্গম বংশের পতন
অন্তর্বিরোধের ফলে বিজয়নগরের শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সুযোগে পাণ্ড্য রাজ্য-এর রাজা কাঞ্চী ও বাহমনী সুলতান গোয়া দখল করেন। শেষ পর্যন্ত চন্দ্রগিরির সামন্ত নরসিংহ সালুভ বিরূপাক্ষকে হত্যা করে বিজয়নগরের সিংহাসন অধিকার করলে সঙ্গম বংশের পতন হয়।
বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সালুভ বংশ
সঙ্গম বংশের পর বিজয়নগর সাম্রাজ্যে সালুভ বংশ-এর শাসন শুরু হয়। এই বংশের রাজাগন হলেন –
(ক) নরসিংহ সালুভ
- (১) নরসিংহ সালুভ সঙ্গম বংশীয় বিরূপাক্ষকে হত্যা করে ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দে বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন। তিনি এই অযোগ্য শাসককে অপসারণ করে বিজয়নগর রাজ্যকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেন বলে মনে করা হয়।
- (২) নরসিংহ সালুভ প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের বিদ্রোহ দমন করেন এবং শাসন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটান। কিন্তু তিনি বাহমনী সুলতানের হাত থেকে রায়চুর দোয়াব উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। ১৪৯০ খ্রিস্টাব্দে নরসিংহ সালুভের মৃত্যু হয়।
(খ) ইম্মাদী নরসিংহ
এরপর নরসিংহের এক শিশুপুত্র ইম্মাদী নরসিংহকে সিংহাসনে বসিয়ে মন্ত্রী নরস নায়ক কার্যত সকল ক্ষমতা দখল করেন।
বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সালুভ বংশের পতন
১৫০৩ খ্রিস্টাব্দে নরস নায়কের মৃত্যু হয়। তাঁর পুত্র বীর নরসিংহ সালুভ বংশীয় রাজাকে হত্যা করে ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন। ফলে সালুভ বংশের পতন ঘটে।
বিজয়নগর সাম্রাজ্যের তুলুভ বংশ
সালুভ বংশের মন্ত্রী নরস নায়কের পুত্র বীর নরসিংহ সালুভ বংশীয় রাজাকে হত্যা করে ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন। ফলে বিজয়নগরের সিংহাসনে তুলুভ বংশ-এর শাসন স্থাপিত হয়। এই বংশের রাজাগন হলেন –
(ক) বীর নরসিংহ
১৫০৫-১৫০৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বীর নরসিংহ রাজত্ব করেন। তিনি পর্তুগীজ সেনাপতি আলমিডার সঙ্গে এক চুক্তি করেন যার ফলে পর্তুগীজরা আরবদেশ থেকে আমদানি করা যুদ্ধের ঘোড়া একমাত্র বিজয়নগরকে সরবরাহ করতে স্বীকৃতি দেয়। এই চুক্তির ফল ছিল সুদূরপ্রসারী। তিনি বাহমনী আক্রমণ প্রতিরোধ করেন।
(খ) কৃষ্ণদের রায়
বীর নরসিংহের পর তাঁর ভ্রাতা কৃষ্ণদেব রায় (১৫০৯-১৫৩০ খ্রি) বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন। তিনি ছিলেন বিজয়নগরের শ্রেষ্ঠ রাজা। তাঁর আমলে বিজয়নগরের ক্ষমতা ও সমৃদ্ধি সর্বোচ্চ সীমায় উঠে।
(গ) অচ্যুত রায়
কৃষ্ণদেব রায়ের পর অচ্যুত রায় (১৫৩০-১৫৪২ খ্রি) বিজয়নগর শাসন করেন। তিনি দুর্বল শাসক ছিলেন। রায়চুর দোয়াব তাঁর আমলে বিজয়নগরের হাত ছাড়া হয়।
(ঘ) সদাশিব রায়
- (১) অচ্যুত রায়ের মৃত্যুর পর সদাশিব রায় সিংহাসনে বসেন। তাঁর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মন্ত্রী রাম রায় সকল ক্ষমতা অধিকার করেন। রাম রায় খুব যোগ্য প্রশাসক হলেও তাঁর কুটনৈতিক দক্ষতা ছিল না।
- (২) দক্ষিণের ৫টি মুসলিম সুলতানির মধ্যে স্থায়ী ভেদনীতি দ্বারা বিজয়নগরের শক্তি বৃদ্ধি করার ব্যবস্থা তিনি করতে পারেন নি। তিনি একাধারে এই মুসলিম সুলতানিগুলিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করায়, বিজয়নগর-বিরোধী জোট গড়ে ওঠে।
- (৩) রাম রায় দক্ষিণের রাজ্যগুলিকে আক্রমণ করে তাদের ওপর বশ্যতাসূচক সন্ধি চাপাবার চেষ্টা করেন। দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে তিনি ব্যাপক লুণ্ঠন চালান।
বিজয়নগর-বাহমনি তালিকোটার যুদ্ধ
রাম রায়ের আগ্রাসনে অতিষ্ঠ হয়ে বিজাপুর, গোলকুণ্ডা, বিদর ও আহমদনগর জোট বেঁধে বিজয়নগর আক্রমণ করে। ১৫৬৫ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে জানুয়ারি তালিকোটার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বিজয়নগরের বাহিনী ধ্বংস হয়। তালিকোটার অপর নাম ছিল রাক্ষসতঙ্গড়ি বা বানিহাট্টির যুদ্ধ।
বিজয়নগরের পতনের পথ প্রস্তুত
বিজয়নগরের রাজধানী বিজয়ী মুসলিম বাহিনী লুঠ করে। রাম রায় নিহত হন। ৫ হাজার হিন্দুসেনা নিহত হয়। বিজয়নগর শহরের বহু নিরীহ অধিবাসী নিহত হয়। তালিকোটার যুদ্ধ বিজয়নগরের পতনের পথ প্রস্তুত করে।
বিজয়নগর সাম্রাজ্যের আরবিডু বংশ
- (১) তালিকোটার যুদ্ধ বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পতন-এর সূচনা করলেও চূড়ান্ত পতন এই যুদ্ধে ঘটেনি রাম রায়ের মৃত্যুর পর তার ভ্রাতা তিরুমল, সদাশিব রায়ের মন্ত্রীর পদ অধিকার করেন।
- (২) তিনি তাঁর প্রভুকে পদচ্যুত করে ১৫৭০ খ্রিস্টাব্দে নিজেই বিজয়নগরের সিংহাসন অধিকার করলে আরবিডু বংশ-এর শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। তিরুমল ধ্বংসপ্রাপ্ত বিজয়নগর থেকে পেনু গোণ্ডায় রাজধানী স্থানান্তর করেন।
- (৩) এই সময় বিজয়নগরের ইতিহাসের অপরাহ্নকাল ছিল। তিরুমলের পর দ্বিতীয় রঙ্গ বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন এবং তাঁর পর দ্বিতীয় বেঙ্কট সিংহাসনে বসেন। তাঁর সময় থেকে বিজয়নগরের দ্রুত পতন ঘটতে থাকে।
- (৪) সামন্ত শাসকরা স্বাধীনতা ঘোষণা করে। এই বংশের শেষ রাজা ছিলেন তৃতীয় রঙ্গ। তাঁর আমলে মহীশূর, বেদনূর, মাদুরা, তাঞ্জোর প্রভৃতি প্রদেশের শাসনকর্তারা স্বাধীনতা ঘোষণা করলে বিজয়নগর রাজ্য ভেঙে পড়ে।
উপসংহার :- বিশাল বিজয়নগর সাম্রাজ্যের স্মৃতি হিসেবে আনেগুণ্ডি দুর্গ, বিজয়নগরের মন্দির ও গোপুরমগুলি পড়ে থাকে।
(FAQ) বিজয়নগর সাম্রাজ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
হরিহর ও বুক্ক, ১৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে।
৪ টি, সঙ্গম বংশ, সালুভ বংশ, তুলুভ বংশ, আরবিডু বংশ।
কৃষ্ণদেব রায়।
দ্বিতীয় হরিহর।