স্যার সৈয়দ আহমদ খান -এর জন্ম, শিক্ষা, কর্মজীবন, ইংরেজদের অনুগত, ইংরেজদের সাথে সম্প্রীতি স্থাপন, মুসলিম সমাজে আধুনিকতার প্রসারে উদ্দোগ, আলিগড় কলেজ প্রতিষ্ঠা, আলিগড় আন্দোলনের জনক, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী, গ্ৰন্থ রচনা, উপাধি ও সম্মাননা এবং তার মৃত্যু সম্পর্কে জানবো।
ভারতে মুসলিম সমাজের সংস্কারক স্যার সৈয়দ আহমদ খান প্রসঙ্গে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের জন্ম, স্যার সৈয়দ আহমদ খানের শিক্ষা, স্যার সৈয়দ আহমদ খানের কর্মজীবন, স্যার সৈয়দ আহমদ খানের ইংরেজদের সঙ্গে সম্প্রীতি স্থাপন, স্যার সৈয়দ আহমদ খানের আলিগড় অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা, আলিগড় কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ, সৈয়দ আহমদ খানের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, স্যার সৈয়দ আহমদ খানের উপাধি ও সম্মাননা, স্যার সৈয়দ আহমদ খানের মৃত্যু, আলিগড় আন্দোলন, আলিগড় আন্দোলনের নেতা ও মুসলিম সমাজের সংস্কার সাধনে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের ভূমিকা।
স্যার সৈয়দ আহমদ খান
ঐতিহাসিক চরিত্র | স্যার সৈয়দ আহমদ খান |
জন্ম | ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দ, দিল্লি |
পরিচিতি | মুসলিম সমাজ সংস্কারক |
অবদান | আলিগড় কলেজ প্রতিষ্ঠা |
মৃত্যু | ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দ, আলিগড় |
ভূমিকা :- ভারত -এ ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে ভারতীয় হিন্দু সমাজ ইংরেজ শাসন ও সভ্যতাকে স্বাগত জানায় এবং ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করে বিভিন্ন সরকারি উচ্চপদে নিযুক্ত হয়। অপরপক্ষে, ইংরেজ শাসনের সূচনা থেকেই মুসলিম সমাজ তার ঘোরতর বিরোধী ছিল, কারণ মুসলিমদের প্রভাব-প্রতিপত্তি খর্ব করেই ভারতে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
স্যার সৈয়দ আহমদ খানের সময়কালে মুসলিম সমাজের অবস্থা
- (১) মুসলিমরা ইংরেজি শিক্ষা ও সভ্যতা থেকে সযত্নে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখে। ফলে সরকারি চাকরি থেকেও তারা বঞ্চিত হয়। ইংরেজ সরকারও তাদের সন্দেহের চোখে দেখত।
- (২) ওয়াহাবি আন্দোলন ও পরবর্তীকালে ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহে মুসলিম সমাজের ভূমিকায় ইংরেজ সরকার তাদের প্রতি অত্যন্ত বিরক্ত হয়।
- (৩) শিক্ষাদীক্ষা, প্রভাব-প্রতিপত্তি, সরকারি চাকরি সব কিছু থেকে বঞ্চিত হয়ে মুসলিম সমাজ হতাশার গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়।
সৈয়দ আহমদ খানের আবির্ভাব
এই অবস্থায় মুসলিম সমাজের ত্রাণকর্তা হিসেবে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের আবির্ভাব হয়। হিন্দু সমাজের মঙ্গলসাধনের জন্য রামমোহন যা করেছিলেন, মুসলিম সমাজের মঙ্গলের জন্য স্যার সৈয়দ আহমদও অনুরূপ ভূমিকা পালন করেন।
সৈয়দ আহমদের জন্ম
স্যার সৈয়দ আহমদ খান ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
সৈয়দ আহমদের শিক্ষা
পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী আরবি, ফারসি, উর্দু ও ইসলামীয় শাস্ত্রে জ্ঞান অর্জন করেন। পরবর্তীকালে তিনি ইংরেজি ভাষাতেও দক্ষতা অর্জন করেন।
সৈয়দ আহমদের কর্মজীবন
ইংরেজ সরকারের অধীনে একজন কর্মচারী হিসেবে তাঁর জীবন শুরু হয় এবং ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ -এর কালে তিনি বিজনোর-এর ‘সদর আমিন’ পদে নিযুক্ত ছিলেন।
ইংরেজ অনুগত সৈয়দ আহমদ
এই সময় তিনি ইংরেজদের প্রতি প্রবলঅনুগত ছিলেন এবং নিজ জীবন বিপন্ন করে বহু ইংরেজ কর্মচারীর প্রাণ রক্ষা করে তিনি ইংরেজদের সুনজরে আসেন।
ইংরেজদের সঙ্গে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের সম্প্রীতি স্থাপন
- (১) মহাবিদ্রোহের পর সৈয়দ আহমদ ইংরেজ সরকার ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপন এবং মুসলিম সমাজের মধ্যে আধুনিক শিক্ষাবিস্তার ও সমাজ সংস্কারে উদ্যোগী হন।
- (২) মুসলিমদের তিনি ইংরেজদের প্রতি অহেতুক বিদ্বেষ ত্যাগের পরামর্শ দেন এবং বলেন যে, ইংরেজদের সঙ্গে সহযোগিতার মধ্যেই মুসলিম স্বার্থ নিরাপদ ও সুরক্ষিত।
- (৩) তিনি ইংরেজদের বোঝাতে সচেষ্ট হন যে, মুসলিমরা কখনোই ইংরেজ-বিরোধী নয়, মুসলিম ধর্মগ্রন্থে ইংরেজদেরবিরুদ্ধে ‘ধর্মযুদ্ধ’ ঘোষণার কথা নেই।
- (৪) ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহ কোনওক্রমেই মুসলিমদের দ্বারা সংগঠিত হয় নি—যদি কোনও মুসলিম এতে অংশগ্রহণ করে থাকে, তবে তা ভ্রান্তিবশতই করেছে।
- (৫) ‘The Loyal Mahomedans of India‘ ( 1860 খ্রিঃ) নামে একটি গ্রন্থে বহু তথ্য-প্রমাণ দিয়ে তিনি দেখান যে, মহাবিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী মুসলিমদের সংখ্যা ছিল নিতান্ত অল্প—এই সময় এর চেয়ে অনেক বেশি মুসলিম ব্রিটিশ শাসনের প্রতি আনুগত্য দেখিয়েছিলেন।
- (৬) সৈয়দ আহমদের উদ্দেশ্য সফল হয়। উচ্চশিক্ষাপ্রাপ্ত ও রাজনৈতিক জ্ঞানসম্পন্ন হিন্দুদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের কাজে লাগাবার উদ্দেশ্যে ইংরেজ সরকারও তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন।
স্যার সৈয়দ আহমদ খানের প্রভাবে মুসলিম সমাজে আধুনিকতার প্রসার
- (১) সৈয়দ আহমদ উপলব্ধি করেছিলেন যে, আধুনিক ইংরেজি শিক্ষা ও আধুনিক সমাজ সংস্কার ব্যতীত মুসলিম সমাজের গত্যন্তর নেই।
- (২) মুসলিম রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে ‘জেহাদ’ ঘোষণা করে তিনি মুসলিম সমাজকে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান।
- (৩) তিনি বলেন যে, পবিত্র কোরানইসকল জ্ঞানের আধার এবং মুসলিমদের একমাত্র ধর্মগ্রন্থ। চিরাচরিত রীতি, অজ্ঞতা, যুক্তিহীন সামাজিক প্রথা, অন্ধ বিশ্বাস এবং সমাজের গোঁড়া ও ভ্রান্তবুদ্ধি মোল্লাদের সকল নির্দেশ না মেনে তিনি যুক্তি ও মানবতাবাদের আলোকে পবিত্র কোরানের ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দেন।
- (৪) তিনি বলেন যে, কোরানই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ, বাকি সবই পরবর্তী সংযোজন। ধর্মের কোনও ব্যাখ্যা যুক্তি ও বিজ্ঞান-বিরোধী হলে তা পরিত্যাজ্য। চিন্তার স্বাধীনতা না থাকলে সমাজ গঠন সম্ভব নয়।
- (৫) তিনি বলেন যে, পবিত্র কোরানে ইংরেজি ও বিজ্ঞান শিক্ষার বিরুদ্ধে কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয় নি- “মুসলিমরা ব্রিটিশদের প্রচলিত শিক্ষা না নিলে জাতিগোষ্ঠী হিসেবে তারা শুধু পিছিয়েই পড়বে না, তারা ক্রমশ এমন নীচে নামবে যেখান থেকে তাদের মুক্তির কোনও আশাই থাকবে না।”
- (৬) তিনি নারীমুক্তি ও নারীশিক্ষা বিস্তারের পক্ষে এবং পর্দাপ্রথা, বহুবিবাহ ও পত্নীকে তালাক দেওয়ার বিরুদ্ধে মতামত ব্যক্ত করেন। মানবিকতা ও যুক্তির আলোকে তিনি ইসলামকে শক্তিশালী করতে সচেষ্ট হন।
- (৭) এইভাবে সারাজীবন তিনি অন্ধ বিশ্বাস ও অযৌক্তিকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যান এবং মুসলিমদের মধ্যে স্বাধীন চিন্তা ও সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন।
- (৮) মুসলিমদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষাবিস্তারের উদ্দেশ্য ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি গাজীপুরে একটি ইংরেজি বিদ্যালয় স্থাপন করেন।
- (৯) জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার প্রয়োজনীয় ইংরেজি গ্রন্থাবলী উর্দুতে অনুবাদ এবং তা মুসলিমদের মধ্যে প্রচারের জন্য ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘সায়েন্টিফিক সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করেন।
পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের ভূমিকা
মুসলিম সমাজে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে স্যার সৈয়দ আহমদ খান বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেমন –
(১) পত্রিকা প্রকাশ
১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড থেকে প্রত্যাবর্তনের পর সৈয়দ আহমদ সমাজ সংস্কারও শিক্ষাবিস্তারের উদ্দেশ্যে ‘তাহজিব-আল-আফলাখ’ নামে একটি উর্দু পত্রিকা এবং “কমিটি ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব লার্নিং অ্যামং দি মহামেডানস্ অব ইন্ডিয়া’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
(২) আলিগড় কলেজ প্রতিষ্ঠা
১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ আহমদ আলিগড়ে ‘অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয় (১৯২০ খ্রিঃ)।সরকার এই কলেজটিকে প্রচুর অর্থদান করত। বড়লাট এবং প্রাদেশিক গভর্নররা প্রায়ই এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতেন। বড়লাট লর্ড নর্থব্রুকব্যক্তিগতভাবে এই কলেজকে দশ হাজার টাকা দান করেন।
(৩) মুসলিম শিক্ষা সম্মেলন প্রতিষ্ঠা
১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ আহমদ ‘মুসলিম শিক্ষা সম্মেলন’ নামে একটি সংস্থা স্থাপন করেন। এইভাবে তিনি মুসলিম সমাজের মধ্যে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে তাদের মধ্যে নবজীবনের সঞ্চার করেন।
আলিগড় আন্দোলন
পরবর্তীকালে আলিগড় কলেজকে কেন্দ্র করেই মুসলিম সমাজের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চিন্তাধারা বিবর্তিত হয়। মুসলিম সমাজের এই জাগরণ আলিগড় আন্দোলন নামে খ্যাত। হিন্দু-বিদ্বেষ, বাঙালি-বিদ্বেষ, কংগ্রেস-বিরুেষ এবং ইংরেজদের তোষণই ছিল এই আন্দোলনের প্রধান মূলধন।
আলিগড় আন্দোলনের নেতা
এই আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতাদের ছিলেন চিরাগ আলি, কবি আলতাফ হোসেন আলি, মৌলানা শিবলি নোমানি, নাজির আহম্মদ, কবি হালি, শিক্ষাবিদ খুদা বক্স।
সৈয়দ আহমদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী
- (১) জীবনের একটি পর্বে সৈয়দ আহমদ হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের কথা প্রচার করতেন। তিনি বলতেন, হিন্দু-মুসলিম এক জাতি—’একই জননীর দুই সন্তান’—’ভারতমাতার চক্ষু।
- (২) তিনি বলেন, “বর্তমানে আমরা ভারতের বায়ুতে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে বেঁচে আছি। আমরা উভয়েই গঙ্গা-যমুনার বারি পান করি। ভারতের মৃত্তিকাজাত শস্য খেয়েই আমরা বেঁচে আছি।… আমরা ভারতেরই মানুষ, আমরা হিন্দু-মুসলমান একটি জাতি।”
- (৩) তিনি বলেন- “মনে রেখো, হিন্দু’ আর ‘মুসলমান’ এই শব্দ দু’টিতে শুধু ধর্মের পার্থক্যই বোঝায়, আর কিছুই নয়। এই দেশে যারা বাস করে, তা হিন্দু হোক, মুসলমান হোক, এমনকী খ্রিস্টান হোক—সকলেই এক জাতি।”
- (৪) বাঙালিদের সম্পর্কেও তাঁর সীমাহীন শ্রদ্ধা ছিল। বাঙালিদের তিনি ভারতামাতার মাথার মুকুট’ বলে মনে করতেন। এই সময় তিনি ইংল্যান্ড ও ভারতে একই সঙ্গে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার দাবি জানান এবং ভারতে স্বায়ত্তশাসনের কথা বলেন।
- (৫) পরবর্তীকালে তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিরাট পরিবর্তন দেখা দেয়। তিনি প্রচার করতে শুরু করেন যে, হিন্দু ও মুসলিম কেবল দু’টি পৃথক জাতিই নয়—পরস্পর-বিরোধী স্বার্থযুক্ত এবং যুদ্ধরত দু’টি পৃথক জাতি।
- (৬) মুসলিম সমাজকে তিনি ইংরেজ সরকারের প্রতি চরম আনুগত্যের কথা বলেন এবং জানান যে, ইংরেজদের হাতেই মুসলিম-স্বার্থ নিরাপদ।
- (৭) আলিগড় ইনস্টিটিউট গেজেট’ (১৮৬৬ খ্রিঃ) নামক পত্রিকার মাধ্যমে তিনি বাঙালিদের সম্পর্কে অবিরাম বিষোদ্গার করতে থাকেন। তাঁর মতে কংগ্রেস হল ‘বাঙালি বাবুদের’ স্বার্থে পরিচালিত একটি হিন্দু সংগঠন’ এবং কংগ্রেস আন্দোলন হল ‘অস্ত্রবিহীন গৃহযুদ্ধ’ (‘a civil war without arms’)।
- (৮) একসময় তিনি সিভিল সার্ভিস আন্দোলন ও স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে মত প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি তার ঘোরতর বিরোধিতা করে বলতে থাকেন যে, স্বায়ত্তশাসন ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে উচ্চ সরকারি পদে নিয়োগের অর্থই হল হিন্দু কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়া।
- (৯) সৈয়দ আহমদের এই আদর্শেই আলিগড় আন্দোলন পরিচালিত হয়।
স্যার সৈয়দ আহমদ খানের গ্ৰন্থ রচনা
সমাজ সংস্কারের পাশাপাশি সৈয়দ আহমেদ একজন সুলেখকও ছিলেন। ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ে তিনি অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর লেখা কয়েকটি বইয়ের নাম হল –
- (১) ‘দ্য কজেস অফ দ্য ইন্ডিয়ান রেভল্ট’, ‘আসর-উস-সানাদিদ’,
- (২) ‘এ ভয়েজ টু মডার্নিজম’,
- (৩) ‘দ্য মহামেডান কমেন্ট্রি অন দ্য হোলি বাইবেল’,
- (৪) ‘অ্যান অ্যাকাউন্ট অফ দ্য লয়াল মহামেডানস অফ ইন্ডিয়া’।
- (৫) আহমেদ আবুল ফজল রচিত সম্রাট আকবর -এর জীবনচিত্র ‘আইন-ই-আকবরি’-এর একটি সটীক এবং সচিত্র সংস্করণ রচনা করেছিলেন।
- (৬) মুসলিম ধর্মের প্রবক্তা হজরত মহম্মদ -এর জীবনের উপরেও তিনি বেশ কিছু প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন।
স্যার সৈয়দ আহমদ খানের উপাধি ও সম্মাননা
- (১) সৈয়দ আহমেদ খান তাঁর কৃতিত্বের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফেলো’ হিসেবে নির্বাচিত হন।
- (২) তাঁকে ‘অর্ডার অফ দ্য স্টার অফ ইন্ডিয়া’র একজন সদস্য হিসেবেও নির্বাচিত করা হয়।
- (৩) ব্রিটিশ সাম্রাজ্য -এর প্রতি শর্তহীন আনুগত্যের জন্য এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ‘এল.এল.ডি’ ডিগ্রি প্রদান করে।
- (৪) তিনি ‘খান বাহাদুর’ পদবি লাভ করেন এবং ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত হন।
- (৫) ভারতীয় এবং পাকিস্তান -এর ডাক বিভাগ সৈয়দ আহমেদ খানের সম্মানে তাঁর ছবি সম্বলিত ডাকটিকিট চালু করেছিল।
স্যার সৈয়দ আহমদ খানের মৃত্যু
১৮৯৮ সালের ২৭ মার্চ ভারতে মুসলিম জাগরণের পুরোধা ব্যক্তিত্ব স্যার সৈয়দ আহমদ খানের মৃত্যু হয়৷
উপসংহার :- ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় স্যার সৈয়দ আহমদ খানের কৃতিত্ব অসামান্য। মুসলমানদের স্বার্থরক্ষায় তিনি ছিলেন আপসহীন।
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “স্যার সৈয়দ আহমদ খান” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।
সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।
(FAQ) স্যার সৈয়দ আহমদ খান সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
স্যার সৈয়দ আহমদ খান ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে।
স্যার সৈয়দ আহমদ খান।
থিয়োডোর বেক।