কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা প্রসঙ্গে পত্রিকার প্রথম প্রকাশ, ‘কাশীবাৰ্তা প্রকাশিকা’ পত্রিকার প্রকাশ সম্পর্কে সংবাদ প্রভাকরের লেখনী, ‘কাশীবার্তা প্রকাশিকা’র কণ্ঠে মুদ্রিত শ্লোক, কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা প্রচারের উদ্দেশ্য, সাপ্তাহিক পত্রিকা কাশীবার্তা প্রকাশিকা, কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার প্রচার বন্ধ ও পুনঃ প্রকাশ, কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার পুনঃ প্রকাশ সম্পর্কে সংবাদ প্রভাকরের লেখনী সম্পর্কে জানবো।
পাক্ষিক কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা প্রসঙ্গে কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার প্রথম প্রকাশ, কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার সম্পাদক, কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার ধরণ, কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার প্রকাশকাল, কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার ভাষা, কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার প্রচার বন্ধ ও কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার পুনঃ প্রকাশ সম্পর্কে জানব।
কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা
ঐতিহাসিক পত্রিকা | কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা |
ধরণ | পাক্ষিক পত্রিকা |
ভাষা | বাংলা |
প্রকাশকাল | ১ জুন ১৮৫১ খ্রি |
সম্পাদক | কাশীদাস মিত্র |
ভূমিকা :- ‘বারাণসী চন্দ্রোদয়ে’র অভাব দূরীকরণার্থ কাশীদাস মিত্রের সম্পাদনায় লিথোয় মুদ্রিত ‘কাশীবাৰ্তা প্রকাশিকা’ নামে পাক্ষিক পত্রের আবির্ভাব হয়।
‘কাশীবাৰ্তা প্রকাশিকা’ পত্রিকার প্রথম প্রকাশ
এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যার প্রকাশকাল হল ১ জুন ১৮৫১ (১৯ জ্যৈষ্ঠ ১২৫৮)।
‘কাশীবাৰ্তা প্রকাশিকা’ পত্রিকার প্রকাশ সম্পর্কে সংবাদ প্রভাকরের লেখনী
ঈশ্বর গুপ্ত তার সম্পাদিত ‘সংবাদ প্রভাকর-এ’ (১২ জুন ১৮৫১) লেখেন, “আমরা সাতিশয় আহ্লাদপূর্বক প্রকাশ করিতেছি যে বাঙ্গালা বর্তমান শকের (১৭৭৩) ১৯ জ্যৈষ্ঠ দিবসে শ্ৰীশ্ৰী বারাণসীস্থ বাগোবাহার নামক প্রস্তরের যন্ত্র হইতে বাবু কাশীদাস মিত্র কর্তৃক ‘কাশীবার্তা প্রকাশিকা’ নাম্নী এক অভিনব পাক্ষিক পত্রী প্রকটিতা হইয়াছে।”
‘কাশীবার্তা প্রকাশিকা’র কণ্ঠে মুদ্রিত শ্লোক
এই পত্রিকার কণ্ঠে নিম্নলিখিত শ্লোকটি মুদ্রিত হত –
“কাশী ধন্যতমা বিমুক্তিনগরী সালঙ্কৃতা গঙ্গয়া, যত্রান্তে মণিকর্ণিকা শুভকরী মুক্তির্হি তৎকিংঙ্করী স্বর্লোকস্তুলিতঃ সহৈব বিবুধৈঃ কাশ্যাঃ সমং ব্ৰহ্মণা, কাশী ক্ষৌণিতলে স্থিতা গুরুতরা স্বর্গো লঘুঃ খে-গতা।”
কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা প্রচারের উদ্দেশ্য
এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় মুদ্রিত সম্পাদকীয় বিজ্ঞাপন থেকে এই পত্রিকা প্রচারের উদ্দেশ্য জানা যাবে। –
- (১) “আমারদিগের ‘বারাণসী চন্দ্রোদয়’ পত্রের বৎসরাবধি অজ্ঞাতবাস থাকাতে পাঠকবৃন্দ সন্দেহ করিয়া থাকিবেন, যে চন্দ্রোদয় বুঝি নিবিড় নীরদাচ্ছন্ন হইয়া চিরকালের জন্য শূন্যপথে লুপ্ত হইলেন; কিন্তু তাহা নহে, তাহার অন্তর্হিত হওনের নিগুঢ় অত্ত্ব কথনে আমরা প্রবৃত্ত হইতেছি, সর্বসাধারণ জনগণ শ্রবণ করিয়া মনের সন্দেহ ভঞ্জন করিবেন; পাঠক মহাশয়দিগের স্মরণ থাকিতে পারে, কলিকাতা নগরে ‘রসমুদগর’ নামে এক অভিনব পত্র প্রভাকরের ঔরসে সাগরসভা গর্ভজাত ভূমিষ্ঠ হইবামাত্র শিষ্টস্বভাব পরিত্যাগপূর্বক জনকের প্রতি কোপদৃষ্টি করিয়াছিল, অবশেষে মৃত্যু নিকট সময়ে বিকটাকারে কাশীর প্রতি কটাক্ষ করিবাতে, বারাণসী চন্দ্রোদয় স্বয়ং ঐ দুগ্ধপোষ্য শিশুর সমভিব্যাহারে সমরে প্রবর্ত্ত না হইয়া ভৈরবদণ্ড’ নামক এক ষণ্ড সস্তান প্রসব করিয়া ভণ্ড মুদগরের সমোচিত দণ্ড করিলেন, পরে ঐ বিজয়ী বালকের পরলোক হওয়াতে ‘চন্দ্রোদয়’ শোকসাগরে মগ্ন হইয়া আপনার অল্পায়ুবিকল্পে কায়াকল্পদ্বারা নূতন কলেবর ধারণপুর্বক নবীন নাম যথা ‘কাশীবার্তা প্রকাশিকা’ নামে আখ্যাত হইয়া নব অনুরাগে বিখ্যাত হইয়াছেন, আমরা ভরসা করি পাঠক মহাশয়েরা পুরাতন চন্দ্রোদয়াপেক্ষা অভিনব ‘কাশীবার্তা প্রকাশিকা’ পত্রের বিবিধ সুচারু সংবাদ পাঠে পরিতৃপ্ত হইতে পারিবেন।”
- (২) “এই বারাণসীধামে তিন সহস্রাধিক বঙ্গদেশীয় মনুষ্যের বসবাস হইয়াছে, তন্মধ্যে অনেকে ধনশালী, গুণীণ, ধর্মপরায়ণ, বিজ্ঞ, বিচক্ষণ, সর্ব্বদা ধর্মকর্ম অনুষ্ঠানে বেদ পুরাণাদি শ্রবণে দৈবোৎসবে উল্লাসে চিত্তকে নিত্য রাখিয়া কাল যাপন করিতেছেন, বৈষয়িক ব্যবহারেও যথাসাধ্যব্যয়ে আমোদ প্রমোদে স্বচ্ছন্দে আনন্দের ভাজন হইয়াছেন। কিন্তু এই জনমণ্ডলি সমাজমধ্যে সাধারণের সৎকারজনক কোন সংবাদপত্র বঙ্গভাষার প্রচার ন থাকাতে মহা আক্ষেপের বিষয় কহিতে হয়, অতএব আমরা বিশেষ আলোচনা করিয়া ‘কাশীবার্তা প্রকাশিকা’ নাম্নী এই অভিনব পত্রিকা প্রকাশে যত্নযুক্ত হইলাম…”
সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘কাশীবার্তা প্রকাশিকা’
১৮৫৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ‘কাশীবার্তা প্রকাশিকা’ সাপ্তাহিক রূপ ধারণ করে। এই বিষয়ে লেখা হয় –
- (১) “আমরা পরমাহ্লাদের সহিত কাশীবার্তা দৃষ্টে প্রকাশ করিতেছি যে আমাদিগের বিজ্ঞ প্রবীণ কাশী মুক্তিভূমিস্থ সহযোগি মহাশয় পাক্ষিকী পত্রিকা সাপ্তাহিক করিতে স্থির করিয়া আগামি জানুয়ারি মাসাবধি প্রতি ইংরাজী মাসের ১/৮/১৫/২২ বাসরে প্রকাশারাম্ভ করিবেন তাহাতে বিজ্ঞবর যেরূপ পরিপাট করিয়া পাত্রীয় কার্য সুসম্পন্ন করিয়া থাকেন তদনুসারে তাহার অবশ্যই শ্রমের আধিক্যতা হইবেক, কিন্তু দেশহিতৈষি স্বভাবপ্রযুক্ত পত্রের পূর্ব যেরূপ বার্ষিক ৫ টাকা মূল্যাবধারিত ছিল তাহাতেই পত্র বিস্তৃত করিবেন, সুতরাং ধন্যবাদের ভাজন হইলেন।”
- (২) “আমরা কাশীপতির নিকট প্রার্থনা করি যে তিনি যেরূপ শ্রীযুত বাবু কাশীদাসের প্রতি অনুকূল আছেন তদ্রূপ অনুকম্পায় কাশী বাবুর মানস সফল করেন।…” (২৫ ডিসেম্বর ১৮৫২ তারিখের ‘সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়ে উদ্ধৃত)
কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার প্রচার বন্ধ ও পুনঃ প্রকাশ
এর কিছু দিন পরেই ‘কাশীবার্তা প্রকাশিকা’ পত্রিকার প্রচার বন্ধ হয়। ১৮৫৮ সালে পত্রিকাটি পুনর্জীবিত হয়েছিল।
কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার পুনঃ প্রকাশ সম্পর্কে সংবাদ প্রভাকরের লেখনী
সংবাদ প্রভাকর পত্রিকা (৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৫৮ ) প্রকাশ করে য, “‘কাশীবার্তাবহ’ পত্র পুনর্বার প্রককটিত হইয়া অতি উত্তমরূপে নিস্পাদিত হইতেছে।”
উপসংহার :- কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার শেষ সম্পাদক ছিলেন গোবিন্দচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়‘ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রেরিত পত্রে (১৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৭০) প্রকাশিত একখানি প্রেরিত পত্রে বিলুপ্ত কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার সম্পাদক রূপে গোবিন্দচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম পাওয়া যায়।
(FAQ) কাশীবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
প্রথমে পাক্ষিক পরে সাপ্তাহিক।
কাশীদাস মিত্র।
১ জুন ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে।