সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয় পত্রিকা -র সম্পাদক, প্রকাশকাল, নামকরণ, শিরোভাগে উল্লেখিত শ্লোক, শ্লোকের পরিবর্তন, সাপ্তাহিক ও দৈনিক পত্রিকায় রূপান্তর, সম্পাদক বৃন্দ, স্থায়ীত্ব, উদ্দেশ্য ও পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় উদ্দেশ্যের ব্যাখ্যা সম্পর্কে জানবো।
সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয় পত্রিকা
ধরণ | প্রথমে মাসিক পরে দৈনিক |
প্রথম প্রকাশ | ১৮৩৫ সালের ৮ই জুন |
প্রথম সম্পাদক | হরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় |
ভাষা | বাংলা |
প্রকাশের দিন | পূর্ণিমা তিথি |
ভূমিকা :- উনিশ শতকে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদপত্র গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল হরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয় পত্রিকাটি।
প্রকাশকাল
১৮৩৫ সালের ৮ই জুন (২৮শে জৈষ্ঠ্য ১২৪২ বঙ্গাব্দ) বুধবার মাসিক পত্রিকা হিসেবে সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয় পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয়।
সম্পাদক
এই পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন হরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সম্পাদনায় মাসিক পত্রিকা ‘সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়’ প্রকাশিত হয়।
নামকরণ
প্রতি পূর্ণিমায় প্রকাশ পেত বলেই পত্রিকার নামকরণ করা হয় সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়।
শিরোভাগে উল্লেখিত শ্লোক
পত্রিকাটির শিরোভাগে যে শ্লোকটি লেখা ছিল সেটি হল
“জ্ঞানরূপং তিমিরং বিনশ্য জ্ঞানপ্রকাশং প্রতিমাসমেব।
বিস্তীর্য্য লোকে হরচন্দ্রকেতুঃ সম্পূর্ণচন্দ্রোদয় এষ ভাতি।।
শ্লোকের পরিবর্তন
পরে অবশ্য শ্লোকটি পরিবর্তন করা হয়।
“দশ পঞ্চ কলা পূর্ণে পূর্ণিমায়াম্বিধৌ পুনঃ।
অধুনা হরচন্দ্রেন পূর্ণচন্দ্রোদয়ঃ কৃতঃ।।”
সাপ্তাহিকী
১৮৩৬ সালের ৯ই এপ্রিল ‘সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়’ সাপ্তাহিক পত্র হিসাবে প্রকাশিত হতে থাকে।
দৈনিক পত্রিকা
১৮৪৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে পত্রিকাটি দৈনিক হিসাবে প্রকাশিত হতে থাকে।
সম্পাদক বৃন্দ
- (১) হরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ঢাকা স্কুলের হেড পণ্ডিত নিযুক্ত হলে ১২৪৫ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে সম্পাদনার কার্যে যোগদান করেন আমড়াতলা নিবাসী উদয়চন্দ্র আঢ্য।
- (২) ১৮৪১ সালে নতুন সম্পাদক হন উদয়চন্দ্রের বড় ভাই অদ্বৈতচন্দ্র আঢ্য। অদ্বৈতচন্দ্রের মৃত্যুর পর তার পুত্র গোবিন্দচন্দ্র আঢ্য ১৮৭৩ সালে সম্পাদক হন।
- (৩) পত্রিকাটির পরবর্তী সম্পাদক মহেন্দ্রনাথ আঢ্য। তিনিই ছিলেন পঞ্চম সম্পাদক। ১৩১৪ সালে তার মৃত্যুর পরেও প্রায় এক বছর পত্রিকাটি চলেছিল।
স্থায়ীত্ব
১২৪২ থেকে ১৩১৫ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত সুদীর্ঘ ৭৩ বছর ‘সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়’ সচল ছিল।
সব সংখ্যা গরহাজির
দীর্ঘদিন ধরে চললেও তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থা ও দৈনন্দিন ঘটনা বর্ণনা করতে ‘সংবাদ প্রভাকর পত্রিকা’ বা সংবাদ সমাচার পত্রিকার মত ‘সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়’-এর উল্লেখ না থাকার কারণ মনে হয়, পত্রিকাটির ধারাবাহিক ভাবে সব সংখ্যার হদিশ না পাওয়া।
উদ্দেশ্য
তখন কোন পত্রিকা প্রকাশের প্রায়ই বিশেষ উদ্দেশ্য থাকত, শুধু যে ব্যবসায়িক কারণে প্রকাশিত হত তা নয়। ‘সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়ে’র উদ্দেশ্য প্রথম সংখ্যাতেই ব্যক্ত হয়েছে।
প্রথম সংখ্যায় উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা
“এই সংবাদ পত্র প্রতি পূর্ণিমায় প্রকাশ হইবেক তাহাতে বিদ্যা বুদ্ধি বৃদ্ধি বিষয়ক হিতোপদেশ আছে যাহাতে মনোঅনুপ্রবেশ করিলেই বিশেষোপকার দর্শাইবেক তথা নানা বিষয় ঘটিত রাজ্যের মঙ্গলামঙ্গল বিবরণ যাহা শ্রীলশ্রীযুক্ত দেশাধিপতির কর্ণকুহরে প্রবিষ্ট হইলেই প্রজাগণের মহোপকার দর্শাইবেক এবং ধর্ম বিষয় যাহা সাধারণের আবশ্যক ও এতদ্দেশীয় বা ইউরোপীয়াদি দেশের নূতন সম্বাদ যদ্দর্শনে পাঠকগণেরা পরমোল্লসিত এবং তাঁহাদিগের ও প্রেরিত যথারীত্যনুসারে প্রকাশ হইবেক ….।”
(FAQ) সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয় পত্রিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
হরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
৮ জুন ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে।
১৮৪৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে।