শিল্পে শ্রম শক্তির আত্মপ্রকাশ প্রসঙ্গে আধুনিক শিল্পের সূচনা, শ্রমিক শ্রেণির উদ্ভব, শ্রমিকের সংখ্যাবৃদ্ধি, শিল্পে শ্রম শক্তির বিভিন্ন দিক হিসেবে শ্রমিক আন্দোলন, প্রথম পর্বের শ্রমিক ধর্মঘট, শ্রমিক সংগঠন, শ্রমিক আন্দোলনে বামপন্থীদের ভূমিকা, বাংলায় শ্রমিক ধর্মঘট, বোম্বাইয়ে ধর্মঘট, সাইমন কমিশন-বিরোধী শ্রমিক আন্দোলন ও শ্রমিক আন্দোলন দমনে উদ্যোগ সম্পর্কে জানবো।
শিল্পে শ্রমশক্তির আত্মপ্রকাশ
ঐতিহাসিক ঘটনা | শিল্পে শ্রমশক্তির আত্মপ্রকাশ |
মাদ্রাজ লেবার ইউনিয়ন | ১৯১৮ খ্রি |
এ আই টি ইউ সি | ১৯২০ খ্রি |
প্রথম সভাপতি | লালা লাজপত রায় |
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা | ১৯২৯ খ্রি |
কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টি | ১৯৩৪ খ্রি |
ভূমিকা:- ঔপনিবেশিক শাসনকালে ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ব্রিটিশরা ভারতে শিল্পের প্রসারে কোনো উদ্যোগ নেয় নি। বরং নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থে তারা দেশের ক্ষুদ্র কুটিরশিল্পকে প্রায় ধ্বংস করেছিল।
আধুনিক শিল্পের সূচনা
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে বিভিন্ন উদ্যোগে ভারতে কিছু আধুনিক শিল্পের বিকাশ ঘটে। প্রথমদিকে ব্রিটিশ পুঁজিপতিদের উদ্যোগে এবং পরে ভারতীয় পুঁজিপতিদের উদ্যোগে ভারত-এ লৌহ-ইস্পাত, কাগজ, চা, পাট, কয়লা, সুতিবস্ত্র, সিমেন্ট, কাচ, দেশলাই, রাসায়নিক প্রভৃতি বিভিন্ন শিল্পের বিকাশ ঘটে।
শ্রমিকশ্রেণির উদ্ভব
ভারতে আধুনিক শিল্পের প্রসারের ফলে এদেশে নতুন সামাজিক শ্রেণি হিসেবে শিল্প শ্রমিকদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। বিভিন্ন শিল্প-কারখানার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে শিল্প-শ্রমিকের সংখ্যাও ক্রমশ বাড়তে থাকে। ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতে ৫৬টি সুতাকল প্রতিষ্ঠিত হয়। এগুলিতে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৫ হাজার। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পাটকলের সংখ্যা দাঁড়ায় ২০টি ও এগুলিতে কর্মরত শ্রমিকের মোট সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ হাজার।
শ্রমিকের সংখ্যাবৃদ্ধি
১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে স্বদেশি আন্দোলন-এর সময় ভারতে কারখানার সংখ্যা এবং সেই সঙ্গে শ্রমিকের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-এর সময় ভারতে বিলাতি পণ্যের সরবরাহ বন্ধ হলে ভারতে শিল্প-কারখানার আরও প্রসার ঘটে এবং শ্রমিকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। তবে যুদ্ধের পর ভারতীয় শিল্পগুলি আবার বিদেশি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হলে বহু শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে।
শিল্পে শ্রমশক্তির বিভিন্ন দিক
যাইহোক, শিল্পে শ্রমশক্তির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল –
(ক) শ্রমিক আন্দোলন
ভারতের শিল্প শ্রমিকরা বিভিন্ন কারণে পুঁজিপতি মালিক ও ব্রিটিশ সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়। এই ক্ষোভের বিভিন্ন কারণ ছিল। যেমন –
(১) রাজনৈতিক সচেতনতা
তিলক ও শ্রীমতী বেসান্তের হোমরুল আন্দোলন-এর ফলে শ্রমিকদের রাজনৈতিক সচেতনতা যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়।
(২) রুশ বিপ্লবের সাফল্য
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে লেনিন-এর নেতৃত্বে রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সাফল্য ভারতীয় শ্রমিকদের অনুপ্রাণিত করে।
(৩) শোষণ
শ্রমিকদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস, স্বল্প মজুরি, অধিক সময় কাজ প্রভৃতির ফলে তারা ক্ষুব্ধ ছিল।
(৪) অর্থনৈতিক দূরবস্থা
শ্রমিকদের কম মজুরি, তাদের ওপর বিপুল করের বোঝা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রভৃতি ঘটনা শ্রমিক অসন্তোষ বৃদ্ধি করে। শ্রমিক অসন্তোষের ফলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিকরা আন্দোলনের পথে পা বাড়ায়। বিভিন্ন পর্যায়ে ভারতীয় শ্রমিকদের আন্দোলন এগিয়ে যায়।
(খ) প্রথম পর্বের শ্রমিক ধর্মঘট
ভারতীয় শ্রমিকদের প্রথম পর্বের উল্লেখযোগ্য ধর্মঘট গুলি হল –
(১) ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের শ্রমিক ধর্মঘট
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতে তীব্র শ্রমিক আন্দোলনের সূচনা হয়। এই বছর আমেদাবাদের বস্ত্রশিল্পের কাজে নিযুক্ত শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ব্যাপক ধর্মঘট শুরু করে। এছাড়া করাচির নর্থ-ওয়েস্টার্ন রেলওয়ে কারখানা, গ্রেট ইন্ডিয়া পেনিনসুলার রেলওয়ে, বোম্বাইয়ের বস্ত্রশিল্প ও ডাক বিভাগের শ্রমিকরাও ধর্মঘটে শামিল হয়।
(২) ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের শ্রমিক ধর্মঘট
১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজির নেতৃত্বে আমেদাবাদের বস্ত্রশিল্পের শ্রমিকরা আন্দোলন করে সফল হয়। এই বছরে বোম্বাইয়ের বস্ত্রশিল্প, কলকাতা পৌরসভা, খড়গপুর ও লক্ষ্মৌ-এর রেল কারখানা, মাদ্রাজ ট্রাম কোম্পানি ও বস্ত্রশিল্পক্ষেত্র প্রভৃতিতেও ধর্মঘট হয়।
(৩) ১৯১৯-২০ খ্রিস্টাব্দের শ্রমিক ধর্মঘট
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা, বিহার, আসাম, বোম্বাই, মাদ্রাজ প্রভৃতি স্থানের রেল কারখানা, বন্দর, টাকশাল, চা বাগান, পাটশিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প প্রভৃতিতে ধর্মঘট হয়। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রায় সব শিল্পের শ্রমিকরাই ধর্মঘটে শামিল হয়। অসহযোগ আন্দোলনের সময় ভারতে প্রায় ৪৫০টি শ্রমিক ধর্মঘট সংঘটিত হয়।
(গ) শ্রমিক সংগঠন
১৯১৮-১৯২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতে বেশ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন বা ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে ওঠে। যেমন–
- (১) বি. পি. ওয়াদিয়া ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাজ লেবার ইউনিয়ন নামে ভারতের প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেন।
- (২) মহাত্মা গান্ধী আমেদাবাদের বস্ত্রশিল্প শ্রমিকদের নিয়ে ‘আমেদাবাদ টেক্সটাইল লেবার অ্যাসোসিয়েশন’ (১৯২০) প্রতিষ্ঠা করেন।
- (৩) জাতীয় কংগ্রেস ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে তার বিভিন্ন শাখা সংগঠনগুলিকে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে সহায়তা করার নির্দেশ দেয়।
- (৪) ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস গঠিত হয়। ৩১ অক্টোবর, ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে লালা লাজপত রায়-এর সভাপতিত্বে বোম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত এই সংগঠনের প্রথম সম্মেলনে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ৫ লক্ষ শ্রমিকের প্রতিনিধি হিসেবে ৮০৬ জন যোগদান করেন। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে এই প্রতিষ্ঠানের অন্তর্গত ৪৫টি ইউনিয়নের অধীনে প্রায় দেড় লক্ষ শ্রমিকের সদস্যপদ ছিল।
- (৫) ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে দেওয়ান চমনলাল, ভি. ভি. গিরি প্রমুখের নেতৃত্বে ‘ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন’ গড়ে ওঠে।
- (৬) ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে বামপন্থীদের উদ্যোগে ‘রেড ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস’, ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে আচার্য নরেন্দ্র দেব ও জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে কংগ্রেসের অভ্যন্তরে কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টি প্রভৃতি শ্রমিক সংগঠন গড়ে ওঠে।
(ঘ) শ্রমিক আন্দোলনে বামপন্থীদের ভূমিকা
১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনে বামপন্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুজাফ্ফর আহমেদ, শ্রীপাদ অমৃত ডাঙ্গে, পি. সি. জোশী, হেমন্তকুমার সরকার, কবি নজরুল ইসলাম প্রমুখ ছিলেন আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দ।
(১) উদ্দেশ্য
শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, কাজের সময় হ্রাস, জমিদারি প্রথার বিলোপ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বাক্স্বাধীনতা রক্ষা, শ্রমিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি উদ্দেশ্যে বামপন্থীরা শ্রমিক আন্দোলনে শামিল হয়।
(২) শ্রমিক আন্দোলন
বাংলা, বোম্বাই, পাঞ্জাব ও যুক্তপ্রদেশে ১৯২৫-২৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ‘শ্রমিক ও কৃষক পার্টি’ (১৯২৫) (Workers and Peasants Party) প্রতিষ্ঠা করে বামপন্থীরা শ্রমিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
(৩) শ্রমিকদের সমর্থনে পত্রপত্রিকা প্রকাশ
শ্রমিকদের সমর্থনে বিভিন্ন বামপন্থী পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হয়। এবিষয়ে উল্লেখযোগ্য হল মুজাফ্ফর আহমেদ সম্পাদিত ‘গণবাণী’ (১৯২৩ খ্রি.), সন্তোষকুমারী গুপ্তা সম্পাদিত শ্রমিক, এস. এ. ডাঙ্গে সম্পাদিত ‘সোশ্যালিস্ট’ (১৯২৪ খ্রি.), সিঙ্গারাভেলু চেটিয়ার সম্পাদিত ‘লেবার-কিষান গেজেট’ প্রভৃতি। এ ছাড়া ক্রান্তি, কীর্তি, মজদুর-কিষান, মেহনতাকাশ প্রভৃতি পত্রপত্রিকাও বামপন্থীদের উদ্যোগে প্রকাশিত হত।
(ঙ) বাংলার ধর্মঘট
বাংলার শ্রমিক ধর্মঘটের বিভিন্ন দিক গুলি হল –
(১) রেল ধর্মঘট
১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে শ্রমিক আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। এসময় খড়গপুরের বেঙ্গল-নাগপুর রেলের ২৫ হাজার শ্রমিক প্রচণ্ড পুলিশি নির্যাতন উপেক্ষা করে ২৬ দিন ধরে ধর্মঘট চালিয়ে যায়। ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর ১৭০০ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হলে শ্রমিকরা পুনরায় ৩ মাস ধরে ধর্মঘট চালায়। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে লিলুয়ায় ইস্ট ইন্ডিয়ান এবং সাউথ ইন্ডিয়ান রেলে ধর্মঘট হয়। এই সময় ধর্মঘটি শ্রমিকদের ওপর পুলিশ গুলি চালালে ৫ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
(২) চটকল ধর্মঘট
১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে চেঙ্গাইলে লাডকো জুট মিল ও বাউরিয়ার ফোর্ট মাস্টার চটকলে ৬ মাস ধরে ধর্মঘট চলে। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে পুলিশি অত্যাচার উপেক্ষা করে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে শ্রমিকরা ৩৭ দিন ধরে ধর্মঘট চালায়। ধর্মঘট পরিচালনার দায়িত্বে ছিল ড. প্রভাবতী দাশগুপ্তার নেতৃত্বাধীন ‘বেঙ্গল জুট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’।
(চ) বোম্বাইয়ে ধর্মঘট
বোম্বাইয়ের শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানকার দেড় লক্ষ শ্রমিক ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ছয় মাস ধরে ধর্মঘট চালায়। এই সময় বস্ত্র কারখানার শ্রমিকদের জঙ্গি সংগঠন ‘গিরনি কামগার ইউনিয়ন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ডাঙ্গে, মিরজাকর, জোগলেকর প্রমুখ কমিউনিস্ট নেতা এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বরখাস্ত হওয়া ৬ হাজার শ্রমিকের পুনর্বহালের দাবিতে বোম্বাইয়ে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে বস্ত্রশিল্প কারখানায় পুনরায় ধর্মঘট হয়।
(ছ) সাইমন কমিশন-বিরোধী শ্রমিক আন্দোলন
বামপন্থীদের প্রভাবে শ্রমিকরা ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে সাইমন কমিশন-বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। সাইমন কমিশন ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ৩ ফেব্রুয়ারি বোম্বাই বন্দরে পৌঁছালে শ্রমিক ধর্মঘট পালিত হয় ও ৩০ হাজার শ্রমিকের মিছিল বের হয়। এই বছর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের ‘ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজ্যান্টস্ পার্টি’র সদস্যরা কলকাতায় মিলিত হয়ে একটি সর্বভারতীয় শ্রমিক ও কৃষক দল গঠনের চেষ্টা চালায়।
(জ) শ্রমিক আন্দোলন দমনে উদ্যোগ
ভারতীয় শ্রমিকদের প্রবল আন্দোলন দমন করার উদ্দেশ্যে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। যেমন –
(১) হুইটলি কমিশন গঠন
সরকার ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ‘হুইটলি কমিশন’ গঠন করে শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতির উদ্যোগ নেয়।
(২) আইন প্রণয়ন
শ্রমিক আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে বড়োলাট লর্ড আরউইন ‘শিল্পবিরোধ বিল’ ও ‘জননিরাপত্তা বিল’ নামে দুটি শ্রমিক-স্বার্থবিরোধী বিল পাস করে। প্রথমটির দ্বারা শ্রমিক ধর্মঘট বেআইনি ঘোষণা করা হয় এবং দ্বিতীয়টির দ্বারা কমিউনিস্টদের দমনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
(৩) মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা
ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ২০ মার্চ ৩৩ জন শ্রমিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাঁদের মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়। গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মুজাফ্ফর আহমেদ, এস. এ. ডাঙ্গে, পি. সি. যোশী, মিরাজকর, গঙ্গাধর অধিকরি, শিবনাথ ব্যানার্জি, ধরণী গোস্বামী, বেঞ্জামিন ব্রাডলি, ফিলিপ স্প্রাট প্রমুখ। অধিকাংশ বন্দিকে দোষী সাব্যস্ত করে দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
উপসংহার :- শ্রমিক আন্দোলন দুর্বল করার উদ্দেশ্যে সরকার ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট দল ও তার সমস্ত শাখাগুলিকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শ্রমিক আন্দোলন সম্পূর্ণ দমন করা সম্ভব হয় নি।
(FAQ) শিল্পে শ্রম শক্তির আত্মপ্রকাশ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
মাদ্রাজ লেবার ইউনিয়ন।
১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে বি. পি. ওয়াদিয়ার নেতৃত্বে।
১৯২০ খ্রিস্টাব্দে।
লালা লাজপত রায়।
১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে।