সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধি

সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধির কারণ, জিন্নার চোদ্দোদফা দাবি, জিন্নার চোদ্দোদফা দাবির সমালোচনা, সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা ও পৃথক পাকিস্তান প্রস্তাব সম্পর্কে জানবো।

পরাধীন ভারতে সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধি

ঐতিহাসিক ঘটনাসাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধি
সাইমন কমিশন১৯২৭ খ্রি
নেহরু রিপোর্ট১৯২৮ খ্রি
চোদ্দো দফা দাবিমহম্মদ আলি জিন্না
সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি১৬ আগস্ট ১৯৩২ খ্রি
Now or Neverচৌধুরী রহমত আলী
পরাধীন ভারতে সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধি

ভূমিকা :- অসহযোগ আন্দোলনখিলাফৎ আন্দোলন চলার সময় ভারতীয় রাজনীতিতে যে অভূতপূর্ব হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ও আন্তরিকতার চিত্র দেখা গিয়েছিল তা কিছুকাল পরই খুব দ্রুত পালটে যায় এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়তে থাকে।

সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধির কারণ

ভারতে অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনের পর সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধির কারণ মনে করা হয় –

(ক) আন্দোলনের অবসান

  • (১) ভারতে অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নিয়ে কিছু আন্দোলনকারী উত্তরপ্রদেশের চৌরিচৌরায় বেশ কিছু পুলিশকে পুড়িয়ে মারলে (৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯২২ খ্রি.) মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন (২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯২২ খ্রি.)।
  • (২) এদিকে তুরস্ক-এর জাতীয়তাবাদী নেতা কামাল পাশা সেখানকার শাসনক্ষমতা দখল করে (নভেম্বর, ১৯২২ খ্রি.) খলিফার রাজনৈতিক ক্ষমতা কেড়ে নেন এবং কিছুদিনের মধ্যে তিনি খলিফা পদেরই অবসান ঘটান (মার্চ, ১৯২৪) খ্রি.)।
  • (৩) এর ফলে তুরস্কের খলিফার সমর্থনে ভারতে খিলাফৎ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া অর্থহীন হয়ে পড়লে খুব শীঘ্রই এই আন্দোলন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে যে মৈত্রী সৃষ্টি হয়েছিল, তার বন্ধনও ক্রমশ শিথিল হয়ে পড়ে।

(খ) গান্ধী ও মুসলিম নেতাদের মধ্যে দুরত্ববৃদ্ধি

  • (১) ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে খিলাফত কমিটির সভায় পূর্ণ স্বরাজ ও সহিংস নীতি গ্রহণের প্রশ্নে হসরৎ মোহানি ও গান্ধিজির মধ্যে বিরোধ বাঁধে। গান্ধিজি পূর্ণ স্বরাজ-এর জন্য সর্বশক্তি নিয়োগে অরাজি হলে জঙ্গি উলেমা গোষ্ঠী ক্ষুদ্ধ হয়।
  • (২) এরপর খিলাফৎ আন্দোলন বন্ধ হওয়ার পর একমাত্র মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ছাড়া সব খিলাফৎ নেতাই গান্ধিজির ঘনিষ্ঠতা ত্যাগ করেন। গান্ধিজির একসময়কার খুবই ঘনিষ্ঠ মৌলানা মহম্মদ আলি ও মৌলানা সৌকত আলি প্রকাশ্যেই ঘোষণা করেন যে, তাঁরা প্রথমে মুসলিম, পরে ভারতীয়।

(গ) সাম্প্রদায়িক শক্তি বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ

এই সময় হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায় নিজ নিজ সম্প্রদায়ের শক্তিবৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়। হিন্দুরা ‘সংগঠন’ ও ‘শুদ্ধি’ আন্দোলন এবং মুসলিমরা ‘তানজিম’ ও ‘তাবলিখ’ আন্দোলনের মাধ্যমে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকসংখ্যা ও শক্তিবৃদ্ধির প্রয়াস চালায়।

(ঘ) ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ব্যাপকতা

গান্ধিজির অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহারের পরই হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের অসহিষ্ণুতা ও ইন্ধনের ফলে বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বেধে যায়। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারত-এর বিভিন্ন স্থানে ৭২টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়।

(ঙ) জিন্নার ভূমিকা

  • (১) ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম লীগ-এর লাহোর অধিবেশনে সভাপতি মহম্মদ জিন্না গান্ধিজির অসহযোগ নীতির তীব্র সমালোচনা করেন এবং মুসলিমদের জন্য পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থাকে সমর্থন করেন।
  • (২) এই অধিবেশনে লিগ বাংলা, পাঞ্জাব ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের আইনসভায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রাখতে এবং সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষার জন্য ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার দাবি জানায়।
  • (৩) এই সময় থেকে কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের ঐক্য বিনষ্ট হয় এবং লিগ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে সরে এসে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে রাজনৈতিক দাবিদাওয়া আদায়ের চেষ্টা করতে থাকে।

(চ) সাইমন কমিশনের প্রভাব

পরাধীন অবস্থায় ভারতের নতুন সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে সাইমন কমিশনের কথা ঘোষণা করলে কংগ্রেস এই কমিশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। জিন্নার নেতৃত্বে মুসলিম লিগের একাংশ এই কমিশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেও লিগের পাঞ্জাব গোষ্ঠী নামে পরিচিত মহম্মদ শফি, ফিরোজ খাঁ নুন, ফজলি হোসেন, মহম্মদ ইকবাল প্রমুখ একে স্বাগত জানায়।

(ছ) নেহেরু রিপোর্টের প্রতিক্রিয়া

  • (১) ভারতীয়দের সংবিধান রচনার যোগ্যতা আছে কি না তা নিয়ে সাইমন কমিশনে প্রশ্ন তোলা হলে ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে লক্ষ্ণৌ এ একটি সর্বদলীয় অধিবেশনে মতিলাল নেহরু সংবিধানের একটি খসড়া পেশ করেন। এটি নেহরু রিপোর্ট নামে পরিচিত।
  • (২) কিন্তু ওই বছর ২২ ডিসেম্বর কলকাতার সর্বদলীয় অধিবেশনে মুসলিম লিগ নেতা মহম্মদ আলি জিন্না ওই খসড়ায় লিগের জন্য কিছু বিশেষ সুবিধা দাবি করেন। অধিবেশনে তাঁর দাবিগুলি নাকচ হলে তিনি তাঁর অনুগামীদের নিয়ে অধিবেশন ত্যাগ করেন এবং মহম্মদ শফি, মহম্মদ ইকবাল, আগা খাঁ প্রমুখ প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলিত হন। এভাবে লিগে ঐক্য ফিরে এলে লিগের শক্তি বৃদ্ধি পায়।

(জ) মুসলিম সংগঠনগুলির মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা

পরাধীন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলিম সংগঠনগুলির মধ্যে ঐক্যপ্রতিষ্ঠা, মুসলিমদের স্বার্থ-সংরক্ষণ, সাংবিধানিক সুযোগসুবিধা আদায় প্রভৃতির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনকে নিয়ে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে দিল্লিতে নিখিল ভারত মুসলিম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জিন্না এই অধিবেশনে যোগ দিলে সম্মেলনের শক্তি খুবই বৃদ্ধি পায়। এই সময় আলি ভ্রাতৃদ্বয় কানপুরে ‘জমিয়াৎ-ই-উলেমা-ই-হিন্দ’ নামে একটি তীব্র কংগ্রেস-বিরোধী সংগঠন গড়ে তোলেন।

সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে জিন্নার চোদ্দো দফা দাবি

ভারতের মুসলিমদের স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্যে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত মুসলিম লিগের অধিবেশনে সভাপতি মহম্মদ আলি জিন্না তাঁর বিখ্যাত ‘চোদ্দো দফা দাবি পেশ করেন। চোদ্দো দফার অধিকাংশ প্রস্তাবই ছিল নেহরু রিপোর্টের প্রস্তাবগুলির একেবারে বিপরীত। পরবর্তীকালে চোদ্দো দফা দাবিগুলিই মুসলিম লিগের প্রচারের প্রধান কর্মসূচি হয়ে দাঁড়ায়। জিন্নার চোদ্দো দফা দাবিগুলি ছিল –

  • (১) ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন,
  • (২) প্রদেশগুলিতে স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন,
  • (৩) আইনসভাগুলিতে মুসলিমদের যথেষ্ট সংখ্যক প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ দান,
  • (৪) মুসলিমদের জন্য কেন্দ্রীয় আইনসভায় ১/৩ অংশ আসন সংরক্ষণ,
  • (৫) মুসলিমদের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা,
  • (৬) বাংলা, পাঞ্জাব ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রেখে ভারতের প্রদেশগুলির পুনর্গঠন,
  • (৭) সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়কে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দান,
  • (৮) কোনো আইনসভার যে-কোনো সম্প্রদায়েরই ৩/৪ অংশ সদস্য কোনো বিলের বিরোধিতা করলে সেই বিল প্রত্যাহার,
  • (৯) প্রাদেশিক আইনসভার অনুমতি ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন না করা,
  • (১০) কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মন্ত্রীসভায় ১/৩ অংশ মুসলিম সদস্য গ্রহণ করা,
  • (১১) রাজ্য ও স্থানীয় সংস্থাগুলিতে মুসলিমদের জন্য পদ সংরক্ষণ করা,
  • (১২) সিন্ধু প্রদেশকে বোম্বাই প্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নতুন প্রদেশ গঠন করা,
  • (১৩) বেলুচিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে সাংবিধানিক সংস্কার ঘটানো,
  • (১৪) মুসলিম শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ।

জিন্নার চোদ্দো দফার সমালোচনা

মহম্মদ জিন্নার চোদ্দো দফার অধিকাংশ দাবিই ছিল গণতান্ত্রিক আদর্শের পরিপন্থী। কিন্তু মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এই দাবিগুলি খুবই সমর্থনযোগ্য বলে মনে হতে থাকে। ফলে মুসলিম ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির সম্ভাবনা বিনষ্ট হয়।

আলি জিন্নার চোদ্দো দফা দাবি সম্পর্কে ড. মজুমদারের মন্তব্য

ড. রমেশ চন্দ্র মজুমদারের মতে, চোদ্দো দফা দাবির ফলে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয়ে মতের পার্থক্য ক্রমে বাড়তে থাকে এবং ভারতে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ বৃদ্ধি পেতে থাকে।

সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা

ভারতের সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি বিশেষ প্রভাব ফেলে। এর বিভিন্ন দিক গুলি হল –

(ক) সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষণা

ভারতের সাম্প্রদায়িক ঐক্য ধ্বংস এবং ব্রিটিশবিরোধী জাতীয় আন্দোলনকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র‍্যামসে ম্যাকডোনাল্ড ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষণা করেন।

(খ) সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির বক্তব্য

এই নীতির দ্বারা মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান ভারতীয় খ্রিস্টান, ইউরোপীয় সম্প্রদায় প্রভৃতি সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পৃথক নির্বাচনের অধিকার দেওয়া হয়। হিন্দু সম্প্রদায়কে বর্ণহিন্দু ও অনগ্রসর হিন্দু – এই দুই ভাগে বিভক্ত করে তাদের পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়।

(গ) সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির প্রতিক্রিয়া

সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষিত হওয়ার পর এর বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। যেমন –

(১) সাম্প্রদায়িক রাজনীতির জয়

সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির দ্বারা মুসলিম নেতৃবৃন্দের সাম্প্রদায়িক নীতির জয় ঘোষিত হয়। লিগের যাবতীয় সাম্প্রদায়িক দাবিদাওয়া এই নীতির মাধ্যমে মেনে নেওয়া হয়।

(২) গান্ধিজির অনশন

কংগ্রেস সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির তীব্র প্রতিবাদ করে। এই নীতির প্রতিবাদে গান্ধিজি ২০ সেপ্টেম্বর জারবেদা জেলে আমরণ অনশন শুরু করেন। এই পরিস্থিতিতে গান্ধিজির জীবনরক্ষার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফলে আইন অমান্য আন্দোলনের বিষয়টি চাপা পড়ে যায় এবং উদ্‌বিগ্ন কংগ্রেস নেতারা ড. বি. আর. আম্বেদকর-এর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন।

(ঘ) পুনা চুক্তি

তফশিলি নেতা ড. বি. আর. আম্বেদকর এবং অন্যান্য হিন্দুদের পক্ষ থেকে ড. মদনমোহন মালব্যের সঙ্গে আলোচনা করে পুনা চুক্তি (২৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৩২ খ্রি.)-তে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির দ্বারা হিন্দুদের যৌথ নির্বাচনের নীতি মেনে নেওয়া হয়, সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার মাধ্যমে তপশিলি সম্প্রদায় যতগুলি আসন পেত তার দ্বিগুণ আসন তাদের জন্য সংরক্ষিত হয়, গান্ধিজি ২৬ সেপ্টেম্বর অনশন ভঙ্গ করেন।

(ঘ) পৃথক পাকিস্তানের দাবি

সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষিত হওয়ার পর মুসলিম লিগের পৃথক পাকিস্তানের দাবি জোরদার হয়ে ওঠে। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঞ্জাবি মুসলিম ছাত্র চৌধুরী রহমত আলি ও তাঁর অনুগামীরা ‘এখন অথবা কখনও না’ (Now or Never) শীর্ষক চার পাতার এক পুস্তিকায় ভারতের মুসলিম-অধ্যুষিত পাঁচটি প্রদেশ – পাঞ্চাব, আফগান প্রদেশ, কাশ্মীর, সিন্ধু, এবং বেলুচিস্তান নিয়ে পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের দাবি জানান।

উপসংহার :- কিছুকাল পর চৌধুরী রহমত আলি ‘পাকিস্তান জাতীয় আন্দোলন’ শুরু করেন এবং প্রস্তাবিত ‘পাকিস্তান’ ভূখণ্ডে কয়েকটি প্রচারকেন্দ্র স্থাপন করেন। কিছুকাল পরই ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম লিগ লাহোর অধিবেশনে পৃথক পাকিস্তানের দাবি জানায় এবং পৃথক পাকিস্তান আন্দোলন অতিদ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

(FAQ) পরাধীন ভারতে সাম্প্রদায়িক বিভেদ বৃদ্ধি সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. গান্ধিজি অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন কখন?

২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে।

২. মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন কে?

মহম্মদ আলি জিন্না।

৩. সাইমন কমিশন ভারতে আসে কখন?

১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে।

৪. নেহরু রিপোর্ট প্রকাশিত হয় কখন?

১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে।

৫. কে কখন চোদ্দো দফা দাবি পেশ করেন?

মহম্মদ আলি জিন্না ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে।

৬. সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষণা করা হয় কখন?

১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে।

৭. পুনা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কখন?

১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে।

Leave a Comment