শের শাহের শাসন ব্যবস্থা

শের শাহের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে ঐতিহাসিক কীন, কানুনগো, আর্সকিন ও হেইগ-এর অভিমত, শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য, সংস্কারক না উদ্ভাবক, কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা, সম্রাটের স্থান, প্রাদেশিক শাসন, রাজস্ব নীতি, শুল্ক ও মুদ্রা নীতি, বিচার ব্যবস্থা, পুলিশি ব্যবস্থা, সেনাবাহিনী, যোগাযোগ ব্যবস্থা, সরাইখানা, ডাক ব্যবস্থা, গুপ্তচর ব্যবস্থা, দানশীলতা, ধর্ম নীতি ও শাসন ব্যবস্থার ত্রুটি সম্পর্কে জানবো।

শেরশাহের শাসন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে শাসক হিসেবে শেরশাহের কৃতিত্ব, শেরশাহের সংস্কারমূলক কাজ, বাস্তববাদী সংগঠক, বিচক্ষণ শাসক, শেরশাহের শাসন ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য, শেরশাহের শাসন ব্যবস্থার মৌলিকত্ব, শেরশাহ সংস্কারক না উদ্ভাবক, শেরশাহের কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা, শেরশাহের প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা, শেরশাহের রাজস্ব নীতি, শেরশাহের শুল্ক ও মুদ্রানীতি, শেরশাহের বিচার ব্যবস্থা, শেরশাহের পুলিশি ব্যবস্থা, শেরশাহের সেনাবাহিনী, শেরশাহের সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা, শেরশাহ নির্মিত সরাইখানা, শেরশাহের ডাক ব্যবস্থা, শেরশাহের গুপ্তচর ব্যবস্থা, শেরশাহের শাসন ব্যবস্থার ত্রুটি ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানব।

শের শাহের শাসন ব্যবস্থা (Administrative System of Sher Shah)

বিষয়শের শাহের শাসন ব্যবস্থা
রাজত্বকাল১৫৪০-১৫৪৫ খ্রিস্টাব্দ
বংশশূর বংশ
অবদানগ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড নির্মাণ
উত্তরসূরিইসলাম শাহ সুরি

সূচনা :- কেবলমাত্র একজন সমরকুশলী নেতা বা সাম্রাজ্য-এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেই নয়—একজন প্রজাহিতৈষী সুশাসক ও সংগঠক হিসেবেও শেরশাহ ভারত ইতিহাসে স্মরণীয় হয়েআছেন।

শের শাহের শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন

তিনি মাত্র পাঁচ বছর দিল্লির সিংহাসনে ছিলেন এবং এইস্বল্প সময়কালের মধ্যে শাসন ব্যবস্থায় তিনি এমন কিছু পরিবর্তন আনেন, যা আকবর -এর পূর্বে অপর কোনও শাসকের পক্ষে করা সম্ভব হয় নি।

শের শাহের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে কীনের অভিমত

ঐতিহাসিক কীন (H.G. Keene) বলেন যে, “কোনও সরকার, এমনকী ব্রিটিশ সরকারও এই পাঠানের মতো বিজ্ঞতার পরিচয় দিতে পারেন নি।

শের শাহের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে কানুনগোর অভিমত

ডঃ কালিকারঞ্জন কানুনগো (Dr. K. R. Qanungo)-র মতে শের শাহ ছিলেন “আফগানদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রশাসনিক ও সামরিক প্রতিভা” (“the greatest administrative and military genius among the Afghans.”)।

শের শাহের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে আর্সকিনের অভিমত

ঐতিহাসিক উইলিয়াম আর্সকিন (William Erskine) বলেন যে, “আকবরের পূর্বে আইন প্রণেতা ও প্রজাদের অভিভাবক-রূপে তিনি যে কোনও নরপতি অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ছিলেন।”

শের শাহের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে হেইগের অভিমত

ঐতিহাসিক স্যার উলস্‌লি হেইগ (Sir Woolseley Haig) বলেন যে, “প্রকৃতপক্ষে দিল্লির সিংহাসনে যে সব শাসক বসেন তাঁদের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। কোনও শাসক, এমনকী আকবর বা ঔরঙ্গজেব ও শের শাহের মতো শাসনব্যবস্থার এত বিশদ ও খুঁটিনাটির দিকে নজর দিতেন না।”

শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য

শের শাহের শাসন ব্যবস্থার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য দৃষ্টি আকর্ষণ করে।যেমন –

(১) সমন্বয়

শের শাহের শাসন ব্যবস্থা হল প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় হিন্দু-মুসলিম শাসননীতির সমন্বয়। তাঁর প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ভাবধারার মিশ্রণ শাসনব্যবস্থায় প্রাচীন ভারতীয় হিন্দু শাসন পদ্ধতি ও আলাউদ্দিন খলজির শাসনব্যবস্থার সুস্পষ্ট ছাপ লক্ষ্য করা যায়।

(২) পার্সিভাল স্পিয়ারের অভিমত

ঐতিহাসিক পার্সিভাল স্পিয়ার বলেন যে, সুলতানি ও পারসিক শাসননীতির সমন্বয়ে শের শাহ তাঁর শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলেন।

(৩) প্রাচীন ভারত থেকে গ্ৰহণ

তার আমলে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, ঘোড়ার ডাকের প্রচলন, গুপ্তচর ব্যবস্থা, রাস্তার ধারে সরাইখানা স্থাপন প্রভৃতি প্রাচীন ভারতে প্রচলিত ছিল। এ ছাড়াও তাঁর শাসনব্যবস্থার বহু বিষয় তিনি প্রাচীন ভারত থেকে নিয়েছিলেন।

(৪) সুলতানি যুগ থেকে গ্ৰহণ

জমি জরিপ, সেনাদলে দাগ’ ও ‘হুলিয়া’ ও নগদ বেতন দান ব্যবস্থার প্রবর্তন প্রভৃতি তিনি আলাউদ্দিন খলজির কাছ থেকে নিয়েছিলেন। এ ছাড়াও তাঁর শাসনব্যবস্থার বহু বিষয় তিনি সুলতানি যুগ থেকে নিয়েছিলেন।

(৫) প্রজাহিতৈষী স্বৈরতন্ত্র

যুগধর্ম অনুযায়ী শের শাহ স্বৈরতান্ত্রিক শাসক ছিলেন, কিন্তু তাঁর স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল দক্ষতা, উদারতা ও জনকল্যাণের আদর্শ। অবিমিশ্র স্বৈরতন্ত্র ও ‘ঈশ্বরদত্ত ক্ষমতা’-র সেই দিনে শের শাহ তাঁর শাসনব্যবস্থায় প্রজাকল্যাণের আদর্শ যোগ করে ইউরোপ-এর ইতিহাসের অষ্টাদশ শতকের জ্ঞানদীপ্ত স্বৈরাচারী শাসকদের অগ্রদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

(৬) জ্ঞান দীপ্ত শাসকের বিচক্ষণতা

ডঃ ঈশ্বরী প্রসাদ (Dr. Ishwari Prasad) বলেন যে, “শের শাহের শাসনব্যবস্থা স্বৈরতান্ত্রিক হলেও বলিষ্ঠ ও জ্ঞানদীপ্ত ছিল।…… ষোড়শ শতকের একজন শাসক যখন মধ্যযুগীয় সীমাবদ্ধতা দ্বারা আচ্ছন্ন থাকতেন, তখন শের শাহ তাঁর কাজের মধ্যে ইউরোপের অষ্টাদশ শতকের জ্ঞানদীপ্ত শাসকের বিচক্ষণতা, দৃঢ়তা ও ত্যাগের প্রকাশ ঘটান।”

(৭) জনকল্যাণ

তাঁর শাসনব্যবস্থার মূল নীতি ছিল জনকল্যাণ। তিনি নিজেকে জনসাধারণের ‘অভিভাবক’ ও ‘রক্ষক’ বলে মনে করতেন। ঐতিহাসিক ক্রুক (Crooke) বলেন যে, ভারতে মুসলিম শাসকদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম জনগণের শুভেচ্ছার ওপর ভিত্তি করে সাম্রাজ্য স্থাপনে উদ্যোগী হয়েছিলেন।”

(৮) ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থা

তাঁর শাসন ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ধর্মনিরপেক্ষতা। ভারতীয় জনজীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞ শের শাহ উপলব্ধি করেন যে, হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ও সমন্বয় ছাড়া গত্যন্তর নেই। তাই ব্যক্তিগত জীবনে গোঁড়া সুন্নি মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও ধর্মীয় গোঁড়ামি দ্বারা তিনি প্রভাবিত হন নি।

(৯) উলেমাদের প্রভাব খর্ব

শাসন ব্যবস্থায় উলেমাদের কোনও প্রভাব ছিল না। ‘জিজিয়া কর’ প্রত্যাহৃত না হলেও হিন্দুদের ওপর কোনও বৈষম্যমূলক কর আরোপিত হয় নি। হিন্দু ব্ৰহ্মজিৎ গৌড় ছিলেন তাঁর প্রধান সেনাপতি।

(১০) ধর্ম সহিষ্ণু

ডঃ আর.পি. ত্রিপাঠী-র মতে তিনি ‘ধর্মসহিষ্ণু’ নীতি গ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক কীন বলেন যে, হিন্দু-মুসলিম শাসন পদ্ধতি ও হিন্দু-মুসলিম প্রজাবর্গের মধ্যে সমন্বয় সাধন করাই ছিল শের শাহের শাসন ব্যবস্থার মূলনীতি।

শের শাহ সংস্কারক না উদ্ভাবক

  • (১) শের শাহের শাসনব্যবস্থার মৌলিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ডঃ ত্রিপাঠী, ডঃ রাম শরণশর্মা প্রমুখ ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে, শের শাহের শাসন ব্যবস্থায় মৌলিকত্বের অভাব ছিল—তিনি ছিলেন একজন সংস্কারক মাত্র, উদ্ভাবক নয়।
  • (২) তিনি নতুন কিছু প্রবর্তন করেন নি—প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ভারতে প্রচলিত প্রথাগুলিকে সংস্কার করে তিনি নবরূপ ও নতুন প্রাণশক্তি দেন মাত্র।
  • (৩) জমি জরিপ, জায়গির প্রথা চালু, ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থা, সেনাদলে ‘দাগ’ ও ‘হুলিয়া’ প্রথা এবং নগদ বেতন দানের রীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রজাদের সাহায্য দান, ঘোড়ার পিঠে ডাক ব্যবস্থা—সবই তাঁর পূর্ববর্তী আমলে প্রচলিত ছিল।
  • (৪) সুলতানি যুগের প্রশাসনিক কাঠামো এবং বিভিন্ন পদাধিকারীর নাম—সবই তাঁর আমলে বজায় ছিল। সংস্কারের মাধ্যমে এগুলিকে তিনি নবরূপ দিয়ে নতুন শক্তিতে বলীয়ান করেছিলেন মাত্র। তাই তাঁকে উদ্ভাবক না বলে সংস্কারক বলাই যুক্তিসম্মত।

শেরশাহের কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা

আফগান সম্রাট শেরশাহের কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা ছিল নিম্নরূপ –

(১) সম্রাট

শাসন ব্যবস্থার শীর্ষে ছিলেন স্বয়ং সম্রাট। তিনি ছিলেন সকল ক্ষমতা ও শক্তির উৎস। তাঁর শাসন ব্যবস্থায় হিন্দু-মুসলিম সকল প্রজার ওপর সমদৃষ্টি রাখা হত। এখানে অভিজাত বা উলেমাদের কোনও প্রাধান্য ছিল না। সম্রাট ছিলেন প্রধান শাসক, প্রধান বিচারক, প্রধান আইন-প্রণেতা ও প্রধান সেনাপতি। তিনি দিবারাত্র কঠোর পরিশ্রম করতেন, শাসন ব্যবস্থার প্রতিটি বিষয় নিজে দেখাশোনা করতেন এবং সর্বশেষে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতেন।

(২) মন্ত্রী

শাসনকার্যে সম্রাটকে সাহায্য করার জন্য চারজন মন্ত্রী ছিলেন। এরা হলেন –

  • (ক) রাজস্ব বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ‘দেওয়ানে-উজীরাৎ’।
  • (খ) সামরিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ‘দেওয়ানে আর্জ’।
  • (গ) পররাষ্ট্র বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ‘দেওয়ানে-রিসালাৎ।
  • (ঘ) দলিল দস্তাবেজ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ‘দেওয়ানে ইন্‌সা’।

(৩) মন্ত্রী অনুরূপ কর্মচারী

‘দেওয়ানে কাজি’ বা প্রধান বিচারপতি ও দেওয়ানে-বারিদ’ বা গুপ্তচর বিভাগের প্রধানের মর্যাদা ছিল মন্ত্রীর অনুরূপ।

শেরশাহের প্রাদেশিক শাসন

আফগান সম্রাট শের শাহের শাসন ব্যবস্থায় প্রদেশ-এর অস্তিত্ব নিয়ে মতপার্থক্য আছে। ডঃ কানুনগো-র মতে তাঁর শাসন ব্যবস্থায় প্রদেশের অস্তিত্ব ছিল না। আকবরের আমলেই প্রদেশবিভাগ গঠিত হয়।

(ক) সরকার

  • (১) শের শাহের সময় ‘সরকার’-ই ছিল সর্বোচ্চ প্রাদেশিক বিভাগ, যা ছিল মহকুমার সমতুল্য। শাসনকার্যের সুবিধার জন্য তিনি সমগ্র সাম্রাজ্যকে ৪৭টি ‘সরকার’ এবং প্রত্যেকটি ‘সরকার’কে আবার কয়েকটি ‘পরগণা’-য় বিভক্ত করেন।
  • (২) প্রত্যেক ‘সরকারে’ একজন করে ‘শিকদার-ই-শিকদারান’ ও ‘মুনসেফ-ই-মুনসেফান’ থাকতেন। ‘শিকদার-ই-শিকদারান’ এর দায়িত্ব ছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও বিদ্রোহ দমন করা এবং ‘মুনসেফ-ই মুনসেফান’ দেওয়ানি ও জমি-জরিপ সংক্রান্ত মামলার ভারপ্রাপ্ত ছিলেন। সরকারের অধীনস্থ পরগণাগুলির শাসনকার্য পরিদর্শনের ভার তাঁদের ওপর ন্যস্ত ছিল।

(খ) পরগণা

  • (১) প্রত্যেক পরগণায় একজন করে শিকদার, মুন্সেফ, আমিন, কানুনগো ও কারকুন প্রভৃতি নানা পর্যায়ের কর্মচারী ছিলেন। ‘শিকদার’ ছিলেন পরগণার সামরিক অধিকর্তা। তাঁর কাজ ছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং রাজস্ব আদায়ে সাহায্য করা।
  • (২)‘মুন্সেফ’ রাজস্ব আদায়, বিচার ও জমি-সংক্রান্ত বিরোধের মীমাংসা করতেন। ‘আমিন’ জমি জরিপ করতেন। ‘কানুনগো জমি জরিপ ও রাজস্বের হিসেব রাখতেন। ‘কারকুন’ ছিলেন করণিক।
  • (৩) কর্মচারীদের মধ্যে দুর্নীতি দূর করার উদ্দেশ্যে দুই-তিন বৎসর অন্তর তাদের নিয়মিত একস্থান থেকে অন্যত্র বদলি করা হত।
  • (৪) তকগুলি গ্রাম নিয়ে তৈরি হত পরগণা। গ্রামগুলি ছিল স্বশাসিত এবং শাসনব্যবস্থার সর্বনিম্ন স্তর। গ্রাম শাসনে খুৎ, চৌধুরী, মুকাদ্দম, পাটোয়ারী প্রভৃতি কর্মচারীদের বিশেষ ভূমিকা ছিল। গ্রামের শাসনভার ছিল গ্রাম পঞ্চায়েতের ওপর।

শেরশাহের রাজস্ব নীতি

সরকারের আয়বৃদ্ধি ও জনসাধারণের স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্য তিনি এক সুষ্ঠু রাজস্ব ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। তাঁর রাজস্ব নীতির বিভিন্ন দিক গুলি হল –

(১) জমি জরিপ

আলাউদ্দিন খলজি ও মহম্মদ-বিন-তুঘলক-এর মতো তিনি সাম্রাজ্যের সকল জমি জরিপ করে জমির সীমা নির্ধারণ করেন।

(২) রাজস্ব নির্ধারণ

জমির উৎপাদিকা শক্তি অনুসারে জমিকে ভালো, মাঝারি ও মন্দ—তিনভাগে ভাগ করে জমির রাজস্বের পরিমাণ স্থির করে দেন। উৎপন্ন শস্যের এক তৃতীয়াংশ (মতান্তরে এক-চতুর্থাংশ) রাজস্ব হিসেবে দিতে হত এবং তা শস্য বা নগদ অর্থে দেওয়া যেত। ‘চৌধুরী’, ‘মুকাদ্দম’, ‘আমিন’ প্রভৃতি কর্মচারীরা কর আদায় করতেন।

(৩) পাট্টা ও কবুলিয়ত

প্রজার দেয় খাজনা ও তার স্বত্ব নিরূপণ করে সরকার থেকে প্রজাকে ‘পাট্টা’ নামে এক প্রকার দলিল দেওয়া হত। প্রজারাও নিজেদের স্বত্ব ও রাজস্ব আদায়ের শর্ত স্বীকার বা ‘কবুল’ করে সরকারকে এক দলিল স্বাক্ষর করে দিত। তার নাম ‘কবুলিয়ত।

(৪) কর্মচারীদের প্রতি নির্দেশ

কর্মচারীদের প্রতি তাঁর নির্দেশ ছিল যে, রাজস্ব নির্ধারণের সময় যেন তারা উদার, কিন্তু রাজস্ব আদায়ের সময় যেন তারা কঠোর হন। কৃষকদের ওপর অত্যাচার করলে বা নির্ধারিত হারের বেশি কর আদায় করলে কর্মচারীদের শাস্তি পেতে হত।

(৫) জরিবানা ও মহসীলানা

ভূমি-রাজস্ব ব্যতীত প্রত্যেক উৎপাদককে আরও দু’টি কর দিতে হত—জমি জরিপকারীর প্রাপ্য অর্থ হিসেবে ‘জরিবানা’ এবং কর সংগ্রাহকের প্রাপ্য বাবদ ‘মহসীলানা’। ভূমি-রাজস্বের ক্ষেত্রে সরকারি দাবির ওপর ভিত্তি করে এই কর দু’টি ধার্য করা হত।

(৬) দুর্ভিক্ষ কালে খাজনা মকুব

দুর্ভিক্ষ বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় অনুদানের জন্য শের শাহ বিঘা প্রতি আড়াই সের শস্য আদায় করতেন। কৃষকদের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে তিনি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে খাজনা মকুব করতেন—এমনকী ঋণও দিতেন। পরবর্তীকালের ভূমি-রাজস্ব নীতি বহুলাংশে শের শাহ প্রদর্শিত পথেই গড়ে ওঠে।

শেরশাহের শুল্ক ও মুদ্রা নীতি

  • (১) ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতির জন্য তিনি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অংশে প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের অপ্রয়োজনীয় ও অবৈধ শুল্কগুলি তুলে দেন।
  • (২) তাঁর মুদ্রা ব্যবস্থার সংস্কার উচ্চ প্রশংসার দাবি রাখে। খুচরোর অভাব, মুদ্রায় খাদের আধিক্য, জাল ও পূর্ববর্তী রাজন্যদের মুদ্রার অস্তিত্ব তাঁকে মুদ্রা ব্যবস্থার সংস্কারে বাধ্য করে।
  • (৩) তিনি ‘রূপি’ নামে রৌপ্য মুদ্রা ও ‘দাম’ নামে তাম্র মুদ্রা প্রবর্তন করেন। তিনি স্বর্ণমুদ্রাও প্রবর্তন করেছিলেন।

শেরশাহের বিচার ব্যবস্থা

  • (১) তিনি বিচার বিভাগেরও সংস্কার সাধন করেন। তাঁর সুশাসনে দেশে শান্তি বিরাজ করত। তাঁর বিচার ব্যবস্থা ছিল কঠোর ও পক্ষপাতহীন।
  • (২) অপরাধী বলে প্রমাণিত হলে ধনী নির্ধন, পদস্থ কর্মচারী—এমনকী তাঁর নিকট আত্মীয়রাও দণ্ড থেকে অব্যাহতি পেতেন না।
  • (৩) তিনি সারা দেশে একই ধরনের আইন ও দণ্ডবিধি প্রবর্তন করেন। প্রত্যেক পরগণায় দেওয়ানি বিচারের ভার ছিল আমিন-এর ওপর। ফৌজদারি বিচার পরিচালনা করত কাজি ও মীর আদল।
  • (৪) কয়েকটি পরগণার ওপর একজন করে ‘মুনসেফ-ই-মুনসেফান’ ছিল এবং তার ওপর দেওয়ানি বিচারের দায়িত্ব ছিল। ফৌজদারি বিচারের ভারপ্রাপ্ত ছিলেন কাজি-ই-কাজাতান’ বা প্রধান কাজি।
  • (৫) সম্রাট ছিলেন প্রধান বিচারক এবং প্রতি বুধবার তিনি নিজে সর্বোচ্চ আপিলের বিচার করতেন। তাঁর দণ্ডবিধি ছিল খুবই কঠোর — অপরাধীকে বেত্রাঘাত, অঙ্গচ্ছেদ ও প্রাণদণ্ড দেওয়া হত। চুরি-ডাকাতির অভিযোগে প্রাণদণ্ডও হত।

শেরশাহের পুলিশি ব্যবস্থা

  • (১) শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এই সময় পৃথক কোনও পুলিশি সংগঠন ছিল না। শিকদার ই-শিকদারান’ ও ‘শিকদার’দের ওপর নিজ নিজ এলাকায় শাস্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব অর্পিত ছিল।
  • (২) স্থানীয় শান্তি বজায় রাখা ও স্থানীয় অপরাধীদের দমনের জন্য তিনি স্থানীয় দায়িত্বের নীতি প্রবর্তন করেন। এই ব্যাপারে তিনি কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করতেন না। তাঁর আমলে দেশে দস্যু-তস্করের ভীতি দূর হয়।
  • (৩) তাঁর সমসাময়িক ঐতিহাসিকরা তাঁর পুলিশি ব্যবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। সমসাময়িক ঐতিহাসিক খাজা নিজামউদ্দিন আহম্মদ বলেন যে, “রাস্তাঘাটে কেউ যদি সোনার থলি নিয়ে রাত্রিতে ঘুমিয়েও পড়ত তাহলেও চুরি যাওয়ার কোনও ভয় ছিল না।”

শেরশাহের সেনাবাহিনী

  • (১) তিনি সেনাবাহিনীতে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সংস্কার প্রবর্তন করে সেনাদলকে সুদক্ষ করে গড়ে তোলেন। পদাতিক, অশ্বারোহী ও গোলন্দাজ বাহিনী নিয়ে তাঁর সেনাবাহিনী গঠিত ছিল।
  • (২) যুদ্ধকালে সেনা সরবরাহের জন্য জায়গিরদার বা সামস্ত প্রভুদের ওপর নির্ভর না করে আলাউদ্দিন খলজির মতো তিনি একটি স্থায়ী সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন এবং সরাসরি সেনা নিয়োগের ব্যবস্থা করেন।
  • (৩) আলাউদ্দিনের মতো তিনি সেনাবাহিনীতে ‘দাগ’ ও ‘হুলিয়া’ এবং অশ্ব-চিহ্নিতকরণ-এর ব্যবস্থা করেন। সেনাবাহিনীতে জায়গির দানের পরিবর্তে তিনি বেতন দানের ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন এবং অন্যের মাধ্যমে বেতন না দিয়ে তিনি নিজে বেতন দিতেন।
  • (৪) সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে ৪৭টি স্থানে দুর্গ নির্মাণ করে সেখানে তিনি সেনাবাহিনী মোতায়েন করেন। দিল্লি ও রোটাসের দুর্গ বা সেনানিবাস ছিল সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। সেনানিবাসে অবস্থানকারী সেনাদলকে বলা হত ‘ফৌজ’ এবং তার প্রধানকে বলা হত ‘ফৌজদার’।
  • (৫) রাজধানীতে সর্বদা ১৫০০০০ অশ্বারোহী, ২৫০০০ পদাতিক, ৫০০০ হস্তি এবং গোলন্দাজ বাহিনী মোতায়েন থাকত। সামরিক কর্মচারীদের তিনি দু’বছর অন্তর বদলির ব্যবস্থা করেন।
  • (৬) সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা ছিল খুবই কঠোর। যুদ্ধের সময় তারা যাতে কৃষকদের কোনও ক্ষতি না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হত।

শেরশাহের সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা

  • (১) সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে যোগাযোগের জন্য শের শাহ বহু রাস্তা নির্মাণ করেন। এগুলির মধ্যে পূর্ববঙ্গের সোনারগাঁও থেকে সিন্ধু উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত ১৪০০ মাইল দীর্ঘ রাস্তাটি বর্তমানে ‘গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড’ নামে পরিচিত।
  • (২) তিনি আগ্রা থেকে বুরহানপুর, আগ্রা থেকে যোধপুর এবং লাহোর থেকে মুলতান পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করেন। কেবলমাত্র সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনই নয়—এই রাজপথগুলি বাণিজ্যিক সম্প্রসারণের পক্ষে যথেষ্ট সহায়ক ছিল।

শেরশাহ নির্মিত সরাই খানা

  • (১) পথিকদের সুবিধার জন্য তিনি পথের ধারে বৃক্ষরোপণ, কূপ খনন ও পান্থশালা বা সরাইখানা নির্মাণ করেন। শের শাহের সমকালীন ঐতিহাসিক আব্বাস খান শেরওয়ানী -র রচনা থেকে জানা যায় যে, তিনি ১৭০০টি সরাইখানা নির্মাণ করেন এবং সেখানে খাদ্য ও বিশ্রামের ব্যবস্থা ছিল প্রশংসনীয়।
  • (২) এখানে হিন্দু ও মুসলিমদের জন্য থাকা-খাওয়ার স্বতন্ত্র বন্দোবস্ত ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে এই সরাইখানাগুলির ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বণিকরা এই সব সরাইখানায় মালপত্র বিনিময় করত এবং এগুলিকে কেন্দ্র করে বাজার ও শহর গড়ে উঠেছিল।
  • (৩) সরাইখানাগুলি আবার সংবাদ আদান-প্রদানের কেন্দ্র ছিল। সরাইখানাগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য ‘দারোগা-ই সরাইখানা’ ও রক্ষীদল নিযুক্ত ছিল। সরাইখানার ব্যয়নির্বাহের জন্য জমি নির্দিষ্ট ছিল। ডঃ কানুনগো বলেন যে, সরাইখানাগুলি সাম্রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।

শেরশাহের ডাক ব্যবস্থা

  • (১) সাধারণে প্রচলিত ধারণা যে, সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে খবরা-খবর আদান-প্রদানের জন্য, তিনিই সর্বপ্রথম ঘোড়ার পিঠে ডাক চলাচলের ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন।
  • (২) এই ধারণা সঠিক নয়। প্রাচীন ভারতেও এই ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। তিনি হয়তো তাঁর মতো করে এই ব্যবস্থাকে সাজিয়েছিলেন।
  • (৩) সরাইখানাগুলি ডাক-চৌকি হিসেবে ব্যবহৃত হত এবং প্রতিটি সরাই-এ সর্বদা দু’টি ঘোড়া প্রস্তুত থাকত। ‘দারোগা-ই-চৌকি’ নামক উচ্চপদস্থ কর্মচারী এই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত ছিলেন।

শেরশাহের গুপ্তচর ব্যবস্থা

সাম্রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তিনি বহু গুপ্তচর নিযুক্ত করেন। তারা সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে নিযুক্ত ছিলএবং সম্রাটকে সকল বিষয়ে অবহিত করত। তাঁর প্রশাসনিক সাফল্যের মূলে ডাক ও গুপ্তচর ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

শেরশাহের দানশীলতা

  • (১) শের শাহ তাঁর দানশীলতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তিনি একটি দাতব্য বিভাগ গড়ে তোলেন। তিনি বেশ কিছু মসজিদ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন এবং ইমাম, মৌলবি, সাধু-সন্ত, শিক্ষার্থী, অন্ধ, বৃদ্ধ ও বিধবাদের জন্য সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থা করেন।
  • (২) বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণের জন্য তিনি বেশ কিছু লঙ্গরখানা খোলেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি প্রতি বছর ১৮ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ব্যয় করতেন।

শেরশাহের ধর্মনীতি

  • (১) ধর্মবিশ্বাসে তিনি গোঁড়া সুন্নি ছিলেন এবং নিষ্ঠার সঙ্গে সকল ধর্মীয় কর্তব্য পালন করতেন। তিনি ‘জিজিয়া বিলোপ করেন নি বা রাজনৈতিক প্রয়োজনে হিন্দুদের বিরুদ্ধে ‘জেহাদ’ ঘোষণা ও হিন্দু মন্দির ধ্বংস করতেও কসুর করেন নি।
  • (২) তবে এই কথা ঠিকই যে, তিনি উলেমাদের প্রভাব থেকে মুক্ত ছিলেন এবং ধর্মনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করে হিন্দু-মুসলিম সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির ওপর ভিত্তি করে শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে সচেষ্ট ছিলেন।
  • (৩) তিনি হিন্দু-বিদ্বেষী ছিলেন এমন কোনও প্রমাণ নেই। তাঁর আমলে বহু হিন্দু গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ রাজপদে নিযুক্ত হন। ব্রহ্মজিৎ গৌড় তাঁর প্রধান সেনাপতি ছিলেন। তাঁর মুদ্রায় দেবনাগরী হরফ -এ তাঁর নাম লেখা হত।
  • (৪) তিনি প্রজায় প্রজায় কোনও বিভেদ করতেন না। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে তিনি সমান চোখে দেখতেন। তাঁর উদার দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তিনি ভারতীয়দের জাতীয় সম্রাটের মর্যাদা লাভ করেছেন।
  • (৫) পরবর্তীকালে মোগল সম্রাট আকবর শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে বহুলাংশে শের শাহের নীতি অনুসরণ করেন।

শেরশাহের শাসনব্যবস্থার ত্রুটি

আফগান সম্রাট শের শাহের শাসনব্যবস্থা ত্রুটিমুক্ত ছিল না। যেমন –

  • (১) সকল প্রশাসনিক ক্ষমতা সম্রাটের হাতে কেন্দ্রীভূত ছিল—সকল ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনিই নিতেন। তাঁর মন্ত্রীরা ছিলেন আজ্ঞাবাহী কর্মীমাত্র। এই ধরনের ব্যক্তিনির্ভর শাসনব্যবস্থা দুর্বল হতে বাধ্য ছিল।
  • (২) প্রশাসনে আফগানরাই ছিল সর্বেসর্বা—সেখানে ভারতীয় বা অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বিশেষ স্থান ছিল না। তাঁর সাম্রাজ্য ছিল মূলত একটি আফগান সাম্রাজ্য।
  • (৩) পরধর্মমতসহিষ্ণু হওয়া সত্ত্বেও অ-মুসলমানদের ওপর থেকে তিনি জিজিয়া কর প্রত্যাহার করতে পারেন নি।
  • (৪) তিনি রাজস্ব বিভাগের কর্মীদের দুর্নীতি সম্পূর্ণ দূর করতে পারেন নি, এবং তা সম্ভবও ছিল না। জমিকে উত্তম, মধ্যম ও মন্দ—তিনভাগে ভাগ করে তিনি রাজস্ব নির্ধারণের যে পদ্ধতি স্থির করেন, তা সঠিক ছিল না।

উপসংহার :- বিভিন্ন ত্রুটি সত্ত্বেও বলতে হয যে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি এক সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। ঐতিহাসিক স্মিথ বলেন যে, “শের শাহ আর কিছুকাল জীবিত থাকলে ভারতের ইতিহাসে হয়তো মহান মোগলদের আবির্ভাব সম্ভব হত না।”

(FAQ) শের শাহের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. কাকে পরাজিত করে শেরশাহ দিল্লির সম্রাট হয়েছিলেন?

মোগল সম্রাট হুমায়ুন

২. শেরশাহ কত বছর রাজত্ব করেন?

১৫৪০-৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাঁচ বছর।

৩. সড়ক-ই-আজম কে নির্মাণ করেন?

সম্রাট শেরশাহ।

৪. সড়ক-ই-আজম এর বর্তমান নাম কি

গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড।

৫. শেরশাহের হিন্দু সেনাপতি কে ছিলেন?

ব্রহ্মজিৎ গৌড়।

Leave a Comment