ভারতে মোঙ্গল আক্রমণ

ভারতে মোঙ্গল আক্রমণ প্রসঙ্গে চেঙ্গিস খানের নেতৃত্ব, ভারতে প্রথম মোঙ্গল আক্রমণ, ইলতুৎমিসের নিরপেক্ষ নীতি, রাজিয়ার সময় মোঙ্গল আক্রমণ, মুলতান ও সিন্ধু জয়, বলবনের মোঙ্গল নীতি, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত রক্ষায় বলবনের বন্দোবস্ত, খলজি আমলে মোঙ্গল আক্রমণ, আলাউদ্দিন খলজির মোঙ্গল নীতি ও মহম্মদ বিন তুঘলকের মোঙ্গল নীতি সম্পর্কে জানবো।

ভারতে মোঙ্গল আক্রমণ

ঐতিহাসিক ঘটনাভারতে মোঙ্গল আক্রমণ
প্রথম আক্রমণ১২২১ খ্রিস্টাব্দ
নেতাচেঙ্গিজ খান
সুলতানইলতুৎমিস
ভারতে মোঙ্গল আক্রমণ

ভূমিকা :- মোঙ্গল নেতা কুবলাই খান সকল মোঙ্গল গোষ্ঠীকে তার অধীনে ঐক্যবদ্ধ করেন। তাঁর বংশধর জেমুগাই ছিলেন বিখ্যাত মোঙ্গল নেতা চেঙ্গিজের পিতা। জেমুগাই শক্তিশালী গোষ্ঠীপতি ছিলেন।

মোঙ্গল আক্রমনে চেঙ্গিজের নেতৃত্ব

জেমুগাইয়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র তেমুচিন বা চেঙ্গিজ খান ছিলেন মহাশক্তিধর সেনাপতি। তিনি মোঙ্গল জাতিকে তার অধীনে ঐক্যবদ্ধ করে দিগ্বিজয়ে বেরিয়ে পড়েন। তিনি চীন, পারস্য, ইরাক জয় করেন।

ভারতে প্রথম মোঙ্গল আক্রমণ

  • (১) ভারত-এর সীমান্তের অপর পারে তিনি খারাজম রাজ্য জয় করেন। খারাজমের শাহ জালালুদ্দিন মঙ্গবরনী চেঙ্গিজের আক্রমণে আফগানিস্তান হয়ে পাঞ্জাবে পালিয়ে আসেন। চেঙ্গিজ তাঁর পিছু নিয়ে পাঞ্জাবে ঢুকে পড়লে জালালুদ্দিন সিন্ধুতে আশ্রয় নেন।
  • (২) চেঙ্গিজের আক্রমণের ফলে ভারতে প্রথম মোঙ্গল আক্রমণের সূত্রপাত হয়। এই সময় দিল্লীর সিংহাসনে সুলতান ছিলেন ইলতুৎমিস। তিনি বুঝতে পারেন যে, দিগ্বিজয়ী চেঙ্গিজের বিরোধিতা করে জালালুদ্দিনকে সাহায্য করলে দিল্লী সুলতানি চেঙ্গিজের রোষে পড়বে।
  • (৩) “জাহান সুজ” অর্থাৎ ‘পৃথিবী দহনকারী’ চেঙ্গিজের রোষ উৎপাদন করে দিল্লী সুলতানির চারাগাছটিকে জ্বালিয়ে ফেলতে ইলতুৎমিস উচিত মনে করেন নি। মধ্য এশিয়ার রাজনেতিক প্রতিদ্বন্দ্বীতায় তিনি নিজেকে না জড়িয়ে নিরপেক্ষ থাকা উচিত বলে মনে করেন।

মোঙ্গলদের প্রতি ইলতুৎমিসের নিরপেক্ষ নীতি

  • (১) নিরপেক্ষতা নীতির দ্বারা ইলতুৎমিস খারাজম শাহ ও চেঙ্গিজের বিরোধে দিল্লী সুলতানিকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। জালালুদ্দিন অবশ্য ইলতুৎমিসের নিরপেক্ষ থাকাকে পছন্দ করেন নি। তিনি সুলতান ইলতুৎমিসের কাছে সাহায্য চেয়ে দিল্লীতে এক দূত পাঠান। ইলতুৎমিস এই দূতকে নিহত করেন।
  • (২) খারাজম শাহ যাতে দিল্লীর দিকে এগিয়ে আসতে না পারেন এজন্য তিনি সেনা সন্নিবেশ করেন। চেঙ্গিজও আপাতত দিল্লী সুলতানিকে আক্রমণ করা উচিত মনে করেন নি। কিছুদিন বাদে খারাজম শাহ ভারত থেকে পারস্যে পালিয়ে যান।
  • (৩) এরপর চেঙ্গিজও তার পিছু নিয়ে ভারত ছেড়ে চলে যান। চেঙ্গিজ দিল্লীর সুলতানি সাম্রাজ্যকে আক্রমণ না করলেও তার ভারতে আগমন দ্বারা ভারতে মোঙ্গল আক্রমণের সূচনা হয়। চেঙ্গিজের প্রদর্শিত পথ ধরে পরবর্তীকালে মোঙ্গল সেনারা দলে দলে ভারতে ঢুকে পড়ে।

রাজিয়ার সময় মোঙ্গল আক্রমণ

ইলতুৎমিসের পর রাজিয়ার শাসনকালে মোঙ্গল সেনা পাঞ্জাব সীমান্তে হানা দেয়। অবশ্য রাজিয়া মোঙ্গলদের বিষয়ে তার পিতার মতই নিরপেক্ষতা অথবা নির্লিপ্ততা নীতি নেন।

বাহাদুর তৈর-এর আক্রমণ

সুলতান রাজিয়ার মৃত্যুর পর ১২৪১ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গল সেনাপতি বাহাদুর তৈর লাহোর আক্রমণ করে ধ্বংস করেন। ১২৪৫ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গল আক্রমণকারীরা সিন্ধু ও মুলতান বিধ্বস্ত করে একাংশ দখল করে।

মোঙ্গলদের প্রতি তোষণ নীতি

রাজিয়ার পরবর্তী সুলতানরা মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য নির্লিপ্ততার পরিবর্তে তোষণ নীতি নেন। তারা এতই দুর্বল ছিলেন যে মোঙ্গলদের বিরুদ্ধে সামরিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষমতা তাদের ছিল না।

মোঙ্গলদের মুলতান ও সিন্ধু জয়

১২৪৭ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গল শালি বাহাদুর আক্রমণ করলে তাকে এক লক্ষ দিনার দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। লাহোরের শাসনকর্তা তাকে প্রচুর অর্থ দিয়ে বশীভূত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেন। মোঙ্গলরা মূলতান, সিন্ধু ও পাঞ্জাবের একাংশ অধিকার করে নেয়।

বলবনের মোঙ্গল নীতি

গিয়াসউদ্দিন বলবন সিংহাসনে বসার পর মোঙ্গল নীতির আমূল পরিবর্তন হয়। বলবন তাঁর বাস্তব অভিজ্ঞতার দ্বারা বুঝতে পারেন যে,

  • (১) মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত না করলে ভারতে তুর্কী শাসনের পতন হবে।
  • (২) মোঙ্গল শক্তিকে তোষণ নীতির দ্বারা রোধ করা যাবে না। উপযুক্ত প্রতিরোধ না গড়লে সুলতানির পতন ঘটবে। সুতরাং বলবন মোঙ্গল আক্রমণকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে মোকাবিলার ব্যবস্থা করেন।

শের খাঁর ভূমিকা

  • (১) বলবনের শাসনকালে শের খাঁ সাঙ্কার নামে এক সাহসী সেনাপতি উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব পান। শের খাঁ ভাতিন্ডা, দীপালপুর ও লাহোর নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন। তিনি বেশ কয়েকটি যুদ্ধে মোঙ্গলদের পরাস্ত করেন।
  • (২) শের খার নীতি ছিল সম্মুখ যুদ্ধে মোঙ্গল সেনাদলকে নিহত করে তাদের আক্রমণ হঠিয়ে দেওয়া। তিনি আশা করতেন যে প্রচুর লোকক্ষয় হলে মোঙ্গলরা পুনরায় আক্রমণ করতে সাহসী হবে না।

উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত রক্ষায় বলবনের বন্দোবস্ত

১২৭০ খ্রিস্টাব্দে শের খাঁর মৃত্যু হলে বলবন উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত রক্ষার জন্য সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা নেন। যেমন – 

  • (১) তিনি উত্তর-পশ্চিম সীমান্তকে দুভাগ করে মূলতান, সিন্ধু ও উচের (uch) দায়িত্ব তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র যুবরাজ মহম্মদের হাতে দেন।
  • (২) বাকি অংশ অর্থাৎ সুনাম, সামান্না ও দীপালপুর বলবনের দ্বিতীয় পুত্র বুঘরা খার দায়িত্বে রাখা হয়।
  • (৩) পরস্পর যাতে সঙ্কটের সময় পরস্পরকে সাহায্য করে তার ব্যবস্থা করা হয়।
  • (৪) উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে মোঙ্গলদের আসার পথের ধারে দুর্গ শ্রেণী তৈরি করে তাতে অভিজ্ঞ আফগান সেনা মোতায়েন করা হয়।
  • (৫) এছাড়া ১৭-১৮ হাজার সেনা সীমান্তে যে কোনো বিপদের মোকাবিলার জন্য মজুত রাখা হয়।
  • (৬) প্রধান সেনাদল রাজধানীতে প্রস্তুত রাখা হয়। বলবন সামান্য ইঙ্গিত পেলেই এই সেনাদল নিয়ে সীমান্তে ছুটে যেতে প্রস্তুত থাকেন।

মোঙ্গল আক্রমণ সম্পর্কে বরণীর মত

জিয়াউদ্দিন বরণীর মতে, বলবন মোঙ্গল আক্রমণের সম্ভাবনাকে এত বেশী গুরুত্ব দিতেন যে, তিনি রাজধানী থেকে দূরে যাওয়া পছন্দ করতেন না। তার আশঙ্কা ছিল যে তাঁর অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে মোঙ্গোলরা রাজধানী আক্রমণ করতে পারে।

বলবনের মোঙ্গলদের নীতির ফল

  • (১) বলবনের এই ব্যবস্থা বেশ ফলপ্রসূ হয়েছিল। ১২৭৯ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গলরা ভারত আক্রমণের চেষ্টা করলে মহম্মদ ও বুঘরা খাঁর মিলিত বাহিনী তাদের হঠিয়ে দেয়। ১২৮৫ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গল সেনাপতি তৈমুর খাঁ লাহোর ও দীপালপুর আক্রমণ করে। এই যুদ্ধে যুবরাজ মহম্মদ নিহত হন।
  • (২) মোঙ্গল সেনা মুলতান ও উচ লুঠ করে। যুবরাজ মহম্মদের পুত্র কাই খসরু শেষ পর্যন্ত মোঙ্গল আক্রমণকারীদের হঠিয়ে দেন। মোঙ্গল বাহিনীর এত ক্ষয়ক্ষতি হয় যে তারা ভারত সীমান্ত পার হয়ে চলে যায়।

বলবনের পরবর্তীকালে মোঙ্গল আক্রমণ

বলবনের পরে কাইকোবাদের আমলে দুইবার মোঙ্গল আক্রমণ হলেও বলবনের আমলের বন্দোবস্ত বহাল থাকায় এই আক্রমণগুলি সফল হতে পারে নি।

খলজি আমলে মোঙ্গোল আক্রমণ

খলজী সুলতানরা দিল্লীর সিংহাসনে বসার পর মোঙ্গোল আক্রমণ প্রবল আকার ধরে। এই সময় মোঙ্গলরা সীমান্তে আক্রমণ ও রাজ্য অধিকারের রণকৌশল ছেড়ে সোজাসুজি রাজধানী দিল্লী অধিকার করার লক্ষ্য নেয়।

জালাল উদ্দিন খলজির সময় মোঙ্গল আক্রমণ

  • (১) জালালউদ্দিন খলজির আমলে ১২৯২ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গল নেতা হলাগুর পৌত্র আবদুল্লা খান ১ লক্ষ মোঙ্গোল সেনাসহ দিল্লীর দিকে ছুটে আসেন। জালালুদ্দিন মোঙ্গল বাহিনীকে পরাস্ত করেন এবং উলুগু খান সহ বহু মোঙ্গলকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করে দিল্লীর কাছে বসবাসের আদেশ দেন। এদের নাম হয় “নব মুসলমান।”
  • (২) তিনি মোঙ্গলদের সঙ্গে স্থায়ী মিত্রতা গঠনের জন্য তাঁর এক কন্যার সঙ্গে উলুগু খানের বিবাহ দেন। উলুগু খানের দেহে চেঙ্গিসের রক্ত ছিল। নব মুসলমানেরা দিল্লীর যে অঞ্চলে বসবাস করে তার নাম হয় মোগলপুরা। যদিও খলজী সর্দাররা মোঙ্গলদের প্রতি জালালুদ্দিনের তোষণ নীতির নিন্দা করেন, তার নীতির ফলে জালালুদ্দিন নব মুসলমানদের আনুগত্য পান।

আলাউদ্দিন খলজির মোঙ্গল নীতি

  • (১) আলাউদ্দিন সুলতানি সিংহাসনে বসার পর তিনি রাজ্য বিস্তারের দিকে বেশী মনযোগ দিলে মোঙ্গলরা মনে করে যে, সীমান্তে সুলতানি শক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। মোঙ্গল নেতা দেবা খান এই সুযোগে আফগানিস্থান দখল করে ভারতে অভিযান চালাতে থাকেন।
  • (২) দেবা খান সর্বমোট ছয়টি অভিযান ভারতে পাঠান। সুতরাং বন্যার মত মোঙ্গল বাহিনী বারে বারে পাঞ্জাব, মূলতান হয়ে ভারতের মাটিতে আছড়ে পড়ে। আলাউদ্দিনের সুযোগ্য সেনাপতি জাফর খান প্রথম দিকে মোঙ্গোলদের শোচনীয়ভাবে পরাস্ত করেন।
  • (৩) ১২৯৬ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গল সেনাপতি কাদার খান লাহোর অধিকার করে পাঞ্জাবে ঢুকে পড়েন। জাফর খান ও উলুগু খান তাকে পরাস্ত করেন। ১২৯৮ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গল সেনাপতি সালদি সিন্ধুতে ঢুকে পড়েন। জাফর খাঁ সম্মুখ যুদ্ধে সালদিকে বন্দী করেন। এরপর মোঙ্গলদের মনে জাফর খাঁর নামে ভীতি দেখা দেয়।
  • (৪) ১২৯৯ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গল কতলু খাজা দিল্লী আক্রমণ করেন। জাফর খাঁর বাধায় এই আক্রমণ ব্যর্থ হয়। কিন্তু জাফর খাঁ যুদ্ধে প্রাণ দেন। আলাউদ্দিনের বাহিনী দক্ষিণে অভিযানে ব্যাপৃত হলে মোঙ্গল সেনাপতি আমীর তার্ঘি ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় দিল্লী আক্রমণ করেন।
  • (৫) এই সময় মোঙ্গল আক্রমণকারীরা তাদের রণকৌশল বদল করে। সীমান্তের যুদ্ধে শক্তি ক্ষয় না করে তারা সরাসরি রাজধানীর উপর আক্রমণ দ্বারা খলজি শাসনকে উচ্ছেদের চেষ্টা করে। আমীর তার্ঘি ৪১ দিন দিল্লী অবরোধ করেন।
  • (৬) আলাউদ্দিন প্রাদেশিক সেনাপতিদের দিল্লী আসার নির্দেশ দিলে আমীর তার্ঘি আশঙ্কা করেন যে আলাউদ্দিনের প্রাদেশিক সেনাদল তাঁর বাহিনীকে পিছন থেকে ঘিরে ফেলবে। তিনি দ্রুত অবরোধ তুলে আফগানিস্থানে পিছু হঠে যান।
  • (৭) এরপর আলাউদ্দিন বাধ্য হয়ে বলবনের মতই সীমান্ত রক্ষার জন্য দুর্গ নির্মাণ, সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেন। ১৩০৫ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গল সেনাপতি খাজা তাশ সীমান্তের সুলতানি দুর্গগুলির বাধা এড়িয়ে দিল্লী নগরী আক্রমণ করে, সুলতানী সাম্রাজ্যের হৃদপিণ্ড গঙ্গা-যমুনা দোয়াবে ঢুকে ব্যাপক লুঠতরাজ ও হত্যা চালান।
  • (৮) আলাউদ্দিনের সেনাপতি মালিক কাফুর মোঙ্গল সেনাদের ঘিরে ফেলেন। বহু মোঙ্গোল সেনা এই যুদ্ধে নিহত হয়। খাজা তাশকে হত্যা করা হয়, বাকী মোঙ্গল সেনা পাঞ্জাবের ভিতর দিয়ে পালাবার সময় আলাউদ্দিনের সেনাপতি গাজী মালিক তাদের ধ্বংস করেন। এই অভিযান ব্যর্থ হলে ভারতে মোঙ্গল অভিযানের গতি ক্রমে মন্দীভূত হয়।
  • (৯) আলাউদ্দিন সীমান্ত রক্ষার জন্য বিশেষ বন্দোবস্ত নেন। দিল্লী থেকে গোটা উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত পর্যন্ত তিনি আত্মরক্ষার জন্য ব্যুহ গঠন করেন। স্থানে স্থানে সেনাদল রক্ষা, সীমান্ত দুর্গগুলির সুরক্ষা, সেনা চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ প্রভৃতি ব্যবস্থা তিনি নেন।
  • (১০) মোঙ্গল আক্রমণের সম্ভাবনা তিনি যাতে জানতে পারেন তার জন্য গুপ্তচর নিয়োগ করা হয়। দিল্লী দুর্গের সংস্কার করে দুর্গটিকে সুরক্ষিত করা হয়।

মহম্মদ বিন তুঘলকের মোঙ্গল নীতি

  • (১) সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলক উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত রক্ষার জন্য আলাউদ্দিনের মতোই সতর্কতা দেখান। তার রাজত্বের গোড়ার দিকে মোঙ্গল নেতা তরমাশিরিন সিন্ধু আক্রমণ করেন। ইসামীর মতে মহম্মদ এই আক্রমণ প্রতিহত করেন।
  • (২) ফিরিস্তার মতে মহম্মদ অর্থ দ্বারা তরমাশিরিনকে নিরস্ত করেন। মহম্মদের প্রভাবে তরমাশিরিন ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন। মহম্মদ লাহোর ও পেশোয়ার অঞ্চল মোঙ্গলদের হাত থেকে মুক্ত করেন।

উপসংহার :- দিল্লী সুলতানির সূচনা কাল থেকেই মোঙ্গলরা বার বার ভারত আক্রমণ করে। দিল্লির সুলতানরা কঠোর নীতি গ্ৰহণ করে মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করেন।

(FAQ) ভারতে মোঙ্গল আক্রমণ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. দিল্লির কোন সুলতানের আমলে প্রথম মোঙ্গল আক্রমণ ঘটে?

ইলতুৎমিস।

২. ভারত আক্রমণকারী প্রথম মোঙ্গল নেতা কে ছিলেন?

চেঙ্গিজ খান।

৩. কার আমলে মোঙ্গলরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নবমুসলমান নামে পরিচিত হয়?

জালালউদ্দিন ফিরোজ খলজি।

৪. নব মুসলমান মোঙ্গলদের হত্যা করেন কে?

আলাউদ্দিন খলজি।

Leave a Comment