লীলা মজুমদার

শিশু সাহিত্যিক লীলা মজুমদার প্রসঙ্গে লীলা মজুমদারের জন্ম, লীলা মজুমদারের পিতামাতা, লীলা মজুমদারের পারিবারিক পরিচয়, লীলা মজুমদারের ছেলেবেলা, লীলা মজুমদারের শিক্ষা জীবন, লীলা মজুমদারের দাম্পত্য জীবন, লীলা মজুমদারের কর্মজীবন, সাহিত্য জগতে লীলা মজুমদারের আত্মপ্রকাশ, সাহিত্য জগতে লীলা মজুমদারের প্রতিষ্ঠা, লীলা মজুমদারের সাহিত্যকর্ম, লীলা মজুমদারের পত্রিকা সম্পাদনা, লীলা মজুমদারের মৃত্যু, লীলা মজুমদারের পুরস্কার অর্জন ও সম্মাননা।

ভারতীয় বাঙালি লেখিকা লীলা মজুমদার প্রসঙ্গে লীলা মজুমদারের স্থায়ী নিবাস, বর্তমান নিবাস, লীলা মজুমদারের জন্ম, লীলা মজুমদারের ছেলেবেলা, লীলা মজুমদারের শিক্ষা, লীলা মজুমদারের কর্মজীবন, লীলা মজুমদারের রচনাবলী, লীলা মজুমদারের পর্টী সম্মাননা ও বিশিষ্ট লেখিকা লীলা মজুমদারের মৃত্যু সম্পর্কে জানব।

লেখিকা লীলা মজুমদার

ঐতিহাসিক চরিত্রলীলা মজুমদার
জন্ম২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯০৮ খ্রি
জন্মস্থানকলকাতা, ব্রিটিশ ভারত
পিতাপ্রমদারঞ্জন রায়
মাতাসুরমা দেবী
পেশালেখিকা
সাহিত্য জগতে সময়কাল১৯২২-১৯৯৪ খ্রি
দাম্পত্যসঙ্গীডা. সুধীর কুমার মজুমদার
মৃত্যু৫ এপ্রিল ২০০৭ খ্রি
মৃত্যুকালে বয়স৯৯ বছর
লীলা মজুমদার

ভূমিকা :- আমাদের দেশে ‘শতায়ু হও’ বলে আশীর্বাদ করা হয়ে থাকে। বাঙ্গালী লেখক-লেখিকাদের মধ্যে মাত্র দুজন এই একশ বছরের আয়ু স্পর্শ করেছেন বা স্পর্শ করার কাছাকাছি জায়গায় পৌঁছেছিলেন। তাঁরা হলেন নীরদ চন্দ্র চৌধুরী এবং লীলা মজুমদার। তবে শত বর্ষের কাছাকাছি আয়ুতে পৌঁছালে অনেক ক্ষেত্রেই সুখের চেয়ে দুঃখ বেদনাই বেশী থাকে। নীরদ চন্দ্র চৌধুরী প্রায় পুরো সময়টাকেই লেখা পড়ার কাজে লাগিয়েছিলেন।  লীলা মজুমদার শেষের প্রায় এক দশক বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। কিন্তু লীলা মজুমদার নিজের কর্মজীবনে এমন কিছু কালজয়ী সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন যা তাকে বাংলা সাহিত্যে অমর করে রেখেছে। বিশেষ করে শিশু সাহিত্যে লীলা মজুমদার একটি অপ্রতিদ্বন্দী নাম।

লীলা মজুমদারের জন্ম

১৯০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি   লীলা মজুমদার পশ্চিমবঙ্গ-এর কলকাতা জেলার বিখ্যাত রায় পরিবারের গড়পাড় রোডের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।

লীলা মজুমদারের পিতামাতা

বিখ্যাত রায় পরিবারের প্রমদারঞ্জন রায় ও সুরমাদেবীর সন্তান লীলা মজুমদার।

লীলা মজুমদারের পারিবারিক পরিচয়

তিনি কলকাতার রায় পরিবারের প্রমদারঞ্জন রায় ও সুরমাদেবীর সন্তান। তাঁর বিবাহের পূর্বে নাম ছিল লীলা রায়। তাঁর জন্ম রায় পরিবারের গড়পাড় রোডের বাড়িতে। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী (যাঁর পৈতৃক নাম ছিল কামদারঞ্জন রায়) ছিলেন প্রমদারঞ্জনের ভাই এবং লীলা মজুমদারের কাকা। সেইসূত্রে লীলা মজুমদার হলেন সুকুমার রায়-এর খুড়তুতো বোন এবং সত্যজিৎ রায়-এর পিসি।

লীল মজুমদারের ছেলেবেলা

ছোটবেলা কেটেছে শিলঙের মেঘ-পাহাড়ে। লেখালেখির শুরুটাও করেন পাহাড়ি শহর শিলঙে। ফলে খুব ছোট থেকেই চার পাশে গল্পরা ঘুরে বেড়াত। উঁকি দিতো বিভিন্ন চরিত্র, কথা বলতো চুপিচুপি।

লীলা মজুমদারের আত্ম লিখনী

তিনি লিখছেন ‘শিলং পাহাড়ে থাকতাম, সরল বনের মধ্যে হাওয়া দিলে সোঁ সোঁ শব্দ হত। ঠিক যেন লুকনো কথা বলে দিচ্ছে। দুটো পাহাড়ের ফাঁক দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বইলে গোঁ গোঁ শব্দ হত। মনে হত ওইখানে কোনও গোপন জায়গায় শেকল দিয়ে দৈত্য বাঁধা আছে, ছাড়াবার চেষ্টা করছে। পাহাড়ি আয়ারাও গল্প বলত। সে সব দুঃখের গল্প, হারানোর গল্প, না পাওয়ার গল্প, কষ্টের গল্প। শুনে কান্না পেত।’

লীলা মজুমদারের শিক্ষা জীবন

তাঁর শৈশব অতিবাহিত হয়েছিল শিলং-এ। এখানে তিনি ১৯১৯ সাল পর্যন্ত লরেটো কনভেন্টে পড়াশোনা করেন। ১৯১৯ সালে তাঁর পিতা কলকাতায় চলে এলে, তিনি সেন্ট জন’স ডাইয়োসেসান স্কুলে ভর্তি হন এবং এখান থেকে ১৯২৪ সালে মেয়েদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষায় বিএ অনার্স এবং এমএ পাশ করেন। উভয় পরীক্ষাতেই তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরাজী পরীক্ষায় তিনি সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করেন।

লীলা মজুমদারের অটোগ্ৰাফ সংগ্ৰহের নেশা

ছোটবেলা থেকেই লেখিকার অটোগ্রাফ সংগ্রহের নেশা ছিল। তিনি প্রশান্তকুমার মহলানবিশকে একটি খাতা দিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ-এর একটি অটোগ্রাফ আনতে পাঠিয়েছিলেন। কবি সেই খাতায় সাক্ষরের সাথে সাথে লিখে দিয়েছিলেন একটি কবিতাও –

‘নামের আখর কেনো লিখিস নিজের সকল কাজে?

পারিস যদি প্রেমের আখর

রাখিস জগৎ মাঝে।’

– লীলা মজুমদার

লীলা মজুমদারের কর্মজীবন

১৯৩১ সালে লীলা মজুমদার দার্জিলিং এর মহারাণী বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। এরপর রবীন্দ্রনাথের অনুরোধে তিনি শান্তিনিকেতন স্কুলে চলে আসেন। এখানে এক বৎসর থাকার পর তিনি কলকাতার একটি কলেজের মহিলা শাখায় যোগ দেন। এখানেও তিনি বেশি দিন থাকেন নি। মাঝে কিছুদিন তিনি অল-ইন্ডিয়া রেডিতে সাত-আট বছর কাজ করেছেন।

লীলা মজুমদারের দাম্পত্য জীবন

সাহিত্যিক লীলা মজুমদার ১৯৩৩ সালে দন্ত চিকিৎসক ডাঃ সুধীর কুমার মজুমদারকে বিবাহ করেন। এই বিবাহে তাঁর পিতার প্রবল বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও তিনি তার স্বনির্বাচিত পাত্রকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করেন। পিতৃ পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট থাকলেও পিতার সঙ্গে সম্পর্ক চিরকালের মতো ছিন্ন হয়। বিবাহিত জীবনে তারা খুব সুখী দম্পতি ছিলেন। তাঁদের এক পুত্র ডাঃ রঞ্জন মজুমদার ১৯৩৪ সালে এবং এক কন্যা কমলা মজুমদার ১৯৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করে।

লীলা মজুমদার সম্পাদিত পত্রিকা

তিনি সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে যুগ্মভাবে ‘সন্দেশ’ পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। ১৯৬১ সালে সত্যজিৎ রায় ‘সন্দেশ’ পত্রিকা পুনর্জীবিত করলে তিনি ১৯৬৩ থেকে ১৯৯৪ অবধি সাম্মানিক সহ-সম্পাদক হিসাবে পত্রিকাটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

লীলা মজুমদারের সাহিত্যজগতে আত্মপ্রকাশ

তাঁর প্রথম গল্প ‘লক্ষ্মীছাড়া’ ১৯২২ সালে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৪-১৫ বছর। এই গল্পের মধ্য দিয়েই তিনি সাহিত্য জগতে পা রাখেন। ১৯৯৪-এ তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য অবসর নেন। তাঁর সাহিত্য জীবন প্রায় আট দশকের।

সাহিত্যে লীলা মজুমদারের প্রতিষ্ঠা

তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা ১৩০-১৫০ -এর মতো। ‘সন্দেশ’, ‘শিশু সাথী’, ‘মৌচাক’, ‘খোকাখুকু’, ‘প্রবাসী’, ‘ভারতবর্ষ‘, ‘শনিবারের চিঠি’, ‘বিচিত্রা’ ইত্যাদি পত্রিকায় ছোটোদের জন্য গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন লীলা মজুমদার।

লীল মজুমদারের গল্প ও উপন্যাসের সার্থকতা

চলচ্চিত্রায়িত হওয়ার জন্য ‘পদি পিসীর বর্মী বাক্স’ খুব জনপ্রিয় হয়। ‘নাকুগামা’-র নাকু, পাইলট সমরেশ কাকু, ইঞ্জিনিয়ার হামিদ কাকুকে আমরা কখনও ভুলতে পারি না। নানান বেড়ালদের নিয়ে লিখেছেন, ‘বেড়ালের বই’। ‘কুঁকড়ো’ গল্প আমাদের মনুষ্যেতর জীবের প্রতি ভালোবাসা সঞ্চার করে। ‘শেলটার’ গল্পে পাহাড়ের মাথায় সাহেবদের শেলটারের রোমহর্ষক বর্ণনা আমাদের মুগ্ধ করে। চোখ আর মনের সুসম সমন্বয়ে তাঁর গল্প ও উপন্যাস সার্থক হয়ে উঠেছে।

লীলা মজুমদারের সাহিত্যে বাঙালির ছেলেবেলা

সাহিত্য সংস্কৃতি প্রিয় বাঙালির ছেলেবেলাকে যিনি রাঙিয়ে দিয়েছেন তিনি লীলা মজুমদার। তিনি তার সাহিত্য জীবনে আষ্টেপৃষ্ঠে গেঁথে নিয়েছেন চিরায়ত বাংলাকে। ফলত বাংলা শ্রেষ্ঠ শিশুসাহিত্যিক যারা, তাদের পাশাপাশি লীলা মজুমদারের নাম উচ্চারিত হয় শ্রদ্ধার সঙ্গে।

লীলা মজুমদারের সাহিত্যকর্ম

কৌতুক-কৌতূহল আর জীবন অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে লীলা মজুমদারের কথা সাহিত্য। তার রচনাবলী হল –

(১) লীলা মজুমদারের লেখা গল্পগ্রন্থ

‘বদ্যিনাথের বড়ি’ (১৯৪০), ‘দিন দুপুরে’ (১৯৪৮), ‘ছোটদের শ্রেষ্ঠ গল্প’ (১৯৫৫), ‘মনিমালা’ (১৯৫৬), ‘লাল নীল দেশলাই’ (১৯৫৯), ‘বাঘের চোখ’ (১৯৫৯), ‘ইষ্টকুটুম’ (১৯৫৯), ‘টাকাগাছ’ (১৯৬১), ‘ছোটোদের ভালো ভালো গল্প’ (১৯৬২),

‘হাস্য ও রহস্যের গল্প’ (১৯৭১), ‘বড়পানি’ (১৯৭২), ‘হাসির গল্প’ (১৯৭৪), ‘গুণু পণ্ডিতের গুণপনা’ (১৯৭৫), ‘নতুন ছেলে নটবর’ (১৯৭৬), ‘সব সেরা গল্প’ (১৯৭৬), ‘বহুরূপী’ (১৯৭৬), ‘ভূতের গল্প’ (১৯৭৮), ‘কাগ নয়’ (১৯৮১), ‘সেজো মামার চন্দ্র যাত্রা’ (১৯৮২),

‘ময়না শাখিল’ (১৯৮২), ‘আজগুবি’ (১৯৮২), ‘বহুরূপী’ (১৯৮২), ‘বাঁশের ফুল’ (১৯৮২), ‘গুপের গুপ্তধন’ (১৯৮২), ‘ছোটোদের বেতাল বত্রিশ’ (১৯৮২), ‘সব ভুতুড়ে’ (১৯৮৩), ‘গুপী পানুর কীর্তিকলাপ’ (১৯৮৩), ‘কুকুর ও অন্যান্য’ (১৯৮৪), ‘অন্য গল্প’ (১৯৮৪), ‘ছোটোদের শ্রেষ্ঠ গল্প’ (১৯৮৪),

‘শুধু গল্প নয়’ (১৯৮৫), ‘ভুতের বাড়ি’ (১৯৮৬), ‘ছোটোদের পুরাণের গল্প’ (১৯৮৬), ‘ছোটোদের দশ দিগন্ত’ (১৯৮৮), ‘মামাদাদুর ঘোড়াবাজি’ (১৯৮৯), ‘ত্রিমুকুট’ (১৯৯০), ‘আগুনি বেগুনি’, ‘আম গো আম’ (১৯৯১), ‘টিপুর উপর টিপ্পুনি’ (১৯৯১), ‘জানোয়ার গল্প’ (১৯৯১),

‘পটকা চোর’ (১৯৯১), ‘কুশলদার কৌশল’ (১৯৯২), ‘বেড়ালের বই’ (১৯৯২), ‘গোলু’ (১৯৯২), ‘লীলা মজুমদারের শ্রেষ্ঠ হাসির গল্প’ (১৯৯২), ‘আষাড়ে গল্প’ (১৯৯৩), ‘মহাভারতের গল্প’ (১৯৯৪), ‘চিচিং ফাঁক’ (১৯৯৪), ‘কল্পবিজ্ঞানের গল্প’, ‘আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ’, ‘নেপোর বই’, ‘নোটোর দল’, ‘ফুলমালা’, ‘মিঠুর ডেয়ারি’, ‘বাঘ শিকারী বামুন’, ‘বাঘিয়ার গল্প’, ‘মণি মানিক’ (২০০০),

‘চিরদিনের গল্প’ (২০০০), ‘হীরে মোতি পান্না’ (অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও প্রেমেন্দ্র মিত্রের সঙ্গে একত্রে, ১৯৭৮), ‘টাকা গাছ’ (জয়ন্ত চৌধুরীর সঙ্গে যুগ্মভাবে, ১৯৬১), ‘হট্টমালার দেশে’ (প্রেমেন্দ্র মিত্রের সঙ্গে যুগ্মভাবে, ১৯৭৭)

(২) লীলা মজুমদারের লেখা উপন্যাস

‘পদিপিসীর বর্মী বাক্স’ (১৯৫৩), ‘হলদে পাখির পালক’ (১৯৫৭), ‘জোনাকী’ (১৯৫৮), ‘শ্রীমতী’ (১৯৫৮), ‘ঝাঁপতাল’ (১৯৫৮), ‘গুপির গুপ্ত কথা’ (১৯৫৯), ‘বক ধার্মিক’ (১৯৬০), ‘চীনে লণ্ঠন’ (১৯৬৩), ‘মাকু’ (১৯৬৯), ‘নেপোর বই’ (১৯৬৯), ‘ফেরারী’ (১৯৭১), ‘নাকুগামা’ (১৯৭৩), ‘বাতাস বাড়ি’ (১৯৭৪), ‘দুলিয়া’ (১৯৭৭), ‘টংলিং’ (১৯৮১), ‘হাওয়ার দাঁড়ি’ (১৯৮৩), ‘চকমকি মন’ (১৯৯০), ‘মণিকাঞ্চন’ (১৯৯৩)।

(৩) লীলা মজুমদারের লেখা প্রবন্ধ

‘হাতি হাতি’ (১৯৫৭), ‘রান্নার বই’ (১৯৭৯), ‘ভুতোর ডাইরি’ (১৯৭৯), ‘জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ি’ (১৯৮৬), ‘পাকদণ্ডী’ (১৯৮৬), ‘ঘরকন্নার বই’ (১৯৮৮), ‘আমি নারী’ (১৯৮৯), ‘আমিও তাই’ (১৯৮৯), ‘সংসারের খুঁটিনাটি ও শিশুদের নামকরণ’ (১৯৯০), ‘যে যাই বলুক’ (১৯৯২), ‘হালকা খাবার’ (১৯৯৩), ‘আনন্দ ঝর্ণা’ (১৯৯৭), ‘রহস্য ভেদী পাঁচ’, ‘নাটঘর’, ‘ভারতের লোককথা‘, ‘মধুকুঠির মারকুটে মৌমাছি’, ‘ঠাকুমার ঠিকুজি’, ‘দেশ বিদেশের বিচিত্র উপকথা’, ‘ভারতের উপকথা’ (১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ খণ্ড)।

(৪) লীলা মজুমদারের লেখা নাটক

‘বক বধ পালা’ (১৯৫৯), ‘গাওনা’ (১৯৬০), ‘মোহিনী’ (১৯৬৩), ‘লঙ্কা দহন পালা’ (১৯৬৪), ‘লীলা মজুমদারের ছোটোদের নাটক সমগ্র’

(৫) লীলা মজুমদারের লেখা জীবনীমূলক গ্রন্থ

‘এই যা দেখ’ (১৯৬১), ‘কবি কথা’ (১৯৬১), ‘উপেন্দ্রকিশোর’ (১৯৬৩), ‘অবনীন্দ্রনাথ’ (১৯৬৬), ‘সুকুমার’ (১৯৮৯), ‘মহামানব চরিত’।

(৬) লীলা মজুমদারের লেখা স্মৃতিচারণা মূলক গ্রন্থ

‘আর কোনোখানে’ (১৯৬৭), ‘খেরোর খাতা’ (১৯৮২)

(৭) লীলা মজুমদারের লেখা আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ

‘পাকদণ্ডী’ (১৯৮৬)

(৮) লীলা মজুমদারের লেখা রচনা সংগ্রহ

‘ছোটোদের অমনিবাস’ (১৯৬৫), ‘লীলা মজুমদারের রচনাবলী’ (৬ খণ্ড, ১৯৭৬-১৯৮৬), ‘লীলা অমনিবাস’ (১ম – ১৯৮৫, ২য় – ১৯৮৫), ‘চিরকালের সেরা’ (১৯৯৭), ‘রায় পরিবারের চার পুরুষের লেখা’, ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ (২০০৪)

(৯) লীলা মজুমদারের লেখা অনুবাদ গ্রন্থ

‘নদী কথা’ (মহাশ্বেতা দেবীর সঙ্গে যুগ্মভাবে), ‘ভারতে বিদেশী যাত্রা’ (১৯৭১), ‘চার বিচারকের দরবার’ (১৯৭৪), ‘বাঘদাঁত'(১৯৭৫), ‘অ্যাণ্ডারসন রচনাবলী'(১৯৭৬), ‘গালিভারের ভ্রমণ বৃত্তান্ত’ (১৯৮৩), ‘সরস গল্প’।

(১০) লীলা মজুমদারের লেখা উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রায়িত বই

‘পদিপীসির বর্মী বাক্স’ (১৯৫৩) উপন্যাস। এর অনেক সংলাপের মধ্যে একটি সংলাপ সবার মুখস্ত বলা যায়। ‘চুপ! চোখ ইজ জ্বল জ্বলিং’।

 লীলা মজুমদারের মৃত্যু

২০০৭ সালের ৫ এপ্রিল লীলা মজুমদার কলকাতার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

লীলা মজুমদারের প্রতি পুরস্কার ও সম্মাননা

‘আর কোনোখানে’ (১৯৬৭) স্মৃতিচারণা মূলক গ্রন্থের জন্য লীলা মজুমদার ১৯৬৯ সালে ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ পেয়েছেন। ‘বক বধ পালা’ (১৯৫৯) নাটকের জন্য তিনি ‘সঙ্গীত নাটক একাডেমী পুরস্কার’ পেয়েছেন। ‘হলদে পাখির পালক’ (১৯৫৭) উপন্যাসের জন্য তিনি ‘স্টেট পুরস্কার’ ও ‘শিশু সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি বিদ্যাসাগর পুরস্কার, ভুবনেশ্বরী পদক, ভুবনমোহিনী দাসী সুবর্ণ পদক, দেশিকোত্তম ডি-লিট প্রভৃতি সম্মান অর্জন করেন।

উপসংহার :- লীলা মজুমদারের শতক জোড়া জীবন যেন এক আয়না। সেই দর্পনে সময়ের বিবর্তন, কিংবা সময়ের পাল্টে যাওয়ার ছবি ভেসে উঠেছে। দর্পনটি ছোট, কিন্তু তার মধ্যেই জেগে আছে একশ বছরের উত্থান পতন। সেই একশ বছরের মধ্যে বাঙ্গালীর ঘরকন্না আছে। বাঙ্গালীর বিশ্বরূপ দর্শণও আছে। যে বাঙ্গালী ঘর এবং বাহির, দেশ আর বিদেশকে মিলিয়েছিল নিজস্ব শিক্ষায়, গত একশ বছর ধরে সেই বৃহৎ বাঙ্গালীরই প্রতিমূর্তি লীলা মজুমদার।


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “লীলা মজুমদার” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) লীলা মজুমদার সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. লীলা মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন কখন?

১৯০৮ সালের ২৬ শে ফেব্রুয়ারি।

২. লীলা মজুমদারের পিতার নাম?

প্রমদারঞ্জন রায়।

৩. লীলা মজুমদারের আত্মজীবনীর নাম কি?

পাকদন্ডী।

৪. লীলা মজুমদারের স্বামীর নাম কি?

ডাঃ সুধীর কুমার মজুমদার।

৫. লীলা মজুমদারের মৃত্যু হয় কখন?

২০০৭ সালে।

অন্যান্য ঐতিহাসিক চরিত্রগুলি

Leave a Comment