গ্ৰিস দেশটি প্রসঙ্গে অবস্থান, সীমা, আয়তন ও জনসংখ্যা, রাজধানী, সভ্যতা ও সাম্রাজ্য, প্রভাবশালী সাম্রাজ্য, ঐতিহাসিক দিক, ভৌগোলিক দিক, রাজনৈতিক দিক, অর্থনৈতিক দিক, শিল্প ও স্থাপত্য এবং দর্শন সম্পর্কে জানবো।
স্বাধীন রাষ্ট্র গ্ৰিস প্রসঙ্গে গ্ৰিসের অবস্থান, গ্ৰিসের আয়তন, গ্ৰিসের জনসংখ্যা, গ্ৰিসের রাজধানী, গ্ৰিসের সভ্যতা ও সাম্রাজ্য, গ্ৰিসের ঐতিহাসিক দিক, গ্ৰিসের ভৌগোলিক দিক, গ্ৰিসের রাজনৈতিক দিক, গ্ৰিসের প্রশাসনিক অঞ্চল, গ্ৰিসের অর্থনৈতিক দিক, গ্ৰিসের শিল্প ও সাহিত্য, গ্ৰিক সভ্যতা ও ধর্ম।
ইউরোপ মহাদেশের স্বাধীন রাষ্ট্র গ্ৰিস
দেশ | গ্ৰিস |
রাজধানী | এথেন্স |
ভাষা | গ্ৰিক ভাষা |
রাষ্ট্রপতি | কাতেরিনা সাকেল্লারোপুলু |
প্রধানমন্ত্রী | কিরিয়াকোস মিচোতাকিস |
ভূমিকা :- ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশের একটি রাষ্ট্র হল গ্ৰিস। পশ্চিমা বিশ্বের জ্ঞান বিজ্ঞানের সূতিকাগার এবং গণতন্ত্রের জন্মদায়ক স্থান হিসেবে গ্ৰিস সুপরিচিত।
গ্ৰিসের অবস্থান
গ্ৰিস বলকান উপদ্বীপের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। গ্রিস ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকার মিলন স্থলে অবস্থিত।
গ্ৰিসের সীমা
স্বাধীন রাষ্ট্র গ্ৰিসের উত্তরে বুলগেরিয়া, উত্তর মেসিডোনিয়া এবং আলবেনিয়া; পূর্বে তুরস্ক; গ্রিসের মূল ভূমির পূর্বে ও দক্ষিণে এজিয়ান সাগর অবস্থিত, আর পশ্চিমে রয়েছে আইওনিয়ান সাগর।
গ্ৰিসের আয়তন ও জনসংখ্যা
স্বাধীন রাষ্ট্র গ্ৰিসের আয়তন প্রায় ১ লক্ষ ৩২ হাজার বর্গকিলোমিটার। দেশটির জনসংখ্যা ১০ কোটিরও বেশি।
গ্ৰিসের সভ্যতা ও সাম্রাজ্য
বর্তমান গ্রিকদের পূর্বপুরুষ হল এক সময়ের পৃথিবী বিজয়ী প্রাচীন গ্রিক সভ্যতা, বাইজান্টাইন সম্রাজ্য এবং প্রায় ৪ শতকের অটোমান সম্রাজ্য।
গ্ৰিসের প্রভাবশালী সভ্যতা
পশ্চিমা দর্শন, অলিম্পিক গেম্স, পশ্চিমা সাহিত্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং নাটকে দেশটির বিশেষ অবদান রয়েছে। সব মিলিয়ে গ্রিসের সভ্যতা সমগ্র ইউরোপে এক সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী সভ্যতা হিসেবে পরিগণিত হত।
গ্ৰিসের ঐতিহাসিক দিক
- (১) গ্রিসের প্রথম সমৃদ্ধ সভ্যতা প্রতিষ্ঠিত হয় এথেন্সে। কিন্তু পরবর্তীকালে এথেন্স ও স্পার্টার মধ্যে সংঘাতের সৃষ্টি হয়, যার পরিণতি হল পেলোপোনেশীয় যুদ্ধ। এই সময় পার্সিয়ানদের হাতে স্পার্টার পতন হয়। এর পর মাত্র এক শতাব্দীর মধ্যে সকল গ্রিকরা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের নেতৃত্বে একত্রিত হয়ে পার্সীয়দের প্রতিহত করে।
- (২) ১৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এখানে রোমান সম্রাজ্যের সূচনা হয়। রোমান যুগে গ্রিস তার রাজনৈতিক স্বাধীনতা হারায়। খ্রিস্ট ধর্ম বিকাশের পূর্ব পর্যন্ত গ্ৰিসে হেলেনীয় সংস্কৃতি টিকে ছিল। গ্রিস রোমের একটি প্রদেশে পরিণত হয়। কিন্তু তখনও গ্রিস প্রবল প্রতাপে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সংস্কৃতিকে প্রভাবান্বিত করে চলে।
- (৩) এরপর রোমান সাম্রাজ্য দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় – পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য যা গ্রিকদের সাম্রাজ্য নামে প্রতিষ্ঠা পায় এবং পরবর্তীকালে বাইজান্টাইন সম্রাজ্য নাম ধারণ করে। আর অন্য অংশ ছিল কনস্টান্টিনোপল কেন্দ্র করে বাইজান্টিয়াম।
- (৪) একাদশ ও দ্বাদশ শতকে গ্রিসে বাইজান্টাইন শিল্পকলার স্বর্ণযুগ বলা হয়। ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতকে সংঘটিত ক্রুসেডের সময় ধর্মের নামে প্রতিষ্ঠিত কিছু সেনাদল দ্বারা গ্রিস আক্রান্ত হয়। ১৪৫৩ সালে কনস্টান্টিনোপলের পতনের পূর্ব পর্যন্ত এখানে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত ছিল।
গ্ৰিসের ভৌগোলিক দিক
পাহাড়ের একটি দেশ গ্ৰিস। দেশের উত্তর-পশ্চিমে শুরু হয়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের নীচে পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পাহাড় গুলি চালিত হয়। পর্যায়ক্রমে ভূপৃষ্ঠ ভেঙে হাজার হাজার দ্বীপ তৈরি করে যার জন্য গ্রীক জলরাশি বিখ্যাত এই পর্বতমালাগুলি মূল ভূখণ্ডকে ছোটো ছোটো বাসযোগ্য উপত্যকা এবং সমভূমিতে বিভক্ত করে।
গ্ৰিসের রাজনীতি
একটি সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক বহুদলীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কাঠামোয় গ্রিসের রাজনীতি সংঘটিত হয়। প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারের প্রধান। রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের উপর ন্যস্ত। সরকার এবং আইনসভার উপর আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ন্যস্ত।
গ্ৰিসের প্রশাসনিক অঞ্চল
গ্রিসে মোট ১৩ টি প্রশাসনিক অঞ্চল রয়েছে। এগুলি হল –
- (১) আট্টিকি – এথেন্স
- (২) কেন্দ্রীয় গ্রিস – লিবাদিয়া
- (৩) কেন্দ্রীয় মেসিডোনিয়া – থেসালোনিকি
- (৪) ক্রিতি – ইরাক্লিয়ো
- (৫) পুর্ব মেসিডোনিয়া ও থ্রেস – কোমোটিনি
- (৬) ইপিরোস – ইওয়ান্নিনা
- (৭) ইওনীয় দ্বীপপুঞ্জ – কেরকিরা
- (৮) উত্তর এজিয়ান – মিটিলিনি
- (৯) পেলোপোনেস – ট্রিপলি
- (১০) দক্ষিণ এজিয়ান – এরমুপলি
- (১১) থেসালিয়া – লারিসা
- (১২) পশ্চিম গ্রিস – পাত্রা
- (১৩) পশ্চিম মেসিডোনিয়া – কোজানি
গ্ৰিসের অর্থনৈতিক দিক
গ্রিস বেশ ধনী একটি দেশ। শিল্প বিকাশ এবং পর্যটনের কারণে সাম্প্রতিক দশকে গ্রিসের অর্থনীতির উন্নতি ঘটেছে। গ্রিসের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শিল্প হল পর্যটন এবং বণিক পরিবহন।
গ্ৰিসের দর্শন
প্রাচীন গ্রিকের দর্শন গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রাচীন গ্রিক ও হেলেনিষ্টিক দর্শনবিদ থেকে মধ্যযুগের মুসলিম দর্শনবিদ এবং মুসলিম বিজ্ঞানিদের থেকে ইউরোপের রেনেসাঁ বা নবজাগরণ ও আজকের ঐহিক বিজ্ঞান পর্যন্ত এর সুস্পষ্ট প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
গ্ৰিসের শিল্প ও স্থাপত্য
মধ্য এশিয়া, গ্রিক ও ভারতীয় সংস্কৃতি তৈরি করেছিল গ্রিকো-বুদ্ধিস্ট শিল্প, যা জাপান পর্যন্ত প্রসার লাভ করে। এর সূচনা হয়েছিল মহান আলেকজান্ডার -এর বিজয় অভিযানের মধ্য দিয়ে। গ্রিক শিল্প দ্বারা ইউরোপে রেঁনেসার যুগে ইউরোপিয় শিল্পীরা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
উপসংহার :- ঈশ্বর ও হিরোদের গল্প, পৃথিবীর প্রকৃতি এবং উৎপত্তি ও ধর্ম পালনের গুরুত্ব ইত্যাদি নিয়ে গ্রিক পুরাণ গঠিত হয়েছে। জিউস, হেরা, পোসাইডন, এরিস, হারমিস, হেফেসটাস, আফরোদিতি, এথেনা, এ্যাপোলো, আর্টেমিস, দেমেতের এবং হেডস ছিলেন প্রধান গ্রিক ঈশ্বর।
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “গ্ৰিস” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।
সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।
(FAQ) গ্ৰিস দেশ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
এথেন্স।
গ্ৰিক।
কাতেরিনা সাকেল্লারোপুলু।
কিরিয়াকোস মিচোতাকিস।