ডা. বিধানচন্দ্র রায়

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় -এর জন্ম, শিক্ষা, আদি নিবাস, বংশ পরিচয়, কর্মজীবন, রাজনীতিতে যোগদান, নতুন শহর প্রতিষ্ঠা, মুখ্যমন্ত্রী রূপে কৃতিত্ব, সম্মাননা ও তার মৃত্যু সম্পর্কে জানবো।

পশ্চিমবঙ্গের রূপকার ডা বিধান চন্দ্র রায় প্রসঙ্গে বিধান চন্দ্র রায়ের জন্ম, বিধান চন্দ্র রায়ের পিতামাতা, বিধান চন্দ্র রায়ের শিক্ষা, বিধান চন্দ্র রায়ের কর্মজীবন, বিধান চন্দ্র রায়ের রাজনীতিতে যোগদান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিধান চন্দ্র রায়, বিধান চন্দ্র রায় কর্তৃক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদ গ্ৰহণ, মুখ্যমন্ত্রী পদে বিধান চন্দ্র রায়ের সময়কাল, বিধান চন্দ্র রায়ের সময়ে নতুন নতুন শহর প্রতিষ্ঠা, মুখ্যমন্ত্রী রূপে বিধান চন্দ্র রায়ের ভূমিকা, শিক্ষাব্রতী ডা বিধান চন্দ্র রায়, চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিধান চন্দ্র রায়ের অবদান, বিধান চন্দ্র রায়ের প্রতি সম্মাননা ও ডা বিধান চন্দ্র রায়ের মৃত্যু।

পশ্চিমবঙ্গের রূপকার ডা. বিধানচন্দ্র রায়

ঐতিহাসিক চরিত্রডা. বিধানচন্দ্র রায়
জন্ম১ জুলাই ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দ
মৃত্যু১ জুলাই ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দ
পেশাচিকিৎসা
অবদানপশ্চিমবঙ্গ -এর নবরূপকার, দুর্গাপুর, কল্যাণী শহরের প্রতিষ্ঠাতা
ডা. বিধানচন্দ্র রায়

ভূমিকা :- পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ডা. বিধানচন্দ্র রায়। তাকে পশ্চিমবঙ্গের নবরূপকার নামে অভিহিত করা হয়। তাছাড়া চিকিৎসক হিসেবেও তার বিশেষ খ্যাতি ছিল।

বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম

ডা. বিধানচন্দ্র রায় ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দের ১ জুলাই ভারতের বর্তমান বিহার রাজ্যের অন্তর্গত পাটনার বাঁকিপুরে জন্মগ্রহণ করেন।

বিধানচন্দ্র রায়ের পিতামাতা

পিতা প্রকাশচন্দ্র রায় ও মা অঘোরকামিনী দেবীর ছয় সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন বিধানচন্দ্র রায়।

বিধানচন্দ্র রায়ের আদি নিবাস

তাঁর পিতা প্রকাশচন্দ্র রায়ের আদি নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশ -এর খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে।

বিধানচন্দ্র রায়ের বংশের ইতিহাস

তাঁর ঠাকুরদা প্রাণকালী রায় বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর কালেক্টরেটের একজন কর্মচারী ছিলেন৷ তাঁর মাতা অঘোর কামিনী দেবী ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের এক জমিদার বিপিনচন্দ্র বসুর কন্যা।

বিধানচন্দ্র রায়ের শিক্ষা

  • (১) ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের লেখাপড়া শুরু হয়েছিল এক গ্রাম্য পাঠশালায়। পরবর্তীতে পাটনার টি কে ঘোষ ইনস্টিটিউশন এবং তারপর পাটনা কলেজিয়েট স্কুলে পড়াশোনা করেন।
  • (২) মাতৃবিয়োগের এক বছর পর প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পাটনা কলেজে ভরতি হন এবং সেখান থেকে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে এফ. এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি।
  • (৩) ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে তিনি পাটনা কলেজ থেকে গণিতে সাম্মানিকসহ বি.এ. পাস করে কলকাতায় চলে আসেন।
  • (৪) বিধানচন্দ্র কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে এল.এম.এস. ও এম. বি. পাস করেন এবং ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সে এমডি ডিগ্রি লাভ করেন।
  • (৫) উচ্চশিক্ষার জন্য ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড গিয়ে থেকে মাত্র দুবছরের মধ্যে লন্ডনের বার্থোলোমিউ হাসপাতাল থেকে এম.আর.সি.পি. (লন্ডন) এবং এফ.আর.সি.এস. (ইংল্যান্ড) পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।

বিধানচন্দ্র রায়ের কর্মজীবন

দেশে ফেরার পর তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন।

(১) শিক্ষক বিধানচন্দ্র রায়

১৯১১ সালে জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রেরণায় রাধাগোবিন্দ কর প্রতিষ্ঠিত ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষকের দায়িত্ব নেন। তখন এই প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তিত হয়ে ক্যাম্বেল মেডিক্যাল স্কুল রাখা হয়েছিল।

(২) মেডিসিনের অধ্যাপক বিধানচন্দ্র রায়

১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে রায় কারমাইকেল মেডিক্যাল কলেজে মেডিসিনের অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন।

(৩) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে বিধানচন্দ্র রায়ের যোগাযোগ

এছাড়া তিনি কলকাতার চিত্তরঞ্জন সেবা সদন, চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতাল, ভিক্টোরিয়া ইন্সটিটিউশন এবং কমলা নেহরু হাসপাতাল এর সাথে যুক্ত ছিলেন

(৪) বিধানচন্দ্র রায়ের ফেলোশিপ অর্জন

১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি রয়্যাল সোসাইটি অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজেন এবং ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকান সোসাইটি অফ চেস্ট ফিজিশিয়ান-এর ফেলো নির্বাচিত হন।

বিধানচন্দ্র রায়ের রাজনীতিতে যোগদান

ডা. বিধানচন্দ্র রায় ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে দেশবন্ধুর কাছে রাজনৈতিক দীক্ষা লাভ করেন এবং কিছুদিনের মধ্যে আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন।

বিধানচন্দ্র রায় কর্তৃক সুরেন্দ্রনাথকে পরাজিত

১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের নির্দেশে স্বরাজ্য দল -এর পক্ষে প্রার্থী হয়ে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচনে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করেন। পরে কলকাতা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও কলকাতা পৌরসংস্থার মেয়র নির্বাচিত হন।

বিধানচন্দ্র রায়ের কারাবরণ

মহাত্মা গান্ধির ডাকে তিনি কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে মহাত্মা গান্ধির আইন অমান্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে কারাবরণ করেন।

বিধানচন্দ্র রায় কর্তৃক রাজ্যপালের পদ প্রত্যাখ্যান

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল পদের জন্য তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর লোভনীয় প্রস্তাব তিনি সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিধানচন্দ্র রায়

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মনোনীত হন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের প্রার্থীরূপে আইনসভায় নির্বাচিত হন।

বিধানচন্দ্র রায় কর্তৃক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পদ গ্রহণ

পশ্চিমবঙ্গের আইন সভার সদস্যগণ তাকে দলনেতা নির্বাচন করলে সমস্যা কণ্টকিত পশ্চিমবঙ্গের নব রূপায়ণকল্পে তিনি দায়িত্বপূর্ণ মুখ্যমন্ত্রীর পদ অলংকৃত করেন। তিনি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী পদে বিধানচন্দ্র রায়ের সময়কাল

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের প্রতিনিধিত্বে তিনি ১৪ জানুয়ারি ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে মৃত্যুকাল অবধি ১৪ বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

পশ্চিমবঙ্গের রূপকার বিধানচন্দ্র রায়

তাঁর চৌদ্দ বছরের মুখ্যমন্ত্রীত্বকালে নবগঠিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রভূত উন্নতি সম্ভব হয়েছিল বলে তাকে পশ্চিমবঙ্গের রূপকার নামে অভিহিত করা হয়।

বিধানচন্দ্র রায় কর্তৃক নতুন শহর প্রতিষ্ঠা

তিনি চারটি নতুন শহরের প্রতিষ্ঠা করেন – দূর্গাপুর, বিধাননগর, কল্যাণী ও অশোকনগর-কল্যাণগড়।

বিধানচন্দ্র রায়ের মুখ্যমন্ত্রী রূপে কার্যকলাপ

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি অসামান্য ভূমিকা পালন করেছেন।

(১) ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের উদ্দ্যোগে উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধান

১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ সদ্য খন্ডিত পূর্ব পাকিস্তান থেকে ছিন্নমূল লক্ষ লক্ষ নরনারী শিশু নিঃসম্বল অবস্থায় শুধু প্রাণটুকু বাঁচাবার তাগিদে পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়ছে। এই অক্লিষ্টকর্মা কর্মবীর তাদের দিয়ে ছিলেন মাথাগোঁজার ঠাঁই, একমুঠো খাবারের প্রতিশ্রুতি।

(২) ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের উদ্দ্যোগে বহু পতিত জমি উদ্ধার

উদ্বাস্তুর আগমনে রাজ্যে খাদ্য ও বাসস্থানের সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তাছাড়া পূর্ব পাকিস্তান থেকে কাঁচামাল পাটের জোগান বন্ধ। তিনি বহু পতিত জমি উদ্ধার করে এবং কিছু ধানের জমিতে পাটচাষের ব্যবস্থা করে লক্ষাধিক চটকলকর্মীর সম্ভাব্য বেকারি রোধ করেন।

(৩) ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের পরিকল্পনায় কারখানা স্থাপন

শিল্পসমৃদ্ধ বাংলা গড়তে তার ত্রুটিহীন পরিকল্পনায় স্থাপিত হল দুর্গাপুর ইস্পাতনগরী, চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা।

(৪) ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের উদ্দ্যোগে বসতি নগর স্থাপন

বিধানচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে বাসস্থানের জন্য তৈরি হল কল্যাণী উপনগরী, লেক টাউন, লবণহ্রদ নগর।

(৫) বেকার সমস্যার সমাধানে ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের ভূমিকা

দুগ্ধ সরবরাহের জন্যে গড়ে তুললেন হরিণঘাটা দুগ্ধ প্রকল্প। শিক্ষিত বেকারদের বিপুল পরিমাণে কর্মনিয়োগের জন্য সৃষ্টি করলেন কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা।

শিক্ষাব্রতী ডা. বিধানচন্দ্র রায়

বিধানচন্দ্র রায়ের ঐকান্তিক ইচ্ছায় গড়ে উঠল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ, পুরুলিয়া, রহড়া, নরেন্দ্রপুরে প্রাচীন ভারতীয় আদর্শে আশ্রমিক পরিবেশে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়।

সংস্কৃতজ্ঞ ডা. বিধানচন্দ্র রায়

সত্যজিত রায়ের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র পথের পাঁচালির প্রযোজনা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার তারই নেতৃত্বে। বিশ্ববরেণ্য নৃত্যশিল্পী উদয়শংকরকে তিনি সরকারি তহবিল থেকে অনুদান দিয়েছিলেন। কবিগুরুর জন্মশতবার্ষিকীতে রবীন্দ্র রচনাবলি প্রকাশের উদ্যোগও নিয়েছিলেন তিনি।

ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের সম্মাননা

কিংবদন্তি এই চিকিৎসক, শিক্ষক ও দেশ সেবক ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্নে ভূষিত হন।

ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের স্মৃতিরক্ষার্থে

মৃত্যুর পর তার সম্মানে কলকাতার উপনগরী সল্টলেকের নামকরণ করা হয় বিধাননগর।

ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের মৃত্যু

১৯৬২ খ্রিস্টাব্দের ১ জুলাই বিধানচন্দ্র রায় মৃত্যুবরণ করেন। তার জন্ম ও মৃত্যু দিন ১ জুলাই ভারতে চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “ড. বিধানচন্দ্র রায়” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যেকোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে  তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) ড. বিধানচন্দ্র রায় সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম কোথায়?

বিহারের পাটনা জেলার বাঁকিপুরে।

২. বিধানচন্দ্র রায় কবে ভারত রত্ন পান ?

১৯৬১ সালে।

৩. বিধানচন্দ্র রায় কবে মুখ্যমন্ত্রী হন ?

১৯৪৮ খ্রিঃ, ২৩ শে জানুয়ারী

৪. বিধানচন্দ্র রায় কে ছিলেন?

পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের নবরূপকার

৫. পশ্চিমবঙ্গের রূপকার কাকে বলা হয়?

ডা. বিধানচন্দ্র রায়।

৬. পশ্চিমবঙ্গের উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধান কে করেন?

ডা. বিধানচন্দ্র রায়।

৭. কল্যাণী শহরের নামকরণ কে করেন?

ডা. বিধানচন্দ্র রায়।

Leave a Comment