বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় -এর প্রতিষ্ঠা, অবস্থান, ক্যাম্পাস, উদ্যোক্তা, অনুমোদন, অনুমোদিত কলেজ, বিভাগ, উদ্দেশ্য, স্বীকৃতি ও বিশিষ্ট প্রাক্তন ছাত্র সম্পর্কে জানবো।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ও বর্তমান উপাচার্য, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স অফার, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান উদ্যোক্তা, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কলেজ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এখতিয়ার, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক স্টাফ কলেজ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট গ্যালারি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন মেঘনাদ সাহা প্ল্যানেটোরিয়াম, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত পল্লী প্রযুক্তি শিক্ষা কেন্দ্র, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট প্রাক্তন ছাত্র।
শিক্ষাক্ষেত্র বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠা | ১৫ জুন ১৯৬০ |
আচার্য | জগদীপ ধনখড় |
উপাচার্য | অধ্যাপক নিমাই চন্দ্র সাহা |
অবস্থান | ভারত -এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান জেলা |
ভূমিকা :- বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় বা Burdwan University বা B. U. হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব বর্ধমান জেলায় অবস্থিত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পথ চলা শুরু হয় ১৯৬০ সালের ১৫ ই জুন।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাস পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান শহর -এ অবস্থিত।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও বর্তমান উপাচার্য
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন সুকুমার সেন। বর্তমানে নিমাই চন্দ্র সাহা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত আছেন।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স অফার
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে ৩০ টিরও বেশি স্নাতক এবং ৬৬ টি স্নাতকোত্তর কোর্স অফার করে।
জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত
১৯৫০ -এর দশকে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পরে বর্ধমান রাজের শেষ প্রতিনিধি উদয় চাঁদ মেহতাব তাঁর প্রায় পুরো সম্পত্তি রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেন।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান উদ্যোক্তা
পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় -এর উদ্যোগে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস
বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ প্রশাসনিক কাজকর্ম রাজবাড়িতে ( বর্ধমান মহারাজার প্রাসাদ) ক্যাম্পাসে হয় এবং গোলাপবাগ এলাকা হল একাডেমিক ক্রিয়াকলাপ কেন্দ্র।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ
বিভিন্ন বিভাগে এখন প্রায় ২২ টি স্নাতকোত্তর বিভাগ রয়েছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন
অল ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল এডুকেশন কাউন্সিল (এআইসিটিই) -এর অনুমোদনে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কলেজ
একাডেমিকভাবে, ১০০ টিরও বেশি কলেজ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ার
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক এখতিয়ার বর্ধমান, হুগলি (শ্রীরামপুর মহকুমা বাদে), বাঁকুড়া, বীরভূম এবং পুরুলিয়া – এই পাঁচটি জেলা জুড়ে রয়েছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা
বর্তমানে শিক্ষার বিভিন্ন শাখায় কোর্স দেওয়ার মতো অবস্থানে রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। যেমন – বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স, শারীরিক শিক্ষা, বিএড, বিদেশী ভাষা, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, জনসংখ্যা শিক্ষা ইত্যাদি।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক স্টাফ কলেজ
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অ্যাডাল্ট কন্টিনিউয়িং এডুকেশন সেন্টার এবং একাডেমিক স্টাফ কলেজও রয়েছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট গ্যালারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটিতে একটি সংগ্রহশালা এবং আর্ট গ্যালারী রয়েছে যা প্রাগৈতিহাসিক যুগ -এর মৃৎশিল্পকে প্রদর্শন করে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগ
বিশ্ববিদ্যালয়টির ডিস্টেন্স এডুকেশন শাখা আছে, যেখানে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি কিছু পেশাদার কোর্সে স্নাতকোত্তর শিক্ষা প্রদান করা হয়।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন মেঘনাদ সাহা প্ল্যানেটোরিয়াম
সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সক্রিয় ভাবে মেঘনাদ সাহা প্ল্যানেটোরিয়াম নামে একটি বিজ্ঞান কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত পল্লী প্রযুক্তি কেন্দ্র
গ্রামীণ যুবকদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান এবং স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রী বিনয় কৃষ্ণ চৌধুরির নামে এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি পল্লী প্রযুক্তি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য
- (১) এই বিশ্ববিদ্যালয় যুবদের ক্ষমতায়নের জায়গা। মিথষ্ক্রিয় মন থেকে উদ্ভাসিত বিভিন্ন দিকের আগত ধারণাগুলির সংশ্লেষ এবং পরিমার্জনের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় সদা সচেষ্ট।
- (২) যুবসমাজের তাৎক্ষণিক সীমানা ছাড়িয়ে দিগন্তকে আরও প্রশস্ত করার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় চিন্তাশীল মনের উদ্ভাবন এবং পুনরায় উদ্ভাবনের সুযোগ দেয়।
- (৩) স্থানীয় ও বৈশ্বিক উভয়ই মানব সমাজের অস্তিত্বের উন্নতির জন্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের প্রজন্মের মধ্যে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচীন এবং আধুনিক জ্ঞান, তাদের সমালোচনা করার শিল্পকে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করার একটি জায়গা।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ -এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের একটি আনুষ্ঠানিক সমঝোতা হয়।
- (১) প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক উদ্দেশ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এবং একাডেমিক সহযোগিতা আরও বিকাশ করার জন্য এই চুক্তি বিশেষ ভূমিকা রাখে।
- (২) উভয় দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে জোরদার করা ও এর মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সম্পর্ক উন্নতি করাই ছিল এই চুক্তির উদ্দেশ্য।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি
কলকাতা পিয়ারলেস ইন এর সম্মেলন কক্ষে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছে।
- (১) বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গবেষণা সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলি বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন।
- (২) ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অধ্যাপক পল শারাদ এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উদ্যোগ এবং সহযোগী ব্যস্ততার কথা বলেছেন। এই চুক্তি অবশ্যই বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও গবেষণা কার্যক্রমের প্রসার ঘটাবে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং বোটানিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (বিএসআই) এর মধ্যে সমঝোতা চুক্তি
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং বোটানিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার মধ্যে ২২ আগস্ট ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্রান্সের কনসাল জেনারেলের সফর
ফ্রান্স -এর কনসাল জেনারেল ফ্যাব্রিস এটিয়েন ফরাসী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষক এবং পণ্ডিতদের মতবিনিময় সহ উচ্চ শিক্ষায় সহযোগিতা সন্ধানের জন্য ৩১ জুলাই ২০০১ খ্রিস্টাব্দে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। তারা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং পরে গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের আশেপাশে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (ইউআইটি), বিজ্ঞান যাদুঘর এবং মেঘনাদ সাহা প্ল্যানেটরিয়াম পরিদর্শন করেছেন।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট প্রাক্তন ছাত্র
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্র বিভিন্ন সময়ে তাদের খ্যাতির প্রমাণ দিয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন ছাত্র হলেন-
- (১) ডাঃ তাপস কুমার মাজি, জওহরলাল নেহরু কেন্দ্র উন্নত বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র, শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার প্রাপ্তি (২০১৯)।
- (২) আখিল আর চক্রবর্তী, অধ্যাপক, আইআইএসসি বেঙ্গালুরু, কেমিক্যাল সায়েন্সে শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার প্রাপ্তি (১৯৯৮)।
- (৩) অমলেন্দু চন্দ্র, কেমিক্যাল সায়েন্সে শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার প্রাপ্ত (২০০৭)।
- (৪) বিমল কে বণিক, অধ্যাপক, ইউটিপিএ, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র।
- (৫) প্রদীপ কে মাসচারাক, অধ্যাপক, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান্তা ক্রুজ।
- (৬) তাপস মুখোপাধ্যায়, বিচারপতি, কলকাতা হাইকোর্ট।
- (৭) সারনাথ চত্তরাজ, গবেষণা পরিচালক, মেডট্রনিক ইনক, ইউএসএ।
- (৮)ইন্দ্রজিৎ চ্যাটার্জী, বিচারপতি, কলকাতা হাইকোর্ট।
উপসংহার :- বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৬ সালে NAAC দ্বারা ‘A’ গ্রেডে স্বীকৃত হয়েছে। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা বর্ধমানে ৩ রা জুলাই, ২০১৩সালে করা সফল গ্যালিলিও অবস্থান নির্ধারণের জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানাতে চায়।
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যেকোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।
সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।
(FAQ) বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১৯৬০
সুকুমার সেন।
উদয় চাঁদ মেহতাব।