বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকা

বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকা প্রসঙ্গে পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্য, বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার তিনটি সংস্করণ, বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার খণ্ড গুলি থেকে রোম রাজ্যের পুরাবৃত্ত, ক্ষেত্রতত্ত্ব, জীবন বৃত্তান্ত, ভূগোল বৃত্তান্ত ইত্যাদি সম্পর্কে জানবো।

ত্রৈমাসিক বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকা প্রসঙ্গে বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার ধরণ, বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার প্রকাশকাল, বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার প্রকাশক, বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার উদ্দেশ্য, বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার সংস্করণ ও বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার খন্ড সম্পর্কে জানব।

বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকা

ঐতিহাসিক পত্রিকাবিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকা
ইংরেজি নামEncyclopaedia Bengalensis
ধরণত্রৈমাসিক পত্রিকা
প্রকাশকাল২৬ জানুয়ারি ১৮৪৬
প্রকাশককৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়
বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকা

ভূমিকা :- ১৮৪৬ সালের জানুয়ারি মাসে বিদ্যাকল্পদ্রুম অর্থাৎ বিবিধ বিদ্যাবিষয়ক রচনা শ্রী কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারা সংগৃহীত হয়ে প্রকাশিত হয়। এর ইংরেজী নাম Encyclopaedia Bengalensis.

বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্য

প্রথম কাণ্ডে “মঙ্গলাচরণে” বিদ্যা কল্পদ্রুম প্রচারের উদ্দেশ্য বিবৃত হয়েছে। –

“বঙ্গভূমির মধ্যে সাধারণের মতিভ্রম নিবারণার্থে গৌড়ীয় ভাষাতে ইউরোপীয় পুরাবৃত্ত ও পদার্থ বিদ্যার অনুবাদ এক উত্তম উপায় বোধ হইতেছে কেননা আবিষ্কার ও প্রাপ্তির যে দুষ্ট শক্তি দেশ ব্যাপিয়া প্রবল আছে তাহা হইতে সাধারণের মন এ উপায়ে মুক্তি পাইতে পারে কিন্তু এই প্রকারে গৌড়ীয় ভাষাতে ইউরোপীয় বিদ্যার অনুবাদ যত বাঞ্ছনীয় তত সহজ নহে। অতএব অসাধ্য জ্ঞান করিয়া আমি অনেক দিন পর্যন্ত এ চেষ্টাতে বিরত ছিলাম কিন্তু সম্প্রতি বেঙ্গল গবর্ণমেন্ট সমীপে উৎসাহ পাইয়া উক্ত অনুবাদের প্রতিজ্ঞাতে পুনশ্চ প্রবৃত্ত হইয়া পরমেশ্বরের প্রসাদে নির্ভর রাখিয়া ইউরোপীয় পুরাবৃত্ত পদার্থ বিদ্যা ক্ষেত্র পরিমাণ জ্যোতিষাদি সকল শাস্ত্র স্বদেশীয় ভাষাতে বিস্তার পূর্বক পশ্চিম খণ্ডের জ্ঞান পূৰ্ব খণ্ডে স্থাপন করিতে চেষ্টিত হইয়াছি।

যে গ্রন্থ আমি রচনা করিতে প্রবৃত্ত আছি তাহা উক্ত বিষয়ক কোন বিশেষ পুস্তক হইতে অনুবাদ না করিয়া বরং নানা মূল হইতে সংগ্রহ করিতে কল্পনা করিতেছি…। আমার অভিপ্রায় এই যে বঙ্গভূমির সমস্ত জাতিকে আমার শ্রোতা করি।‌ অতএব যে কেহ পাঠ করিতে পারে সকলের হৃদ্বোধক কথা ব্যবহার করিব তথাচ রচনার মাধুর্য্য দর্শাইয়া মনোরঞ্জক শিক্ষা বিস্তার করিতে সাধ্যক্রমে ত্রুটি করিব না কিন্তু রূপক অলঙ্কারাদি রচনার শোভা স্পষ্টতার বাধক হইলে তাহার অনুরোধে বাক্যের সারল্য নষ্ট করিব না। জ্যোতিষ পদার্থ ও নীতি বিজ্ঞাতে অনেক পারিভাষিক শব্দ ও তর্ক আছে এজ তাহা অবঃ কিঞ্চিৎ কঠিন হইবে কিন্তু ব্যাখ্যা ও টীকা দ্বারা সহজ করিতে যত্ন করিব। ভূমিকা ও অনুবন্ধে সরল বর্ণনার ধারা অপেক্ষা কঠিন বিচারের ধারার প্রাবল্য প্রযুক্ত পাঠকবর্গ যৎকিঞ্চিৎ বুদ্ধিমান্ না হইলে তাহার অধিকারী হইতে পারিবেন না তথাপি বঙ্গদেশীয় লোকের বোধগম্য করণার্থে সর্ব্বপ্রকার চেষ্টা করা যাইবেক।”

বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার তিনটি সংস্করণ

এই পত্রিকার এক-একটি কাও সাধারণত তিন মাসের ব্যবধানে প্রকাশিত হত। প্রত্যেক কাণ্ডের তিনটি করে সংস্করণ – ইংরেজী-বাংলা, বাংলা ও ছাত্রোপযোগী বাংলা – মুদ্রিত হত।

বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার খণ্ড

আমরা ‘বিদ্যাকল্পক্রমে’র বারটি কাও দেখেছি। এগুলি হল –

  • ১। রোম রাজ্যের পুরাবৃত্ত, খণ্ড -১, (১৮৪৬)
  • ২। ক্ষেত্রতত্ত্ব, খণ্ড-১ (১৮৪৬)
  • ৩। বিবিধ বিষয়ক পাঠ, খণ্ড-১ (১৮৪৬)
  • ৪। রোম রাজ্যের পুরাবৃত্ত, খণ্ড-২ (১৮৪৬)
  • ৫। জীবনবৃত্তান্ত (১৮৪৭)
  • ৬। ইজিপ্ত দেশের পুরাবৃত্ত (১৮৪৭)
  • ৭। বিবিধ বিষয়ক পাঠ, খণ্ড-২ (১৮৪৭)
  • ৮। ভূগোল বৃত্তান্ত (১৮৪৮)
  • ৯। ক্ষেত্রতত্ত্ব, খণ্ড-২ (১৮৪৮)
  • ১০। নীতিবোধক ইতিহাস (রাজদূত এবং সরলতার পুরস্কার নামক গল্প), (১৮৪৯)
  • ১১। চিত্তোৎকর্ষবিধান, খণ্ড-১
  • ১২। চিত্তোৎকর্ষবিধান খণ্ড -২

উপসংহার :- বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার সর্বসমেত তেরটি কাণ্ড প্রকাশিত হয়েছিল। ত্রয়োদশ কাণ্ডের (জীবনবৃত্তান্ত) উল্লেখ উত্তরপাড়া পাবলিক লাইব্রেরির পুস্তক-তালিকায় আছে।

(FAQ) বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. বিদ্যা কল্পদ্রুম কি ধরনের পত্রিকা?

ত্রৈমাসিক পত্রিকা।

২. বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়।

৩. বিদ্যা কল্পদ্রুম পত্রিকা প্রকাশিত হয় কখন?

২৬ জানুয়ারি ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে।

অন্যান্য ঐতিহাসিক পত্রিকাগুলি

Leave a Comment