বঙ্গবাসী পত্রিকা

ভারতের বঙ্গবাসী পত্রিকা প্রসঙ্গে প্রথম প্রকাশ সম্পাদক ও সহযোগী, বঙ্গবাসী পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ, ক্ষমতাশালী পত্রিকা বঙ্গবাসী, বঙ্গবাসী পত্রিকার গ্রাহক সংখ্যা, বঙ্গবাসী পত্রিকার হিন্দু ধর্মের প্রচার ও ব্যাখ্যা প্রকাশ, বঙ্গবাসী পত্রিকার হিন্দু ধর্মের প্রচার ও ব্যাখ্যা প্রকাশ, বঙ্গবাসী পত্রিকার প্রসার বৃদ্ধি, বঙ্গবাসী পত্রিকার রাজনৈতিক কাজ ও বঙ্গবাসী পত্রিকার গুরুত্ব সম্পর্কে জানবো।

বঙ্গবাসী পত্রিকা প্রসঙ্গে বঙ্গবাসী পত্রিকার ধরণ, বঙ্গবাসী পত্রিকার ভাষা, বঙ্গবাসী পত্রিকার প্রকাশকাল, বঙ্গবাসী পত্রিকার সম্পাদনা, বঙ্গবাসী পত্রিকার সহযোগী, বঙ্গবাসী পত্রিকার গুরুত্ব ও বঙ্গবাসী পত্রিকার দ্বারা উদ্দীপিত বালগঙ্গাধর তিলক ‘কেশরী’ পত্রিকা প্রকাশ সম্পর্কে জানব।

প্রাচীন বঙ্গবাসী পত্রিকা

ঐতিহাসিক পত্রিকাবঙ্গবাসী পত্রিকা
প্রথম প্রকাশ১০ ডিসেম্বর ১৮৪১ খ্রি
প্রকাশনা স্থান৪১ নং চাঁপাতলা লেন
সম্পাদনাযোগেন্দ্রচন্দ্র বসু
সহযোগীউপেন্দ্রনাথ সিংহরায়
প্রাচীন বঙ্গবাসী পত্রিকা

ভূমিকা :- সুলভ বাঙলা সংবাদপত্র প্রচার বিষয়ে ‘বঙ্গবাসী’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠা। এই ব্যাপারে বাঙালিরাই সবিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন ও সাফল্য লাভ করেছেন। লর্ড রিপণের শাসনকানে কতকগুলি স্বাধীনচিত্ত দেশহিতৈষী মহাত্মার ঘরে এই পত্র প্রথম প্রকাশিত হয়।

বঙ্গবাসী পত্রিকার প্রথম প্রকাশ

১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর যোগেন্দ্রচন্দ্র বসুর সম্পদনায় ৪১নং চাঁপাতলা ফাস্ট লেন থেকে ‘বঙ্গবাসী’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়।

বঙ্গবাসী পত্রিকার সম্পাদক ও সহযোগী

অক্ষয়চন্দ্র সরকারের ‘সাধারনী’ নামে পত্রিকার দ্বারা অনুপ্রানীত হয়ে এই পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকার সহ সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন যোগেন্দ্রচন্দ্র বসু। যোগেন্দ্রচন্দ্র বসুর সহযোগী ছিলেন উপেন্দ্রনাথ সিংহ রায়।

বঙ্গবাসী পত্রিকার সাথে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ

মহাত্মার মধ্যে শ্রীযুক্ত উপেন্দ্রকৃষ্ণ সিংহ রায় এবং এর বর্তমান সম্পাদক ও স্বত্বাধিকারী যোগেন্দ্রচন্দ্র বসুর নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।

ক্ষমতাশালী পত্রিকা বঙ্গবাসী

জন্মাবধি এর প্রবন্ধাবলী পাঠকদিগের চিত্তাকর্ষণ করতে লাগল এবং এটি শীঘ্রই প্রতিষ্ঠাসম্পন্ন ও ক্ষমতাশালী হয়ে উঠল।

বঙ্গবাসী পত্রিকার গ্ৰাহক

এই পর্যন্ত কোনো সংবাদপত্রের ভাগ্যে যা ঘটে নি, এর ভাগ্যে তাই ঘটল, বাঙলা সংবাদপত্রের ইতিহাসে যা হয় নি, এর ক্ষেত্রে তাই হল। বঙ্গবাসী ১৫-২০ হাজার নিয়মিত গ্রাহক সংগ্রহ করতে সমর্থ হল। এই অসাধারণ সমৃদ্ধির প্রধান কারণ যোগেন্দ্রচন্দ্র বসুর সুদক্ষতা।

বঙ্গবাসী পত্রিকার লেখক

তাঁর সুদক্ষ পরিচালন গুণে কেবল যে কাগজখানি অশ্রুতপূর্ব ও অতুলনীয় মর্যাদা ও সমৃদ্ধি লাভ করেছিল তাই নয়, অক্ষয়চন্দ্র সরকার, শ্রীযুক্ত চন্দ্রনাথ বসু, শ্রীযুক্ত ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি সুলেখকগণ এর সাথে এক মতাবলম্বী হয়ে বঙ্গবাসীর উন্নতির জন্য কায়মনোবাক্যে চেষ্টা করেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ প্রসন্ন সেন ওরফে কৃষ্ণানন্দ স্বামীও কিছুদিন এই পত্রিকায় লিখেছিলেন।

বঙ্গবাসী পত্রিকার হিন্দু ধর্মের প্রচার ও ব্যাখ্যা প্রকাশ

হিন্দুধর্মের পক্ষাবলম্বন হেতু বহুসংখ্যক শিক্ষিত লোক এর সাথে যোগদান করেন। এই সময়ে সুপ্রসিদ্ধ পণ্ডিত শ্রীযুক্ত শশধর তর্কচূড়ামণি এমন ভাবে হিন্দুধর্মের প্রচার ও ব্যাখ্যা করতে লাগিলেন যে, তাঁর ভক্তগণ তাঁকে বৈজ্ঞানিক আখ্যা প্রদান করলেন। সেই সমস্ত ব্যাখ্যা বঙ্গবাসীতে প্রকাশিত হতে লাগল। হিন্দুধর্মের বর্তমান ভাব এই অভিনব প্রণালীর প্রচারে যেন নববলে বলীয়ান হয়ে উঠল।

বঙ্গবাসী পত্রিকার প্রসার বৃদ্ধি

এইরূপে দিন দিন বঙ্গবাসীর প্রসার বৃদ্ধি হতে লাগল। বাংলায় যা কখনও হয় নি, তাই হল। সুদূর পল্লীগ্রামবাসীরা, অশিক্ষিত দোকানদারেরা, এমন কি মফঃস্বলে ফেরিওয়ালারা পর্যন্ত বঙ্গবাসী পাঠ করতে বা তার পাঠ শ্রবণ করতে লাগল।

বঙ্গবাসী পত্রিকার রাজনৈতিক কাজ

এই সময়ে বঙ্গবাসী “ইণ্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস” নামে সভার কোনো কোনো কার্য ও প্রণালীর দোরোদ্ঘাটন করে এবং তার অমিতব্যয়িতার উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে প্রবন্ধ প্রকাশ করতে লাগল।

বঙ্গবাসী পত্রিকার গুরুত্ব

প্রথম সংখ্যা থেকেই পত্রিকাটি বাঙালির মন আকর্ষণ করে নিয়েছিল। ক্রমে বাংলার জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকায় পরিণত হয়েছিল ‘বঙ্গবাসী’। সেই সময়ের বাংলার সেরা লেখকেরা এই পত্রিকায় লিখেছেন। বঙ্গবাসী রাজদ্রোহের অপরাধে অপরাধী হয়েছিল। ‘মনিপুর বিদ্রোহ’ এবং ‘consent act’ যা বঙ্গবাসীতে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে দেশময় ঝড় উঠেছিল ৷ ‘বঙ্গবাসী’র দ্বারা উদ্দীপিত বালগঙ্গাধর তিলক কেশরী পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন। বঙ্গবাসীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে সঞ্জীবনী পত্রিকা ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে হিতবাদী পত্রিকা, ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে বসুমতী পত্রিকার আবির্ভাব ঘটে।

উপসংহার :- বঙ্গবাসী পত্রিকার গুরুত্ব বিবেচনা করে অপর পক্ষীয়েরা বঙ্গবাসীর প্রতি বিরূপ হলেন এবং এমন একখানি কাগজের অভাব অনুভব করতে লাগলেন, যা রাজনৈতিক বিষয়ে বঙ্গবাসীর বিপরীত মতাবলম্বী হবে।

(FAQ) ভারতের প্রাচীন বঙ্গবাসী পত্রিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. বঙ্গবাসী পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয় কখন?

১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর।

২. বঙ্গবাসী পত্রিকা কার সম্পাদনায় প্রথম প্রকাশিত হয়?

যোগেন্দ্রচন্দ্র বসুর সম্পদনায়।

৩. বঙ্গবাসী পত্রিকা কোথা থেকে প্রকাশিত হয়?

৪১নং চাঁপাতলা ফাস্ট লেন থেকে।

৪. শশধর তর্কচূড়ামণি এমন ভাবে হিন্দুধর্মের প্রচার ও ব্যাখ্যা প্রকাশিত হয় কোন পত্রিকায়?

বঙ্গবাসী পত্রিকায়

অন্যান্য পত্রিকাগুলি

Leave a Comment