রমেশচন্দ্র দত্ত

একজন বিশিষ্ট বাঙালি লেখক, ইতিহাসবিদ, অর্থনীতিবিদ ও প্রশাসক ছিলেন রমেশচন্দ্র দত্ত (১৮৪৮–১৯০৯)। তিনি ব্রিটিশ আমলে আই.সি.এস. কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন এবং ভারতের অর্থনৈতিক ইতিহাস ও ব্রিটিশ শাসনের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে “The Economic History of India”, যেখানে তিনি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের ফলে ভারতের আর্থিক শোষণের বিষয়টি তুলে ধরেন। সাহিত্যেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, যার মধ্যে রয়েছে বাঙালির মহাকাব্য “মহাভারত” ও “রামায়ণ”-এর সহজ বর্ণনা। সমাজসংস্কার, শিক্ষাবিস্তার ও ইতিহাসচর্চায় তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়।

ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র দত্ত

ঐতিহাসিক চরিত্ররমেশচন্দ্র দত্ত
জন্ম১৩ আগস্ট, ১৮৪৮ খ্রি
জন্মস্থানকলকাতা, ব্রিটিশ ভারত
পেশালেখক, ইতিহাসবিদ, অর্থনীতিবিদ, প্রশাসক, সমাজসংস্কারক
বিখ্যাত গ্রন্থThe Economic History of India
প্রশাসনিক ভূমিকাআই.সি.এস. কর্মকর্তা
সাহিত্যিক অবদানরামায়ণ ও মহাভারত-এর অনুবাদ
মৃত্যু৩০ নভেম্বর, ১৯০৯ খ্রি
রমেশচন্দ্র দত্ত

ভূমিকা :- ব্রিটিশ যুগের বিখ্যাত সিভিলিয়ান রমেশচন্দ্র দত্তের খ্যাতি কেবল দক্ষ প্রশাসক হিসেবে নয়, তিনি ছিলেন একাধারে প্রসিদ্ধ সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক ও স্বদেশানুরাগী। এই গুণাবলীর পরিচয় ছেলেবেলাতেই তাঁর চরিত্রে পরিস্ফুট হয়েছিল।

ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র দত্তর অগ্রজের লেখা

রমেশচন্দ্রের অগ্রজ যোগেশচন্দ্রের স্মৃতিচারণ থেকে রমেশচন্দ্রের বাল্য বয়সের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি লিখেছেন “পিতা কার্যোপলক্ষে বাংলার নানাস্থানে ভ্রমণ করিতেন। আমরাও তাঁহার সহিত ভাগলপুর, খুলনা, পাবনা প্রভৃতি অঞ্চলে বসবাস করিয়াছিলাম। পাবনাতে থাকাকালীন আমরা ঘোড়ায় চড়িতে শিখি। জিন না থাকাতে তাহার পিঠে গদি বাঁধিয়া লইয়া চড়িতাম। স্থানীয় নানা জায়গায় নানা স্কুলে আমাদের পড়িতে হইয়াছিল। পাবনা হইতে আসার সময় কিছুদিন পূর্বে এক আকস্মিক ঘটনায় রমেশচন্দ্রের প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ও কর্মতৎপরতার পরিচয় পাওয়া গিয়াছিল। একদিন আমরা অপর দুটি বালকের সহিত মিলিয়া খেলা করিতেছিলাম। একটি বড় কাঠের বাক্স পড়িয়াছিল। একজন করিয়া উহার মধ্যে প্রবেশ করিতেছিলাম আর সকলে উহার উপরের ডালাটি বাহির হইতে বন্ধ করিয়া শিকল আঁটিয়া দিতেছিল। একবার আমি যখন ভিতরে ঢুকিলাম অন্যেরা ডালা বন্ধ করিয়া দিল। অমনি আমার দম বন্ধ হইবার উপক্রম হইল। আমি সত্বর ভিতর হইতে ভীষণ চিৎকার করিতে লাগিলাম এবং মাথা দিয়া ডালাটিতে ধাক্কা মারিতে লাগিলাম। কিন্তু যতই এরূপ ধাক্কা দিতেছি ততই বাহিরের শিকল বসিয়া যাইতেছে। সুতরাং বালকেরা আর উহা সহজে খুলিতে পরিতেছে না। রমেশ এই সময় একটু তফাতে ছিল। আমার চিৎকার শুনিয়া দৌড়াইয়া আসিয়া ব্যাপার বুঝিয়া অমনি বাক্সর ডালার উপর, চাপিয়া বসিল। ইহাতে শিকলটি আলগা হইয়া পড়িল। তখন অনায়াসে শিকল খুলিয়া আমাকে খালাস করিয়া দিল। আমি হাঁফ ছাড়িয়া বাঁচিলাম।” এই বালকই বড় হয়ে স্বীয় চরিত্র মাধুর্য, ব্যক্তিত্ব ও কৃতিত্ব বলে দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন।

রমেশচন্দ্র দত্তর জন্ম

১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ আগস্ট উত্তর কলকাতার প্রসিদ্ধ দত্ত বংশে রমেশচন্দ্রের জন্ম হয়।

ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র দত্তর পরিবার

তাঁর পিতা ঈশানচন্দ্র ছিলেন ডেপুটি কালেক্টর। কার্যোপলক্ষে দেশের নানা স্থানে তাঁকে ভ্রমণ করতে হত। মাত্র তেতাল্লিশ বছর বয়েস ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে আকস্মিক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। রমেশচন্দ্রের মাতা ঠাকুরমণি স্বামীর মৃত্যুর দুই বছর আগেই পরলোক গমন করেছিলেন। পিতা-মাতা হারা কিশোর রমেশচন্দ্র এরপর তাঁর কাকা শশিচন্দ্রের অভিভাবকত্বে ও স্নেহ-যত্নে মানুষ হতে থাকেন। শশিচন্দ্র ছিলেন বিদ্যানুরাগী ও লেখক। সেই যুগে ইংরাজিতে ঐতিহাসিক গ্রন্থ লিখে তিনি সুখ্যাত হয়েছিলেন। তাঁর রচিত ঐতিহাসিক গ্রন্থাবলীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ Ancient World, Modern World এবং Bengal। তাঁর এই রচনাবলীর প্রভাব রমেশচন্দ্রের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়েছিল।

রমেশচন্দ্র দত্তর শিক্ষা

  • (১) শশিচন্দ্র তাঁর পিতৃহারা ভ্রাতুষ্পুত্রদের বিদ্যাশিক্ষার প্রতি বিশেষ যত্ন নিয়েছিলেন। সময় সময় তিনি নিজেও বালকদের ইংরাজি গল্প ও কবিতা গ্রন্থ পড়ে শোনাতেন। বর্তমান হেয়ার স্কুলের তখন নাম ছিল কলুটোলা ব্রাঞ্চ স্কুল। এই স্কুলেই রমেশচন্দ্রের শিক্ষা আরম্ভ হয় এবং এখান থেকেই ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে বৃত্তি সহ এন্ট্রাস পাস করেন। এই সময়ই মাত্র যখন পনের বছর বয়স, রমেশচন্দ্রের বিবাহ হয়। তাঁর স্ত্রীর নাম মোহিনী বসুজা।
  • (২) এন্ট্রান্স পাস করার পর রমেশচন্দ্র ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে এখান থেকে তিনি জুনিয়র ও সিনিয়র স্কলারশিপ নিয়ে এফ. এ. পাশ করেন। মাত্র এক নম্বরের জন্য এই পরীক্ষায় তিনি প্রথম হতে পারেন নি। প্রেসিডেন্সি কলেজ-এ বি.এ পড়ার সময় তাঁর সহপাঠী ছিলেন বিহারীলাল গুপ্ত , সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।

ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র দত্তর বিলাত যাত্রা

তাঁরা যখন চতুর্থ বার্ষিক শ্রেণীর ছাত্র সেই সময় তিন বন্ধু মিলে ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে একরকম অভিভাবকদের অগোচরেই বিলাত যাত্রা করেন। এই দুঃসাহসিক সমুদ্রযাত্রার কথা রমেশচন্দ্র পরে তাঁর অগ্রজ যোগেশচন্দ্রকে লিখে জানান। তিনি লেখেন, “আত্মীয়স্বজনকে পরিত্যাগ করিয়া ৩ মার্চ সকাল আটটায় আমরা কলিকাতা হইতে এক স্টিমারে হুগলি নদীর উপর দিয়া ডায়মণ্ডহারবার অভিমুখে যাত্রা করিলাম। ঐখানে আমাদের মুলতান নামক এক ডাক সরবরাহকারী জাহাজে চড়িতে হইবে। ক্রমশঃ বিশাল হুগলী নদীর মধ্যে আসিয়া পড়িলাম। নদীর উভয় তীরে বহু তাল, খেজুর, নারিকেল প্রভৃতি সুন্দর তরুরাজি, কানন শোভিত কুটির, পল্লীসমূহ পরিত্যাগ করিয়া জন্মভূমির নিকট বিদায় লইয়া আমরা মূলতান নামক জাহাজে চড়িলাম। নীরব নিশিথে জাহাজের ডেকে আসিয়া সহসা মনে হইল আত্মীয়স্বজন সুহৃদ বন্ধু কাহাকেও কিছু না বলিয়া স্বগৃহ ও স্বদেশ পরিত্যাগ করিয়া সকল আশা বিসর্জন দিয়া, বিদেশে চলিয়াছি-কি আশায়? আমাদের অভিপ্রায় পূর্বে ঘুণাক্ষরে প্রকাশিত হইলে কখনই আসা ঘটিয়া উঠিত না। অভিভাবকগণ কখনই আমাদিগকে সমুদ্রযাত্রায় অনুমতি দিতেন না। আমরা চলিয়াছি এক বিষম দুঃসাধ্য সাধনে। দুরাশায় বুক বাঁধিয়া আমরা এই অকূল পাথারে ভাসিয়াছি। আমাদের এ আশা কি ফলবতী হইবে? না আমরা হতাশ্বাস হইয়া দারিদ্র্য, দুঃখ বহন করিয়া, কলঙ্কের ডালি মাথায় লইয়া দেশে ফিরিব। সমুদ্রের নীল জল ক্রমশঃ অন্ধকারাবৃত হইয়া ধীর গম্ভীর শ্রী ধারণ করিতে লাগিল। আর আমাদের মনও উক্তরূপ অন্ধকারাবৃত ভবিষ্যৎ ভাগ্যের ভীষণ চিন্তাবশে যেন ততোধিক নৈরাশ্যবিষাদে নিমগ্ন হইয়া আসিল।”…. আজ ভাবলে বিস্মিত হতে হয়, অন্তরে উচ্চাভিলাষ ও জ্ঞানার্জনের আকাঙ্ক্ষা কতটা তীব্র হলে বাড়ির অভিভাবকদের অগোচরে এভাবে দুস্তর সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে অজানা অচেনা দেশ বিলাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা সম্ভব। সেদিন এই অবিশ্বাস্য দুঃসাহসিক কাজটি তিন বন্ধু মিলে করেছিলেন।

সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় রমেশচন্দ্র দত্ত

  • (১) অদম্য সাহস ও অবিচল নিষ্ঠার পুরস্কারও তারা যথাসময়ে লাভ করেছিলেন। প্রচণ্ড পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে এক বছর পড়াশুনা করে তিন বন্ধু ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসলেন। রমেশচন্দ্রের বিষয় ছিল ইংরাজি সাহিত্য, ইতিহাস ও রচনা, গণিত মনোবিজ্ঞান, প্রকৃতিবিজ্ঞান ও সংস্কৃত।
  • (২) রমেশচন্দ্রদের সঙ্গে আরও ভারতীয় ও অনেক ইংরাজ ছাত্র পরীক্ষার্থী ছিল। তাদের অধিকাংশই লন্ডন ইউনিভার্সিটি অক্সফোর্ড অথবা কেমব্রিজ কলেজে শিক্ষালাভ করেছে। প্রখর বুদ্ধিবৃত্তি ও শিক্ষনীয় বিষয়ে গভীর ও বিভিন্নমুখী জ্ঞান না থাকলে সিভিল সার্ভিসের মতো প্রতিযোগিতা মূলক কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া অসম্ভব হত।
  • (৩) ইংরাজি ভাষায় মোট ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪২০ নম্বর পেয়ে রমেশচন্দ্র ৩২৫ জন ছাত্রের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। ভারতীয় প্রাচীন ভাষা সংস্কৃতেও ৫০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছিলেন ৪৩০।
  • (৪) বলাই বাহুল্য, তৎকালীন ভারতীয় ছাত্রদের স্বপ্ন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় রমেশচন্দ্র সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তাঁর অপর দুই বন্ধু, সুরেন্দ্রনাথ ও বিহারীলালের নামও উত্তীর্ণ ছাত্রদের তালিকায় একই সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছিল। তিন বন্ধুর স্বজন স্বদেশ পরিত্যাগ করে বিলাতে আসা এভাবে সার্থক হয়েছিল।
  • (৫) সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রবর্তন হয় ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে। প্রতিযোগিতামূলক এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্ররা ভারতে উচ্চ রাজপদে চাকুরি লাভ করতেন। ভারতীয়দের মধ্যে বাঙ্গালী ছাত্ররাই সর্বপ্রথম এই দুরূহ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভারতীয়দের জন্য এক নতুন পথের দিকদিশারী হবার কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন।
  • (৬) ভারতীয় ছাত্রদের মধ্যে একমাত্র সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আই সি এস হন। তারপর ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে এই গৌরব লাভ করেন রমেশচন্দ্র দত্ত, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধায় ও বিহারীলাল গুপ্ত।
  • (৭) উত্তরকালে এই তিন যুবক জীবনের স্ব স্ব ক্ষেত্রে অসাধারণ কৃতিত্ব প্রদর্শন করে দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। দেশহিতৈষণা, অসাধারণ বাগ্মিতা ও ধুরন্ধর রাজনীতিজ্ঞ হিসাবে সুরেন্দ্রনাথ গুণমুগ্ধ দেশবাসী কর্তৃক রাষ্ট্রগুরু অভিধায় ভূষিত হয়েছিলেন। ভারতের জাতীয় ইতিহাসে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত রয়েছে। ভারতের প্রাতঃস্মরণীয় মনীষীদের মধ্যে সুরেন্দ্রনাথ অন্যতম।
  • (৮) বিহারীলাল গুপ্তও কলকাতা হাইকোর্ট-এর বিচারপতির পদ অলঙ্কৃত করে সম্মান ও প্রতিপত্তি লাভ করেছিলেন। চরিত্রের দৃঢ়তা, উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব ও নানা সদগুণাবলীর দ্বারা তিনি স্বদেশবাসীর শ্রদ্ধালাভ করেছিলেন। রাজকীয় উচ্চপদে কর্মনিযুক্ত থাকলেও রমেশচন্দ্রের প্রতিভা বিভিন্নমুখী কাজে উদ্ভাসিত হয়েছিল।
  • (৯) দেশহিতৈষণা ও নানা সমাজ কল্যাণকর কাজে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। ভারতীয় সভ্যতা-সংস্কৃতির ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক বেদ, উপনিষদ, পুরাণ প্রভৃতি বিষয়ে তাঁর সুগভীর জ্ঞান ও পাণ্ডিত্য ছিল অসাধারণ। গবেষণামূলক ইতিহাস গ্রন্থ রচনা করে তিনি বঙ্গ ভারতীয় ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করেছেন।

রমেশচন্দ্র দত্তর রাজকীয় কর্মজীবন

আই সি এস হবার পরে আবও কয়েক মাস রমেশচন্দ্র ইংল্যান্ড-এ থেকে ইউরোপ-এর বিভিন্ন ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থান, খ্যাতনামা মনীষীদের জন্মস্থান পরিদর্শন করেন। সেই বছরেই আলিপুরের অ্যাসিসটেন্ট ম্যাজিস্ট্রেটের পদে যোগ দিয়ে রাজকীয় কর্মজীবন শুরু হয় রমেশচন্দ্রের। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম ভারতীয় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হন। ১৮৯৪-৯৭ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ভারতীয় অস্থায়ী বিভাগীয় কমিশনার হয়েছিলেন। কর্মসূত্রে তাঁকে নানাস্থানে ঘুরতে হত। প্রশাসনিক দায়িত্ব নিয়ে যখন যেখানে গেছেন, স্বীয় কর্মদক্ষতা ও চরিত্রমাধুর্যে স্থানীয় সকল মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা অর্জন করেছেন।

দেশের কাজে রমেশচন্দ্র দত্ত

সরকারী দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি স্বদেশের কাজে ও দেশবাসীর সেবায় নিষ্ঠা সহকারে কাজ করেছেন। স্বদেশী শিল্পের পুনরুজ্জীবন, উন্নতি সাধন এবং স্বদেশজাত দ্রব্যের ব্যবহার বিষয়ে তিনি সর্বদা সচেষ্ট থেকেছেন। সকল স্থানে প্রজাদের মঙ্গল সাধনের চেষ্টায় তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে বরিশালের (বর্তমান বাংলাদেশ) সাহাবাজপুর মহকুমা প্রবল বন্যা ও পরে দুর্ভিক্ষ মহামারীর কবলিত হয়।

দুর্গতের সেবায় রমেশচন্দ্র দত্ত

সেই সময়ে রমেশচন্দ্র মেহেরপুরে কর্মনিযুক্ত ছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে দুর্ভিক্ষ ও মহামারী কবলিত সাহাবাজপুরে প্রেরণ করা হয়। সাহাবাজপুর হল বরিশাল জেলার দক্ষিণে গঙ্গাসাগর সঙ্গমের কাছে একটি দ্বীপ। চল্লিশ হাজার লোকের বসতি এখানে। প্রবল ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে অধিবাসীরা চরম বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছিল। রমেশচন্দ্র এই সময় দুর্গতের সেবায় আত্মনিয়োগ করে অসাধারণ কর্মদক্ষতা ও সহৃদয়তার পরিচয় দিয়েছিলেন। তাঁর এই কাজের জন্য সমগ্র বরিশালবাসী তাঁকে অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন।

রমেশচন্দ্র দত্তর বর্ণনায় সাহবাজপুরের দুর্যোগ

পরে এই স্থানের অভিজ্ঞতার বর্ণনা তিনি লিপিবদ্ধ করেন তাঁর Rambles in India গ্রন্থে। তিনি লিখেছেন, “৩১শে অক্টোবর, ১৮৭৪ খ্রিঃ পরপর প্লাবনে দক্ষিণ সাহাবাজপুর মহকুমা ভাসিয়া গেল। সাহাবাজপুর পৌঁছিয়া যে ভীষণ দৃশ্য দেখিলাম তাহা আর এ জীবনে ভুলিবার নহে। যুদ্ধাবসনে কোন যুদ্ধক্ষেত্রের দৃশ্যও অতটা বিষাদ ও রোমহর্ষক নহে। এমন কোন পরিবার নাই যাহাদের মধ্যে একজনও মারা যান নাই। শতশত শবদেহ পড়িয়া রহিয়াছে। চারিদিক পৃতিগন্ধে পরিপূর্ণ। উক্ত মহকুমার হতভাগ্য ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মহাশয় ও তাঁর অভাগিনী পত্নী কোনও এক বৃক্ষচূড়া আশ্রয় করিয়া কোনও রূপে রাত্রি যাপন করিয়াছিলেন। তাঁহাদের পরিবারের সবাই ভাসিয়া গিয়াছিল। ঐরূপ পরিস্থিতির মধ্যে কৃষ্ণনগর হইতে ঐ ভীষণ শ্মশানক্ষেত্রের ভারপ্রাপ্ত হইলাম। আদালত গৃহ ভাসিয়া গিয়াছে। চৌকিদারগণ কাজে অনুপস্থিত। সর্বত্রই এক বিশৃঙ্খলা। এত সংখ্যক শবদাহ করা এ সময়ে অসম্ভব। যাঁহাদের কিছুটা বাঁচিয়া গিয়াছে তাঁহারা নিজেদের কুটির নির্মাণে ব্যস্ত। মৃতের সৎকার কে করিবে? যাহার যাহা গিয়াছে তাহা গিয়াছে। যে যাহা পাইয়াছে তাহা লইয়াছে। স্বর্ণ রৌপ্যের অলঙ্কারপূর্ণ সিন্ধুক ভাসিয়া গিয়াছে। প্রচুর অভিযোগ আসিতে লাগিল। এর জিনিস সে পাইয়াছে। একে অন্যের গবাদীপশু লইয়াছে ইত্যাদি। কাহাকেও অপরাধী করা অসঙ্গত মনে করিয়া সবাই একমত হইয়া নিয়ম নির্দ্ধারণ করিল-যাহারা ওইসব সম্পত্তি সরকারের কাছে জমা দিবে তার এক চতুর্থাংশ তাহারা পুরস্কার হিসাবে পাইবে। সব অভাব-অভিযোগই ধীরে ধীরে মিটিয়া গেল।”

স্বদেশের সেবায় রমেশচন্দ্র দত্ত

দক্ষিণ সাহাবাজপুরেই কেবল নয়, অন্যান্য বহু স্থানেই জনকল্যাণমূলক যে সব কাজ রমেশচন্দ্র করেছেন, তাতে তাঁর মহানুভবতা ও পরার্থপরতার পরিচয় পাওয়া যায়, তেমনি তাঁর কর্মদক্ষতা ও বিচক্ষণতারও প্রমাণ হয়। বস্তুত দেশের মানুষের হিতার্থে কাজ করাকে তিনি দেশসেবা বলেই মনে করতেন। সিভিল সার্ভিসে থাকাকালীন এভাবে সরকারী কাজের মধ্য দিয়েই রমেশচন্দ্র স্বদেশের সেবা করেছেন।

রমেশচন্দ্র দত্তর সাহিত্যচর্চা

  • (১) সরকারী চাকরিতে থাকলেও রমেশচন্দ্রের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল মাতৃভাষার সেবায় আত্মনিয়োগ করা। পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র যেভাবে সাহিত্য সাধনার মধ্য দিয়ে মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার সেবা করেছেন, রমেশচন্দ্রের মনেও সেই বাসনা সর্বদা জাগরুক ছিল। তাই দেখা যায়, সরকারী কাজে নানা জেলায় ও মহকুমায় কর্মরত অবস্থাতেও তিনি নিয়মিত সাহিত্যচর্চা করেছেন।
  • (২) বন্যার জলে প্লাবিত সাহাবাজপুরে প্রচন্ড কর্মব্যস্ততার মধ্যেও প্রতিদিনই সন্ধ্যাবেলা গ্রান্ট ডাফ রচিত মারাঠা জাতির ইতিহাসের পুস্তকে মগ্ন হয়ে থাকতেন। মারাঠা বীর শিবাজীর বীরত্বকাহিনী রমেশচন্দ্রের মধ্যে নতুন কর্মপ্রেরণার সঞ্চার করত। আবার যখন ত্রিপুরায় ছিলেন, সেখানে নিয়মিত পাঠ করেছেন টড সাহেবের লেখা রাজস্থানের ইতিহাস।
  • (৩) দিনের কর্মক্লান্তি এভাবে দেশী ও বিদেশী মনীষীদের রচিত ভারতের অতীত ঘটনাবলীর ইতিহাস পাঠের মধ্য দিয়ে দূর করতেন রমেশচন্দ্র। আসলে এভাবে সাহিত্যক্ষেত্রে আত্মপ্রকাশের পথ অনুসন্ধান করছিলেন তিনি। তাঁর বলার বিষয়ও অচিরেই রমেশচন্দ্রের মানসপটে উদিত হল। তিনি স্থির করলেন ভারতের প্রাচীন সভ্যতার গৌরবময় কাহিনী দেশবাসীর সামনে তুলে ধরবেন।

ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র দত্তর ইংরাজি বই প্রকাশ

১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে রমেশচন্দ্র প্রথম একটি ইংরাজি বই প্রকাশ করেন Three years in Europe। তাঁর এই বই, বিশেষতঃ ইংরাজি লেখার দক্ষতা গুণে বিশেষ প্রশংসা লাভ করে। বিদেশেও এই গ্রন্থের সমাদর হয়। রমেশচন্দ্রের রচনাশৈলীর প্রশংসা করে বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে বাংলা ভাষায় বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখার কথা বলেন।

উপন্যাস রচনায় রমেশচন্দ্র দত্ত

বঙ্কিমচন্দ্রের প্রেরণাতেই রমেশচন্দ্র এরপর থেকে বাংলা ভাষায় লিখতে শুরু করেন। ইতিহাসেই তাঁর দখল বেশি ছিল। তাই ইতিহাসাশ্রিত কাহিনী রচনাতেই তিনি প্রথমে হাত দিলেন। বাংলা ভাষায় তাঁর প্রথম উপন্যাস বঙ্গ বিজেতা। এরপর প্রকাশিত হয়, একে একে মাধবী কঙ্কন, মরারাষ্ট্র জীবনপ্রভাত ও রাজপুত জীবনসন্ধ্যা। ঐতিহাসিক উপন্যাস ছাড়া সামাজিক উপন্যাসও রচনা করেছেন রমেশচন্দ্র। পল্লীবাংলার সাধারণ মানুষের জীবন-চিত্র রচনায় তাঁর সৃষ্টিশীল প্রতিভা অধিকতর সাবলীল ও স্বচ্ছন্দ ছিল। সংসার, সমাজ প্রভৃতি তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস। ১৮৭৩-৭৪ খ্রিস্টাব্দে পাবনায় কৃষকপ্রজারা বিদ্রোহী (পাবনা বিদ্রোহ) হলে রমেশচন্দ্র তাদের সমর্থনে বেঙ্গল ম্যাগাজিন পত্রিকায় বহু ইংরাজি প্রবন্ধ লেখেন। এসব লেখা তিনি ARCYDAE ছদ্মনামে লিখতেন।

রমেশচন্দ্র দত্তর দ্বিতীয়বার বিলাত যাত্রা

১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে রমেশচন্দ্র প্রথম ভারতীয় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হন। তিন বছর পরে তিনি দ্বিতীয়বার বিলাত যান। ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে সি. আই. ই. উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেন। ১৮৯৪-৯৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম ভারতীয় অস্থায়ী বিভাগীয় কমিশনার ছিলেন। উচ্চপদ পেলেও, ভারতীয় বলেই কোনও পদেই তিনি স্থায়ী হতে পারছিলেন না।

সরকারী কাজে রমেশচন্দ্র দত্তর ইস্তফা

বিশেষতঃ কলকাতার ইংরাজি কাগজগুলোতেও ভারতীয়দের উচ্চপদে নিয়োগের বিরুদ্ধে লেখা হতে থাকে। সেই সময় দেশজুড়ে স্বদেশী আন্দোলন-এর সূত্রপাত্র হয়েছে। রমেশচন্দ্র সংকল্প করলেন কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির ক্রিড়নক না থেকে দেশ সেবার কাজে আত্মনিয়োগ করবেন। এই সিদ্ধান্তের পর ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি সরকারী কাজে ইস্তফা দেন।

রমেশচন্দ্র দত্তর প্রবাস জীবন

অবসর নেবার পর রমেশচন্দ্র বিলাতেই প্রবাসজীবন যাপন করতে থাকেন। এই সময়ে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস অধ্যাপনা করেন। সেই সঙ্গে ভারতীয় ইতিহাস ও অর্থনীতি সম্বন্ধে গবেষণা করেন। বিলাতে থাকাকালে ভারতের গৌরব রক্ষায় সর্বদাই সচেতন ও সচেষ্ট থাকতেন। তাঁর এই স্বদেশানুরাগ জাতীয় কংগ্রেসের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তাঁকে কংগ্রেস দলের অন্তর্ভুক্ত করে নেন।

কংগ্রেসের সভাপতি রমেশচন্দ্র দত্ত

১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে রমেশচন্দ্র কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। সেই বছরেই লখনউ কংগ্রেসে সভাপতির ভাষণে তিনি ভারতের জাতীয় কংগ্রেসকে ভারতবাসীর নিজস্ব রাজনৈতিক সংগঠন রূপে মেনে নেবার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেন।

রমেশচন্দ্র দত্তর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ

লেখক রমেশচন্দ্রের দেশপ্রেম ও স্বদেশের গৌরব প্রচারে তাঁর নিষ্ঠা ও একাগ্রতার পরিচয় দেশবাসী পেয়েছে ইতিপূর্বে প্রকাশিত তাঁর বিবিধ ইংরাজি বাংলা গ্রন্থের মাধ্যমে। সরকার কর্তৃক ভূমি রাজস্বের অপব্যবহার ও কৃষক বিদ্রোহের কারণ নির্ণয় করে রমেশচন্দ্র লেখেন Famines and Land Assesments in India এবং The Peasantry of Bengal। তাঁর লিখিত গ্রন্থে ব্রিটিশ সরকারের ভারত-শোষণ পদ্ধতি উদঘাটন করতেও দ্বিধা করেন নি রমেশচন্দ্র। এই বিষয়ে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ Economic History of British India. রমেশচন্দ্রের উল্লেখযোগ্য গবেষণামূলক ইতিহাস গ্রন্থ হল England and India-A Record of Progress during Hundred years 1785-1885, এবং Civilisation of Anccient India। সমগ্র ঋগ্বেদ-এর প্রথম বাংলায় অনুবাদও করেন রমেশচন্দ্র। এই অনুবাদ প্রকাশিত হয় ৮ খণ্ডে।

ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র দত্তর অবদানের স্বীকৃতি

দেশের গৌরব বৃদ্ধিতে রমেশচন্দ্রের অবদানের স্বীকৃতি জানাবার জন্য কলকাতাবাসী দুটি প্রকাশ্য সভায় তাঁকে সংবর্ধনা জানান ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে ৬ ও ২৩ শে জানুয়ারি।

অর্থমন্ত্রী রমেশচন্দ্র দত্ত

এরপর পুনরায় তিনি বিলাতে চলে যান। ফিরে আসেন ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে এবং বরোদারাজের আহ্বানে সেই রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেন। তিন বছর এই পদে থেকে তিনি বরোদা রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নতি বিধান করেন।

রমেশচন্দ্র দত্তর মৃত্যু

বরোদায় থাকাকালীনই রমেশচন্দ্র অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং দুই বৎসর চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ৩০শে নভেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

উপসংহার :- রমেশচন্দ্র স্কুলের উপযোগী করে বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের ইতিহাসও লেখেন। তাঁর রচিত মাধবীকঙ্কন ও সমাজ উপন্যাস দুটি যথাক্রমে Slave Girl of Agra এবং Lake of Palms নামে ইংরাজিতে অনুবাদ হয় এবং বিলাতে জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর লেখা কয়েকটি প্রবন্ধ বিশ্ববিখ্যাত কোষগ্রন্থ এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকাতেও স্থান পেয়েছে।

(FAQ) ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র দত্ত সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. রমেশচন্দ্র দত্ত কে ছিলেন?

রমেশচন্দ্র দত্ত ছিলেন একজন বাঙালি ইতিহাসবিদ, অর্থনীতিবিদ, লেখক ও ব্রিটিশ আমলের প্রশাসক। তিনি ভারতীয় অর্থনৈতিক ইতিহাস ও ব্রিটিশ শাসনের প্রভাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন।

২. তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত রচনা কোনটি?

তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত রচনা হলো “The Economic History of India”, যেখানে তিনি ব্রিটিশ শাসনের ফলে ভারতের অর্থনৈতিক শোষণ বিশ্লেষণ করেছেন।

৩. তিনি কিভাবে সাহিত্যক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন?

তিনি মহাভারত ও রামায়ণের বঙ্গানুবাদ করেছেন, যা সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য ও জনপ্রিয় হয়।

৪. রমেশচন্দ্র দত্ত কীভাবে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অবদান রেখেছিলেন?

তিনি ব্রিটিশ ভারতের সিভিল সার্ভিসের (আই.সি.এস.) কর্মকর্তা ছিলেন এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে দক্ষতার সাথে কাজ করেন।

৫. তাঁর লেখার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কী ছিল?

তাঁর লেখার মূল প্রতিপাদ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের ফলে ভারতের অর্থনৈতিক দুরবস্থা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি পুনরুদ্ধার, এবং সমাজসংস্কার।

৬. রমেশচন্দ্র দত্ত কখন এবং কোথায় মারা যান?

তিনি ৩০ নভেম্বর, ১৯০৯ সালে ইংল্যান্ডের বরনমাউথে মারা যান।

Leave a Comment