ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

একজন প্রভাবশালী বাঙালি ধর্মতাত্ত্বিক, দার্শনিক এবং ব্রাহ্মসমাজের সংস্কারক ছিলেন ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় (১৮৬১-১৯০৭)। হিন্দু ও খ্রিস্টধর্মের মেলবন্ধনে বিশ্বাসী এই চিন্তাবিদ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি “সophiamangala” নামক পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করে ভারতের জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মীয় সংস্কার নিয়ে কাজ করেন। ব্রহ্মবান্ধবের চিন্তা এবং কর্মধারা হিন্দু ধর্মে মানবিক মূল্যবোধ ও খ্রিস্টীয় নীতিশিক্ষার মিশ্রণ ঘটিয়ে নতুন দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছিল।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

ঐতিহাসিক চরিত্রব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়
জন্ম১১ ফেব্রুয়ারি, ১৮৬১ খ্রি
জন্মস্থানখুলনা, বর্তমান বাংলাদেশ
পেশাধর্মতাত্ত্বিক, দার্শনিক, ব্রাহ্ম সমাজ সংস্কারক
ধর্মীয় ধারাব্রাহ্মধর্ম, হিন্দু ধর্ম
উল্লেখযোগ্য দৃষ্টিভঙ্গিহিন্দু ও খ্রিস্টধর্মের মেলবন্ধন
বিখ্যাত কাজব্রাহ্ম সমাজে সংস্কার আনা, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে অংশগ্রহণ
প্রতিষ্ঠিত প্রত্রিকাসফলযান, সন্ধ্যা
মৃত্যু২৭ অক্টোবর, ১৯০৭, ভারত
ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

ভূমিকা :- ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়, আসল নাম ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন একাধারে নবীন বাংলার বিপ্লবগুরু, সমাজ সংস্কারক ও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি। বাংলায় নতুন যুগে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছিলেন যে সকল মহাপ্রাণ পুরুষ, তিনি ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের জন্ম

হুগলী জেলার অন্তর্গত পান্ডুয়ার নিকটবর্তী খন্নান গ্রামে ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি ব্রহ্মবান্ধবের জন্ম হয়। তাঁর পিতার নাম দেবীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পিতার কনিষ্ঠ পুত্র ভবানীচরণ। পরবর্তীকালে উপাধ্যায় ব্রহ্মবান্ধব নামেই তিনি খ্যাতি লাভ করেন।

দার্শনিক ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের শৈশব

শিশুকালেই ভবানীচরণের মাতৃবিয়োগ হয়। ফলে পিতামহীর আদরে যত্নে বড় হয়ে ওঠেন তিনি। সম্ভবতঃ একারণেই, পিতামহীর স্নেহ প্রশ্রয়ে তাঁর স্বভাব হয়ে উঠেছিল অতি দুরন্ত ও অশান্ত। পরবর্তী জীবনেও তাঁর ব্যক্তিত্বে এই অশান্তভাব বর্তমান ছিল।

পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনের স্বপ্ন দেখতেন ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

মাত্র চোদ্দ বছর বয়সেই মাতৃভূমির পরাধীনতার গ্লানি দূর করার, শৃঙ্খল মোচনের স্বপ্ন দেখতেন ভবানীচরণ। সেই সময়ে পরাধীন ভারতের দিকে দিকে নবজাগরণ-এর ঢেউ। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনন্দমোহন বসু প্রমুখ বক্তৃতা করে দেশের পরিস্থিতি জনসাধারণের সামনে তুলে ধরছেন। তাঁদের জ্বালাময়ী সে সকল ভাষণে থাকত মাতৃভূমির শৃঙ্খল মোচনের ডাক। দূর দূর অঞ্চলে গিয়ে এই দেশনেতাদের বক্তৃতা শুনতে ভবানীচরণের ক্লান্তি ছিল না। নাওয়া-খাওয়া ভুলে, ঘন্টার পর ঘণ্টা তিনি বক্তৃতা শুনতেন।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের শিক্ষা

  • (১) ছেলেবেলায় ঠাকুমার কোলে বসে রামায়ণ মহাভারতের কাহিনী, গ্রাম্য-ছড়া হেঁয়ালি ইত্যাদির মধ্য দিয়ে ভবানীচরণের বাল্যশিক্ষা আরম্ভ হয়েছিল। পরে গ্রামের পাঠশালায়, ছয় বছর বয়সে তাঁকে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়। অসাধারণ মেধাবী ছিলেন ভবানীচরণ। একবার যা পড়তেন সহজে তা ভুলতেন না। বাল্য বয়স থেকেই ইংরাজি ভাষায় অসাধারণ দখল ছিল তাঁর।
  • (২) স্কুলে পড়াশুনার সঙ্গে সঙ্গেই চলত দুষ্টুমি। সহপাঠী বন্ধুদের মধ্যে ভবানীচরণ ছিলেন দলনেতা। পাঠশালার পরে চুঁচুড়ার হিন্দুস্কুলে ও হুগলী ব্রাহ্মস্কুলে পড়াশুনা করেন তিনি। সব স্কুলেই পরীক্ষায় প্রথম স্থানটি ছিল তাঁর বাঁধা। একারণে ছাত্র শিক্ষক সকলেরই প্রিয়পাত্র ছিলেন তিনি।
  • (৩) সেই সময়েই ভবানীচরণের মধ্যে উত্তর কালের দেশনেতার আভাস স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। তেরো বছর বয়সে উপনয়নের পরে ভবানীচরণ আমিষ আহার ত্যাগ করে পুরোপুরি নিরামিষাশী হন। প্রবেশিকা পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হবার পর ভাটপাড়ায় টোলে সংস্কৃত ব্যাকরণ ও সাহিত্য অধ্যয়ন করেন।

পান্ডিত্য ও ব্যক্তিত্বের সমন্বয়ে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

সহজাত দুরন্তপনার মধ্যদিয়েই সুগঠিত শরীর ও অসাধারণ শক্তি অর্জন করেছিলেন ভবানীচরণ। সুদৃঢ় শরীরে ছিল বুক ভরা সাহস। অসাধারণ এই শক্তি ও সাহসের সঙ্গে পান্ডিত্য ও ব্যক্তিত্বের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছিলেন ভবানীচরণ।

আনন্দমোহন বসুর কাছে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের আগমন

সেই সময়ে কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন আনন্দমোহন বসু। ভবানীচরণের যখন সতেরো বছর বয়স সেই সময় একদিন তিনি আনন্দমোহনের কাছে গিয়ে বললেন, কেবল কলমবাজি আর গলাবাজিতে দেশোদ্ধার হবে না। ভারত উদ্ধার করতে হলে চাই তুখোড় তরোয়ালবাজি। সেই বয়সেই ভবানীচরণ বুঝতে পেরেছিলেন শক্তি প্রয়োগ ছাড়া ভারতবর্ষকে ইংরাজদের কবলমুক্ত করা যাবে না। কেবল বক্তৃতা আর গলাবাজিতে ভারত স্বাধীন হবার নয়।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের গৃহত্যাগ

সশস্ত্র বিপ্লবই ছিল ভবানীচরণের আদর্শ। তাই সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ইত্যাদির সঙ্গে সামিল হয়ে আন্দোলন করা তাঁর পোষাল না। তিনি স্থির করলেন সৈনিক হবেন। সঙ্কল্প স্থির হলে, দেশ উদ্ধারের টানে একদিন গৃহত্যাগ করতেও তিনি দ্বিধান্বিত হলেন না। অন্তরে যার জেগে উঠেছে শৃঙ্খলিত ভারত মাতার স্বাধীন শক্তিরূপিনী প্রতিমূর্তি তার পক্ষে কোনো বন্ধনই তো বন্ধন নয়। তাঁর একমাত্র ব্রত সংগ্রাম-লক্ষ্য ভারতমাতার শৃঙ্খলমোচন। প্রত্যক্ষ সংগ্রামে নামতে হলে শক্তি সংগ্রহের প্রয়োজন। তাই তিনি স্থির করলেন বাড়ি থেকে পালিয়ে পশ্চিমে কোনো দেশীয় রাজার সৈন্যবাহিনীতে যোগ দিয়ে যুদ্ধবিদ্যায় শিক্ষা নেবেন। সঙ্কল্প কার্যে রূপায়িত করতেও বিলম্ব হয় না। সবে সতেরো বছরে পা দিয়েছেন ভবানীচরণ। কলেজের নবীন ছাত্র।

গোয়ালিয়র রাজ্যের উদ্দেশ্যে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

  • (১) একদিন কলেজের দুমাসের মাইনে দশটাকা সম্বল করে তিনজন সঙ্গী জুটিয়ে গোয়ালিয়র রাজ্যের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। সঠিক পথের সন্ধান জানা নেই। ভাসা ভাসা একটা ধারণার ওপরে ভর করে ট্রেনে চেপে বসলেন চারবন্ধু। ইটাওয়া স্টেশনে নেমে জানা গেল, সেখান থেকে ৩৬ ক্রোশ পথ পায়ে হেঁটে যেতে হবে গোয়ালিয়র।
  • (২) কুছ পরোয়া নেই। বুকের ভেতরে দাউদাউ করে জ্বলছে ভারত উদ্ধারের সঙ্কল্প। চারজনে মিলে পায়ে হেঁটেই সেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করলেন। সময়টা ছিল গ্রীষ্মকাল। সহজেই এই চার বাঙালী যুবকের পথকষ্ট অনুমান করা সম্ভব। সমস্ত কষ্ট তুচ্ছজ্ঞান করে হৃদয়ে সিংহবলে বলীয়ান যুবকেরা পথে দুবার যমুনা ও চম্বল নদী পার হলেন।
  • (৩) সম্মুখে ধু ধু মাঠ, বালি আর কাঁটাঝোপে ভরা। ছাতু, গুড় আর ছোলা মাত্র আহার্য বলতে সম্বল। তাই নিয়েই অশেষ কষ্ট সহ্য করে তাঁরা একসময়ে স্বপ্নের গোয়ালিয়র পৌঁছলেন। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে যাওয়া, দুর্ভাগ্যবশত তা সফল হল না। গোয়ালিয়র মহারাজের সেনাপতি চার বাঙালী যুবককে সৈন্যবিভাগে ভর্তি করতে অসম্মত হলেন।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা

বাধ্য হয়েই ভবানীচরণ কলকাতায় ফিরে এলেন। ভর্তি হলেন মেট্রোপলিটন ইনসটিটিউটে। কিন্তু পড়াশুনায় আর মন বসাতে পারলেন না। সেই সময়ে কলকাতার শিক্ষিত সমাজে ব্রাহ্ম আন্দোলন খুব জোরদার হয়ে উঠেছে। কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে নববিধান ব্রাহ্মহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তাঁদের সংস্কারমূলক আন্দোলন কলকাতার যুবসমাজের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই স্রোতের টানের বাইরে থাকতে পারলেন না ভবানীচরণও। ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করলেন এবং নববিধান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হলেন।

সিন্ধুদেশে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

ততদিনে তিনি পড়াশুনা ত্যাগ করেছেন। তবে নিশ্চেষ্ট বসে থাকেন নি। যেখানে যেমন জুটছে শিক্ষকতা করছেন। এই সূত্রেই তাঁর কেশবচন্দ্রের সংস্পর্শে আসা। কিছুকাল পরে ব্রাহ্মধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে তাঁকে সিন্ধুদেশে যেতে হয়। সেখানে কয়েকজন রোমান ক্যাথালিক পাদরি এবং তাঁর খুল্লতাত রেভারেন্ড কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাবে খ্রিস্টধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হলেন। ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে তিনি খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হন। ভবানীচরণ প্রথমে প্রোটেস্ট্যান্ট সম্প্রদায়ে যোগ দিলেও একবছর পরেই তিনি ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত হন।

দার্শনিক ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের খ্রিস্টধর্মে দীক্ষা

তিনি ছিলেন নিষ্ঠাবান হিন্দু পরিবারের সন্তান। কিশোর বয়সে দক্ষিণেশ্বর-এ ঠাকুর রামকৃষ্ণ-এর কাছে যাতায়াত করতেন। যৌবনে পদার্পণ করে দীক্ষা নিলেন ব্রাহ্মধর্মে। নিজেকে যুক্ত করেন কেশবচন্দ্রের সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে। কেশবচন্দ্রের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল হিন্দু ও খ্রিস্টধর্মের মধ্যে অভিন্ন সম্প্রীতি সম্পর্ক গড়ে তোলা। সেই আদর্শে কাজ করার সময়েই খ্রিস্টধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন ভবানীচরণ। পরে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন এবং প্রথমে প্রোটেস্ট্যান্ট ও পরে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত হলেন। এই ধর্মান্তর গ্রহণের ঘটনার মধ্যে দিয়ে ভবানীচরণের অব্যবস্থিতচিত্ততার পরিচয় ফুটে ওঠে।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় নাম গ্রহণ

কিছু দিনের মধ্যেই ভবানীচরণ খ্রিস্টধর্ম প্রচারের আকাঙক্ষায় খ্রিস্টীয় মতে সন্ন্যাস ব্রত গ্রহণ করেন। নতুন নাম নিলেন ব্রহ্মবান্ধব। আর বন্দ্যোপাধ্যায় অংশ বাদ দিয়ে নতুন নামের সঙ্গে যুক্ত করলেন উপাধ্যায় যার অর্থ শিক্ষক বা গুরু।

ভারতীয় ক্যাথলিক ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

খ্রিস্টধর্মে সন্ন্যাস গ্রহণের পর ব্রহ্মবান্ধবের প্রথম কাজ হল ভারতীয় জনগণের মধ্যে ক্যাথলিক ধর্মকে ব্যাপকভাবে প্রচার করা। এই উদ্দেশ্যে তিনি ভারতীয় হিন্দুদের সঙ্গে একাত্মতা বজায় রাখার জন্য খ্রিস্টান সন্ন্যাসীদের মতো কালো আলাখাল্লা না পরে গ্রহণ করলেন গেরুয়া বস্ত্র। তাঁর বিশ্বাস ছিল, এই ভাবেই বিদেশী আবরণ মুক্ত করে খ্রিস্টধর্মকে সম্পূর্ণ ভারতীয় রূপে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন। তিনি নিজেকে রোমান ক্যাথলিক বলেও প্রচার করতেন না। বলতেন তিনি ভারতীয় ক্যাথলিক।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় কর্তৃক ক্যাথলিক মঠ স্থাপন

এই সময়েই হিন্দু ক্যাথলিক অর্থাৎ ঈশাপন্থী হিন্দু সন্ন্যাসী গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে জব্বলপুরে নর্মদা তীরে ক্যাথলিক মঠ স্থাপন করেন। ব্রহ্মহ্মবান্ধব ধর্মপ্রচারের সময় বাংলা ও সংস্কৃতে লেখা খ্রিস্টীয় সঙ্গীত গান করতেন। দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষা করতেন ভারতীয় বৈষ্ণবদের মতো করতাল বাজিয়ে গান করে। বলাবাহুল্য গেরুয়াধারী এই খ্রিস্টান সন্ন্যাসী সহজেই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন। ধর্মান্দোলনের সঙ্গে ওতঃপ্রোত ভাবে জড়িয়ে পড়লেও দেশোদ্ধারের বীজটি অন্তরে মৃদুমন্দ স্বরে মন্দ্রিত হচ্ছিল।

ধর্মতাত্ত্বিক ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের হিন্দুধর্মে প্রত্যাবর্তন

১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দ চিকাগো বিশ্বধর্ম সম্মেলনে ভারতীয় সনাতন ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করে ভারতে ফিরে এসেছেন। বিদেশে বহু সম্মান ও স্বদেশে বীরোচিত সংবর্ধনা লাভ করছেন তিনি। বিবেকানন্দের বিশ্ববিজয়ের দ্বারা বিশ্বসভায় নতুনভাবে পরাধীন ভারতের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাঁর এই সাফল্যে নবচেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠেছে যুবভারত, আত্মচেতনা ফিরে পেয়েছে পরাধীন ভারতবর্ষ। দেশপ্রেম ও বেদান্তের মায়াবাদের বিবেকানন্দকৃত নতুন ভাষ্য প্রবলভাবে আকৃষ্ট করল যুব সমাজকে। ব্রহ্মবান্ধবের চিন্তা চেতনায়ও বিবেকানন্দের বাণী ও আদর্শ আলোড়ন তুলল। তাঁর চিন্তা ও মননে পরিবর্তন ঘটল। স্বামী বিবেকানন্দের প্রভাবে ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে ব্রহ্মবান্ধব হিন্দুধর্মে প্রত্যাবর্তন করেন।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় কর্তৃক আবাসিক বিদ্যালয় স্থাপন

এই সময়েই তিনি কলকাতার সিমলা অঞ্চলে বৈদিক আদর্শে একটি আবাসিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠানের নাম দেন সারস্বত আয়তন। ভারতীয় আর্য ঋষিদের আদর্শ পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও ভারতীয় সনাতন আদর্শে নব ভারতকে অনুপ্রাণিত করার উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি এই প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। তিনি এখানে ছাত্রদেব শিক্ষা দান করতেন। কিন্তু কারো কাছ থেকে বেতন নিতেন না।

রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয়ে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

১৯০১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন-এ ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয় স্থাপন করেন। কবির আহ্বানে ব্রহ্মবান্ধব তাঁর প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের নিয়ে ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয়ে যোগ দেন। এছাড়াও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজে রবীন্দ্রনাথ নানাভাবে তাঁর সক্রিয় সাহায্য পান। ব্রহ্মচর্য আশ্রম প্রতিষ্ঠার কাজকে ব্রহ্মহ্মবান্ধব সম্পূর্ণভাবে দেশের কাজ রূপেই গ্রহণ করেছিলেন। তাই শাস্তিনিকেতনে ছাত্রদের তিনি শুধু লেখাপড়াই শেখাতেন না, তাদের আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে ওঠার শিক্ষাও দিতেন।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের লেখা

রবীন্দ্রনাথের একটি পত্র থেকে জানা যায়, “এমন সভায় ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার পরিচয় ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠল। …. এই পরিচয় উপলক্ষেই তিনি জানতে পেরেছিলেন যে শাস্তিনিকেতনে বিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাবে আমি পিতৃদেবের সম্মতি পেয়েছি। তিনি তাঁর কয়েকজন অনুগত শিষ্য ও ছাত্র নিয়ে আশ্রমের কাজে প্রবেশ করলেন তখনকার আয়োজন ছিল দরিদ্রের মতন, আহার-ব্যবহার ছিল দরিদ্রের আদর্শে। তখন ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় আমাকে যে গুরুদেব উপাধি দিয়েছিলেন আজ পর্যন্ত আশ্রমবাসীদের কাছে আমাকে সেই উপাধি বহন করতে হচ্ছে।”

পালোয়ান ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

আশ্রমের ছাত্রদের জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে তুলতে সর্বপ্রকারে চেষ্টা করতেন ব্রহ্মবান্ধব। এই সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের একটি বিবরণ থেকে জানা যায়- “একদিন এক পাঞ্জাবী পালোয়ান কি করে হঠাৎ শান্তিনিকেতনে উপস্থিত হল। কুস্তি শেখাবার জন্য আমরা একটি আখড়া তৈরি করেছিলুম। সেই দেখে পালোয়ানটির মহা উৎসাহ। পোশাক ছেড়ে সেখানে দাঁড়িয়ে তাল ঠুকতে লাগল। তার বিপুল বলিষ্ঠ দেহ দেখে আমরা স্তম্ভিত হয়ে রইলুম, কারও সাহসে কুলালো না তার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তার সঙ্গে লড়াইতে নেমে যায়। সকলেই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ দেখি উপাধ্যায় মহাশয় কৌপিন পরে এসে উপস্থিত। তিনি তাল ঠুকে পালোয়ানকে লড়াই করতে আহ্বান করলেন। বাঙালী সন্ন্যাসীর কাছেই শেষ পর্যন্ত পাঞ্জাবী পালোয়ানকে হার মানতে হল। আমাদের তখন কি আনন্দ।”

বিবেকানন্দের মহাপ্রয়াণে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের অনুভূতি

শান্তিনিকেতনে অবস্থান কালেই ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে ব্রহ্মবান্ধব স্বামী বিবেকানন্দের মহাপ্রয়াণ সংবাদ জানতে পারেন। এই দুঃসংবাদ শবণে তাঁর অন্তরলোকে এক বিচিএ অনুভূতির সৃষ্টি হল। তিনি এ সম্পর্কে এক জায়গায় লিখেছেন, ‘সহসা একখানি ছুরি বুকের মধ্যে বিধিয়া গেল। স্বামীজির কাজ কেমন করিয়া চলিবে। হঠাৎ এক প্রেরণা তাঁর শক্তিকে চালিত করিল যতটুকু তোমার শক্তি আছে ততটুকু তুমি কাজে লাগাও। বিবেকানন্দের ফিরিঙ্গি জয় ব্রত উদযাপন করতে চেষ্টা কর। সেই মুহূর্তে ঠিক করিলাম বিলাত যাইব। হাওড়া স্টেশনে পৌছাইয়া স্থির করিলাম বিলাতে গিয়া বেদান্তের প্রতিষ্ঠা করিব।”

বেদান্ত প্রচারে বিলাত যান ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

ফিরিঙ্গি বিজয়ের দুর্জয় সংকল্প নিয়ে ব্রহ্মবান্ধব ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে বেদান্ত প্রচারের জন্য বিলাত যান। সেখানে অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজে হিন্দুধর্ম সম্বন্ধে বক্তৃতা করে ইউরোপীয় শ্রোতাদের বিস্মিত মুগ্ধ করেন। ভারতীয় সন্ন্যাসীর মুখে গভীর আধ্যাত্মিক তত্ত্ব, ভারতের চিরন্তন প্রেমের বাণী প্রচারের মাধ্যমে বিলাতের শ্রোতাদের মধ্যে ভারতের গৌরব প্রতিষ্ঠিত হল। ব্রহ্মবান্ধব সম্বন্ধে বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ একজায়গায় বলেছেন, “তিনি ছিলেন রোমান ক্যাথলিক সন্ন্যাসী। অপরপক্ষে বৈদান্তিক তেজস্বী, নির্ভীক, ত্যাগী, বহুশ্রুত ও অসামান্য প্রতিভাবশালী।”

রাজনৈতিক নেতা ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

বিলাতে বেদান্ত প্রচারকার্য সম্পূর্ণ করে ব্রহ্মবান্ধব ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফিরে আসেন। সেই সময় ভারতের রাজনৈতিক আবহাওয়া বিশেষ করে বাংলার আকাশ বাতাস অগ্নিযুগের রণদামামা ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠেছে। এই আবহাওয়ায় তিনি রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হলেন রাজনৈতিক নেতা রূপে।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের সন্ধ্যা পত্রিকা

১৯০৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই তিনি হয়ে উঠলেন অগ্নিযুগের অন্যতম পুরোধাপুরুষ। ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হল সন্ধ্যা দৈনিক পত্রিকা। এই পত্রিকার মাধ্যমে তাঁর অগ্নিক্ষরা লেখনী ঘোষণা করল বিদেশী শক্তির বিরুদ্ধে আপসহীন বলিষ্ঠ সংগ্রামের কথা।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের জ্বালাময়ী লেখনী

১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে আরম্ভ হল বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন। স্বদেশমন্ত্রে দীক্ষিত বঙ্গবাসীর বন্দেমাতরম মন্ত্রে প্রকম্পিত হল আকাশ বাতাস। বিদেশী দ্রব্য বর্জন আন্দোলন ক্রমেই তীব্রতর হয়ে উঠতে লাগল। ব্রহ্মবান্ধবের তেজোদৃপ্ত লেখনী এই আন্দোলনে নতুন শক্তি সঞ্চার করল। সন্ধ্যা পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর রচনার তেজোময় ভাষা দেশের সর্বশ্রেণীর মানুষের প্রাণে জ্বালা ধরিয়ে দিল। দেশজুড়ে স্বাদেশীকতার প্লাবন গর্জে উঠল। এককথায় বলা চলে ব্রহ্মবান্ধবের জ্বালাময়ী লেখনীর মাধ্যমে নববাংলার পুনর্জাগরণ ঘটল। স্বদেশী জাগরণের ইতিহাসে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের ক্ষেত্রে ব্রহ্মহ্মবান্ধবের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে।

শিক্ষিত সম্প্রদায়ের ইংরাজপ্রীতি সম্পর্কে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের মনোভাব

  • (১) হিন্দুসমাজের তথাকথিত শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে ইংরাজপ্রীতির মোহ মায়াজাল রচনা করেছিল। তাদের কাছে ইংরাজ বিরোধিতা ছিল গুরুতর অন্যায় কার্য। এই ভ্রান্ত সমাজের চেতনা ফিরিয়ে আনবার জন্য ব্রহ্মবান্ধব সন্ধ্যা পত্রিকার মাধ্যমে কঠোর সমালোচনার তীব্র আঘাত হানতে লাগলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপস মীমাংসা কোনোদিন করেন নি তিনি।
  • (২) নির্ভীক সৈনিকের মতো অন্যায়কে বারবার কঠোর ভাবে আঘাত করেছেন। তিনি বলতেন “দেশের এই দুঃসময়ে যেখানে চারদিকে তমোভাব ও অসাড়তা সেখানে হাত বুলাইলে চলিবে না-খোঁচা না দিলে শোনানো যাবে না।”
  • (৩) আর এক জায়গায় উপমা প্রয়োগ করে তিনি লিখেছেন- “পুকুরের নীচে পচা পাঁক জমিয়াছে। সেই জল খাইয়া লোকের জ্বর বিকার ধরিতেছে। ঐ পাঁক একবার ঘাঁটিয়া দিতে হইবে। এখন ঘাঁটিতে গেলেই জল ঘোলা হইবে। এই ঘোলানো জল দেখিয়া আমাদের সভ্যবাবুরা নাক সেটকান। কিন্তু মানুষ যে মরে-সে বিষয়ে তাদের কোনো সাড়া নাই ব্যথা নাই। তাহারা বুঝেন না যে ঘোলানোটার পরে যখন জল থিতুবে তখন সরোবর নির্মল ও স্বাস্থ্যকর হইবে।”

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রাজদ্রোহের অভিযোগ

ঘুমন্ত জাতির জাগরণ ঘটছে। ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে তাই ব্রহ্মবান্ধবকে সহ্য করা সম্ভব হল না। অবিলম্বেই তাঁর বিরুদ্ধে রাজদ্রোহের অভিযোগ আনা হল। ‘সিডিনের হুডুম দুডুম’, ‘ফিরিঙ্গির আক্কেল গুডুম’ ও ‘বোচকা সকল নিয়ে যাবেন বৃন্দাবন’ প্রভৃতি তিনটি লেখার জন্য ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রহ্মবান্ধবের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হল। সরকারের আদেশে সন্ধ্যা পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হল। মুদ্রাকর সহ ব্রহ্মবান্ধবকে গ্রেপ্তার করা হল, পত্রিকা কার্যালয় খানাতল্লাশি হল। গেরুয়াধারী সন্ন্যাসী ব্রহ্মবান্ধব। গ্রেপ্তার হবার পর গেরুয়া বস্ত্রের অপমান হবে বলে তিনি সাদা ধুতি পরে আদালতে দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করলেন, তিনি ব্রিটিশ কর্তৃত্ব মানেন না।

দার্শনিক ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের মৃত্যু

কঠোর পরিশ্রমে আগেই শরীর ভেঙ্গে পড়েছিল। তাই মামলা চলাকালীন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ক্যাম্বেল হাসপাতালে তাঁর অপারেশান করা হল। অস্ত্রোপচারের তিনদিন পরে ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দের ২৭শে অক্টোবর সকাল ৯টায় এই সন্ন্যাসী বিপ্লবী মহান ভারতসন্তান ধনুষ্টঙ্কার রোগে দেহত্যাগ করলেন।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের মৃত্যু সংবাদ প্রকাশ

একসময় ব্রহ্মবান্ধব বলেছিলেন, ‘ফিরিঙ্গি আমাকে কারাগারে রাখে এমন সাধ্য ফিরিঙ্গির নাই।” বস্তুতঃ তাঁর এই ভবিষ্যদ্বাণীই সত্য হয়েছিল। মৃত্যুর পর তাঁর মৃত্যু সংবাদ সন্ধ্যা পত্রিকায় এভাবে ছাপা হল, ‘ইহাই সশরীরে স্বর্গারোহন-ইহাই তেজস্বীর ইচ্ছামৃত্যু-ইহাই কর্মবীরের দেহাবসান।”

উপসংহার :- স্বদেশবাসীকে নতুনভাবে মাতৃমন্ত্রে দীক্ষা দিয়ে তেজস্বী ব্রাহ্মণ সন্তান যে কর্মধারা সৃষ্টি করে গিয়েছিলেন তার পথ ধরেই পরবর্তীকালে ভারত ইতিহাস রচিত হয়েছে।

(FAQ) ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় কে ছিলেন?

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি দার্শনিক, ব্রাহ্মসমাজের সংস্কারক এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী।

২. তিনি কোন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করেছিলেন?

তিনি হিন্দু ও খ্রিস্টধর্মের নীতিশিক্ষার মেলবন্ধন ঘটিয়ে একটি নতুন দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করেছিলেন।

৩. তিনি কোন পত্রিকাগুলো প্রকাশ করেছিলেন?

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় “সফলযান” এবং “সন্ধ্যা” নামে পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন, যা জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মীয় ঐক্যের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

৪. তাঁর চিন্তার প্রধান বিষয় কী ছিল?

তাঁর চিন্তার মূল বিষয় ছিল ধর্মীয় ঐক্য, মানবিক মূল্যবোধ এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ জাগরণ।

৫. ব্রাহ্মসমাজের সংস্কারে তাঁর ভূমিকা কী ছিল?

তিনি ব্রাহ্মসমাজে ঐতিহ্যবাহী হিন্দু মূল্যবোধ পুনঃপ্রবর্তনের পক্ষে ছিলেন এবং ধর্মীয় চর্চার সহজীকরণে কাজ করেছিলেন।

৬. ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর ভূমিকা কী ছিল?

ব্রহ্মবান্ধব ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক জাগরণে কাজ করেন।

৭. তিনি কেন গুরুত্বপূর্ণ?

তিনি ধর্মীয় সহনশীলতা এবং জাতীয়তাবাদকে একীভূত করে ভারতের সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য ভূমিকা পালন করেছিলেন।

Leave a Comment