প্রাচীন ভারতের নন্দ বংশ প্রসঙ্গে রাজা মহাপদ্মনন্দ, নবনন্দ, রাজা ধননন্দ ও নন্দ বংশের পতন সম্পর্কে জানবো।
প্রাচীন ভারতের নন্দ বংশ
ঐতিহাসিক যুগ | নন্দ বংশ |
সময়কাল | আনুমানিক ৩৬৪-৩২৪ খ্রি.পূ. |
প্রতিষ্ঠাতা | মহাপদ্মনন্দ |
শেষ রাজা | ধননন্দ |
উত্তরসূরী | মৌর্য সাম্রাজ্য |
ভূমিকা :- শিশুনাগ বংশ-এর রাজা কালাশোক ও তার দশ পুত্রকে নিহত করে মহাপদ্মনন্দ মগধ-এর সিংহাসন অধিকার করেন। এর ফলে শিশুনাগ বংশের উচ্ছেদ ঘটে এবং নন্দ বংশের শাসন শুরু হয়।
ভারতের নন্দ বংশের রাজা মহাপদ্মনন্দ
- (১) আনুমানিক ৩৬৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহাপদ্মানন্দ মগধের সিংহাসনে বসেন তার উপাধি ছিল উগ্রসেন। তার সাম্রাজ্য পাঞ্জাব সীমান্ত থেকে গোধাবুড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল বলা যেতে পারে। তিনি মহাপাত্র, প্রাদেশিক ও রাষ্ট্রীয় প্রভৃতি কর্মচারীদের দ্বারা সাম্রাজ্যকে সুশাসন করার ব্যবস্থা করেন।
- (২) তিনি জলসেচ ব্যবস্থার উন্নতি করে কৃষির উন্নতি করার চেষ্টা করেন। কলিঙ্গের রাজা খারবেল-এর হাতিগুম্ফা শিলালিপিতে তার পরিচয় পাওয়া যায়। তার সেনাবাহিনী ছিল বিরাট। এজন্যে তাঁর উপাধি ছিল উগ্রসেনা।
- (৩) ডঃ আর কে মুখার্জীর মতে, “উত্তর ভারত-এর প্রথম ঐতিহাসিক সম্রাট ছিলেন মহাপদ্ম নন্দ”। তাঁরই প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্যের ওপর ভিত্তি করে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য-এর সাম্রাজ্য স্থাপিত হয়।
প্রাচীন নন্দ বংশের নবনন্দ
মহাপদ্মকে নিয়ে নন্দ বংশে মোট নয়জন রাজা রাজত্ব করেন বলে জানা যায়। মহাপদ্মের ‘পরবর্তী আটজন ছিলেন সম্ভবতঃ তাঁর পুত্র। কেউ কেউ এই আটজনকে তার ভ্রাতা বলেছেন। এরা একত্রে নবনন্দ নামে পরিচিত।
মগধের নন্দ বংশের শেষ রাজা ধননন্দ
- (১) শেষ নন্দরাজা ধননন্দের সম্পর্কে গ্রীক ও ভারতীয় সূত্র থেকে তথ্য পাওয়া যায়। গ্রীকদের মতে তাঁর নাম ছিল আগ্রামেস। গ্রীক লেখকদের মতে, গঙ্গারিডাই অর্থাৎ গঙ্গাহৃদি ও প্রাসই বা প্রাচী ছিল তার সাম্রাজ্য ভুক্ত। গঙ্গাহৃদি বলতে বাংলা অর্থাৎ গঙ্গার ব-দ্বীপ অঞ্চল এবং প্রাচী বলতে মগধ বা বিহার, বিদেহ, কাশী–কোশল, পাঞ্চাল, শূরসেন বুঝায়।
- (২) গ্রীক লেখকরা তাঁর বিরাট সামরিক শক্তির উল্লেখ করেছেন। বিশ হাজার অশ্বারোহী, দু লক্ষ পদাতিক, হাজার রথ ও তিন হাজার রণহস্তী নিয়ে তাঁর সেনাদল গঠিত ছিল। এই বিরাট সেনার ব্যয় নির্বাহের জন্য ধননন্দ প্রজাদের ওপর করের ভার বৃদ্ধি করেন। এজন্য তিনি অর্থলিপ্সু ও অত্যাচারী বলে নিন্দিত হন। তাছাড়া তিনি নীচ বংশজাত বলে ঘৃণিত হতেন।
উপসংহার :- নন্দ রাজাদের বিরুদ্ধে প্রজাবিক্ষোভের কারণ ছিল অর্থনৈতিক বা করের হার বৃদ্ধি। ক্ষত্রিয় রাজা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ও ব্রাহ্মণ মন্ত্রী কৌটিল্য-এর সুযোগ নিয়ে ধননন্দকে সিংহাসনচ্যুত করেন। এর ফলে নন্দ বংশের পতন ঘটে।
(FAQ) প্রাচীন ভারতের নন্দ বংশ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
আনুমানিক ৩৬৪-৩২৪ খ্রিস্টপূর্ব।
মহাপদ্মনন্দ।
ধননন্দ।
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।