পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় -এর জন্ম, বংশ পরিচয়, শিক্ষা, ক্রিকেট ও ফুটবলে অংশগ্রহণ, শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদ গ্রহণ, নকশাল মোকাবিলা, পাঞ্জাবের রাজ্যপাল নিযুক্ত, জ্যোতি বসু ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে সম্পর্কস, তার স্বাতন্ত্র্য ও তার মৃত্যু সম্পর্কে জানবো।
ভারতীয় বাঙালি রাজনীতিবিদ সিদ্ধার্থ শংকর রায় প্রসঙ্গে সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের জন্ম, সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের শিক্ষা, ক্রিকেট ও ফুটবলে সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের ভূমিকা, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শংকর রায়, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের কৃতিত্ব, নকশাল মোকাবিলায় সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের ভূমিকা, জ্যোতি বসুর সঙ্গে সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের সম্পর্ক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের সম্পর্ক ও সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের মৃত্যু।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়
ঐতিহাসিক চরিত্র | সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় |
জন্ম | ২০ অক্টোবর ১৯২০ খ্রিস্টাব্দ |
মৃত্যু | ৬ নভেম্বর ২০১০ খ্রিস্টাব্দ |
পরিচিতি | পশ্চিমবঙ্গ -এর মুখ্যমন্ত্রী |
সময়কাল | ১৯৭২ – ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ |
ভূমিকা :- ভারতীয় বাঙালি রাজনীতিবিদ সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা ব্যারিস্টার, পাঞ্জাবের প্রাক্তন রাজ্যপাল ও ভারত -এর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পদ অলংকৃত করেছিলেন।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের জন্ম
২০ অক্টোবর ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার এক অভিজাত পরিবারে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের জন্ম হয়।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের পিতামাতা
তাঁর বাবা সুধীর কুমার রায় কলকাতা উচ্চ আদালতের একজন নামকরা ব্যারিস্টার এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন সদস্য ছিলেন। তাঁর মা অপর্ণা দেবী ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ও তাঁর স্ত্রী বাসন্তী দেবীর জ্যেষ্ঠা কন্যা।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের শিক্ষা
কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশন থেকে স্কুলের পর্ব শেষ করে প্রেসিডেন্সি কলেজ, তার পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কলেজে পড়া এবং বিলেতে ইনার টেম্পলে ব্যারিস্টার পর্ব সম্পূর্ণ করেন।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের ক্রিকেটে ভূমিকা
১৯৪৪ সালে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের নেতৃত্বে প্রেসিডেন্সি কলেজ আন্তঃকলেজ ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপে জয়লাভ করে। পরপর তিনটি মরশুম মিলিয়ে মোট তিনটি ডবল সেঞ্চুরি এবং ১০০০ রান করেন তিনি।
ফুটবলে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের কৃতিত্ব
কালীঘাট ক্লাবের হয়ে ফুটবলও খেলেছেন তিনি। ১৯৩৯ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ ফুটবল দলের অধিনায়কত্ব করেছিলেন সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় এবং সেই দলটিই এলিয়ট ও হার্ডিঞ্জ জন্মবার্ষিকী শিল্ড জয় করে।
সকলের মানুদা সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়
রাজনীতি করতে এসে সিদ্ধার্থশঙ্কর অনায়াসে আপামর সকলের ‘মানুদা’ হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বিলেত ফেরত কমিউনিস্ট-ব্যারিস্টার জ্যোতি বসুকে নিজের দলে কেউ কোনও দিন ‘দাদা’ বলে ডাকার স্পর্ধা না পেলেও ‘মানুদা’ নিজ গুণে সেই ‘দূরত্ব’ মুছে দিয়েছিলেন। বস্তুত এই সম্বোধনটিই ছিল তাঁর সহজ পরিচয়।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের প্রথম মন্ত্রী পদ লাভ
১৯৫৭ সালে প্রথম নির্বাচনে জিতে ডা. বিধানচন্দ্র রায় -এর মন্ত্রিসভায় আইন ও আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব পান।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব
সিদ্ধার্থশঙ্করের পুরনো বন্ধু ইন্দিরা গাঁধী তাঁকে ১৯৬৭-তে কেন্দ্রে নিয়ে যান শিক্ষামন্ত্রী করে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়
১৯৭২ সালে বাংলার ভোটে ব্যাপক রিগিংয়ের অভিযোগ তুলে জ্যোতি বসু সহ বামেরা ভোট চলাকালীন সরে দাঁড়ান। কংগ্রেস বিপুল ভোটে জিতে সরকার গড়ল। মুখ্যমন্ত্রী হন (১৯৭২-৭৭) সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের কৃতিত্ব
মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন তার প্রথমটি হল শরণার্থীদের পুণর্বাসন সমস্যার সমাধান এবং দ্বিতীয়টি হল কলকাতায় মেট্রোরেলের পরিষেবা চালু করা।
নকশাল মোকাবিলায় সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের ভূমিকা
মুখ্যমন্ত্রিত্বের পাঁচ বছর সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় রাজ্যের উন্নয়নে বিশেষ কিছু করেননি। সেই উদ্যোগও তাঁর ছিল না। কারণ, তাঁর কার্যকালের অনেকটাই কেটেছে নকশাল-মোকাবিলা এবং জরুরি অবস্থা নিয়ে।
১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের জরুরি অবস্থায় সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের পরামর্শ
১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থা জারির জন্য প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী তখনকার রাষ্ট্রপতি সঞ্জীব রেড্ডিকে যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তার খসড়া সিদ্ধার্থবাবুর তৈরি। শুধু তা-ই নয়, ইন্দিরাকে তিনিই নাকি পরামর্শ দিয়েছিলেন ওই পদক্ষেপ গ্রহণ করার।
পাঞ্জাবের রাজ্যপাল সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়
পাঞ্জাবে রাজ্যপাল হয়ে সিদ্ধার্থশঙ্কর সেখানকার তৎকালীন পুলিশ কর্তাকে দিয়ে উগ্রপন্থী খলিস্তানিদের দমন করেছিলেন।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের ক্রিকেট প্রশাসনে যোগ
রাজনীতি থেকে দূরে থেকে তিনি ব্যারিস্টারির সঙ্গে ক্রিকেট প্রশাসনেও যুক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৮২ থেকে প্রায় চার বছর সিএবি-র সভাপতি ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়
তিনি ১৯৯২-১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব সামলেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের সম্পর্ক
তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গে বাম-বিরোধী জনমত গড়ে তোলার শক্ত হাতিয়ার মনে করতেন সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি অকুণ্ঠ স্নেহ ছিল তাঁর মনে।
জ্যোতি বসুর সাথে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের সম্পর্ক
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সঙ্গে তাঁর একাধারে পারস্পরিক সখ্যতার এবং রাজনৈতিক বিবাদেরও সম্পর্ক ছিল। কট্টর বামবিরোধী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় জ্যোতি বসুর নানা পদক্ষেপ বিষয়ে তীব্র কটাক্ষ করতে ভুলতেন না।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের স্বাতন্ত্র্য
রাজনীতি, কূটনীতি, প্রশাসন, ক্রীড়াঙ্গন, এমনকি বংশগৌরব – সব ক্ষেত্রেই তাঁর ওজন ও প্রভাব তাঁকে স্বাতন্ত্র্যে বিশিষ্ট করেছে।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের মৃত্যু
২০১০ সালের ৬ নভেম্বর সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় মৃত্যু বরণ করেন।
উপসংহার :- তিনি সাদা, তিনি কালো। তিনি মন্দ, তিনি ভাল। আর এর সবটাই খোলা খাতা বা স্বচ্ছ আয়নায় প্রতিফলিত। সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় এমনই এক বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।
সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।
(FAQ) সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১৯৭২-১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ।
সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়।
মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের আমলে।