কন্যাশ্রী

কন্যাশ্রী প্রকল্প প্রসঙ্গে প্রেক্ষাপট, ভারতীয় সংস্কৃতি, বিজ্ঞানের যুগ, কন্যাশ্রী প্রকল্প, প্রয়োজনীয়তা, সূচনা, তাৎপর্য, উদ্দেশ্য, লক্ষ্য, যোগ্যতামান, এককালীন অনুদান, জন সচেতনতা, সাফল্য, নিদর্শন, আন্তর্জাতিক সম্মান, কন্যাশ্রী দিবস ও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানবো।

কন্যাশ্রী প্রকল্প

ঐতিহাসিক ঘটনাকন্যাশ্রী প্রকল্প
বিভাগK1, K2, K3
সূচনাকাল৮ মার্চ, ২০১৩ সাল
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
সূচনা করেনমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কন্যাশ্রী

ভূমিকা:- বিদ্যাসাগর, রামমােহন এক সময় নারীদের দুর্দশা মােচনের লক্ষ্যে সংস্কার দূরীকরণ কর্মসূচি নিয়েছিলেন, বর্তমানের কন্যাশ্রী নারীর শিক্ষা ও স্বশক্তিকরণের লক্ষ্যে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে থাকবে।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের প্রেক্ষাপট

  • (১) কবি কালিদাস লিখেছেন, ‘অর্থো হি কন্যা পরকীয়া এব’। অর্থাৎ কন্যা মানে পরের ধন। এই মনােভাব থেকেই কন্যা সন্তানকে অপরের হাতে সম্প্রদান করে ক্ষান্ত হতেন কন্যার পিতামাতারা। এর ফলে সমাজ ও রাষ্ট্রের সার্বিক অগ্রগতি সম্ভব হয়নি।
  • (২) নজরুল ইসলাম তার ‘নারী’ কবিতায় লিখেছেন, ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,/অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। অথচ মেয়েদেরকে সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে সমন্বিত না করে তাদের অসূর্যস্পশ্যা রূপে রেখে তাদের অন্তর্নিহিত শক্তির অপচয় সাধন করা হয়েছে।
  • (৩) নজরুল নারীদের আহ্বান জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘মাথার ঘােমটা ছিড়ে ফেল নারী, ভেঙে ফেল ও শিকল!/…/দূর করে দাও দাসীর চিহ্ন আছে যত আভরণ।

ভারতীয় সংস্কৃতি

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কন্যাশ্রী আজ বিশ্ববন্দিত জনকল্যাণমূলক প্রকল্প। সুদূর প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে কন্যা সন্তানের প্রতি অবহেলা ভারতীয় সংস্কৃতিতে বদ্ধমূল হয়ে রয়েছে।

বিজ্ঞানের যুগ

বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে বর্তমান কালে সেই অবহেলার স্বরূপ অনেকটা স্তিমিত হলেও দরিদ্র মানুষদের মধ্যে আর্থ-সামাজিক কারণে কন্যা সন্তানের প্রতি তুলনামূলকভাবে অবহেলা সমূলে বিনষ্ট হয়নি।

কন্যাশ্রী প্রকল্প কী?

যেসব পরিবারের বাৎসরিক আয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বা তার চেয়ে কম, সেই পরিবারের ১৩-১৮ বছর বয়সী ছাত্রীরা বছরে ৫০০ টাকা করে বৃত্তি পাবে (এখন ৭৫০ টাকা)। অনাথ বা প্রতিবন্ধী ছাত্রীদের ক্ষেত্রে আয়ের কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই। শিক্ষার মূলস্রোতে থেকে লেখাপড়া চালিয়ে গেলে এই ছাত্রীরা ১৮ বছর বয়সে পাবে এককালীন ২৫ হাজার টাকা – এই ব্যবস্থাই কন্যাশ্রী প্রকল্প নামে পরিচিত।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের প্রয়ােজনীয়তা

সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগ -এ বীজবপন, কৃষিকাজ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত নারী তার বােধ, রুচি, শিক্ষা, বুদ্ধি দিয়ে প্রতিনিয়ত সমাজের অগ্রগতিতে নিজেকে আহুতি দিয়ে চলেছে। অথচ নারীর অধিকার, মর্যাদা, প্রতিষ্ঠা এখনও পুরুষশাসিত সমাজে স্বপ্নই থেকে গেছে। এখনও পর্দার আড়ালে তাকে লুকিয়ে রাখার অক্ষম প্রচেষ্টা চলে নিরন্তর। কন্যাসন্তান পিতামাতার কাছে এখনও বােঝা। দারিদ্র্য, অপুষ্টি, অশিক্ষা আর কু-সংস্কারের অন্ধকার থেকে মেয়েদের আলােয় নিয়ে আসার প্রচেষ্টার নাম কন্যাশ্রী প্রকল্প।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের সূচনা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ সরকার কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের কন্যা সন্তানের প্রতি গুরুত্ব আরােপ করতে এবং বাল্যবিবাহ বন্ধ করে কন্যা সন্তানদের বিদ্যালয়মুখী করতে, তাদের সুষ্ঠ ও সম্মানজনক পেশায় প্রতিষ্ঠিত করে যােগ্য সামাজিক মর্যাদায় ভূষিত করতে কন্যাশ্রী প্রকল্পের যে অবতারণা করেছেন তা যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে।

কন্যাশ্রীর তাৎপর্য

  • (১) অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি শব্দ ‘কন্যাশ্রী’। কন্যা শব্দের অর্থ হল তনয়া বা দুহিতা বা মেয়ে। আবার ‘শ্রী’ শব্দের অর্থ হল সুন্দর বা লক্ষ্মী বা সরস্বতী। অর্থাৎ মেয়েরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে হয়ে উঠবে সুন্দর, বিদ্বান ও স্বয়ংসম্পূর্ণ।
  • (২) কন্যা সন্তানদের আত্মবিশ্বাসী, স্বনির্ভর ও স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গড়ে তুলতে তাদের মধ্যে অন্তর্নিহিত সত্তার বিকাশ ঘটানোর জন্য প্রয়ােজন উপযুক্ত পরিকল্পনা – সেই পরিকল্পনারই অঙ্গ হল কন্যাশ্রী প্রকল্প।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের উদ্দেশ্য

  • (১) এই প্রকল্পের পরােক্ষ উদ্দেশ্য বহুমুখী হলেও প্রত্যক্ষ উদ্দেশ্য কিন্তু দ্বিবিধ – মেয়েদের বাল্যবিবাহ রােধ করা এবং তাদের মেধার বিকাশের জন্য বিদ্যালয়মুখী করা।
  • (২) শুধু তাই নয়, শিক্ষাক্ষেত্রে যে ‘স্কুল ছুট’-এর সংখ্যা বাড়ছে তার গতিরােধ করাও এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
  • (৩) সর্বোপরি সমাজের সর্বাঙ্গীন অগ্রগতিতে মেয়েদেরকে সামিল করতে ও সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে এই প্রকল্পের জুড়ি মেলা ভার।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের লক্ষ্য

এই প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য দুটি দিককে সামনে রাখা হয়েছে। যথা –

  • (১) অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠরতা ছাত্রীদের যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৮-র মধ্যে তাদেরকে বছরে পাঁচশত টাকা অনুদান দেওয়া হবে।
  • (২) যাদের বয়স ১৮ থেকে ১৯ বছর তাদেরকে এককালীন পঁচিশ হাজার টাকা দেওয়া হবে। বাৎসরিক পাঁচশত টাকা অনুদান দেওয়ার জন্য প্রতি বছরে ১৮ লক্ষ মেয়েদেরকে এই প্রকল্পে সামিল করানাে হবে।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের যোগ্যতামান

বহু কোটির দেশ আমাদের দেশ ভারতবর্ষভারত -এর পশ্চিমবঙ্গের মতো জনবহুল রাজ্যে যথার্থ প্রয়োজনের ক্ষেত্রে যাতে প্রকল্পটির সদ্ব্যবহার হয় তাই এর কিছু যোগ্যতামান নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন –

  • (১) পরিবারের বাৎসরিক আয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার কম হতে হবে।
  • (২) যেকোনো স্বীকৃত বিদ্যালয়, মুক্ত বিদ্যালয় বা সমতুল্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নথিবদ্ধ ও নিয়মিত পাঠরতা হতে হবে।
  • (৩) মেয়েটি ‘জে-জে’ হোমের আবাসিক হলে অথবা বাবা-মা দুজনেই মারা গিয়ে থাকলে কিংবা ছাত্রী প্রতিবন্ধী হলে পারিবারিক আয়ের শর্তটি প্রযোজ্য হবে না।

কন্যাশ্রী প্রকল্পে এককালীন অনুদান

এককালীন অনুদানের উদ্দেশ্যে সাড়ে তিন লক্ষ ছাত্রীদের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। তবে যারা এই সুবিধা পাবে তাদের পিতা বা অভিভাবকের আয় বছরে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকার বেশি হবে না এবং কন্যা সন্তানটিকে কোনাে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী হতে হবে।

জনসচেতনতা

শুধুমাত্র প্রকল্প এবং যোজনা চালু করে নারী কল্যাণের গুরুদায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। প্রকল্পগুলির সুষ্ঠু নির্বাহই আসল কথা। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সমস্ত স্তরে ও মানুষজনের মধ্যে যথাযথ সচেতনতা ও সদিচ্ছা বজায় থাকা খুবই জরুরী।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুফল

  • (১) ২০০৭-০৮ সালের হিসাব অনুযায়ী বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের স্থান পঞম। কন্যা সন্তানের অপরিণত বয়সে বিবাহ দেওয়ায় শিশুমৃত্যু, অপুষ্টি প্রভৃতির শিকার হতাে।
  • (২) বিয়ের নাম করে অল্পবয়সী মেয়েদের পাচার হয়ে যাওয়ার হাত থেকে উদ্ধার পেতে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি মুর্শিদাবাদ (৬১.০৪%), বীরভূম (৫৮.০৩%), মালদহ (৫৬.০৭%) এবং পুরুলিয়ায় (৫৪.০৩%) কন্যার বয়স আঠার হওয়ার আগেই বেশিরভাগ মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন হয়।
  • (৩) এই প্রকল্প বাল্যবিবাহের হারকে কমিয়ে দিতে যে পারবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। আমাদের রাজ্যে যে স্কুল ছুট-এর সংখ্যা বাড়ছে তার মধ্যে মেয়েদের হার বেশি। এই প্রকল্প সেই স্কুলছুটের প্রবণতার হার কমাতে পারবে।
  • (৪) কন্যাভ্রুণ হত্যা, কন্যা সন্তানের প্রতি অবহেলা তথা বিভেদ সৃষ্টিও এই প্রকল্পের মাধ্যমে অনেকটা স্তিমিত হবে।
  • (৫) আঠারাে বছরের ঊর্ধ্বে মেয়েদের বিয়ে সুনিশ্চিত করতে পারলে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ক্ষেত্রে কিছু উল্লেখযােগ্য পরিবর্তন সম্ভব হবে।
  • (৬) মেয়েদের পড়াশােনা চালিয়ে যেতে তথা উচ্চশিক্ষায় সাহায্য করতে এই প্রকল্প যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের নিদর্শন

ইতিমধ্যে কন্যাশ্রী প্রকল্পকে কেন্দ্র করে কন্যাশ্রী সংঘ গঠিত হয়েছে যার দ্বারা দুদিক দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। যেমন –

  • (১) এই প্রকল্প দ্বারা বহু মেয়ে খেলাধুলায়, স্বনির্ভর ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী হয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে।
  • (২) চব্বিশ পরগনা, পুরুলিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলায় বেশ কিছু বাল্যবিবাহ রুখে দিতে পেরেছে।
  • (৩) এই প্রকল্পের ফলে মানব পাচার তথা শিশু বিক্রয়, বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার অনেকটা প্রতিহত করা গেছে।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের আন্তর্জাতিক সম্মান

  • (১) রাষ্ট্রসংঘ কর্তৃক এই প্রকল্প সমাজকল্যাণকর প্রকল্প হিসেবে প্রথম স্থান পেয়েছে। ইউনাইটেড নেশনস বা জাতিপুঞ্জ WSIS-16 পুরস্কার ছাড়া লন্ডনে (২০১৪) ইউনিসেফ কর্তৃক এই প্রকল্প প্রশংসিত হয়েছে।
  • (২) ২০১৭ সালের ২৩ জুন তারিখে নেদারল্যান্ড -এ রাষ্ট্র- সংঘের আয়ােজিত অনুষ্ঠানে ৬২টি দেশের ৫৫২টি সমাজকল্যাণকর কাজের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যখন প্রথম পুরস্কার গ্রহণ করেন তখন তাঁর সঙ্গে সমস্ত পশ্চিমবঙ্গবাসী নিজেদেরকে গর্বিত বােধ করেছেন।
  • (৩) এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন বক্তার ভাষণে কন্যাশ্রী জনহিতকর প্রকল্প হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। কন্যাশ্রী প্রকল্পকে শক্তিশালী করবার লক্ষ্যে কন্যাশ্রী মেয়েদের জন্য বিভিন্ন স্বনির্ভর প্রকল্প গৃহীত হয়েছে।

কন্যাশ্রী দিবস

সমগ্র রাজ্য জুড়ে এই প্রকল্পটি উন্নীত করার জন্য ১৪ই আগস্ট কন্যাশ্রী দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। কলকাতায় এই অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সভাপতিত্ব করেন। জেলাগুলিতে সরকার দ্বারা সচেতনতা প্রচারের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা

  • (১) বর্তমানে K1, K2, K3 মিলিয়ে সুবিধাপ্রাপক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৭৪০২, প্রাপক মেয়েদের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। এই সুবিধা পাওয়ার জন্য অভিভাবকের আয়ের সীমা তুলে দেওয়া হয়েছে।
  • (২) বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্যাশ্রীরা (K3) বিয়ে হলেও এই সুবিধা পাবে। তাছাড়া রাজ্যে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়েছে। স্কুলছুট এবং বাল্যবিবাহ অনেকাংশে কমেছে।

উপসংহার:- আমরাও এর সুফলের দিকে তাকিয়ে থাকব। কন্যা সন্তানরা আগামী দিনে সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে ও স্বীকৃতি পেতে পারবে এবং স্বনির্ভর হয়ে দেশের সম্পদ হয়ে উঠবে এই প্রত্যাশাই করবো।

(FAQ) কন্যাশ্রী সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. কন্যাশ্রী প্রকল্প কোন রাজ্যে প্রচলিত আছে?

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ।

২. কে কখন কন্যাশ্রী প্রকল্পের সূচনা করেন?

৮ মার্চ, ২০১৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

৩. কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে এককালীন কত টাকা অনুদান প্রদান করা হয়?

২৫ হাজার।

৪. কন্যাশ্রী দিবস পালিত হয় কবে?

১৪ আগস্ট।




Leave a Comment