বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকা প্রসঙ্গে বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় লেখনী, বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার উদ্দেশ্য, পাক্ষিক পত্রিকা বেঙ্গল স্পেকটেটর, বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার প্রথম খণ্ড সপ্তম সংখ্যার লেখনী, সাপ্তাহিক পত্রিকা বেঙ্গল স্পেকটেটর ও বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার প্রচার বন্ধ সম্পর্কে জানবো।
মাসিক বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকা প্রসঙ্গে বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা, বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার ভাষা, বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার প্রকাশক, বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার প্রকাশকাল ও বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার লেখনী সম্পর্কে জানব।
বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকা
ঐতিহাসিক পত্রিকা | বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকা |
ধরণ | মাসিক পত্রিকা |
ভাষা | ইংরেজি ও বাংলা |
প্রকাশকাল | এপ্রিল ১৮৪২ খ্রি |
উদ্যোগ | প্যারীচাঁদ মিত্র |
প্রকাশক | রামগোপাল ঘোষ |
ভূমিকা :- ১৮৪২ সালের এপ্রিল মাসে প্যারীচাঁদ মিত্র প্রমূখের সহায়তায় স্বনামধন্য রামগোপাল ঘোষ ‘বেঙ্গল স্পেকটেটর’ নামে এক ইংরেজী-বাংলা দ্বিভাষিক পত্র প্রকাশ করেন। এটি প্রথমে মাসিক পত্ররূপে প্রচারিত হয়েছিল।
দ্বিভাষিক বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় লেখনী
এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যার শেষে এই অংশটি মুদ্রিত আছে –
বেঙ্গল স্পেকটেটর। এতৎপত্র ইংরাজী ও বাংলা ভাষায় রচিত হইয়া আপাতত মাসমধ্যে একবার প্রকাশিত হইবে কিন্তু যে সকল ব্যক্তিদিগের কর্তৃত্বে ইহা নিৰ্ব্বাহ হইবে তাহাদিগের এতদ্বারা অর্থোপার্জনের আকাঙ্ক্ষা নাই অতএব গ্রাহক বৃদ্ধি হইয়া অধিকবার প্রকাশ হওনের ব্যয় উৎপন্ন হইলে একবারের অধিকও প্রকাশ হইবেক। এতৎপত্রের মাসিক মূল্য ১ মুদ্রা, বৎসরে আগামি ১০ দশ মুদ্রা মাত্র।
মাসিক বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার উদ্দেশ্য
এই পত্রিকা প্রচারের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে প্রথম সংখ্যায় লেখা আছে যে, “অস্মদ্দেশীয় জনগণের জ্ঞান ও সুখের বৃদ্ধি যাহাতে হয় তাহাতে প্রবৃত্তির উপযোগি বিষয় সকল আমাদিগের সাধ্যানুসারে কিঞ্চিৎ আন্দোলন করণার্থে আমরা এতৎ পত্র প্রকাশ করণে উদ্ধৃত হইয়াছি এবং যে প্রকার সময় উপস্থিত হইয়াছে তাহাতে আমারদিগের উদ্ভোগের আনুকূল্যের সম্ভাবনা, যেহেতু রাজ্যশাসনকারিরা প্রজার মঙ্গল বিষয়ে পূর্ব্বাপেক্ষা অধিক সচেষ্ট হইতেছেন এবং ভারতবর্ষস্থ ও ইংল্যান্ড দেশস্থ ইংরাজের মধ্যে অনেকের অন্তঃকরণে আমারদিগের হিতেচ্ছা প্রবল হইতেছে। অপর এতদ্দেশীয় সুশিক্ষিত ব্যক্তিদিগেরও স্বদেশের হিতাকাঙ্ক্ষা জন্মিয়াছে এবং তাহারা বিশেষ যত্নবান হইলে তাঁহাদিগের দ্বারা অনেক উপকার দর্শিতে পারে। আর তদ্ভিন্ন অন্য ব্যক্তিদিগের স্বস্ব মতের বিরুদ্ধ কথা শ্রবণে যে দ্বেষ তাহার হ্রাস হইতেছে। অতএব এতদ্রূপ অবস্থায় গবর্ণমেন্টের সমীপে দুঃখ সমূহ নিবেদন পূর্ব্বক যাহাতে ঐ ক্লেশ নিবারণ এবং দেশের অবস্থার উৎকৃষ্টতা হয় তাহার প্রার্থনা, এবং আমারদিগের প্রার্থিত বিষয়ে সাহায্য করণার্থে ইংরাজদিগের অনুরোধ করা, আর সুশিক্ষিত ব্যক্তিদিগকে স্বদেশের মঙ্গলার্থে সম্যক প্রকারে যত্ন করিতে প্রবৃত্তি প্রদান, এবং অস্মদ্দেশীয় সাধারণ জনগণকে স্বস্ব হিতাহিত উত্তমরূপে বিবেচনা দ্বারা উৎসাহ অবলম্বন পূর্ব্বক আপনারদিগের মঙ্গলার্থে সচেষ্টিত হইতে প্রার্থনা করা আমাদিগের যথাসাধ্য অবশ্য কর্তব্য হইয়াছে। পূর্ব্বোক্ত অভিপ্রায়ানুসারে আমরা এতৎপত্রে ঐ সকল বিষয়ের বিশেষ আলোচনা করিব যৎদ্বারা রীতি ব্যবহারাদির উত্তমতা এবং বিদ্যা, কৃষিকর্ম্ম, ও বাণিজ্যাদির বৃদ্ধি আর রাজ্যশাসন কার্য্যের সুনিয়ম হইয়া প্রজাদিগের সর্ব্বপ্রকারে উন্নতি হয়।”
পাক্ষিক পত্রিকা বেঙ্গল স্পেকটেটর
পাঁচ মাস মাসিক রূপে চলে ১৮৪২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ‘বেঙ্গল স্পেকটেটর’ পাক্ষিক পত্রে পরিণত হয়।
বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার প্রথম খণ্ড সপ্তম সংখ্যার লেখনী
এই পত্রিকার ১ম খণ্ড, সপ্তম সংখ্যার (১ সেপ্টেম্বর ১৮৪২) শেসে এইরূপ বিজ্ঞাপিত হয় মে, “এক্ষণে এতৎপত্র ইংরাজী ও বাঙ্গালা ভাষায় রচিত হইয়া মাসে দুইবার প্রকাশ হইবেক।
সাপ্তাহিক পত্রিকা বেঙ্গল স্পেকটেটর
পরের বছর মার্চ মাস থেকে ‘বেঙ্গল স্পেকটেটর’ সাপ্তাহিক রূপে প্রকাশিত হতে থাকে। ২য় খণ্ড, ৪-৫ সংখ্যার (ফেব্রুয়ারি ১৮৪৩ ) শেষে এই অংশটি মুদ্রিত আছে, “এতৎ পত্র এক্ষণে মাসে দুইবার প্রকাশ না হইয়া টমসন সাহেবদের সাহায্যে সপ্তাহানান্তর প্রকাশ হইবেক, এতৎ ক্ষুদ্র পত্রিকা দ্বারা যাহাতে ভারতবর্ষের উপকার হয় তন্নিমিত্ত উক্ত সাহেব অতি যত্নবান, আমরা ভরসা করি পাঠকবর্গ এই সংবাদ শ্রবণে আহ্লাদিত হবেন।”
বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকার প্রচার বন্ধ
পরবর্তী নভেম্বর মাসে ‘বেঙ্গল স্পেকটেটরে’র প্রচার রহিত হয়। ৩য় খণ্ড, ৩৯ সংখ্যায় (২০ নভেম্বর ১৮৪৩ ) কর্তৃপক্ষ দুঃখের সহিত জানালেন যে, “১৮৪২ সালের এপ্রিল মাসাবধি বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্র মাসিক পত্রিকা রূপে প্রকাশ হয়, প্রোপ্রাইটরদিগের এতদ্বারা লাভ করণের ইচ্ছা না থাকাতে ঐ বৎসরের সেপ্টেম্বর মাসাবধি পক্ষান্তে প্রকাশ হইতে লাগিল এবং যদিও গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি হয় নাই এবং ব্যয় নির্ব্বাহ হইত না তথাচ প্রোপ্রাইটরেরা এই পত্রিকা বিশেষরূপে দেশোপকারিণী করণাপয়ে ১৮৪০ সালের মার্চ মাসাবধি সাপ্তাহিক করিলেন তাঁহারা প্রায় ৮ মাস পর্যৎ ইহা হইতে ব্যয় নির্বাহ হয় কি না পরীক্ষা করিতেছিলেন কিন্তু শেষে দেখিলেন যে ইহাতে সহস্ৰ মুদ্রার অধিক ক্ষতি হইয়াছে। সাপ্তাহিক হওয়াতে যদিও গ্রাহক বৃদ্ধি হইয়াছিল তথাচ তদ্বারা সমুদায় ব্যয় নির্ব্বাহ হইত না আর যে অভিপ্রায়ে এ পত্র সৃষ্টি হয় অর্থাৎ এতদ্দেশীয় সাধারণ লোকে পাঠ করিবে এবং সকলে নানা বিষয়ের উপর লিখিবে তাহা হইল না অতএব প্রোপ্রাইটরেরা এতৎ পত্রের সাহায্যকারি গ্রাহকদিগের নিকট এবং সহকারি সম্পাদকবর্গ সন্নিধানে বিনয় পূর্ব্বক খেদান্বিত হইয়া বিজ্ঞাপন করিতেছেন যে অদ্যাবধি এতৎ পত্র প্রকাশ স্থগিত করা গেল। যে সকল কারণে রহিত হইতেছে কোন উপায় দ্বারা যদি তাহা পরিবর্ত্তন হয় তবে আহ্লাদ পূর্ব্বক পুনর্ব্বার প্রকাশ করিবেন।
উপসংহার :- ১৮৫৬ সালের জুলাই সংখ্যা ‘অরুণোদয়’ নামক অসমীয় ভাষার মাসিক পত্রে কলিকাতা থেকে ‘বঙ্গদর্শক’ নামে একখানি সম্বাদপত্র প্রকাশের উল্লেখ আছে, “শ্রীবাবু ব্রজনাথ সরকারে কলিকাতা নগরত বঙ্গদর্শক নামেরে এখন নতুন সম্বাদপত্র চাপিবলৈ আরম্ভন করিচে।” এই ‘বঙ্গদর্শক’ কি ‘বেঙ্গল স্পেকটেটর’? এই নিয়ে বিস্তারিত জানা যায় নি।
(FAQ) বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
মাসিক পত্রিকা।
রামগোপাল ঘোষ।
এপ্রিল ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে।