মৌখিক ঐতিহ্য

ইতিহাসে মৌখিক ঐতিহ্য প্রসঙ্গে মৌখিক ঐতিহ্যের অস্তিত্ব, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মৌখিক ঐতিহ্যের প্রসার, মৌখিক ঐতিহ্যের ধারণার বিকাশ, টেপ রেকর্ডার আবিষ্কার, মৌখিক ইতিহাসচর্চার সংস্থা, মৌখিক ইতিহাসচর্চার অগ্রগতি, মৌখিক ঐতিহ্যের সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, উদাহরণ, গুরুত্ব ও সমালোচনা সম্পর্কে জানবো।

মৌখিক ঐতিহ্য

ঐতিহাসিক বিষয়মৌখিক ঐতিহ্য
ওরাল হিস্ট্রি রিসার্চ অফিস১৯৪৮ খ্রি
ওরাল হিস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন১৯৬৬ খ্রি
ওরাল হিস্ট্রি সোসাইটি১৯৬৯ খ্রি
The Historiesহেরোডোটাস
মৌখিক ঐতিহ্য

ভূমিকা :- মৌখিক ঐতিহ্য হল এক ধরনের সাংস্কৃতিক বিষয় ও ঐতিহ্য যা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের মানুষের মধ্যে মুখে মুখে প্রচলিত হয়ে আসে।

মৌখিক ঐতিহ্যের অস্তিত্ব

যে-কোনো ঘটনার ইতিহাস লিখিত আকারে প্রকাশিত হওয়ার পূর্বে মৌখিক ঐতিহ্য বা বিবরণ হিসেবে অল্পকাল বা দীর্ঘকাল তার অস্তিত্ব থাকে।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মৌখিক ঐতিহ্যের প্রসার

মৌখিক সাহিত্য ও অন্যান্য বিষয়ের লিখিত নথি ছাড়াও কোনো সমাজের মৌখিক ইতিহাস কেবলমাত্র মৌখিক ঐতিহ্যের মাধ্যমে এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী অন্য প্রজন্মে পৌঁছোতে পারে।

মৌখিক ঐতিহ্যের ধারণার বিকাশ

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালান নেভিস ও তাঁর সহযোগীরা ১৯৪০ -এর দশকে মৌখিক ইতিহাসের আধুনিক ধারণার বিকাশ ঘটান। তিনি ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কলম্বিয়া ওরাল হিস্ট্রি রিসার্চ অফিস প্রতিষ্ঠা করেন।

টেপ রেকর্ডার আবিষ্কার

১৯৬০-এর দশক এবং ১৯৭০-এর দশকের প্রথমদিকে কথাবার্তা রেকর্ড করার যন্ত্র টেপ রেকর্ডার সহজলভ্য হয়ে উঠলে তখন থেকে ইতিহাসের উপাদানের অন্যতম শাখা হিসেবে মৌখিক ইতিহাস বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই সময় নাগরিক অধিকার, নারীবাদ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ-বিরোধী প্রতিবাদ প্রভৃতি বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য টেপ রেকর্ডারের মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় অস্কার লিউইস, স্টাডস্ টারকেল, অ্যালেক্স হ্যালি প্রমুখ তাদের রচনায় বিভিন্ন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার থেকে প্রাপ্ত স্মৃতিকথা যথেষ্ট পরিমাণে ব্যবহার করেন।

মৌখিক ইতিহাসচর্চার সংস্থা

আমেরিকার মৌখিক ইতিহাসবিদরা ‘ওরাল হিস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন’ (১৯৬৬ খ্রি.) ও ব্রিটিশ মৌখিক ইতিহাসবিদরা ‘ওরাল হিস্ট্রি সোসাইটি’ (১৯৬৯ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা করেন। এভাবে বিভিন্ন দেশেই মৌখিক ইতিহাসচর্চার প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। এই প্রতিষ্ঠানগুলি মৌখিক ইতিহাসের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।

মৌখিক ইতিহাসচর্চার অগ্রগতি

বিংশ শতকের শেষদিকে ইতিহাসচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হিসেবে মৌখিক ইতিহাসচর্চা বিভিন্ন দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মর্যাদা পেতে শুরু করে। ১৯৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের বিভিন্ন বেতার কেন্দ্র বিভিন্ন দেশ ও স্থানের বহু ব্যক্তির কাছ থেকে মৌখিক ইতিহাস রেকর্ড করে এবং রেকর্ড করা এই মৌখিক ইতিহাস The Century Speaks শিরোনামে ৬৪০টি পর্বে সম্প্রচার করে। এভাবে সাক্ষাৎকারভিত্তিক স্মৃতিকথা বা মৌখিক ইতিহাস বর্তমানকালে ঐতিহাসিকদের কাছে মূল্যবান হয়ে ওঠে।

মৌখিক ঐতিহ্যের সংজ্ঞা

মৌখিক ঐতিহ্যের বিভিন্ন সংজ্ঞা দেওয়া যায়। যেমন –

(১) সাক্ষাৎকারের তথ্য সংগ্রহ

শ্রবণ, শ্রবণ-বীক্ষণ প্রভৃতি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বা পরিকল্পিত সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি, পরিবার, গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনা অথবা প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন ঘটনার ঐতিহাসিক তথ্য সংগ্রহ এবং চর্চার বিষয়টি মৌখিক ইতিহাস (Oral history) বা মৌখিক ঐতিহ্য নামে পরিচিত।

(২) মৌখিক বার্তা

জান ভ্যানসিনা-র মতে, মৌখিক ঐতিহ্য হল “এক ধরনের মৌখিক বার্তা যা কথা, গান প্রভৃতির মাধ্যমে মুখে মুখে পূর্ববর্তী প্রজন্ম অতিক্রম করে পরবর্তী প্রজন্মে এসে পৌঁছোয়।”

(৩) তথ্য বিশ্লেষণ ও চর্চা

ওরাল হিস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন-এর মতে, “অতীতের ঘটনা সম্পর্কে মানুষের কণ্ঠস্বর, স্মৃতিকথা, বিভিন্ন সম্প্রদায় ও অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও চর্চা করাকেই মৌখিক ইতিহাস বলে।”

মৌখিক ঐতিহ্যের বৈশিষ্ট্য

মৌখিক ঐতিহ্যের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন –

(১) সাক্ষাৎকার

প্রধানত সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সেই ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো মৌখিক ইতিহাস বা ঐতিহাসিক ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করার জন্য আজকাল অডিওটেপ, ভিডিওটেপ বা রেকর্ড করার অন্য কোনো যান্ত্রিক কৌশল ব্যবহার করা হয়। রেকর্ড করা বক্তব্যগুলি ইতিহাস রচনার মূল্যবান উপাদান হিসেবে কাজ করে।

(২) অলিখিত ইতিহাস

মৌখিক ইতিহাস প্রথমপর্বে লিখিত ইতিহাস হিসেবে পাওয়া যায় না। এসব ইতিহাসের কাহিনিগুলি মানুষের মুখে মুখে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। মৌখিক ইতিহাসের তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীকালে লিখিত ইতিহাস রচিত ও প্রকাশিত হতে পারে।

(৩) সংরক্ষণ

অতীতের কোনো ঘটনার বিবরণ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে সংগ্রহ করে তা নথি বা রেকর্ড হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। এসব তথ্যাবলি বিভিন্ন মহাফেজখানা, গ্রন্থাগার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি স্থানে সংরক্ষণ করা হয়। এই সংরক্ষণ থেকে পরবর্তী প্রজন্ম অতীত ইতিহাস জানতে পারে।

(৪) প্রত্যক্ষ উৎস

যে বা যারা অতীতের কোনো ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী সাধারণত তারাই মৌখিক ইতিহাস সৃষ্টি করেন। তাই বলা যায় যে, মৌখিক ঐতিহ্য হল কোনো ঐতিহাসিক ঘটনার প্রত্যক্ষ উৎস। এর ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীকালে যথার্থ ইতিহাস লেখা হতে পারে।

মৌখিক ঐতিহ্যের উদাহরণ

ইতিহাসের উপাদান হিসেবে মৌখিক ঐতিহ্যের বিভিন্ন উদাহরণ দেওয়া যায়। যেমন –

(১) প্রাচীন গ্রিসের ইতিহাস

মৌখিক তথ্যের সহায়তা নিয়ে প্রাচীন গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস সর্বপ্রথম যথার্থ পদ্ধতিতে গ্রিস-এর ইতিহাস লেখার সূত্রপাত করেন। তিনি ৪৯০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিস ও পারস্যের মধ্যে অনুষ্ঠিত যুদ্ধের ইতিহাস (‘The Histories’) রচনা করেন। হেরোডোটাসের জন্মের ৬ বছর আগে ঘটে যাওয়া যুদ্ধের কাহিনি যখন তিনি রচনা করতে শুরু করেন তখনও সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বা প্রত্যক্ষদর্শী বা সাক্ষী বহু মানুষ বেঁচেছিলেন। তিনি তাঁর ইতিহাস লেখার সময় যুদ্ধ সম্পর্কে সেসব সাক্ষীদের দেওয়া তথ্য যথেষ্ট পরিমাণে ব্যবহার করেন। অপর গ্রিক ঐতিহাসিক থুকিডিডিসও তাঁর ইতিহাস রচনার কাজে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি বা সাক্ষীর মৌখিক বিবরণ থেকে প্রাপ্ত তথ্য যথেষ্ট পরিমাণে ব্যবহার করেছেন।

(২) নীলকরদের অত্যাচারের ইতিহাস

বাংলার নীলচাষিদের ওপর ইংরেজ নীলকর সাহেবদের তীব্র অত্যাচার ও নির্যাতনের কাহিনি লোকের মুখে মুখে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। ‘বিশে ডাকাতের’ মতো নীলবিদ্রোহের নেতাদের কাহিনি সর্বত্র জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এসব কাহিনি মুখে মুখে পরবর্তী প্রজন্মে পৌঁছে যায়। মৌখিক ঐতিহ্য-নির্ভর এসব কাহিনি বাংলার নীল বিদ্রোহ-এর ইতিহাস রচনার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে।

(৩) ক্ষুদিরামের ফাঁসি

অত্যাচারী ব্রিটিশ সরকার ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে ফাঁসি দেয়। ক্ষুদিরামের মৃত্যুর পর অজ্ঞাতপরিচয় গীতিকারের লেখা ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি’ গানটি গ্রামবাংলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। গানটি বংশ পরম্পরায় আজও বাঙালিদের মধ্যে চলে আসছে। বর্তমানকালে মৌখিক উৎস থেকে এই গানটি শুনে উপলব্ধি করা যায় যে, অত্যাচারী ইংরেজ শাসকদের বিরুদ্ধে ক্ষুদিরাম বসু দেশবাসীর অকুণ্ঠ করুণা ও সমর্থন লাভ করেছিলেন।

(৪) উদবাস্তুদের ইতিহাস

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষ দ্বিখণ্ডিত হয়ে পৃথক পাকিস্তান-এর সৃষ্টি হলে পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের এবং পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। ফলে পূর্ববঙ্গ অর্থাৎ পূর্বপাকিস্তানের বিপুল সংখ্যক হিন্দু নিরাপত্তার অভাব বোধ ক’রে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে থেকে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতের পূর্ব সীমান্তের অন্যান্য রাজ্যে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। লক্ষ লক্ষ নিঃস্ব, রিক্ত উদবাস্তু শিয়ালদহ, হাওড়া-সহ অন্যান্য রেলস্টেশনে, ফুটপাতে পড়ে থেকে এক দুর্বিষহ জীবন কাটাতে বাধ্য হয়। পূর্ববঙ্গের মাতৃভূমি ছেড়ে আসা উদবাস্তুদের জীবনযাত্রা নিয়ে সাম্প্রতিককালে যথেষ্ট গবেষণা এবং সে সময়ের ইতিহাস লেখার কাজ শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করছে উদবাস্তুদের স্মৃতিকথা।

মৌখিক ঐতিহ্যের গুরুত্ব

ইতিহাসের উপাদান হিসেবে মৌখিক ঐতিহ্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এর বিভিন্ন গুরুত্বগুলি হল –

(১) আদিম সমাজে গুরুত্ব

মৌখিক ইতিহাস আদিম সমাজে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। লিখিত ইতিহাসের ধারা শুরু হওয়ার পূর্বে আদিম মানুষের কাছে অতীতের তথ্য সরবরাহের একমাত্র মাধ্যম ছিল মৌখিক ইতিহাস। আদিম মানুষ মৌখিক ইতিহাসের কাহিনিগুলিকে বিশ্বাস করেই মুখে মুখে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে কাহিনিগুলিকে পৌঁছে দিয়েছিল।

(২) প্রাথমিক উপাদান

কোনো ঘটনার ইতিহাস যখন প্রথম লেখা হয়, তখন সেই ঐতিহাসিক ঘটনার প্রাথমিক উপাদান (Primary Sources) বিশেষ পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে ঘটনাটির বিষয়ে ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে প্রাথমিক উপাদান হিসেবে মৌখিক ঐহিত্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

(৩) নিম্নবর্গের ইতিহাস

অনেক সময় সমাজের অবহেলিত নিম্নবর্গের মানুষদের কোনো লিখিত নথিপত্র বা দলিল দস্তাবেজ থাকে না। এসব মানুষের ইতিহাস জানতে গেলে মুখের কথা, কিংবদন্তি, প্রবাদ, স্মৃতিচারণ প্রভৃতির ওপর নির্ভর করতেই হয়।

(৪) যথার্থ তথ্য সরবরাহ

বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী ঐতিহাসিক যথার্থ ইতিহাসকে আড়াল করার উদ্দেশ্যে নিজেদের দৃষ্টিকোণ থেকে উপনিবেশের ইতিহাস রচনা করে থাকেন। দেশীয় পণ্ডিতদের ইতিহাস রচনার কাজে বাধার সৃষ্টি করেন। কিন্তু উপনিবেশের যথার্থ ইতিহাস মৌখিক ঐতিহ্যের মাধ্যমে সেদেশের জনসমাজে প্রচলিত থাকে। ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পরবর্তীকালে সে দেশের যথার্থ ইতিহাস রচনার কাজে মৌখিক ঐতিহ্য যথার্থ তথ্য সরবরাহ করতে পারে।

(৫) মূল্যবান তথ্য

মৌখিক ইতিহাসকে অনেকে লিখিত ইতিহাসের মতোই নির্ভরযোগ্য তথ্য বলে মনে করেন। ১৯৯৭ সালে কানাডার সুপ্রিম কোর্ট মৌখিক ইতিহাসকে ইতিহাসের লিখিত তথ্যের মতোই সমান গুরুত্বপূর্ণ বলে রায় দেয়।

সমালোচনা

মৌখিক ইতিহাসের আপাত মূল্য থাকলেও তা কখনোই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। –

  • (১) মৌখিক ইতিহাসের কাহিনি মুখে মুখে প্রচারিত হয় বলে তাতে সহজেই ভুল তথ্যের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।
  • (২) কোনো বিশেষ মতাদর্শের প্রতি অনুগত ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে তা থেকে যথার্থ মৌখিক ইতিহাস উদ্ধার করা কষ্টসাধ্য হতে পারে। যেমন – আমেরিকার রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কন নিহত হওয়ার কিছুদিন পর এমন কিছু মানুষের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয় যারা লিঙ্কনের সান্নিধ্যে ছিলেন বা তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন। এরূপ ব্যক্তিরা তাদের সাক্ষাৎকারে লিঙ্কন সম্পর্কে যে অনুভূতি প্রকাশ করবেন তা লিঙ্কন-বিরোধীদের সাক্ষাৎকারের বিরোধী হতে পারে।

উপসংহার :- মৌখিক ঐতিহ্য আমাদের প্রজাতির একক সর্বাধিক প্রভাবশালী যোগাযোগ প্রযুক্তি হিসাবে দাঁড়িয়েছে। এটি ঐতিহাসিক সত্য এবং অনেক ক্ষেত্রে এখনও একটি সমসাময়িক বাস্তবতা।

মৌখিক ঐতিহ্য সম্পর্কে আলোচনা

(FAQ) মৌখিক ঐতিহ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. মৌখিক ঐতিহ্য কি?

মৌখিক ঐতিহ্য হল এক ধরনের সাংস্কৃতিক বিষয় ও ঐতিহ্য যা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের মানুষের মধ্যে মুখে মুখে প্রচলিত হয়ে আসে।

২. ‘ওরাল হিস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠিত হয় কখন?

১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে।

৩. ‘ওরাল হিস্ট্রি সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠিত হয় কখন?

১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে।

৪. সর্বপ্রথম যথার্থ পদ্ধতিতে গ্রিসের ইতিহাস লেখার সূত্রপাত করেন কে?

হেরোডোটাস।

৫. ‘The Histories’ কার লেখা?

হেরোডোটাস।

Leave a Comment