খিজির খান

সুলতান খিজির খান প্রসঙ্গে তৈমুরের সহায়তা, সিংহাসন লাভের চক্রান্ত, সিংহাসন অধিকার, রাজ্য বিস্তার, উপাধি গ্ৰহণ, মুদ্রা প্রচলন, হজরতের বংশধর, সর্বত্র বিদ্রোহ ও দৃঢ় শাসনে অক্ষম সম্পর্কে জানবো।

সুলতান খিজির খান

ঐতিহাসিক চরিত্রখিজির খান
রাজত্ব১৪১৪-২১ খ্রি
বংশসৈয়দ বংশ
উপাধিমসনদ-ই-আলা
মৃত্যু১৪২১ খ্রি
সুলতান খিজির খান

ভূমিকা :- তৈমুর লঙের ভারত আক্রমণ -এর পর দিল্লী সুলতানির পতন ত্বরান্বিত হয়। এরপর তুঘলক বংশ -এর পতন ঘটে এবং সৈয়দ বংশের শাসন শুরু হয়।

খিজির খানের তৈমুরের সহায়তা লাভ

তৈমুর ভারত ছাড়ার আগে খিজির খাঁকে মূলতান, লাহোর ও দীপালপুরের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন।

সিংহাসন লাভে খিজির খানের চক্রান্ত

খিজির খান ছিলেন খুবই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। তিনি সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক -এর আমলে মুলতানের শাসনকর্তা নিযুক্ত হয়েছিলেন। ফিরোজের মৃত্যুর পর তিনি দিল্লীর সিংহাসন লাভের চক্রান্তে যোগ দেন।

খিজির খানের সিংহাসন অধিকার

তৈমুরকে তিনি সাহায্য করায় তৈমুর তাকে প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ করেন। খিজির খাঁ এরপর ১৪১৪ খ্রিস্টাব্দে দিল্লী অধিকার করেন।

সুলতান খিজির খানের রাজ্য বিস্তার

তিনি দোয়াব পর্যন্ত তার অধিকার বিস্তার করেন। ফলে খিজির খানের আমলে দিল্লীর অধীনে মূলতান, দীপালপুর, লাহোর, দিল্লী ও দোয়াব অঞ্চল ছিল।

খিজির খানের উপাধি গ্ৰহণ

খিজির খাঁ নিজে সুলতান উপাধি নেন নি। তিনি তৈমুরের বংশের প্রতি তার আনুগত্য জানাতেন। তিনি মসনদ-ই-আলা উপাধি নেন এবং তৈমুরের উত্তরাধিকারী শাহরুখের কাছে বার্ষিক কর নিয়মিতভাবে পাঠাতেন।

সুলতান খিজির খানের মুদ্রা প্রচলন

তিনি সোনা ও রূপার অভাব বশত তুঘলকদের নামাঙ্কিত মুদ্রা চালু রাখেন। তিনি ১৪১৪-১৪২১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শাসন করেন।

খিজির খানের নিজেকে হজরতের বংশধরের দাবী

সুলতান খিজির খাঁ নিজেকে হজরত মহম্মদের বংশধর বলে দাবী করতেন। এই অর্থে তিনি ছিলেন সৈয়দ। কিন্তু এ সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায় নি।

খিজির খানের রাজ্যে সর্বত্র বিদ্রোহ

খিজির খানের শাসন স্থায়ী ও দৃঢ় হয়নি। তিনি তুর্কী অভিজাতদের জাগীর বহাল রাখলেও, তারা তাকে সহ্য করতে পারত না। এজন্য রাজ্যের সর্বত্র বিদ্রোহ চলতে থাকে। খিজির খাঁকে সর্বদা বিদ্রোহ দমনে বাস্ত থাকতে হয়।

দৃঢ় শাসনে খিজির খানের অক্ষমতা

তিনি অভিজাতদের ক্ষমতা কমাবার জন্য ইক্তাগুলিকে শিক বা জেলায় ভাগ করেন। কিন্তু জেলা কর্মচারীরা স্থানীয় স্বার্থের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করে খিজির খানের নির্দেশ অমান্য করতে থাকে। এজন্য তিনি শাসন ব্যবস্থা দৃঢ় করতে পারেননি।

উপসংহার :- খিজির খানের মৃত্যুর পর তার পুত্র মোবারক খান দিল্লীর সিংহাসনে বসেন। তিনি নিজ নামে খুৎবা ঘোষণা করেন এবং ‘শাহ’ উপাধি নেন। তিনি নিজ নামে মুদ্রা চালু করেন। মোট কথা, তিনি দিল্লীর স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

(FAQ) সুলতান খিজির খান সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. দিল্লীতে সৈয়দ বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?

খিজির খান।

২. খিজির খান নিজেকে কার বংশধর বলে দাবি করতেন?

হজরত মহম্মদ।

৩. মসনদ-ই-আলা কার উপাধি?

খিজির খান।

৪. খিজির খানের পর কে সিংহাসনে আরোহণ করেন?

মোবারক শাহ।

Leave a Comment