সোলাঙ্কি বংশের রাজা প্রথম ভীম প্রসঙ্গে তার সিংহাসনে আরোহণ, পূর্বপুরুষদের নীতি অনুসরণ, উল্লেখযোগ্য জয়, মামুদের সোমনাথ আক্রমণ, ভীমের পলায়ণ, পুরোহিতদের বাধা প্রদান, মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন ও মামুদের বিরুদ্ধে ভীমের সেনাদল প্রেরণ সম্পর্কে জানবো।
রাজা প্রথম ভীম
ঐতিহাসিক চরিত্র | প্রথম ভীম |
রাজত্বকাল | আনুমানিক ১০২২-১০৬৪ খ্রি: |
বংশ | সোলাঙ্কি বংশ |
শাসনকেন্দ্র | গুজরাট ও কাথিয়াবাড় |
সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন | সুলতান মামুদ |
ভূমিকা :- প্রায় সার্ধতিন শতাব্দী কাল (আনুমানিক ৯৫০-১৩০০ খ্রিস্টাব্দ) চৌলুক্য বা সোলাঙ্কি বংশ গুজরাট ও কাথিয়াবাড় শাসন করে। এই বংশের উল্লেখযোগ্য শাসক ছিলেন প্রথম ভীম।
সিংহাসনে আরোহণ
শক্তিশালী নৃপতি প্রথম ভীম আনুমানিক ১০২২ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন।
প্রথম ভীম কর্তৃক পূর্বপুরুষদের নীতি অনুসরণ
তার পূর্বপুরুষদের অনুসৃত নীতি অনুযায়ী সিন্ধুর মুসলমানদের সাথে তিনি যুদ্ধ করেন।
প্রথম ভীমের উল্লেখযোগ্য জয়
তিনি কলচুরি বংশ ও কল্যাণের চালুক্য বংশ-এর রাজাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তিনি প্রসিদ্ধ পারমার নৃপতি ভোজকে পরাজিত করেন। কথিত আছে, তিনি কলচুরিরাজ লক্ষ্মীকর্ণকেও পরাজিত করেছিলেন।
প্রথম ভীমের সময় মামুদের সোমনাথ আক্রমণ
সুলতান মামুদ প্রথম ভীমের রাজত্বকালে সোমনাথ আক্রমণ করেন। কিন্তু অদ্যাবধি প্রাপ্ত কোনো শিলালিপিতে অথবা জৈন ঐতিহাসিকদের রচনায় এর কোনো উল্লেখ নেই। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটির ইতিহাসের জন্য আমরা একান্তভাবে মুসলমানদের রচনার উপর নির্ভরশীল।
প্রথম ভীমের পলায়ণ
মামুদ অনহিলওয়াড়ার কাছে উপস্থিত হলে যুদ্ধের জন্য অপ্রস্তুত থাকায় ভীম সম্ভবতঃ নগর ত্যাগ করেন। মামুদ সোমনাথ মন্দিরের দ্বারে উপস্থিত হলে স্থানীয় সেনাপতিও সম্ভবতঃ সমুদ্রবক্ষে এক জাহাজে উঠে আত্মরক্ষা করেন।
মামুদের বিরুদ্ধে পুরোহিতদের বাধা প্রদান
মন্দিরের পুজারীরা অবশ্য পরাজয় অবশ্যম্ভাবী জেনেও অসীম সাহসে আক্রমণকারীদের বাধা দেন।
মামুদ কর্তৃক হত্যা প্রসঙ্গে মুসলিম লেখকের বর্ণনা
সমসাময়িক একজন মুসলমান লেখক বলেন, “মন্দিরের চারপাশে পঞ্চাশ হাজার কাফেরকে হত্যা করা হয়। যারা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায় তারা জাহাজে পলায়ন করে।”
সুলতান মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন
বিজয়ী মামুদ মন্দির লুণ্ঠন করেন। তিনি যে ধনরত্ন লুণ্ঠন করেছিলেন একজন আধুনিক লেখকের মতে তার মূল্য ১০,৫০০,০০০ পাউণ্ড।
মামুদ কর্তৃক বিগ্ৰহ নষ্ট
কথিত আছে যে মন্দিরের পুরোহিতরা বিগ্রহটি নষ্ট না করা হলে মামুদকে বহু স্বর্ণ দেবার প্রস্তাব দেন, কিন্তু মামুদ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে হস্তস্থিত এক দণ্ডের আঘাতে ‘সোমনাথের ফাঁপা উদর’ বিচূর্ণ করে ফেলেন এবং বিগ্রহের অভ্যন্তর থেকে বহু মূল্যবান রত্ন লাভ করেন।
সুলতান মামুদের প্রত্যাবর্তন
মামুদের মৃত্যুর প্রায় ছয় শতাব্দী পরে এই কাহিনী প্রচলিত হয়। তাই কাহিনীর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ আছে। সোমনাথ থেকে ফিরবার পথে মামুদ অনহিলওয়াড়ায় যান নি। তিনি মনসুরা হয়ে একটি জনবিরল পথে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
মামুদের বিরুদ্ধে প্রথম ভীমের সেনাদল প্রেরণ
ফেরার পথে সম্ভবতঃ প্রথম ভীম কর্তৃক প্রেরিত একটি সৈন্যদল তাকে উত্ত্যক্ত করেছিল। মামুদ কোনো শহর বা গুজরাটের কোনো অংশ অধিকার করার চেষ্টা করেন নি। তিনি কেবলমাত্র লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যে সাফল্যের সাথে একটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।
উপসংহার :- প্রথম ভীমের পর প্রথম কর্ণ রাজা হন। তার শাসনকাল (আনুমানিক ১০৬৪-১০৯৪ খ্রি) শান্তিপূর্ণ ছিল।
(FAQ) সোলাঙ্কি বংশের রাজা প্রথম ভীম সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১০২২-১০৬৪ খ্রিস্টাব্দে।
সুলতান মামুদ।