পরবর্তী তুঘলক সুলতানগণ

পরবর্তী তুঘলক সুলতানগণ প্রসঙ্গে তুঘলক শাহ, আবু বকর, মহম্মদ শাহ, সিকান্দার শাহ, নাসির উদ্দিন মহম্মদ শাহ, নসরৎ শাহ ও তৈমুর লঙের ভারত আক্রমণ সম্পর্কে জানবো।

পরবর্তী তুঘলক সুলতানগণ

ভূমিকা :- ফিরোজ শাহ তুঘলক ছিলেন জনহিতৈষী সুলতান। তার শাসনকাল ছিল শান্তিপূর্ণ। তার আমলে বড় ধরনের কোনো আক্রমণ ঘটে নি। কিন্তু তার মৃত্যুর পর তুঘলক বংশ দুর্বল হয়ে পড়ে।

তুঘলক সুলতান তুঘলক শাহ

১৩৮৮ খ্রিস্টাব্দে সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলকের মৃত্যু হলে তাঁর পৌত্র তুঘলক শাহ দিল্লীর সিংহাসনে বসেন। তুঘলক শাহ ছিলেন পানাসক্ত ও ইন্দ্রিয়পরায়ণ। তিনি রাজকার্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। অভিজাতরাও তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়।

তুঘলক সুলতান আবুবকর

শেষ পর্যন্ত ফিরোজের অপর এক পৌত্র আবুবকর তুঘলক শাহকে ১৩৮৯ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনচ্যুত করেন। আবুবকর এই রাজনৈতিক বিপ্লবে লাভবান হতে পারেন নি।

তুঘলক সুলতান মহম্মদ শাহ

ফিরোজের তৃতীয় পুত্র মহম্মদ শাহ সুযোগ বুঝে ১৩৯০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লীর সিংহাসন অধিকার করেন। মহম্মদ শাহ সিংহাসন অধিকার করলেও সুলতানি সাম্রাজ্য-এর ঐক্য ধরে রাখতে পারেন নি। তিনিও ছিলেন সুরাসক্ত এবং এজন্য তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। ১৩৯৪ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ শাহ মারা যান।

তুঘলক সুলতান সিকান্দার শাহ

মহম্মদ শাহের মৃত্যুর পর তার পুত্র সিকান্দার শাহ মাত্র চার সপ্তাহ কাল রাজত্ব করেন।

তুঘলক সুলতান নাসিরুদ্দিন মহম্মদ শাহ

• (১) সিকান্দার শাহের পর তার ভ্রাতা নাসিরুদ্দিন মহম্মদ শাহ ১৩৯৪ খ্রিস্টাব্দে দিল্লীর সিংহাসনে বসেন। তার শাসন দিল্লীর অভিজাতরা পছন্দ করত না। এই সময় সাম্রাজ্যের সর্বত্র বিদ্রোহের ফলে সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে।
• (২) দক্ষিণ ভারত, খান্দেশ, মালব, বুন্দেলখণ্ড, ‘রাজপুতানা, গুজরাটে স্থানীয় শাসকরা স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ফলে সুলতানি সাম্রাজ্য ভেঙে গেলে, দিল্লী ও তার পার্শ্ববর্তী স্থান নিয়ে এক ক্ষুদ্র রাজ্যের ওপর নাসিরুদ্দিন রাজত্ব করতে বাধ্য হন। জৌনপুর ও পাঞ্জাবেও স্বাধীন রাজ্য স্থাপিত হয়।

তুঘলক সুলতান নসরৎ শাহ

অন্য দিকে নসরৎ শাহ নামে ফিরোজের এক পুত্র নিজেকে দিল্লীর সুলতান বলে ঘোষণা করেন। ফলে দিল্লীতে এক সঙ্গে দুইজন সুলতান শাসন করতে থাকেন। নাসিরুদ্দিন শাহ দিল্লীতে ও নসরৎ শাহ ফিরোজাবাদে অধিষ্ঠান করেন। অভিজাতরা ভাগ হয়ে কেউ নাসিরুদ্দিন কেউ নসরতের পক্ষ নেন।।

তুঘলক আমলে তৈমুর লঙের ভারত আক্রমণ

এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে তৈমুরলঙ্গ ভারত আক্রমণ করেন। তৈমুর লঙের ভারত আক্রমণ-এর ভয়ে দুই সুলতান দিল্লী থেকে পালিয়ে যান। তৈমুর ফিরে যাওয়ার পর নাসিরুদ্দিন মহম্মদ শাহ পুনরায় দিল্লী অধিকার করেন। তিনি নান্নু ইকবাল ও পরে দৌলত খাঁ নামে আফগান সেনাপতিদের অধীন হয়ে পড়েন।

উপসংহার :- ১৪১২ খ্রিস্টাব্দে নাসিরুদ্দিন মহম্মদ শাহের মৃত্যু হলে তুঘলক বংশের পতন ঘটে। এরপর খিজির খাঁ নামে এক ব্যক্তি দিল্লীর সিংহাসনে সৈয়দ বংশ-এর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন।

(FAQ) পরবর্তী তুঘলক সুলতানগণ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?