সত্যপ্রদীপ পত্রিকা প্রসঙ্গে সত্যপ্রদীপ পত্রিকার সম্পাদক, সত্যপ্রদীপ পত্রিকার প্রকাশনা কাল, সত্যপ্রদীপ পত্রিকা প্রচারের উদ্দেশ্য, সত্যপ্রদীপ পত্রিকার শেষ সংখ্যা ও সত্যপ্রদীপ পত্রিকার শেষ সংখ্যায় প্রকাশিত বিষয় সম্পর্কে জানবো।
সাপ্তাহিক সত্যপ্রদীপ পত্রিকা প্রসঙ্গে সত্যপ্রদীপ পত্রিকার ভাষা, সত্যপ্রদীপ পত্রিকার ধরণ, সত্যপ্রদীপ পত্রিকার সম্পাদক, সত্যপ্রদীপ পত্রিকার উদ্দেশ্য ও সত্যপ্রদীপ পত্রিকার শেষ সংখ্যা সম্পর্কে জানবো।
সত্যপ্রদীপ পত্রিকা
ঐতিহাসিক পত্রিকা | সত্যপ্রদীপ পত্রিকা |
ভাষা | বাংলা |
ধরণ | সাপ্তাহিক পত্রিকা |
প্রকাশকাল | ৪ মে ১৮৫০ খ্রি |
সম্পাদক | শ্রীমেরিডিথ টৌন্সে |
ভূমিকা :- ‘সত্যপ্রদীপ’ এক সপ্তাহ পর প্রতি শনিবার শ্রীরামপুরের মন্ত্রালয়ে শ্রীমেরিডিথ টৌন্সেও সাহেব কর্তৃক প্রকাশিত হত। এর অগ্রিম বাধিক মূল্য ছিল ছয় টাকা।
সত্যপ্রদীপ পত্রিকার প্রকাশনা কাল
এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় ৪ মে ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে শনিবার (২৩ বৈশাখ ১২৫৭)।
সত্যপ্রদীপ পত্রিকা প্রচারের উদ্দেশ্য
এই পত্রিকা প্রচারের উদ্দেশ্যে সম্বন্ধে প্রথম সংখ্যায় এইরূপ লেখা হয়েছিল যে,
- (১) “সত্যপ্রদীপ প্রকাশ।… এইক্ষণে অন্যূন সপ্তদশ পত্র বঙ্গ ভাষায় প্রকাশিত হইতেছে ইহার মধ্যে কয়েক পত্রের তিন চারি শত পর্যন্ত গ্রাহক সত্তাই সম্বাদপত্র পাঠ করণে এতদ্বেশীয় লোকেদের অত্যন্ত লালসার প্রমাণ। ইদানীং বহুদেশীয় বিজ্ঞজনগণ স্বদেশীয় লোকেরদের উপকারার্থ স্বীয় ভাষায় সপ্তদশ পত্র প্রকাশ করিতেছেন অতএব বিদেশীয় লোকেদের এতৎকর্মে হস্তক্ষেপ করণের কি প্রয়োজন কেহ যদি অসন্তুষ্ট হইয়া এইমত আপত্তি করেন তবে উত্তর এই। কোনো দেশীয় লোক কিঞ্চিৎ সভ্যতাবিশিষ্ট হইলে তাহারা অবশ্য সম্বাদপত্র প্রকাশ করেন, ক্রমে সভ্যতার বর্ণনানুসারে পত্রের উত্তমতাবৃদ্ধি হয়। এদেশীয় লোকেদের মধ্যে ক্রমেই সভ্যতা বৃদ্ধি পাইতেছে বটে তথাপি যে পত্র প্রকাশ হইতেছে তাহার তিন চারি পত্র ভিন্ন অন্যান্য পত্র বিষয়ে সভ্যজনগণ নানা দোষাপণ করেন। প্রথম এই । কোন সম্পাদক মহাশয় কোন স্থানে কোন সম্বাদ শ্রুত হইলে তাহার সত্যাসত্যতা নির্ণয়ার্থে উপযুক্ত অনুসন্ধান না করিয়া অথবা তদ্রূপ অনুসন্ধান করণাক্ষম হইয়া সহসা তাহা প্রকাশ করেন। ফলতঃ কোন সময়ে সদাচারি সভ্য বিশিষ্ট লোকেরদের নামে অনুপযুক্তরূপে দোষার্পণ ও নানাপ্রকার গ্লানি হয়। দ্বিতীয় এই কয়েক সম্বাদপত্রে অত্যন্ত অনুপযুক্ত শব্দাদি ব্যবহার প্রযুক্ত সভ্য লোকেরা প্রায় তৎপ্রতি দৃষ্টিক্ষেপ করিতে পারেন না। ফলতঃ এতদ্বিষয়ে নিশ্চিত্ত মহাশয়েরদের ঐ সকল পত্র পাঠ করাতে তাহারদের নীতিবৃদ্ধি না হইয়া অসভ্যতা বৰ্দ্ধন হইতেছে। এইক্ষণে আমরা দেশবিদেশীয় সত্যসম্বাদ অনুসন্ধানপূর্বক প্রকাশ করিয়া যাহা অসত্য তাহা পরিত্যাগপূর্বক পাঠক মহাশয়েরদের মনঃসন্তোষ করণাভিপ্রায়ে ‘সত্যপ্রদীপ’ নামক এই সম্বাদ পত্র প্রকাশ করিতেছি। কোনো অন্যায়াচরণের বিশ্বাস্য সংবাদ প্রাপ্ত হইলে তাদাচারের দোষ প্রকাশ করণে কোনোক্রমে শৈথিল্য করিব না। পরন্তু ব্যক্তিবিশেষের গ্লানিও করিব না। ফলতঃ এতদ্বেষীয় লোকেরদের সৎজ্ঞান ও গুণ যাহাতে বৃদ্ধি হয় এমত উপায় করা ‘সত্যপ্রদীপ’ পত্রিকার প্রধান অভিপ্রায়।
- (২) “অনন্তর যে সকল আইন ও সদর আদালতের যে সমস্ত পত্র ও রিপোর্ট অর্থাৎ নজির ও সদর বোর্ড প্রভৃতির যে সকল পত্র পাঠ করিয়া পাঠক মহাশয়েরা সন্তুষ্ট হইতে পারেন তাহাও এই ‘সত্যপ্রদীপ’ পত্রে প্রকাশ হইবেক ও তদ্বিষয়ে আমারদের ও পত্র প্রেরকেরদের উল্লেখ্য সকল কথা অবাধে প্রকাশ করিব। তদ্ভিন্ন উত্থান ও ক্ষেত্র কর্ষণার্থ সভার যে কোনো কাৰ্য্যেতে কিম্বা প্রস্তাবেতে ভূম্যধিকারিরদের ও কৃষাণেরদের পরিশ্রমের লাঘব ও লভ্য সম্ভাবনা তাহা জ্ঞাত করাইব এবং পদার্থ ও শিল্প প্রভৃতি বিদ্যা সম্পৰ্কীয় নানারূপ প্রস্তাব বিদ্যার্থি মহাশয়েরদের সন্তোষার্থে প্রতি সপ্তাহে প্রকাশ করিব তন্মধ্যে যে কথা সহজে বোধগম্য নহে ব্যাখ্যার্থে তাহার প্রতিবিম্ব কখন প্রকাশ হইবেক।”
- (৩) “দেওয়ানী ফৌজদারী প্রভৃতি যে পদে যিনি নিযুক্ত হন তাহার সম্বাদ ও সভ্য মহাশয়েরদের বিবাহ পরলোক প্রাপ্ত্যাদির সম্বাদও লিখিব।”
সত্যপ্রদীপ পত্রিকার শেষ সংখ্যা
এই পত্রিকার শেষ সংখ্যার প্রকাশকাল ছিল ২০ এপ্রিল ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দ।
সত্যপ্রদীপ পত্রিকার শেষ সংখ্যার প্রকাশ
এই পত্রিকার শেষ সংখ্যায় প্রকাশিত “পাঠক মহাশয়বর্গের প্রতি সত্যপ্রদীপের বিনীতি পূর্বক প্রগতি” এইরূপ, মদীয় বৰ্ত্তমান আকৃতি প্রকৃতি সমুচিত বচনাদি দর্শন পঠন বোধনার্থ আর মহাশয়েরদের সমীপস্থ হইবে না। আগামী সপ্তাহে সমাচার দর্পণ সুবেশে মহামহিম পাঠকগণের সুচারু করকমলগত হইবেক। তাহাতে প্রদীপের প্রতিবিম্বও দর্পণে সংলগ্ন হইয়া দ্বিগুণ দীপ্তি প্রদর্শক হইবেক।”
উপসংহার :- এক বছর পরে ‘সত্যপ্রদীপ’ পত্রিকার স্থলে শ্রীরামপুর থেকে সমাচার দর্পণ পত্রিকা পুনঃপ্রকাশিত হয়। সত্যপ্রদীপ পত্রিকার পথ চলা বন্ধ হয়ে যায়।
(FAQ) সত্যপ্রদীপ পত্রিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
সাপ্তাহিক পত্রিকা।
শ্রীমেরিডিথ টৌন্সে।
৪ মে ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে।