সুদূর দক্ষিণে মালিক কাফুরের অভিযান প্রসঙ্গে বিন্ধ্য পর্বতের পরপারে সৈনবাহিনী প্রেরণ, হোয়সল রাজের বিরুদ্ধে কাফুরের যাত্রা, মালিক কাফুরের হোয়সল রাজ্য আক্রমণ, মালিক কাফুরের কাছে বীরবল্লালের শান্তি প্রার্থনা, মালিক কাফুরের পাণ্ড্য রাজ্যে যাত্রা ও বিরোধ, পাণ্ড্য রাজ্যে বিরোধ, আমীর খসরুর গ্ৰন্থে মালিক কাফুরের অভিযানের বর্ণনা, মালিক কাফুরের মাদুরায় শহরে উপস্থিতি ও মালিক কাফুরের দিল্লী অভিমুখে যাত্রা সম্পর্কে জানবো।
সুদূর দক্ষিণে মালিক কাফুরের অভিযান
ঐতিহাসিক ঘটনা | সুদূর দক্ষিণে মালিক কাফুরের অভিযান |
সময়কাল | ১৩১০-১১ খ্রি: |
রাজ্য | হোয়শল রাজ্য ও পাণ্ড্য রাজ্য |
হোয়সল রাজ | তৃতীয় বীরবল্লাল |
মাদুরায় উপস্থিত | ১৩১১ খ্রি: |
ভূমিকা :- দেবগিরি ও বরঙ্গল জয়ের ফলে আলাউদ্দিন খলজি প্রচুর ধনসম্পদের অধিকারী হন। এতে তার মনে এক নতুন আস্থার উদ্রেক হয়। সমগ্র দক্ষিণ ভারত স্বীয় অধিকারে আনবার জন্য তার মনে প্রবল আকাঙ্ক্ষা দেখা দিল।
বিন্ধ্য পর্বতের পরপারে সৈনবাহিনী প্রেরণ
১৩১০ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় মালিক কাফুর ও খাজা হাজীকে এক বিরাট সৈন্যবাহিনী সহ বিন্ধ্য পর্বতের পরপারে প্রেরণ করা হল ।
হোয়সল রাজের বিরুদ্ধে কাফুরের যাত্রা
কাফুর পুনরায় দেবগিরির মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হলেন। বিশ্বস্ত যাদবরাজের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সামরিক সাহায্য নিয়ে তিনি পরাক্রান্ত হোয়সলরাজ তৃতীয় বীরবল্লালের রাজধানী দ্বারসমুদ্র অভিমুখে দ্রুত যাত্রা করেন। কর্নাটকের হাসান জেলার হলেবিদে এখনও এই শহরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়।
কাফুরের হোয়সল রাজ্য আক্রমণ
বর্তমান কালের সমগ্র কর্নাটক এবং অন্যান্য কয়েকটি জেলা নিয়ে গঠিত হোয়সল রাজ্যটি কৃষ্ণা নদীর দক্ষিণে অবস্থিত ছিল। ১২৯৬ খ্রিস্টাব্দে রামচন্দ্র যেরূপ অতর্কিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, বীর বল্লালও সেইরূপ আক্রান্ত হলেন।
মালিক কাফুরের কাছে বীরবল্লালের শান্তি প্রার্থনা
হোয়সল রাজ বীরবল্লাল শান্তি প্রার্থনা করে প্রচুর অর্থ ক্ষতিপূরণ স্বরূপ দিলেন। এর মধ্যে একটি রত্ন ছিল, যাকে আমীর খসরু ‘জগতে অতুলনীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন। বীর বল্লাল দিল্লীর অধীন করদ রাজা হলেন।
মালিক কাফুরের পাণ্ড্য রাজ্যে যাত্রা
দ্বারসমুদ্র থেকে কাফুর ‘সুদূর দক্ষিণে’র পাণ্ড্য রাজ্য অভিমুখে যাত্রা করলেন। এই রাজ্য সমুদ্রতীরে কুইনল থেকে নেল্লোর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মুসলমান লেখকগণ একে ‘মাবার’ বলে অভিহিত করতেন।
পাণ্ড্য রাজ্যে বিরোধ
কুলশেখরের মৃত্যুর পর তাঁর দুই পুত্র সুন্দর পাণ্ড্য ও বীর পাণ্ড্যের মধ্যে সিংহাসন নিয়ে বিরোধ উপস্থিত হয়।
আমীর খসরুর গ্ৰন্থে মালিক কাফুরের অভিযানের বর্ণনা
হোয়সল ও পাণ্ড্যগণ কর্তৃক শাসিত অজ্ঞাত ও দুর্গম অঞ্চলের মধ্য দিয়ে কাফুর কিরূপে অভিযান করেছিলেন, তার বিস্তারিত বিবরণ আমীর খসরুর ‘তারিখ’- ই-আলাই’ গ্রন্থে পাওয়া যায়।
মালিক কাফুরের মাদুরায় শহরে উপস্থিতি
১৩১১ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে পাণ্ড্য রাজ্যের অনেকগুলি ধনরত্বপূর্ণ মন্দির ধ্বংস করে কাফুর মাদুরায় উপস্থিত হয়ে দেখেন শহরটি পরিত্যক্ত হয়েছে।
মালিক কাফুরের দিল্লী অভিমুখে যাত্রা
পাণ্ড্য রাজপুত্রদের পরাজিত বা বন্দী করতে না পেরে তিনি দিল্লী অভিমুখে যাত্রা করেন। ১৩১১ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে তিনি ৩১২ হস্তী, ২০,০০০ অশ্ব এবং ৫০০ মণ রত্ন নিয়ে দিল্লীতে উপস্থিত হলেন।
মালিক কাফুর সম্পর্কে ফিরিস্তার মন্তব্য
ঐতিহাসিক ফিরিস্তা বলেন যে কাফুর রামেশ্বরে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
উপসংহার :- রাজনৈতিক দিক থেকে মালিক কাফুরের এই অভিযানের কোনো ফল হয় নি। দক্ষিণ ভারতের অন্য হিন্দুরাজ্যগুলির ন্যায় পাণ্ড্য রাজকে অধিকার বা বশীভূত করা সম্ভব হয় নি।
(FAQ) সুদূর দক্ষিণে মালিক কাফুরের অভিযান সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
হোয়সল ও পাণ্ড্য রাজ্য।
১৩১১ সালে।
তৃতীয় বীরবল্লাল।