ফ্রেডরিক নীটশের প্রেমপত্র

জার্মান দার্শনিক ফ্রেডরিক নীটশের প্রেমপত্র প্রসঙ্গে ফ্রেডরিক নীটশের পরিচিতি, ফ্রেডরিক নীটশের দেশ, ফ্রেডরিক নীটশের খ্যাতি, ফ্রেডরিক নীটশের প্রেম, ফ্রেডরিক নীটশের প্রেমিকা ও ফ্রেডরিক নীটশের মূল প্রেমপত্র সম্পর্কে জানব।

দার্শনিক ফ্রেডরিক নীটশের প্রেমপত্র

ঐতিহাসিক প্রেমপত্রফ্রেডরিক নীটশের প্রেমপত্র
পরিচিতিজার্মান শাস্ত্রীয় পন্ডিত, দার্শনিক ও সংস্কৃতির সমালোচক
দেশজার্মানি
প্রেমিকাজনৈকা ওলন্দাজ রূপসী
প্রেমপত্র রচনা১১ ই এপ্রিল, ১৮৭৬ খ্রি
ফ্রেডরিক নীটশের প্রেমপত্র

জার্মানির অন্তর্গত প্রাশিয়া প্রদেশের ‘মহামানব’ নীটশে কদাচ নারী জাতির প্রতি বিশেষ সুপ্রসন্ন ছিলেন না। কারণ, তিনি ছিলেন অত্যধিক আত্মবিভোর, আপন বিপন্ন অস্তিত্বের চিন্তাই তাঁকে পরিণামে উন্মাদাশ্রমে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য করে। তাঁর ভ্রাম্যমান জীবনে তিনি নেদারল্যান্ড-এর জেনিভায় জনৈকা ওলন্দাজ রূপসীর সাথে পরিচিত হন, এবং তাঁর নিকট বিবাহের প্রস্তাব করেন। অবশ্য, সেই মহিলাটি তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। তাতে নীটশে বিশেষ বিচলিত হন নি। কারণ, তিনি ছিলেন মূলত বিবাহের বিরোধী।

সেই ওলন্দাজ যুবতীর নিকট নীটশের পত্র –

জেনিভা, ১১ ই এপ্রিল, ১৮৭৬

সুচরিতাসু,

আজ সন্ধ্যায় তুমি আমাকে কিছু নিশ্চয়ই লিখছ; আমিও তোমার জন্য দু-চার ছত্র অবশ্যই লিখব। আমি এই মুহূর্তে তোমাকে যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে যাচ্ছি তা শুনে বিচলিত না হওয়ার জন্য তোমার সমস্ত শক্তি ও সাহসের আশ্রয় গ্রহণ করো। “তুমি কি আমার স্ত্রী হতে সম্মত আছ?” আমি তোমাকে ভালবাসি; আমার মন বলে, তুমি ইতিমধ্যেই আমার – একান্তই আমার হয়ে গেছ।। আমার প্রস্তাবের আকস্মিকতা সম্পর্কে একটি কথাও বলো না। এতে অন্তত অসৌজন্যমূলক কিছু নেই। এতে লজ্জিত হওয়ার বা ক্ষমা প্রার্থনার মতোও কিছু নেই। কিন্তু যে কথা জানতে আমার খুব বাসনা, আমার মন যে আশায় পুলকিত হয়ে উঠেছে তোমার মনও কি তাই?।

আমার মন বলে আমরা পরস্পরের নিকট কোনো দিনই অপরিচিত ছিলাম না, একটি মুহুর্তের জন্য়ও না। তুমিও কি বিশ্বাস কর না যে, একক অস্তিত্বের চেয়ে মিলনের পথেই আমরা পরস্পর অধিকতর যুক্ত এবং আনন্দিত, সুতরাং মহত্তর জীবনযাপন করতে পারি। আমার সঙ্গে একত্রে যাওয়ার যে একাগ্র চিত্তে যুক্তির কামনায় ও উর্ধ্বায়নের আকাঙ্ক্ষায় আলোড়িত, তার সঙ্গে মিলিত হওয়ার ঝুঁকি তুমি কি নেবে না? এবং জীবনের সমগ্র পথে, চিন্তায় ও সংগ্রামে । এবার নিসঙ্ক চিত্তে তোমার হৃদয় উন্মোচিত কর, কোনো কিছুই গোপন করো না। আমার এই প্রস্তাব ও পত্র সম্পর্কে আমার ও তোমার পারস্পরিক বন্ধু হের ভি. এস. ছাড়া আর কেউ কিছু জানে না।

আমি আগামী কাল সকাল এগারটায় এক্সপ্রেসে বাসেল যাচ্ছি। আমাকে যেতেই হচ্ছে; আমার বাসেলের ঠিকানা এই সঙ্গে দিলাম। যদি তুমি আমার জিজ্ঞাসার উত্তরে বলো ‘হাঁ’, তাহলে তৎক্ষণাৎ আমি তোমার মার নিকট পত্র লিখব, তাঁর ঠিকানা তোমার নিকট আমি জানতে চাইব। আর যদি ‘হাঁ’ বা ‘না’ বলার মত একটা অতি দ্রুত সিদ্ধান্তে তুমি এখনই উপনীত হতে না পার তো তোমার লিখিত উত্তর আগামী কাল সকাল দশটা পর্যন্ত হোটেল গারনি দ্য লা পোস্ত-এ থাকব।

তোমার জন্য রইলো আমার সর্বকালের যা কিছু সর্বোত্তম ও পবিত্রতর শুভেচ্ছা –

নীটশে

(FAQ) ফ্রেডরিক নীটশের প্রেমপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

1. ফ্রেডরিক নীটশে কে ছিলেন?

একজন জার্মান শাস্ত্রীয় পন্ডিত, দার্শনিক ও সংস্কৃতির সমালোচক।

2. ফ্রেডরিক নীটশের প্রেমিকা কে ছিলেন?

জনৈকা ওলন্দাজ রূপসী।

3. ফ্রেডরিক নীটশে কবে তার প্রেমপত্র রচনা করেন?

১১ ই এপ্রিল, ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে।

Leave a Comment