হাঙ্গেরির বিখ্যাত গীতি কবি নিকোলা লেনুর প্রেমপত্র প্রসঙ্গে নিকোলা লেনুর পরিচয়, নিকোলা লেনুর দেশ, নিকোলা লেনুর খ্যাতি, নিকোলা লেনুর প্রেম, নিকোলা লেনুর প্রেমিকা ও নিকোলা লেনুর মূল প্রেমপত্র সম্পর্কে জানব।
গীতি কবি নিকোলা লেনুর প্রেমপত্র
ঐতিহাসিক প্রেমপত্র | নিকোলা লেনুর প্রেমপত্র |
পরিচিতি | বিখ্যাত গীতিকবি |
দেশ | হাঙ্গেরি |
প্রেমিকা | মানসী প্রিয়া |
প্রেমপত্র রচনা | ১০ ই জুন ১৮৩৭ খ্রি |
অস্ট্রিয়ার অন্তর্গত হাঙ্গেরীয় বিখ্যাত গীতি-কবি নিকোলার প্রকৃত নাম Nikolaus Franz Niembsch Elder Von Strehlenau, তাঁর সমস্ত কবিতা বিষাদের কৃষ্ণ মেঘছায়ায় আবৃত। পরবর্তীকালে তিনি উম্নাদ রোগগ্রস্থ হন এবং উন্মাদাগারেই তাঁর মৃত্যু হয়। মনে মনে তিনি এক বন্ধু-পত্নীকে ভালবাসতেন – এই গোপন প্রেমই তাঁর উন্মত্ততার কারণ। তাঁর এই মানসী প্রিয়ার সঙ্গে কখনও মিলন হয়েছিল কিনা জানা নেই, কিন্তু তাঁকে তিনি পত্র লিখছেন :
ভিয়েনা, ১০ ই জুন ১৮৩৭
প্রিয়ে,
তোমার কি মনে হয় সময়কে আমি মোটেই গ্রাহ্য করি না! আমার ইচ্ছা হয় প্রতিটি মুহূর্তকে আঁকড়ে ধরে থাকি, আমাদের সুখের পরিবেশ হতে সে যেন আমাদের বঞ্চিত করে চলে যেতে না পারে। মনে হয় তার কাছে নতি জানিয়ে বলি “ওগো অনন্ত ওগো চঞ্চল – আমাদের সুখের অবসান ঘটিয়ে এত তাড়াতাড়ি তুমি চলে যেও না।” কিন্তু হায়! সে বড় নিষ্ঠুর নির্মম হীন, কোনো কাকুতি মিনতি আকুল প্রার্থনাই তার কানে প্রবেশ করে না। যদি তার সামান্য মাত্র অনুভূতি থাকত তবে নিশ্চয় সে আমাদের সুখ থেকে বঞ্চিত করে চলে যেত না; আমাদের সুখের মধ্যেই সে তার নিজের অস্তিত্ব মিশিয়ে দিয়ে আমাদের আনন্দের কারণ হত। সময় চলে যায়, তুমিও চলে যাও, জানালা বন্ধ করে শয্যায় আশ্রয় নিতে – মুহূর্ত পূর্বে যে আঁখি আনন্দোজ্জল ছিল – ঘরের আলো নিভিয়ে অন্ধকারে সেই আঁখিপল্লবে ঢাকা পড়ে অন্ধকারকে আরও ঘনীভূত করে তোলে।
আচ্ছা, সময় কেন এত তাড়াতাড়ি চলে যায়? অসীমের পানে তার এত টান কেন? অসীম নিশ্চয়ই খুব সুন্দর, তাই বোধ হয় আমরাও এই পৃথিবীর সৌন্দর্য ও সুখ ত্যাগ করে যত শীঘ্র সেই অসীম ও অনন্তের কোলে আশ্রয় নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি!
আমার কিন্তু সেই অসীম ও অনন্ত সম্বন্ধে ধারণা অন্যরূপ। আমার মনে হয়, যা আনন্দ দেয় না তাই সসীম, আর যা আনন্দ দেয় তাই স্বর্গ। আমার স্বর্গ তুমি। তোমার নিশ্বাস আমার প্রাণবায়ু, তোমার ওই দুটি সুন্দর আঁখিতারা আমার আলো, আমার স্বর্গের সূর্য ও চন্দ্র। তোমার কণ্ঠস্বর আমার পানীয়, তোমার চুম্বন আমার আহার, আর দেবি তোমার হৃদয়ের মধ্যেই আমার বাস। তোমার হাত ধরে তোমার প্রেমে বিভোর হয়ে প্রেমময় ভগবানের সান্নিধ্যে চলে যাব – হায়, আমার সে আশা কি পূর্ণ হবে না?
রোজই তোমায় চিঠি লিখব – চিঠিতে চিঠিতে চলবে আমাদের মধুর আলাপ। হায় যদি তোমার কাছে থাকবার আমার অধিকার থাকত!
ভোর না হতেই জানালার কাছে এসে বসে থাকি তোমার দেখা পাবার আশায় – এই পথেই তো তুমি যাও উপাসনায়। সুপ্রভাত, রাত কেমন কাটল। ঘুম হয়েছিল তো? সময়টা কত কে জানে! পাশের বাড়িতে প্রাতরাশের উদ্যোগ চলছে, ওদের ক্ষিদে বড় বেশি – তাই এত সকাল সকাল জেগে উঠেছে ওদের ক্ষুধা, বোধহয় রাত্রেও ওদের ক্ষুধার নিবৃত্তি ছিল না। তাই ভাবছি, তোমার ভক্তি আগে জাগে না ওদের ক্ষুধা আগে জাগে? ফেরবার পথে আবার এস – এক সঙ্গে প্রাতরাশের সৌভাগ্য যেন আমার হয়।
(FAQ) নিকোলা লেনুর প্রেমপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
হাঙ্গেরির বিখ্যাত গীতিকবি ছিলেন নিকোলা লেনু।
হাঙ্গেরি।
১০ ই জুন ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে।