ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজস্ব ব্যবস্থা প্রসঙ্গে পূর্ববর্তী রাজস্ব ব্যবস্থা, বাড়তি কর ও শুল্ক রদ, চারটি কর প্রবর্তন, সেচকর, খাল খনন, দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ নীতি, রাজস্বের ইজারা, রাজস্ব ব্যবস্থার জনপ্রিয়তা ও ত্রুটি সম্পর্কে জানবো।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজস্ব ব্যবস্থা
ঐতিহাসিক ঘটনা | ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজস্ব ব্যবস্থা |
সুলতান | ফিরোজ শাহ তুঘলক |
বংশ | তুঘলক বংশ |
পূর্বসূরি | মহম্মদ বিন তুঘলক |
ভূমিকা :- ফিরোজ শাহ তাঁর রাজস্ব ব্যবস্থা সংগঠণের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেন। তাঁর আদর্শ ছিলেন গিয়াসুদ্দিন তুঘলক।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের পূর্ববর্তী রাজস্ব ব্যবস্থা
আলাউদ্দিন খলজি যে রাজস্ব ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন, সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলক তা বহাল রাখেন। মহম্মদ জমি জরিপ দ্বারা উৎপাদন ধার্য করে রাজস্ব নির্ধারণ করার ব্যবস্থা করেন। এই জরিপ ব্যবস্থার ফলে অভিজাত, খুৎ ও মুকাদ্দম শ্রেণীর পক্ষে ভূমি রাজস্ব থেকে বাড়তি লাভ করা কঠিন ছিল।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের পূর্বে কর ব্যবস্থা
সুলতান ফিরোজ শাহ পূর্বের ৫০ ভাগ কর রহিত করে একটি নমনীয় ভূমি রাজস্ব চালু করেন। মহম্মদের আমলে উৎপন্ন ফসলের গড় ৫০ ভাগ রাজস্ব হিসেবে আদায় করা হত। তদুপরি ছিল নানা প্রকার আবোয়াব বা উপরি কর এবং শুল্ক। এতে সাধারণ কৃষক প্রজাদের ওপর ভয়ানক চাপ পড়ে।
ফিরোজ শাহ তুঘলক কর্তৃক বাড়তি কর ও শুল্ক রদ
- (১) ফিরোজ তুঘলক প্রায় ২৪ রকম আরোয়াব বা উপরি কর ও শুল্ক রহিত করেন। তাঁর আত্মজীবনী ফুতুহা-ই-ফিরোজশাহীতে সুলতান এই দাবী করেছেন। এই সকল আবোয়াব গুলি কি ধরনের ছিল তা জানা যায় নি।
- (২) আফিফের মতে এই আবোয়াব থেকে রাষ্ট্রের ৩০ লক্ষ টাকা উপরি আয় হত। ফিরোজ এই আবোয়াবগুলি লোপ করেন। অনেকে মনে করেন যে শুধু প্রজাদের ওপর ভার লাঘবের জন্য নয়, তার ইসলামী ধর্ম বিশ্বাসের জন্যও সুলতান এই সকল আবোয়াব ও শুল্ক রহিত করেন।
- (৩) কারণ, শরিয়ত অনুযায়ী কোনো বাণিজ্য শুল্ক ও উপরি কর আদায় ছিল নিষিদ্ধ। ১৩৭৫ খ্রিস্টাব্দে সুলতান প্রচুর আড়ম্বর সহ এই শুল্ক গুলি লোপ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
ফিরোজ শাহ তুঘলক কর্তৃক চারটি কর প্রবর্তন
এরপর ফিরোজ শাহ কোরাণের নির্ধারিত ৪ প্রকার কর চালু করেন। ফিরোজ প্রবর্তিত এই ৪টি কর ছিল – খারজ, জাকাত, জিজিয়া ও খামস।
ফিরোজ শাহ তুঘলক কর্তৃক বিজ্ঞ কর্মচারী নিয়োগ
- (১) ভূমি রাজস্ব ধার্য করার আগে সুলতান ভূমি রাজস্ব ন্যায্য ভাবে কত পরিমাণ হতে পারে তা স্থির করার দায়িত্ব বিজ্ঞ কর্মচারী খাজা জুনাইদকে দেন। মালিক জুনাইদ ৬ বছর ধরে সাম্রাজ্য-এর বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করে সম্রাটকে জানান যে, মোট ভূমি রাজস্বের পরিমাণ হবে ৬ কোটি ৭৫ লক্ষ টঙ্কা।
- (২) গবেষক মোরল্যান্ডের মতে খাজা জুনাইদ জমি জরিপের ভিত্তিতে এই মোট রাজস্বের পরিমাণ ধার্য করেন একথা মনে করা যায় না। তার অধীনস্থ কর্মচারীদের সহায়তায়, তিনি বিভিন্নভাবে যে তথ্য যোগাড় করেন, তারই ভিত্তিতে তিনি এই সুপারিশ করেন।
- (৩) আফিফ বা অন্য কোনো সমকালীন ঐতিহাসিকের রচনা থেকে আমরা একথা সঠিক ভাবে জানতে পারি না যে, উপরোক্ত মোট রাজস্বের কত ভাগ সুলতান তাঁর প্রাপ্য হিসেবে আদায় করেন।
- (৪) ডঃ ত্রিপাঠীর মতে ফিরোজ শাহ সরকারের প্রাপ্য ভূমি রাজস্ব উৎপাদন অনুসারে ধার্য করেন। গড়ে তা ছিল ফসলের ১/৫ ভাগ বা ১/৬ ভাগ। কোনো ক্ষেত্রে এই ভূমি রাজস্বের পরিমাণ আলাউদ্দিনের আমলের ভূমি রাজস্ব অপেক্ষা বেশী ছিল না।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের আমলে সেচ কর
ভূমি রাজস্ব ছাড়া ফিরোজ শাহ ফসলের ১১০ ভাগ সেচ কর হিসেবে আদায় করেন। তিনি মৌলবীদের সম্মতি নিয়ে শরিয়ত সম্মতভাবে সেচকর আদায়ের ব্যবস্থা করেন। তিনি ফলের বাগান থেকে আলাদা কর আদায় করতেন। ফিরোজের আমলে বহু পতিত জমি আবাদী জমিতে পরিণত হয়। এজন্য তাঁর মোট ভূমি রাজস্বের পরিমাণ ভালই ছিল।।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের খাল খননের নীতি
ফিরোজ শাহের রাজস্ব নীতির প্রধান অঙ্গ ছিল জলসেচের জন্য খাল এবং কূপ খনন। গিয়াসউদ্দিন তুঘলক সর্বপ্রথম খাল খননের নীতি গ্ৰহণ করেন। ফিরোজ তুঘলক এই সেচ নীতির প্রসার ঘটান।
সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলকের সময় পাঁচটি খাল খনন
ফিরোজ যে ৫ টি প্রধান খাল খোদাই করেন আফিফের মতে তা ছিল – (১) যমুনা থেকে হিসার, (২) শতদ্রু থেকে ঘর্ঘরা, (৩) ঘর্ঘরা থেকে যমুনা, (৪) ঘর্ঘরা থেকে ফিরোজাবাদ, (৫) ঘর্ঘরা থেকে হান্সি।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের আমলে খাল খননের সুবিধা
এই সেচ খালগুলির দ্বারা পূর্ব পাঞ্জাব সুজলা, সুফলা হয়। হিসার অঞ্চলে জমিগুলিতে খারিফ ও রবি দুটি ফসল বছরে ফলতে থাকে। ফিরোজ আইন করেন যে প্রধান সেচ খাল থেকে উপখাল দ্বারা জল নিতে হলে সেই উপখাল খননের খরচা হয় কৃষক, নতুবা যে ব্যক্তিকে জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হবে তাকে বহন করতে হবে।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের সেচনীতির সুফল
- (১) ফিরোজের সেচ ব্যবস্থার ফলে সেচ খালগুলির দুই তীরে নতুন গ্রাম ও কৃষিকেন্দ্র গড়ে ওঠে। দোয়াবে এভাবে ৫২টি নতুন কৃষি উপনিবেশ স্থাপিত হয়। পাঞ্জাব ও দিল্লীর ইক্তাগুলিতেও নতুন কৃষি উপনিবেশ গড়ে ওঠে।
- (২) ফিরোজ কৃষকদের উন্নত ধরনের ফসলের জন্য উৎসাহ দেন। ধান, গম, আখ, ডাল ও ফলের চাষের জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়। তাছাড়া তিনি সরকারী ব্যয়ে প্রায় ১২০০ ফলের বাগান রচনা করেন। এই সকল বাগানের ফল বিক্রি করে সরকার লাভবান হয়।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের সময় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দিল্লি
ফিরোজের কৃষি নীতির ফলে দিল্লী প্রদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। এতদিন দিল্লী ছিল ঘাটতি অঞ্চল। এজন্য অযোধ্যা ও দোয়াবের শস্য আমদানির ওপর দিল্লীকে নির্ভর করতে হত। ফিরোজের কৃষি নীতি ও সেচ নীতি দিল্লীকে খাদ্য সরবরাহে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এনে দেয়।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ নীতি
- (১) ডঃ ত্রিপাঠীর মতে, “দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধের জন্য ফিরোজ শাহের সেচনীতি ছিল বিশেষ কার্যকরী” (The idea of opening Canals was most important contribution to the methods of fighting famines)।
- (২) আলাউদ্দিন মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যশস্য মজুত নীতি দ্বারা দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। মহম্মদ তুঘলক দুর্ভিক্ষের সময় ত্রাণ ব্যবস্থার প্রসার, বিনা মূল্যে খাদ্য বিতরণ ও কূপ খনন দ্বারা দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেন। ফিরোজ তুঘলক কৃষিক্ষেত্রে সেচের ব্যবস্থা অর্থাৎ খাল খনন করে সেচের উন্নতি দ্বারা দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নেন।
সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলকের সময় রাজস্বের ইজারা
- (১) সুলতান ফিরোজ ভূমি রাজস্ব সংগ্রহের জন্য খালিসা জমিগুলিকে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ইজারা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। প্রাদেশিক শাসনকর্তা, ইক্তাদার ও হিন্দু খুৎ, মুকাদ্দমদের এই ইজারা দেওয়া হত। এর ফলে রাজস্ব ব্যবস্থায় ভয়ানক দুর্নীতি দেখা দেয়।
- (২) ইক্তাদার, খুৎ, মুকাদ্দমরা ইজারা নেওয়ার পর সুলতান কর্তৃক নির্দিষ্ট রাজস্বের হার মান্য না করে অনেক বেশী হারে রাজস্ব আদায় করতে থাকে। ফিরোজের শাসন ব্যবস্থার শিথিলতার জন্য তারা অনেক সময় সুলতানের প্রাপ্য রাজস্ব পরিশোধ করত না।
- (৩) এইভাবে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের কিছু কর্মচারী রাজস্বঘটিত দুর্নীতি দ্বারা অর্থবান হয়। আইন-ই-মহরু এজন্য ফিরোজের তীব্র সমালোচনা করেছেন। সরকারী কর্মচারী, ইক্তাদার ও খুৎ, মুকাদ্দমরা দুর্নীতিগ্রস্থ হলেও ফিরোজ তাদের শাসন না করে ইচ্ছা করে চোখ বুজে থাকেন।
- (৪) ফিরোজ ছিলেন দুর্বল প্রকৃতির লোক। আলাউদ্দিন বা মহম্মদের মত তিনি কঠোর হতে পারেন নি। এই সকল ক্ষমতাশালী অভিজাতদের রোষে তিনি পড়তে চান নি। এই সঙ্গে বলা দরকার যে, ইক্তাদার বা জাগীরদাররা ইক্তাগুলিকে স্থায়ী জাগীরে পরিণত করলে ফিরোজ শাহ তাতে বাধা দেন নি।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের আমলে বংশানুক্রমিক জাগীর প্রথা
- (১) আফিফের রচনা থেকে জানা যায় যে সেনাদল বা কর্মচারীদের তিনি নগদ বেতনের পরিবর্তে যে জমি বন্দোবস্ত দেন, সেই সেনা বা কর্মচারীর মৃত্যুর পর তার পুত্র বা পরিবারের লোকেরা সেই জমি বংশানুক্রমিক ভাবে ভোগ দখলের অধিকার পায়।
- (২) এর ফলে ইক্তাগুলি স্থায়ী জাগীরে পরিণত হয়। কোনো সরকারী কর্মচারীর একাধিক পুত্র সন্তান থাকলে, সেই কর্মচারীর মৃত্যুর পর তার জাগীর তার পুত্রদের মধ্যে ভাগ করার আদেশ দেন সুলতান।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের সময় জিজিয়া কর
জিজিয়াকে যদিও সাধারণভাবে অমুসলিমদের ওপর বৈষম্যমূলক কর বলে অনেকে মনে করেন ডঃ নিজামীর মতে, অন্তত ফিরোজ শাহের আমলে জিজিয়াকে এভাবে বিচার করা উচিত নয়। বরণী, আমীর খসরু প্রমুখের রচনার ভিত্তিতে একথা মনে করা যায় যে, অমুসলিমরা ভূমি রাজস্ব ছাড়া আর যে কর দিত তাকেই জিজিয়া বলা হত।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের সময় জাকাৎ কর
জাকাৎ ছিল মুসলিমদের দেয় ধর্ম কর। এই অর্থ মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য ব্যয় হত।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের সময় খামস
খামস ছিল যুদ্ধের দ্বারা শত্রুর শিবির বা শত্রুদেশ থেকে লুষ্ঠিত সম্পদ। আলাউদ্দিন প্রমুখ সম্রাটরা লুণ্ঠিত সম্পদের ৩/৪ ভাগ সুলতানের প্রাপ্য হিসেবে নিতেন এবং বাকি ১/৪ ভাগ সেনারা পেত। ফিরোজ শাহ এই নিয়ম পরিবর্তন করে শরিয়ত সম্মতভাবে লুণ্ঠিত জিনিষের ১/৪ ভাগ সুলতানের প্রাপ্য হিসেবে ধার্য করেন এবং বাকী ৩/৪ ভাগ সেনাদল পায়। ফিরোজ তুঘলকের আমলে বিশেষ যুদ্ধবিগ্রহ হয়নি। সুতরাং সামস যাতে তিনি বেশী অর্থ পান নি।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজস্ব ব্যবস্থার জনপ্রিয়তা
- (১) ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজস্ব নীতি তার আমলে বেশ জনপ্রিয় ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো বিদ্রোহ হয়নি। কারণ, অভিজাত শ্রেণী তার ভূমি রাজস্ব নীতি ও জাগীর বন্দোবস্তের জন্য সন্তুষ্ট ছিল। হিন্দু খু্ৎ, মুকাদ্দমরাও সন্তুষ্ট ছিল মনে করা যায়। সমকালীন লেখক আফিফ তাদের অসন্তোষের কথা উল্লেখ করেননি।
- (২) সাধারণ প্রজাদের মঙ্গলের কথা ফিরোজ ভাবতেন। তিনি সর্বদাই নির্দেশ দিতেন যে সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট হারে রাজস্ব অপেক্ষা যেন বেশী আদায় না করা হয়। ডঃ নিজামীর মতে ফিরোজ শাহ রাজস্ব কর্মচারীদের নির্দেশ দেন যে, স্থানীয় রাজস্বের অর্ধেক বা ৫০% জাগীরদারকে জাগীর বাবদ প্রদান করে বাকি অর্ধেক বা ৫০% সরকারকে দিতে হবে। তিনি কৃষির উন্নতির জন্য সেচখাল খনন করেন।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজস্ব ব্যবস্থার ত্রুটি
তাঁর রাজস্ব ব্যবস্থায় বেশ কয়েকটি বড় ধরনের ত্রুটি দেখা যায়। যেমন –
- (১) ডঃ আর. পি. ত্রিপাঠীর মতে তিনি রাজস্ব আদায়ের জন্য সরকারী কর্মচারীদের খালিসা জমি ইজারার বন্দোবস্ত দেন। এর ফলে দুর্নীতির সীমা ছিল না। প্রাদেশিক শাসনকর্তারা জমি ইজারা বন্দোবস্ত নেওয়ার পর অধীনস্থ সরকারী কর্মচারীদের জমির রাজস্ব আদায়ের জন্য ব্যবহার করত।
- (২) ইজারা বন্দোবস্ত নেওয়ার পর এই সকল কর্মচারী সরকার নির্দিষ্ট হার অগ্রাহ্য করে চড়া হারে রাজস্ব আদায় করত। সেই বাড়তি অর্থ সুলতান পেতেন না।
- (৩) কর্মচারীদের নগদ বেতনের বদলে জাগীর দেওয়া হলে তারা জাগীরের রাজস্ব নিজেরা আদায়ের বদলে ইজারা দিয়ে দিত। এই সকল ইজারাদার বাড়তি রাজস্ব আদায় করে ফুলে ফেঁপে উঠত।
- (৪) ডঃ আর. পি. ত্রিপাঠী ফিরোজের জিজিয়া কর আদায়ের যৌক্তিকতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আলাউদ্দিন, মহম্মদ প্রমুখ সুলতান যদিও কাগজে কলমে জিজিয়া লোপ করেননি, কার্যত তারা জিজিয়া আদায়ের উদ্যোগ নিতেন না। কারণ মাথা পিছু হিসেব করে জিজিয়া কর আদায় করা কষ্টসাধ্য ছিল।
- (৫) অমুসলিমরা জিজিয়া করকে ঘৃণা করত। এজন্য তাঁরা জিজিয়ার স্থলে অন্য প্রকার কর দ্বারা সরকারের ঘাটতি পূরণ করতেন। ফিরোজ শাহ পুনরায় জিজিয়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়ে লাভবান হতে পারেননি।
উপসংহার :- ফিরোজ শাহের রাজস্ব নীতির কয়েকটি ভাল দিক ছিল। তিনি বহু বিক্রয়যোগ্য দ্রব্যের ওপর শুল্ক লোপ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি করেন। তাঁর সুচিন্তিত কর ও সেচ নীতির ফলে দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সঙ্কট কমে যায়। আফিফ বলেন যে, “ফিরোজের সমস্ত রাজত্বকালে খাদ্য সরবরাহে কোনো সঙ্কট দেখা যায় নি”।
(FAQ) ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
খারজ, খামস, জাকাৎ, জিজিয়া।
অমুসলিম প্রজাদের কাছ থেকে।
ফিরোজ শাহ তুঘলক।
ফিরোজ শাহ তুঘলক।