একা আন্দোলন -এর নামকরণ, আন্দোলনের কারণ, আন্দোলনের বিস্তার, আন্দোলনের নেতৃত্ব, আন্দোলনকারীদের দাবি, শপথ, আন্দোলনের গতিপথ ও কংগ্রেসের ভূমিকা সম্পর্কে জানবো।
একা আন্দোলন প্রসঙ্গে একা আন্দোলন কি, একা আন্দোলনের সময়কাল, একা আন্দোলনের এলাকা, একা আন্দোলনের নেতৃত্ব, একা আন্দোলন শুরু, একা আন্দোলনের নেতা বাবা গরিবদাস, একা আন্দোলন টীকা, একা আন্দোলনের নেতা মাদারি পাশি, অসহযোগ আন্দোলন পর্যায়ে একা আন্দোলন, একা আন্দোলনের নামকরণ, একা আন্দোলনের কারণ ও একা আন্দোলনের গুরুত্ব।
১৯২১-২২ খ্রিস্টাব্দে একা আন্দোলন
ঐতিহাসিক ঘটনা | একা আন্দোলন |
সময়কাল | ১৯২১-২২ খ্রিস্টাব্দ |
স্থান | উত্তর প্রদেশের উত্তর-পশ্চিম অযোধ্যা অঞ্চল |
নেতৃত্ব | মাদারি পাশি ও বাবা গরিবদাস |
ফলাফল | ব্যর্থতা |
ভূমিকা :- মহাত্মা গান্ধির ডাকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন (১৯২০-২২ খ্রি.) শুরু হলে উত্তরপ্রদেশে এই আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব দেখা যায়। এই রাজ্যের অযোধ্যা অঞ্চলে কৃষকদের নিয়ে এই আন্দোলন গড়ে ওঠে।
একা আন্দোলনের নামকরণ
১৯২১ খ্রিস্টাব্দের শেষ ও ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের প্রথমদিকে কৃষক আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। আন্দোলনকারী কৃষকরা একতাবদ্ধ থাকার শপথ নেওয়ায় এই আন্দোলনের নাম হয় ‘একা’ বা একতা’ আন্দোলন।
একা আন্দোলনের কারণ
আন্দোলনের প্রধান কারণগুলি ছিল –
- (১) কৃষকদের ওপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ নতুন কর আরোপ।
- (২) কর আদায়ে চরম অত্যাচার।
- (৩) প্রভুর জমি ও খামারে কৃষককে বিনা বেতনে বেগার শ্রম দিতে বাধ্য করা প্রভৃতি।
একা আন্দোলনের বিস্তার
এই আন্দোলন উত্তরপ্রদেশের উত্তর-পশ্চিম অযোধ্যা অঞ্চলের হরদৈ, বারাবাঁকি, সীতাপুর, বারাইচ প্রভৃতি জেলায় ছড়িয়ে পড়ে।
একা আন্দোলনের নেতৃত্ব
উত্তর প্রদেশের এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন মাদারি পাশি ও বাবা গরিবদাস।
একা আন্দোলনে বিদ্রোহীদের দাবি
আন্দোলনের বিদ্রোহীদের প্রধান দাবি গুলি হল –
- (১) নির্ধারিত কর ছাড়া অতিরিক্ত ৫০% কর কৃষকরা দেবেনা।
- (২) রশিদ বা প্রমাণপত্র ছাড়া কর নেওয়া চলবে না।
- (৩) বেট বেগারি বা বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করানো যাবে না।
- (৪) জমি থেকে উৎখাত করা চলবে না।
- (৫)পঞ্চায়েত ছাড়া অন্য কারও সিদ্ধান্ত কৃষকরা মানবে না।
- (৬) বাবা রামচন্দ্রকে জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে।
- (৭)উৎপাদিত পণ্যের পরিবর্তে নগদ টাকায় খাজনা মেটানো হবে।কারণ, তখন কৃষি পণ্যের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছিল।
একা আন্দোলনের শপথ
আন্দোলনকারী কৃষকরা কিছু ধর্মীয় উৎসব, যেমন – জমিতে গর্ত খুঁড়ে তাতে গঙ্গা জল ঢেলে সমবেতভাবে একত্রিত হয়ে এই আন্দোলনের শপথ নিত।
একা আন্দোলনের গতিপথ
- (১) প্রথমদিকে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হলেও ক্রমশ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। কুমায়ুন অঞ্চলে সংরক্ষিত অরণ্য জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
- (২) জমিদার, তালুকদারদের ঘরবাড়ি আক্রমণ করা হয়। ঐতিহাসিক জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে এই আন্দোলনকে ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ বলেছেন।
- (৩) আশরাফ সিদ্দিকীর মতে এই আন্দোলন ‘সামাজিক দস্যুতার’ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।
একা আন্দোলনে কংগ্রেসের ভূমিকা
প্রথমদিকে কংগ্রেস একা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানালেও কিছুকাল পর এই আন্দোলনে হিংসার প্রবেশ ঘটলে কংগ্রেস ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ এই আন্দোলন থেকে দূরে সরে যায়।
উপসংহার :- এই আন্দোলনের নেতৃত্ব থেকে কংগ্রেস ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ সরে গেলে আন্দোলন কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ওপর তীব্র সরকারি দমন নীতির ফলে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাস নাগাদ এই আন্দোলন থেমে যায়।
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “একা আন্দোলন” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।
সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।
(FAQ) একা আন্দোলন সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১৯২১ সালের শেষ এবং ১৯২২ সালের শুরুরদিকে।
মাদারি পাশি, বাবা গরিব দাস।
উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা অঞ্চলে।
আন্দোলন চলাকালে যেকোনাে অবস্থায় কৃষকরা ঐক্যবদ্ধ থাকার শপথ নেয়। তাই এই আন্দোলনের এরূপ নামকরণ।
অন্যান্য ঐতিহাসিক ঘটনাগুলি
- কেন্দ্রীয় চোল শাসন
- সাম্রাজ্য ও রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য
- অর্থনীতিতে দাসপ্রথার গুরুত্ব
- রোমের দাসদের মুক্তির উপায়
- রোমান সাম্রাজ্য ও উপমহাদেশীয় সাম্রাজ্যগুলির মধ্যে যোগাযোগের প্রভাব
- জাস্টিনিয়ান পরবর্তী রাজবংশ
- রোমান সমাজে নারীর অবস্থান
- বাইজানটাইন সভ্যতা-সংস্কৃতির নানা দিক
- রোমান সাম্রাজ্য ও ভারতীয় উপমহাদেশ