শেরশাহের বংশধরগণ প্রসঙ্গে ইসলাম শাহ, অভিজাতদের ক্ষমা ভিক্ষা, নিয়াজির বিদ্রোহ, আফগান সর্দারদের বিদ্রোহ, শাসন ব্যবস্থা অক্ষুন্ন, দশমিকের ভিত্তিতে সেনাদল গঠন, আনুগত্যের শপথ, লিখিত নির্দেশ, ইসমাইল শাহের মৃত্যু, ফিরোজ শাহ, মহম্মদ আদিল শাহ ও সাম্রাজ্যের ভাগ সম্পর্কে জানবো।
শেরশাহের বংশধরগণ
বিষয় | শের শাহের বংশধরগণ |
বংশ | সুরি বংশ |
সময়কাল | ১৫৪০-১৫৫৫ খ্রি |
প্রথম রাজা | শেরশাহ |
শেষ রাজা | মহম্মদ আদিল শাহ |
ভূমিকা :- ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট হুমায়ুনকে পরাজিত করে শেরশাহ দিল্লিতে সুরি বংশের শাসন শুরু করেন। তিনি ১৫৪০-৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। কালিঞ্জর দুর্গ আক্রমণ কালে ১৫৪৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু হয়।
শেরশাহের বংশধর ইসলাম শাহ (১৫৪৫-১৫৫৩ খ্রি)
১৫৪৫ খ্রিস্টাব্দে শের শাহের মৃত্যুর পর তার কনিষ্ঠ পুত্র ইসলাম শাহ দিল্লীর সিংহাসনে বসেন। শের শাহের জোষ্ঠ পুত্র আদিল খানকে বঞ্চিত করে তার কনিষ্ঠ পুত্র জালাল খান, ইসলাম শাহ উপাধি নিয়ে সিংহাসনে বসায়, আদিল খানের সঙ্গে তাঁর বিরোধ দেখা দেয়। তিনি যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পলায়ন করেন।
ইসলাম শাহের নিকট অভিজাতদের ক্ষমা ভিক্ষা
যে সকল অভিজাত আদিল খানের পক্ষ নেন তাঁদের অনেককে হত্যা করা হয়। বাকিরা ক্ষমা ভিক্ষা করেন।
শেরশাহের আমলের সেনাপতি নিয়াজির বিদ্রোহ
শের শাহের আমলের বিখ্যাত সেনাপতি হৈবৎ খান নিয়াজি উচ্চাকাক্ষাবশত নিজে সিংহাসন অধিকারের আশায় বিদ্রোহ ঘোষণা করায়, ইসলাম শাহ তাকে আম্বালার যুদ্ধে পরাস্ত করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি কাশ্মীরে আশ্রয় দেন।
ইসলাম শাহের বিরুদ্ধে আফগান সর্দারদের বিদ্রোহ
আফগান সর্দার যথা সাজ্জাদ খান ও খাবাস খানের বিদ্রোহ দমন করে সুলতান। ইসলাম শাহ তার আধিপত্য বজায় রাখতে সক্ষম হন। বিদ্রোহী অভিজাতদের স্থলে তিনি তার অনুগত অভিজাতদের বিভিন্ন কাজে নিয়োগ করেন।
ইসলাম শাহের দ্বারা শেরশাহের শাসন ব্যবস্থা অক্ষুন্ন
ইসলাম শাহ তার পিতার প্রতিষ্ঠিত শাসনব্যবস্থা মোটামুটি অক্ষুণ্ণ রাখেন। তিনি জায়গীরদারী ব্যবস্থা লোপ করতে না পারলেও পুরাতন জায়গীরগুলি নতুনভাবে বন্দোবস্ত দেন।
দশমিকের ভিত্তিতে ইসলাম শাহের সেনাদল গঠন
ইসলাম শাহ তাঁর অশ্বারোহী সেনাদলকে দশমিকের ভিত্তিতে যথা ৫০, ২০০, ২৫০-এর ইউনিট গঠন করেন। তার পদাতিক সেনাকেও গঠন করেন। পরবর্তী সময়ে আকবর তাঁর মনসবদারী ব্যবস্থা গঠনের সময় এই দশমিকের ভিত্তিতেই মনসবদারী সেনার সংখ্যা নির্ধারণ করেন।
ইসলাম শাহের প্রতি অভিজাতদের আনুগত্যের শপথ
সম্রাট ইসলাম শাহ অনুগত অভিজাত কর্মচারীদের কঠোর নিয়ন্ত্রণে রাখেন। প্রতি শুক্রবার খোলা দরবারে তাঁর প্রতি আনুগত্যের শপথ নিতে তিনি তাদের বাধ্য করেন।
ইসলাম শাহের লিখিত নির্দেশ
সম্রাট ইসলাম শাহ তাঁর নির্দেশগুলি লিখিতভাবে কর্মচারীদের কাছে পাঠাবার নিয়ম চালু করেন। তিনি পূর্ব বাংলা জয় করে সাম্রাজ্যকে আরও প্রসারিত করেন।
শেরশাহের বংশধর ইসলাম শাহের মৃত্যু
১৫৫৩ খ্রিস্টাব্দে এই দক্ষ শাসকের মৃত্যু হয়।
শেরশাহের বংশধর ফিরোজ শাহ
ইসলাম শাহের মৃত্যুর পর তাঁর নাবালক পুত্র ফিরোজ শাহ শূর সিংহাসনে বসেন।
শেরশাহের বংশধর মহম্মদ আদিল শাহ
তিনদিন পরে ফিরোজ শাহের মাতুল তাকে হত্যা করে সিংহাসন অধিকার করেন। তিনি মহম্মদ আদিল শাহ উপাধি নেন। বংশানুক্রমিক অধিকার অগ্রাহ্য করে গায়ের জোরে সিংহাসন দখল করায় আদিল শাহের বিরুদ্ধে সর্বত্র বিদ্রোহ দেখা দেয়।
শেরশাহের সাম্রাজ্যের ভাগ
শেষ পর্যন্ত শের শাহের প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্য ৫টি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এই নবোদিত আফগান সর্দাররা পরস্পরের সঙ্গে কলহে শক্তি ক্ষয় করেন।
উপসংহার :- সুরি বংশের অবক্ষয়ের সুযোগে হুমায়ুন পারসিক সম্রাটের সাহায্য নিয়ে পুনরায় আক্রমণ চালালে দিল্লীর শূর শাসনের অবসান ঘটে। ভারত-এ মুঘল সাম্রাজ্য স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
(FAQ) শেরশাহের বংশধরগণ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১৫৪০-১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দ।
হুমায়ুন।
শেরশাহ।
মহম্মদ আদিল শাহ।