ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকা প্রসঙ্গে পত্রিকার প্রকাশকাল, পত্রিকা প্রকাশের কারণ, ব্রাহ্মণ সেবধির লেখক রামমোহন রায়, ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকার খ্যাতি, ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকায় গদ্যভাষার নমুনা, ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় ধর্মের প্রতি ইংরেজদের আচরণ ব্যাখ্যা, ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকায় মিশনারীদের ধর্মান্তরিত প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকায় জাতিভেদ ও অনৈক্যতা ব্যাখ্যা সম্পর্কে জানবো।
সাময়িক ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকা প্রসঙ্গে ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকার প্রকাশক রাজা রামমোহন রায়, ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকার ভাষা, ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকার প্রকাশকাল, ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকা প্রকাশের কারণ, ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকার খ্যাতি সম্পর্কে জানব।
ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকা
ঐতিহাসিক পত্রিকা | ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকা |
ধরণ | সাময়িক পত্র |
ভাষা | ইংরেজি ও বাংলা |
প্রকাশকাল | সেপ্টেম্বর ১৮২১ খ্রি |
প্রকাশক | রাজা রামমোহন রায় |
ভূমিকা :- রামমোহন শিবপ্রসাদ শর্মার নামে ১৮২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ‘Brahmanical Magazine. The Missionary & the Brahmun No.1 ব্রাহ্মণ সেবধি ব্রাহ্মণ ও মিসিনরি সম্বাদ সং ১ 1821’ নামে একটি সাময়িক পত্র প্রকাশ করেন। এর এক পৃষ্ঠায় বাংলা ও পর পৃষ্ঠায় তার ইংরেজী অনুবাদ থাকত।
ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকার প্রকাশকাল
১৮২১ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে ‘ব্রাহ্মণ সেবধি’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। রাজা রামমোহন রায় এখানে শিবপ্রসাদ শর্মা ছদ্মনাম গ্রহণ করেছেন।
ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকা প্রকাশের কারণ
মিশনারী উদ্যোগের বিপ্রতীপে ১৮২১ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ই জুলাই রাজা রামমোহন রায় প্রকাশ করেন ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকা।
ব্রাহ্মণ সেবধির লেখক রামমোহন রায়
শিবপ্রসাদ শর্মার নামে প্রকাশিত হইলেও, রামমোহন রায়ই যে প্রকৃতপক্ষে ‘ব্রাহ্মণ সেবধি’র লেখক – এ কথার উল্লেখ রামমোহনের প্রতিপক্ষ ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকায় পাওয়া যায়।
ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকার খ্যাতি
এই পত্রিকায় রাজা রামমোহন রায় সহমরণ প্রথার বিরুদ্ধে ও অন্য সামাজিক আন্দোলনের স্বপক্ষে লেখতেন। ত্রিতত্ত্ববাদী খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধাচরণ এবং হিন্দুধর্মের বহুদেববাদ, ধর্ম ও দর্শনের নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার ফলে এই পত্রিকাটির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।
ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকায় গদ্যভাষার নমুনা
এই পত্রিকায় প্রকাশিত গদ্যের সরস বাচনভঙ্গি পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তবে অনেক গদ্যের আড়ষ্টতাও দৃষ্টি এড়ায় না।
ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় ধর্মের প্রতি ইংরেজদের আচরণ ব্যাখ্যা
শতার্দ্ধ বছর হতে অধিককাল এদেশে ইংরেজের অধিকার হয়েছে তাতে প্রথম ত্রিশ বছরে তাদের বাক্যের ও ব্যবহারের দ্বারা এটি সর্বত্র বিখ্যাত ছিল যে তাদের নিয়ম এই যে কারো ধর্ম্মের সাথে বিপক্ষতাচরণ করেন না ও আপনার আপনার ধর্ম সকলে করুক এটাই তাদের যথার্থ বাসনা।
ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকায় মিশনারীদের ধর্মান্তরিত প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা
কিন্তু ইদানীন্তন বিশ বছর হল কতক ব্যক্তি ইংরেজ যাঁরা মিশনারি নামে বিখ্যাত হিন্দু ও মোছলমানকে ব্যক্ত রূপে তাদের ধর্ম হতে প্রচ্যুত করে খ্রিস্টান করবার যত্ন নানা প্রকারে করছেন।
ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকায় হিন্দু-মুসলিমদের প্রতি ইংরেজদের কুৎসা ব্যাখ্যা
মিশনারীরা নানাবিধ ক্ষুদ্র ও বৃহৎ পুস্তক রচনা করে ও ছাপিয়ে যথেষ্ট প্রদান করেন যা হিন্দুর ও মুসলমানের বর্ণের নিন্দা এবং হিন্দুদের দেবতার ও ঋষির জুগুপ্সা ও কুৎসাতে পরিপূর্ণ।
ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকায় জাতিভেদ ও অনৈক্যতা ব্যাখ্যা
- (১) বাংলাদেশ-এ যেখানে ইংরেজের সম্পূর্ণ অধিকার ও ইংরেজের নাম মাত্রে লোক ভীত হয় এরূপ দুর্বল, দীন ও ভয়ার্ত প্রজার উপর তাদের ধর্মের উপর দৌরাত্ম্য করা কি ধৰ্ম্মত কি লোকত প্রশংসনীয় হয় না।
- (২) যেহেতু বিজ্ঞ ও ধার্মিক ব্যক্তিরা দুর্বলের মনঃপীড়াতে সৰ্বদা সঙ্কুচিত হন তাতে যদি সেই দুর্বল তাদের অধীন হয় তবে তার মর্মান্তিক কোনমতে অন্তঃকরণেও করেন না। এই তিরস্কারের ভাগ আমরা প্রায় নয় শত বছর পর্যন্ত হয়েছি। তার কারণ আমাদের অতিশয় শিষ্টতা ও হিংসা ত্যাগকে ধর্ম জানা ও আমাদের জাতিভেদ, যা সর্ব প্রকারে অনৈক্যতার মূল।
উপসংহার :- ১৮২১ সালে প্রকাশিত ‘ব্রাহ্মণ সেবধি’র প্রথম তিন সংখ্যার সন্ধান পাওয়া গেছে। সম্ভবতঃ এর আর কোনো সংখ্যা প্রকাশিত হয় নি।
(FAQ) ব্রাহ্মণ সেবধি পত্রিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
রাজা রামমোহন রায়।
সেপ্টেম্বর ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে।
সাময়িক পত্ৰ।