শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মার প্রয়াস প্রসঙ্গে সংঘ প্রতিষ্ঠা, ছটি বৃত্তি ঘোষণা, দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত, পত্রিকা প্রকাশ ও পত্রিকায় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে মত প্রকাশ সম্পর্কে জানব
শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মার প্রয়াস
ঐতিহাসিক ঘটনা | শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মার প্রয়াস |
ইণ্ডিয়া হোমরুল সোসাইটি | ১৯০৫ খ্রি: |
পত্রিকা | ইণ্ডিয়ান সোসিওলোজিস্ট |
শ্যামজীর বৃত্তি গ্ৰহণ | বিনায়ক দামোদর সাভারকার |
নিহিলিস্ট আন্দোলন | রাশিয়া |
ভূমিকা :- ভারতবর্ষ-এর বাহিরে ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামের স্বপক্ষে প্রচার আন্দোলন চালনার দিক থেকে শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মার দান প্রথম স্মরণীয়। কেবল প্রচার কাজই নয়, ভারতবর্ষের, বিশেষ করে দাক্ষিণাত্যের বৈপ্লবিক স্বাধীনতা-সংগ্রামে আদর্শ ও প্রেরণা দান করে তিনি এই সংগ্রামকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা চালান। তার প্রচারিত আদর্শ থেকেও দাক্ষিণাত্যের বিপ্লবীরা সাহায্য লাভ করেছিলেন।
শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মা কর্তৃক সংঘ প্রতিষ্ঠা
তিনি ১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দে লণ্ডনে ‘ইণ্ডিয়া হোমরুল সোসাইটি’ নামে একটি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি নিজে এর সভাপতি হন।
শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মা কর্তৃক ছয়টি বৃত্তি ঘোষণা
ভারতীয় যুবকগণ যাতে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে ভারতের জনগণের মধ্যে ঐক্য ও স্বাধীনতার বাণী প্রচার করতে সক্ষম হয় তার জন্য তিনি ছয়টি বৃত্তি ঘোষণা করেন। এই বৃত্তির পরিমাণ ছিল জন প্রতি এক হাজার টাকা। কৃষ্ণ বর্মার বৃত্তি নিয়ে সেই সময়ে যারা ইংল্যান্ড-এ গমন করেন, নাসিকের বিনায়ক দামোদর সাভারকর তাঁদের অন্যতম।
শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মার দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত
এই সময় প্যারী নগরীতে এস. আর. রাণা নামে এক ভারতীয় ভদ্রলোকও কৃষ্ণ বর্মার দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়ে মহারানা প্রতাপ সিংহ, শিবাজী ও একজন মুসলমান শাসকের নামে তিনটি বৃত্তি দান করেন। প্রত্যেকটি বৃত্তির পরিমাণ ছিল দুই হাজার টাকা।
শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মার পত্রিকা প্রকাশ
ইংল্যাণ্ডে ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামের স্বপক্ষে প্রচার কার্য চালনার জন্য কৃষ্ণ বর্মা ‘ইণ্ডিয়ান সোসিওলোজিস্ট’ নামে একটি মাসিক পত্র প্রকাশিত করেন। তিনি নিজেই ছিলেন এর সম্পাদক। এই মাসিক পত্রিকাটিতে অন্যান্য বিষয়ের সাথে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের সংগঠন ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কেও আলোচনা করা হত। এই সকল আলোচনা মহারাষ্ট্রীয় বিপ্লবীদের সংগঠনের আদর্শগত ভিত্তি রচনা করেছিল।
শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মার পত্রিকায় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে মত প্রকাশ
১৯০৭ খ্রীষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে ‘ইণ্ডিয়ান সোসিওলোজিস্ট’ পত্রিকায় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কর্মপদ্ধতি, উদ্দেশ্য ও সংগঠন সম্পর্কে প্রকাশিত হয়েছিল,
“সম্ভবত ভারতবর্ষের আন্দোলন গোপনভাবে চালাতে হবে, এবং কেবলমাত্র রুশীয় (নিহিলিস্ট) কর্মপদ্ধতিতেই ইংরেজ সরকারকে সমুচিত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে। যে পর্যন্ত না ইংরেজরা তাদের অত্যাচার বন্ধ করতে বাধ্য হয় এবং এই দেশ থেকে বিতাড়িত হয়, সেই পর্যন্ত এই রুশীয় পদ্ধতি পূর্ণোদ্যমে অব্যাহত ভাবে চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু কোনো একটা বিশেষ কর্মপদ্ধতির নিয়ম-কানুন ও ক্রিয়াকলাপ কি হবে তা (এতদূর থেকে) কেউই নির্দিষ্ট করে বলে দিতে পারে না। তা সম্ভবত স্থানীয় পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও ঘটনার উপরেই নির্ভর করবে। কিন্তু এটা খুবই সম্ভব যে, সাধারণ নীতি হিসাবে রুশীয় পদ্ধতি অনুসারে ইউরোপীয় কর্মচারীদের দিয়ে কাজ আরম্ভ না করে ভারতীয় কর্মচারীদের দিয়েই কাজ আরম্ভ করা উচিত।”
উপসংহার :- শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মার এই কর্মনীতি সাভারকর ভ্রাতৃদ্বয়কে বিশেষভাবে প্রভাবান্বিত করেছিল। তাঁরা তাঁদের সংগঠনের ভিত্তি হিসাবে রাশিয়ার যে সন্ত্রাসবাদী ‘নিহিলিস্ট’ আদর্শ গ্রহণ করেছিলেন তা তাঁরা কৃষ্ণ বর্মার থেকেই শিক্ষা লাভ করেন।
(FAQ) শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মার প্রয়াস সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মা
শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মা ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে
ইণ্ডিয়ান সোসিওলোজিস্ট
সাভারকর ভ্রাতৃদ্বয়