ইলতুৎমিসের রাজ্য বিস্তার প্রসঙ্গে বাংলার শাসক আলি মর্দান খলজি, বাংলার শাসক গিয়াসউদ্দিন খলজি, ইলতুৎমিসের প্রথম বাংলা অভিযান, গিয়াসউদ্দিন খলজির স্বাধীনতা ঘোষণা, বাংলার শাসক নাসিরউদ্দিন, বাংলার শাসক ইখতিয়ারউদ্দিন বলকা খলজি, ইলতুৎমিসের দ্বিতীয়বার বাংলা অভিযান, ইলতুৎমিসের রণথম্ভোর দখল ও গোয়ালিয়র জয় সম্পর্কে জানবো।
ইলতুৎমিসের রাজ্য বিস্তার
ঐতিহাসিক ঘটনা | ইলতুৎমিসের রাজ্য বিস্তার |
বাংলা অভিযান | ১২২৫ ও ১২৩০-৩১ খ্রি: |
রণথম্ভোর জয় | ১২২৬ খ্রি: |
গোয়ালিয়র দখল | ১২৩২ খ্রি: |
উজ্জয়িনী লুণ্ঠন | ১২৩৪ খ্রি: |
ভূমিকা :- মোঙ্গল বিভীষিকা থেকে মুক্ত এবং জালালউদ্দিনের হাতে কুবাচার পরাজয়ে নিশ্চিত হয়ে ইলতুৎমিস রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন।
বাংলার শাসক আলি মর্দান খলজি
ইলতুৎমিস প্রথমে বাংলার দিকে দৃষ্টি দেন। আলি মর্দান খলজির নিষ্ঠুরতা ও অত্যাচারে কয়েকজন মুসলমান ওমরাহ বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। তাঁরা আলি মর্দানকে হত্যা করে (১২১২ খ্রি) হাসামউদ্দিন আয়াজ নামে একজন দক্ষ কর্মচারিকে সিংহাসনে স্থাপন করেন।
বাংলার শাসক গিয়াসউদ্দিন খলজি
হাসামউদ্দিন আয়াজ সুলতান গিয়াসউদ্দিন খলজি উপাধি গ্রহণ করেন (১২১৩-১২২৭ খ্রি)। কথিত আছে, তিনি জাজনগর (উড়িষ্যা), কামরূপ, ত্রিহুত (উত্তর বিহার) এবং ‘বঙ্গ’ অধিকার করেন। তিনি দেবকোট থেকে গৌড়-লখনৌতিতে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন।
ইলতুৎমিসের প্রথম বাংলা অভিযান
১২২৫ খ্রিস্টাব্দে ইলতুৎমিস এক বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে বাংলার শাসক গিয়াসউদ্দিন খলজির বিরুদ্ধে অগ্রসর হলে গিয়াসউদ্দিন বিনাযুদ্ধে বশ্যতা স্বীকার করেন। তিনি সুলতান উপাধি ত্যাগ করে দিল্লীর আধিপত্য স্বীকার করেন, বিহারের উপর নিজ দাবি প্রত্যাহার করেন এবং ইলতুৎমিসকে কর প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন। ইলতুৎমিস এই সকল শর্ত গ্রহণ করেন।
গিয়াসউদ্দিন খলজির স্বাধীনতা ঘোষণা
ইলতুৎমিস দিল্লীতে প্রত্যাবর্তন করবার সঙ্গে সঙ্গে গিয়াসউদ্দিন পুনরায় স্বাধীনতা ঘোষণা করে বিহার অধিকার করেন। ১২২৭ খ্রিস্টাব্দে সুলতানের পুত্র অযোধ্যার শাসনকর্তা নাসিরউদ্দিন মামুদ, বাংলা আক্রমণ করে লখনৌতি অধিকার করেন।
বাংলার শাসক নাসিরউদ্দিন
এরপর গিয়াসউদ্দিন নিহত হলে তার পুত্র নাসিরউদ্দিন বাংলার শাসনকর্তা হন, কিন্তু ১২২৯ খ্রিস্টাব্দে অকাল মৃত্যুতে তার উজ্জ্বল ভবিষৎ শেষ হয়ে যায়।
বাংলার শাসক ইখতিয়ারউদ্দিন বলকা খলজি
এই দুর্ঘটনার সুযোগে ইখতিয়ারউদ্দিন বলকা খলজি নামে গিয়াসউদ্দিনের এক সমর্থক বাংলার সর্বময় কর্তৃত্ব অধিকার করেন।
সুলতান ইলতুৎমিসের দ্বিতীয়বার বাংলা আক্রমণ
১২৩০-৩১ খ্রিস্টাব্দে ইলতুৎমিস পুনরায় বাংলা আক্রমণ করেন। বলকা পরাজিত ও নিহত হন। বাংলা পুনরায় দিল্লীর অধীনে আসে এবং মালিক আলাউদ্দিন জানি বাংলার শাসনকর্তা নিযুক্ত হন।
সুলতান ইলতুৎমিসের রণথম্ভোর দখল
ইলতুৎমিসের অপর একটি কঠিন কর্তব্য ছিল রাজস্থান ও গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চলে দিল্লীর কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা। রণথম্ভোরের বিখ্যাত দুর্গ একজন চৌহান রাজার অধিকারভুক্ত ছিল। ১২২৬ খ্রিস্টাব্দে ইলতুৎমিস রণথম্ভোর, এবং পরের বছর মান্দোর (মাড়োয়ারে অবস্থিত) অধিকার করেন। ১২২৮ অথবা ১২২৯ খ্রস্টাব্দে ঝালোর অধিকৃত হয়। আজমীর ও নাগোর পুনরাধিকৃত হল।
ইলতুৎমিসের গোয়ালিয়র জয়
১২৩২ খ্রিস্টাব্দে ইলতুৎমিস মঙ্গলদেব নামক একজন হিন্দু রাজার কাছ থেকে গোয়ালিয়র অধিকার করেন। দোয়াবে বদায়ূন ও কনৌজ এবং বারাণসী ও কাতেহরে (রোহিলখণ্ডে) তুর্কী অধিকার পুনঃস্থাপিত হয়।
উপসংহার :- মালবে প্রথম উল্লেখযোগ্য মুসলমান অনুপ্রবেশ ঘটে ইলতুৎমিসের রাজত্বকালে। ১২৩৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি উজ্জয়িনী ও ভিলসা লুণ্ঠন করেন। উজ্জয়িনীতে মহাকালের বিখ্যাত মন্দিরটি ধ্বংস করা হয়। কিন্তু মালবের কোনো অংশ অধিকৃত হয় নি।
(FAQ) ইলতুৎমিসের রাজ্য বিস্তার সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১২২৫ খ্রিস্টাব্দে।
১২৩০-৩১ খ্রিস্টাব্দে।
সুলতান ইলতুৎমিস।