ঐতিহাসিক স্থান সুমাত্রা প্রসঙ্গে হিন্দু উপনিবেশ স্থাপনের কাল, সংস্কৃতচর্চার বড় কেন্দ্র শ্রীবিজয়, বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র শ্রীবিজয়, বর্তমানে শ্রীবিজয়ের অবস্থান, শৈলেন্দ্ররাজ্যের অন্তর্ভূক্ত শ্রীবিজয়, সুমাত্রার বিভাজন, সুমাত্রায় ভারতীয় সভ্যতার সর্বাঙ্গীন বিকাশ ও সুমাত্রার সংস্কৃতি সম্পর্কে জানবো।
ঐতিহাসিক স্থান সুমাত্রা
ঐতিহাসিক স্থান | সুমাত্রা |
অবস্থান | ভারত ও চীনের মধ্যস্থলে |
সংস্কৃতচর্চার কেন্দ্র | শ্রীবিজয় |
চীন-এর পরিব্রাজক | ইৎ সিং |
বৌদ্ধ পণ্ডিত | অতীশ দীপঙ্কর |
ভূমিকা :- সুমাত্রা সমুদ্রপথে ভারত ও চীনের মধ্যস্থলে অবস্থিত। এই কারণে বাণিজ্যের সুবিধার জন্য অনেক উন্নত বন্দর গড়ে উঠেছিল।
সুমাত্রায় হিন্দু উপনিবেশ স্থাপনের কাল
সুমাত্রায় হিন্দু উপনিবেশ স্থাপনের সময় খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় বা তৃতীয় শতাব্দী বললে ভুল হবে না। ফেরাঁর মতে খ্রিষ্টাদের কয়েকশ বছর আগে উপনিবেশ স্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু হিন্দুরাজ্য প্রতিষ্ঠার কোনো বিবরণ পাওয়া যায় না।
সংস্কৃতচর্চার বড় কেন্দ্র শ্রীবিজয়
শ্রীবিজয় সংস্কৃতচর্চার এক বড় কেন্দ্র ছিল। ইৎ সিং (সপ্তম শতাদী) লিখেছেন যে শ্রীবিজয়ের রাজা বৌদ্ধ ধর্ম-এর পক্ষপাতী ছিলেন এবং ভারত ও শ্রীবিজয়ের মধ্যে যাতায়াতের জন্য তাঁর বাণিজ্য জাহাজ ছিল। ইৎ সিং নিজেই রাজার এক জাহাজে শ্রীবিজয় থেকে বাংলার তৎকালীন প্রসিদ্ধ বন্দর তাম্রলিপ্ততে (আধুনিক তমলুক) আসেন।
বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র শ্রীবিজয়
শ্রীবিজয় বৌদ্ধধর্মশাস্ত্র শিক্ষারও এক বড় কেন্দ্র ছিল। অতীশ দীপঙ্কর (একাদশ শতাব্দী) শিক্ষার জন্য সেখানে কয়েক বছর থাকেন।
বর্তমানে শ্রীবিজয়ের অবস্থান
সোঁদের মতে শ্রীবিজয় বর্তমান পালেমবঙ্গ নামক স্থান, কিন্তু রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে এই সিদ্ধান্ত অবিসম্বাদিতরূপে ঠিক নয়। তিনি মনে করেন শ্রীবিজয় কোথায় ছিল তা এখনো নিশ্চিতরূপে নির্ণীত হয়নি।
শৈলেন্দ্ররাজ্যের অন্তর্ভূক্ত শ্রীবিজয়
শ্রীবিজয়রাজ্য ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। কেউ কেউ মনে করেন শৈলেন্দ্র বংশ প্রথমে শ্রীবিজয়ে রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে চারদিকে রাজ্য বিস্তৃত করেন। কিন্তু এই মত ঠিক বলে মনে হয় না। তবে একথা ঠিক যে শ্রীবিজয় শৈলেন্দ্র রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল।
সুমাত্রার বিভাজন
ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষভাগে শৈলেন্দ্র রাজ্যের পতন হলে সুমাত্রা ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যায়।
সুমাত্রায় ভারতীয় সভ্যতার সর্বাঙ্গীন বিকাশ
সুমাত্রা প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে ভারতীয় উপনিবেশ ছিল। ঐ সময়ের মধ্যে ভারতীয় সভ্যতার সর্বাঙ্গীন বিকাশও হয়েছিল।
সুমাত্রার সংস্কৃতি
সেখানে হিন্দু ও বৌদ্ধ এই দুই ধর্মেরই যথেষ্ট প্রভাব ছিল। পাথর এবং ব্রোঞ্জে তৈরি সুন্দর শিব, বিষ্ণু, বুদ্ধ, মৈত্রেয় প্রভৃতি মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। এই সমস্ত ভাস্কর্য পল্লব, গুপ্ত ও পালযুগের শিল্পকলার অনুরূপ।
উপসংহার :- ধর্মের উচ্চ ও মহান আদর্শ প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয়রা সুমাত্রায় লাঙল, তুলা ও চরখা প্রবর্তন করেছিল।
(FAQ) ঐতিহাসিক স্থান সুমাত্রা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
সমুদ্রপথে ভারত ও চীনের মধ্যস্থলে।
ইৎ সিং।
অতীশ দীপঙ্কর।
হিন্দু ও বৌদ্ধ।