প্রাচীন ভারতের বিদুষী নারী সোমা

প্রাচীন ভারতের বিদুষী নারী সোমা প্রসঙ্গে সোনার জন্ম, সোমার শিক্ষা লাভ, সংসারের প্রতি সোমার বৈরাগ্য, সোমার ধ্যানভঙ্গের পরিস্থিতি, সোমার প্রতি মারের বিদ্রুপ ও সোমা কর্তৃক মারের বিদ্রুপের উত্তর সম্পর্কে জানবো।

ভারতের বিদুষী নারী সোমা প্রসঙ্গে বিদুষী সোনার জন্ম, বিদুষী সোমার শিক্ষা, বৌদ্ধ ভিক্ষুণী সোমা, ধর্মানুশীলনকারী সোমা, ধ্যানরতা সোমা ও বিদুষী সোমার ধ্যানভঙ্গের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানব।

প্রাচীন ভারতের বিদুষী নারী সোমা

ঐতিহাসিক চরিত্রসোমা
পরিচিতিবৌদ্ধ ভিক্ষুণী
জন্মস্থানশ্রাবস্তী নগরী
পিতাবিম্বিসার-এর সভাপণ্ডিত
জীবন অতিবাহিতধর্মচর্চা
প্রাচীন ভারতের বিদুষী নারী সোমা

ভূমিকা :- মহাপ্রজাপতীযশোধরা ব্যতীত আরও অনেক বৌদ্ধসন্ন্যাসিনী জ্ঞান ও ধর্মানুশীলন দ্বারা প্রাচীন ভারত-এর নারীসমাজের গৌরববৃদ্ধি করে গিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন সোমা।

সোমার জন্ম

সেকালে শ্রাবস্তী নগরের বিশেষ প্রসিদ্ধি ছিল। এই সুপ্রসিদ্ধ শ্রাবস্তীনগরীর এক ব্রাহ্মণগৃহে সোমার জন্ম হয়।

সোমার শিক্ষা লাভ

সোমার পিতা রাজা বিম্বিসারের সভাপণ্ডিত ছিলেন। তিনি সোমাকে পঞ্চম বর্ষ বয়ঃক্রম হতেই শিক্ষা দিতে আরম্ভ করেন। সোমা সেই বয়স থেকেই অসাধারণ প্রতিভার পরিচয় দিতে আরম্ভ করলেন। সভাপণ্ডিত মহাশয় কন্যার প্রতিভা দেখে বিস্মিত হতেন। একবার যা শুনতেন সোমা আর তা ভুলতেন না। সোমা মাত্র ষোল বছর বয়সে হাজার হাজার বৌদ্ধগাথা আয়ত্ত করেছিলেন।

সংসারের প্রতি সোমার বৈরাগ্য

এইরূপভাবে ধর্মশাস্ত্র আলোচনা করতে করতে তার সংসারের প্রতি বৈরাগ্য জন্মায়। সোমা বৌদ্ধ ধর্ম-এ দীক্ষালাভ করে ধ্যানধারণায় প্রবৃত্ত হল। তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করবার জন্য শ্রাবস্তীর নিকটস্থ এক উপবনে বৃক্ষতলে বসে তিনি একদিন ধ্যানমগ্না হলেন।

সোমার ধ্যান ভঙ্গের পরিস্থিতি

নিস্তব্ধ নিশীথ। নির্জন উপবন। পল্লবঘন বৃক্ষতলে সোমা ধ্যান-নিরতা। এরূপ সময়ে ‘মার’ এসে তার ধ্যান ভঙ্গ করবার জন্য ভয় দেখাতে আরম্ভ করল।

সোমার প্রতি মারের বিদ্রুপ

মার সোমাকে সম্বোধন করে বলল, “করিয়ে কঠোর তপ যে পদ করেন লাভ যোগীঋষিগণ, তুমি নারী কেমনে পাইবে সেই দুর্লভ রতন? রাঁধবাড় চিরকাল, তবু হায়! পাকিল না হাত, টিপিয়া দেখিতে হয় বার বার ফুটিল কি ভাত!

সোমা কর্তৃক মারের বিদ্রুপের উত্তর

  • (১) তখন সোমা দৃঢ়ভাবে মাবের কথার উত্তর দিলেন, নারীজন্ম লভিয়াছি, তাহে কিছু হয় নাই দোষ, অচল যাহার চিত্ত লাভ সে যে অনন্ত সন্তোষ। সত্যের শিখর লক্ষ্য; কোনো বাধা, কোনো ভয় নাই, আপনার শক্তি ‘পরে করিয়া নির্ভর লক্ষ্যপথে চলে যাই।
  • (২) অর্হৎ যে পথে চলে সেই পথে হব আগুয়ান, বিষয়বাসনা তুচ্ছ, লক্ষ্য তার অনন্ত নির্বাণ ! অবিদ্যার অন্ধকার ঘুচাইব সত্যের আলোকে, চলে যাব সত্য পথে নিজ মনে অপূর্ব পুলকে। ওরে রে পাপিষ্ঠ মার, বৃথা ভয় দেখাস আমারে, চিনেছি চিনেছি তোরে দূর হয়ে যারে একেবারে।

উপসংহার :- এইভাবে মারের প্রলোভন জয় করে সোমা অর্হৎপনা লাভ করেন। এইরূপ ভাবে তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করবার পর সোমা ধর্মচর্চায় কালাতিপাত করেছিলেন।

(FAQ) প্রাচীন ভারতের বিদুষী নারী সোমা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. সোমা কে ছিলেন?

শ্রাবস্তী নগরের এক ব্রাহ্মণ কন্যা ছিলেন সোমা। তিনি বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেছিলেন।

২. সোমার পিতা কে ছিলেন?

রাজা বিম্বিসারের সভাপণ্ডিত।

৩. সোমা হাজার হাজার বৌদ্ধগাথা আয়ত্ত করেছিলেন কত বছর বয়সে?

১৬ বছর।

Leave a Comment