আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংগঠন প্রসঙ্গে সামরিক সংস্কারের কারণ, সমরমন্ত্রী, বেতন, হুলিয়া ও দাগ প্রথা প্রচলনের কারণ এবং হুলিয়া ও দাগ প্রথা সম্পর্কে জানবো।
আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংগঠন
ঐতিহাসিক ঘটনা | আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংগঠন |
সুলতান | আলাউদ্দিন খলজি |
বংশ | খলজি বংশ |
সমর মন্ত্রী | আরজ-ই-মামালিক |
দাগ ও হুলিয়া প্রথা | আলাউদ্দিন খলজি |
ভূমিকা :- আলাউদ্দিন বুঝতে পারেন যে, সুলতানি শাসনের মেরুদণ্ড হল তার সেনাদল। তিনি যে স্বৈরাচারী শাসন স্থাপন করেন তাকে সফল করার জন্য শক্তিশালী সৈন্যদলের দরকার হয়।
সামরিক সংস্কারের কারণ
তাঁর রাজ্য জয় নীতিকে সার্থক ও মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য তার সেনা সংস্কারের গুরুত্ব তিনি বুঝতে পারেন। তার পূর্ববর্তী সুলতানরা কেন্দ্রে শক্তিশালী সেনাদল পোষণ না করে, প্রাদেশিক শাসনকর্তা ইক্তাদারদের সেনাদলের ওপর নির্ভর করতেন। আলাউদ্দিন তাঁর নিজস্ব সেনাদল গঠনের ব্যবস্থা করেন এবং এই সেনাদলের বেতন ও ব্যয়ভার তিনি নিজে বহন করেন।
সমর মন্ত্রী
সমর দপ্তর গঠনের জন্য তিনি আরজ-ই-মামালিক নামে এক সমর মন্ত্রীর পদ গঠন করেন। সামরিক সংস্কার এই মন্ত্রী নিজ দায়িত্বে যোগ্য লোকদের বাছাই করে সেনাদলে চাকুরী দিতেন।
বেতন
এক ঘোড়াযুক্ত অশ্বারোহী সেনানীকে ২৩৪ টঙ্কা বার্ষিক নগদ বেতন দেওয়া হত। দুটি ঘোড়া থাকলে অতিরিক্ত ৭৮ টঙ্কা দেওয়া হত। এছাড়া অস্ত্র, পোষাক, ঘোড়া সরবরাহ করা হত। ফিরিস্তার মতে, আলাউদ্দিনের ৪,৭৫,০০০ অশ্বারোহী সৈন্য ছিল।
হুলিয়া ও দাগ প্রথা প্রচলনের কারণ
আলাউদ্দিন তাঁর সেনাদলে দুর্নীতি বন্ধ করার জন্যে হুলিয়া ও দাগ প্রথার প্রচলন করেন। নিয়মিত সেনারা যুদ্ধের সময় হাজিরা না দিয়ে অশিক্ষিত লোকদের বদলী হিসেবে পাঠাত এবং যুদ্ধের ভাল ঘোড়ার বদলে চাষের ঘোড়া পাঠাত। এই দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য তিনি হুলিয়া ও দাগ প্রথা প্রচলন করেন।
হুলিয়া ও দাগ প্রথা
হুলিয়া ব্যবস্থা দ্বারা খাতায় প্রতি সৈন্যের দৈহিক বৈশিষ্ট্য লিপিবদ্ধ করেন। দাগ প্রথায় ঘোড়ার গায়ে লোহা পুড়িয়ে দাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
উপসংহার :- সর্বোপরি মোঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে সীমান্তকে সুরক্ষিত করার জন্য আলাউদ্দিন খলজি সীমান্তে দুর্গ নির্মাণ ও পুরাতন দুর্গগুলির সংস্কারের ব্যবস্থা করেন।
(FAQ) আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংগঠন সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
আরজ-ই-মামালিক।
আলাউদ্দিন খলজি।
৪ লক্ষ ৭৫ হাজার।
সুলতান আলাউদ্দিন খলজি সেনাবাহিনীর দূর্নীতি বন্ধ করার জন্য হুলিয়া ও দাগ প্রথা চালু করেন। হুলিয়া হল প্রতিটি সেনার দৈহিক বৈশিষ্ট্য লিপিবদ্ধ করা। আর দাগ হল ঘোড়ার চিহ্নিতকরণ।