শিখ গুরু অর্জুনের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিবাদ প্রসঙ্গে জরিমানা, হত্যা, ঈশ্বরী প্রসাদের অভিমত, গুরু হরগোবিন্দর প্রতি সন্দেহ, শিখ সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিরোধ, সুন্নী মৌলবাদী আন্দোলন ও সমদর্শী নীতির সমালোচনা সম্পর্কে জানবো।
শিখ গুরু অর্জুনের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিবাদ
ঐতিহাসিক ঘটনা | শিখ গুরু অর্জুনের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিবাদ |
সময়কাল | ১৬০৫-১৬০৬ খ্রি |
সম্রাট | জাহাঙ্গীর |
শিখ গুরু | গুরু অর্জুন |
মৌলবাদী আন্দোলন | শেখ আহমদ শিরহিন্দী |
ভূমিকা :- শিখ সম্প্রদায়ের পঞ্চম গুরু ছিলেন গুরু অর্জুন। তিনি জাহাঙ্গীর পুত্র খসরুকে সাহায্য করে জাহাঙ্গীরের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।
শিখগুরু অর্জুনের জরিমানা
খসরুর লাহোর যাত্রার পথে শিখগুরু অর্জুন তাকে সহানুভূতি জানান ও অর্থ সাহায্য দেন। এজন্য জাহাঙ্গীর ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু গুরু অর্জুন জানান যে, তার কোনো অর্থ নেই, যে অর্থ তার হাতে আছে তা শিক্ষপন্থের সম্পত্তি।
জাহাঙ্গীর কর্তৃক শিখগুরু অর্জুনকে হত্যা
এরপর জাহাঙ্গীরের নির্দেশে শিখ গুরু অর্জুনকে কারারুদ্ধ করা হয় এবং কারারক্ষীর অত্যাচারে গুরুর মৃত্যু হয়।
শিখ-মোঘল বিবাদ সম্পর্কে ঈশ্বরী প্রসাদের অভিমত
ডঃ ঈশ্বরী প্রসাদের মতে, “জাহাঙ্গীর ক্রোধবশত ভুলে যান যে, এই সময় পাঞ্জাবে শিখধর্ম নব প্রেরণায় উদীয়মান হয়েছিল। তিনি এই ধর্মের গুরুকে শ্রদ্ধা না দেখিয়ে নির্যাতন করে শিখ সম্প্রদায়ের সঙ্গে মুঘল বিরোধের বীজ বপন করেন। জাহাঙ্গীর গুরু অর্জুনের প্রতি সাধারণ অপরাধীর মত ব্যবহার করে মহাভুল করেন।”
গুরু হরগোবিন্দর প্রতি জাহাঙ্গীরের সন্দেহ
গুরু অর্জুনের পর হরগোবিন্দ শিথপন্থের গুরুর পদে বসেন। কিন্তু জাহাঙ্গীর তার প্রতি সন্দেহপোষণ করতেন। তিনি তাকে তার পিতার প্রদেয় জরিমানা দিতে নির্দেশ দেন।
শিখ সম্প্রদায়ের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিরোধ
গুরু হরগোবিন্দ পিতার জরিমানা দানে অসামর্থ্য হলে জাহাঙ্গীর তাকে গোয়ালিয়র দুর্গে ১২ বৎসর বন্দী করে রাখেন। শিখ সম্প্রদায়ের সঙ্গে জাহাঙ্গীর এইভাবে বিরোধ সৃষ্টি করেন।
জাহাঙ্গীরের সময় সুন্নী মৌলবাদী আন্দোলন
সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনকালে পাঞ্জাবের শিরহিন্দে শেখ আহমদ শিরহিন্দীর প্রভাবে এক গোড়া সুন্নী মৌলবাদী আন্দোলনের উদ্ভব হয়। এই আন্দোলন পরবর্তীকালে ঔরঙ্গজেব-এর চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করে।
জাহাঙ্গীরের সমদর্শী নীতির সমালোচনা
যে ক্ষেত্রে আকবর, জাহাঙ্গীর প্রমুখ সম্রাট ভারতের সকল সম্প্রদায়ের সমান অধিকারের ওপর সাম্রাজ্য স্থাপন করেন, সেক্ষেত্রে শেখ আহমদ শিরহিন্দী এই সমদর্শী নীতির সমালোচনা করেন। তিনি একটি মৌলবাদী মুসলিম রাষ্ট্রের তত্ত্ব প্রচার করেন।
উপসংহার :- শেখ আহমদ শিরহিন্দী বলেন যে, ধর্মসহিষ্ণুতা প্রদর্শন করলে মুসলিমরা তাদের বিশেষ অধিকার হারাবে, ইসলামের মৌল চরিত্রের ক্ষতি হবে। অবশ্য জাহাঙ্গীর এই প্রতিক্রিয়াশীল মতকে দমনের চেষ্টা করেন নি।
(FAQ) শিখ গুরু অর্জুনের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিবাদ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
গুরু অর্জুন।
বিদ্রোহী পুত্র খসরুকে সাহায্য করার জন্য।
গুরু হরগোবিন্দ।
শেখ আহমদ শিরহিন্দী।